পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা মরহুম সৈয়দ সাহেব একজন নিরতিশয় সাধু
স্বভাবের নিরেট ধার্মিক ব্যাক্তি ছিলেন। কামেল পীরের হাতে বায়াত গ্রহণ
ছাড়া শরিয়ত, ত্বরিকত, হাকিকত, মারেফতের জ্ঞান তথা আল্লাহর দীদার লাভ করা
সম্ভব নহে, তাই সৈয়দ সাহেব এলমে বেলায়েত ও মারেফত অর্জনের নিমিত্তে কামেল
পীরের খোঁজে ব্যাকুল হইয়া পড়িলেন। অতঃপর মনষ্কামনা পূরণের জন্য তিনি বহু
অলি আউলিয়ার দরবার তথা মাজার শরীফে খেদমতে হাযির হইয়াছেন। কিন্তু কোথাও
মনকে স্থির করিতে পারেন নাই। তাই তিনি সবসময় আল্লাহর দরবারে কামেল পীরের
সন্ধান চাহিয়া প্রার্থনা করিতেন। আসলে আধ্যাত্মিক পরশ ছাড়া ধর্ম কর্ম
প্রাণহীন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছুই নহে। অসীমের সাধকগণ ইহাতে তৃপ্ত হইতে
পারে না। বেহেস্তের লোভে বা দোযখের ভয়ে যাহারা তথাকথিত ধর্মানুষ্ঠান পালন
করে তাহারা কতিপয় অনুষ্ঠান পালন করিয়া বেহেস্তে হুরগেলমান লাভ করার মোহে
তৃপ্ত থাকিতে পারে। কিন্তু যাহারা বেহেস্ত নয়, বেহেস্তের মালিকের
সান্নিধ্য বন্ধুত্ব চান, যাহারা আত্মপরিচিতি লাভের মাধ্যমে তাহাকে চিনিতে
চান তাঁহাতে মিলিত হইতে চান, তাহার প্রেমে মজনু হইয়া আনন্দ পাইতে চান,
তাঁহাদের মনে প্রানহীন ধর্মানুষ্ঠানিকতার তৃপ্তি আসিতেই পারে না। অসীমের
প্রেমাকর্ষনে ব্যাকুল সৈয়দ সাহেবের বেলাতেও তাহাই হইয়াছে। অতৃপ্তি তাহাকে
অসহিষ্ণু করিয়া তোলে। কাহার কাছে গেলে তিনি অসীমের সন্ধান পাইবেন, নিজেকে
চিনিয়া আল্লাহর পরিচয় লাভ করিবেন আর তাহার সহিত মিলিত হইতে পারিবেন, এই
চিন্তায় অধীর অস্থির এবং চিন্তাযুক্ত হইয়া পড়িলেন। এমতাবস্থায়, স্বপ্নে
দেখিলেন হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) সৈয়দ সাহেবকে আদেশ করিতেছেন, “হে সৈয়দ,
বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অলিয়ে মোকাম্মেল, পূর্ববঙ্গের ফরিদপুর
জেলার অন্তর্গত সুরেশ্বর গ্রামে হযরত মাওলানা আহম্মদ আলীর নিকট যাইয়া
তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ কর এবং নিজেকে তাহার নিকট পূর্ণ সোপর্দ কর তাহা হইলেই
তোমার মনোবাঞ্চা পূর্ণ হইবে”।
হুকুম পাইতে দেরী হইলেও সৈয়দ সাহেবের
তাহা তামিল করিতে দেরী হইল না। আন্তরিকভাবে তাঁহাকে চাহিলে তিনি সাড়া দেন,
সৈয়দ সাহেবের ঘটনা তাহারই প্রমাণ। এই স্বপ্ন দেখিয়া তিনি উপযুক্ত
দিনক্ষনে মুর্শিদ ক্বিবলার চরন ধুলির আসায় পশ্চিমবঙ্গের বীরভুম ছাড়িয়া
তদানীন্তন পূর্ববঙ্গ বর্তমান বাংলাদেশে আগমন করিলেন। সৈয়দ সাহেব যখন
সুরেশ্বরের পবিত্র মাটিতে পা রাখিলেন তখন সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বা কতিপয়
ভক্ত ও মুরিদদের লইয়া দরবারের আঙ্গিনায় ধর্মীয় আলোচনায় রত ছিলেন। সৈয়দ
সাহেব জনৈক মুরিদের নিকট জানিতে চাহিলেন যে, হুজুর ক্বিবলা হযরত আহ্ম্মদ
আলী ইনিই কিনা যিনি সবার উদ্দেশ্যে নছিহত করিতেছেন। উত্তরে মুরিদ জানাইলেন
যে ইনিই হযরত শাহ্ আহ্ম্মদ আলী ওরফে হযরত জানশরীফ শাহ্ সুরেশ্বরী আমাদের
মুর্শিদ ক্বিবলা। এতদশ্রবনে সৈয়দ সাহেবের মনে মুর্শিদ ক্বিবলার সম্পর্কে
যে চিন্তা-চেতনা ছিল তাহা হোচট খাইল। তিনি ভাবিয়া ছিলেন রাসূল (সাঃ) আমাকে
যাহার নিকট আসিতে হুকুম করিয়াছেন তিনি নিশ্চয়ই দেখিতে গৌরবর্ন গাত্র,
সুরুষ এবং বিশেষ অবস্থানে আসীন থাকিবেন। কিন্তু ইনিতো দীন-হীন অত্যন্ত
সাধারণ গোছের মানুষ। তবু রাসূল পাকের নির্দেশ মনে হইতেই তাহার ভ্রম কাটিয়া
গেল। তিনি বিনয়র সহিত আসিয়া সুরেশ্বরী বাবার কদম মোবরকে নিজেকে
সমর্পনকরতঃ নিজের পরিচয় জানাইয়া মুরিদ করিবার জন্য প্রার্থনা করিলেন।
হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা তাহার দিকে তাকাইয়া মুচকি হাসিয়া বলিলেন, সৈয়দ
সাহেব আপনি রাসূল (সাঃ) এর পবিত্র বংশের লোক আপনাকে বা’য়াত দান করা আমার
জন্য বেয়াদবী, কিন্তু যেহেতু নবী করিম (সাঃ) আপনাকে আমার নিকট বায়াত
গ্রহণ করিবার জন্য নির্দেশ করিয়াছেন তাই আপনাকে রূহানীয়াত সন্তান হিসাবে
গ্রহণ করা আমার জন্য ফরজ হইয়া দাড়াইয়াছে। হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বার
পবিত্র মুখে তাহার স্বপ্নের কথা শুনিয়া সৈয়দ সাহেব নিশ্চিন্তভাবে
বুঝিলেন ইনিই সেই মহান অলী যাহার কথা স্বপ্নে রাসূল (সাঃ) আমাকে
জানাইয়াছেন, তাই তিনি প্রেম ভক্তিপূর্ণ অন্তরে হযরতের পদপ্রান্তে লুটাইয়া
পড়িলেন। হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা (রাঃ) অতি আদরের সহিত তাহাকে ধরিয়া
উঠাইয়া নিজের সামনে বসাইলেন এবং সান্তনা দিয়া মুরিদ করিয়া আপন শিষ্যত্বে
বরণ করিলেন। মুরিদ সৈয়দ সাহেব সুরেশ্বর দরবারেই রহিয়া গেলেন।
বলা
বাহুল্য যে, মুর্শিদের খেদমতে যাহারা থাকে তাহারা কিছু না কিছু কাজ করা
অবশ্য কর্তব্য বলিয়া মনে করে। মুর্শিদের দরবারে বসিয়া বসিয়া খাওয়া ও
আরামে থাকার অর্থই মুর্শিদে নিকট ঋনি হওয়া এবং বেয়াদবী। কেননা মুরিদ
হইয়া মুর্শিদের দরবারে থাকিয়া অন্ন গ্রহণ প্রকারন্তরে যে কোন কিছুই গ্রহণ
করা ত্বরিকত পন্থীগণের ঋনের বোঝা হইতে থাকে। যে কোন অবস্থায় মুর্শিদ তথা
দরবারের প্রয়োজনে নিজেকে নিয়োজিত রাখা ত্বরিকত পন্থীদের জন্য সাধনার
জরুরী অংশ। আসলেও তাহাই। মুর্শিদের দরবারে খেদমতের মাধ্যমে নিজেকে বিলীন
করিবার প্রক্রিয়াই আধ্যাত্মিক জগতের স্তর হইতে স্তরে আরোহনের প্রধানতম
সিঁড়ি। সৈয়দ সাহেবও দরবারে থাকেন। দরবারের খেদমতে নিজেকে ওয়াকফ করিয়া
দেন। তবে, সৈয়দ সাহেব কায়িক শ্রম করার লোক ছিলেন না। অপরদিকে, তাহার
বয়সও বেশী ছিল। এই জন্য হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা তাঁহাকে কাজ করিতে বারণ
করেন। কিন্তু তিনি কাজ করিবেনই। অগত্যা দয়াল তাঁহাকে দরবারের খেদমতে রশি
পাকাইতে দিলেন। আর ঘরের কোনে নিরালায় বসিয়া ধ্যান-সাধনায় মগ্ন থাকিতেন।
এই ভাবে ক্রমেই তিনি আধ্যাত্মিকতায় আবিষ্ট হইয়া পড়েন, মুর্শিদের ফয়েজ ও
বরকতে পরমাত্মার প্রেম জ্যোতিতে বিভোর হইয়া যান এবং ভুলিয়া যান নিজের
বাড়ি-ঘর-স্ত্রী-সন্তানাদি। এই ভাবে বহু বছর অতিক্রান্ত হয়। জানা যায়,
প্রায় বিশ বৎসর তাঁহার এই ভাবে কাটিয়াছিল।
আধ্যাত্মিক খেলা বুঝা দায়।
পদ্মা নদীতে গোসল করিয়া ফিরিবার পথে সৈয়দ সাহেব একদিন দেখিলেন যে আট/নয়
বৎসরের দুইটি ছেলে-মেয়ে ধুলা-বালি গায়ে মাখিয়া রাস্তার উপর খেলা
করিতেছে। ইহা দেখিয়া বিশ বৎসর পর সৈয়দ সাহেবের দেশের কথা মনে পড়িল, মনে
পড়িল তিনিও এমনি বয়সের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বাড়িতে রাখিয়া
আসিয়াছেন। এতদিনে তাহার বিবাহযোগ্য হইয়া উঠিয়াছে। বুকের ভিতরে
পিতৃস্নেহের বান ডাকিয়া উঠিল। স্ত্রী-সন্তানাদির জন্য তাঁহার মন ব্যাকুল
বেকারার হইয়া গেল। তিনি বাড়ি যাইবার জন্য হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলার অনুমতি
প্রার্থনা করিলেন। হযরত চুপ করিয়া থাকিলেন। সৈয়দ সাহেব বিফল মনোরথ হইয়া
নিজের ঘরে চলিয়া আসিলেন। কিন্তু মন তাহার কিছুতেই বশ মানিল না। বাড়িতে
যাইবার জন্য সমস্ত হৃদয়ে কালবৈশাখীর তান্ডব শুরু হইয়া গেল। সুতরাং দুই এক
দিন পর আবারও মুর্শিদের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিল। বাবা পূর্বের ন্যায়
চুপ করিয়া রহিলেন। এই ভাবে পরের দিনও বাড়ি যাইবার জন্য মুর্শিদের অনুমতি
না পাইয়া তিনি ভাবিলেন কাইকে কিছু না বলিয়াই তিনি বাড়িতে চলিয়া যাইবেন।
৩/৪ দিন অবস্থান করিয়া ফিরিয়া আসিয়া বাবার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিলে
নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমা করিয়া দিবেন। একা একা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়া
বাবার অনুমতি ছাড়াই একদিন গোপনে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হইলেন।
গোয়ালন্দ
ঘাটে পৌঁছিয়া সৈয়দ সাহেব কলিকাতাগামী ট্রেনের অপেক্ষায় প্লাটফরমেই
বিছানা পাতিয়া অজস্র চিন্তা জাল বুনিতে লাগিলেন। হঠাৎ তাহার তন্দ্রা
পাইয়া বসিল। এই তন্দ্রাবস্থাতেই তিনি দেখেন যে, রাসূললুল্লাহ্ (সাঃ)
তাহাকে নির্দেশ করিতেছেন, “হে সৈয়দ! তুমি কি করিতেছ? তুমি তোমার মুর্শিদের
অনুমতি ছাড়া দরবার ত্যাগ করিয়া মহা ভুল করিয়াছ, অবিলম্বে দরবারে
ফিরিয়া যাও এবং মুর্শিদের নিকট ক্ষমা চাও”। আদেশ শুনিয়া সৈয়দ সাহেবের
তন্দ্রা ভঙ্গ হইল এবং কাল বিলম্ব না করিয়া পূনরায় গোয়ালন্দ হইতে
ষ্টিমারে চড়িয়া দরবার শরীফে পৌঁছাইলেন। ইতিমধ্যে দরবারে জানাজানি হইয়া
যায় যে, সৈয়দ সাহেব বাবা জান ক্বিবলার বিনা অনুমতিতে দেশে চলিয়া
গিয়াছেন।
সৈয়দ সাহেব বিশ বৎসর পূর্বে নবী করিম (সাঃ) এর নির্দেশে
স্ত্রী-পুত্র, স্বজন-বান্ধব ত্যাগ করিয়া সুরেশ্বর আসিয়াছিলেন, বিশ বৎসর
পর হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলার অনুমতি ছাড়া তাহাদের সহিত দেখা করিবার
উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়া পূনরায় হুজুর (সাঃ) নির্দ্দেশে মাঝ পথ হইতে
দরবারে ফিরিয়া আসিলেন। কিন্তু সৈয়দ সাহেব ভীষণ লজ্জা ও দ্বিধাদ্বন্দে
পড়িয়া গেলেন। মুর্শিদ ক্বিবলার অনুমতি ছাড়া ও সন্তানের মায়াতে তিনি
দরবার ত্যাগ করিয়াছেন। কি করিয়া মুর্শিদকে মুখ দেখাইবেন, তাই তিনি
চুপিসারে দরবারে ফিরিয়া আসিয়া নিজের ঘরে এক রকম গোপন হইয়া রহিলেন।
সকাল
বেলা হযরত সুরেশ্বরী বাবা দরবার প্রাঙ্গনে বসিয়া ভক্তদের নিয়া ধর্মীয়
আলোচনা করিতেছিলেন। কথা প্রসঙ্গে সৈয়দ সাহেবকে ডাকিয়া আনিবার জন্য একজন
ভক্তকে হযরত নির্দেশ করিলেন। ইহাতে সকলেই বলিল, বাবা সৈয়দ সাহেব তো গতকল্য
অতি ভোরে দেশে চলিয়া গিয়াছেন। হযরত বলিলেন, যাইয়া দেখনা ইত্যবসরে
ফিরিয়াও আসিতে পারেন। ভক্তরা মনে মনে ভাবিল যে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায়
যাওয়া আসা ৩/৪ দিন সময়ের ব্যাপার। তিনি সবেমাত্র গতকল্য চলিয়া গিয়াছেন
তাহা হইলে কেমন করিয়াইবা এত তাড়াতাড়ি ফিরিয়া আসিবেন। কিন্তু তাহারা
যাইয়া দেখিল, সৈয়দ সাহেব ঠিকই ব্যাথিত হৃদয়ে ঘরের কোনে বসিয়া
চিন্তামগ্ন অবস্থায় অশ্রু বিসর্জন করিতেছেন। আচানক ত্বরিকতের ভাইদের
দেখিয়া সৈয়দ সাহেব একটু চমকাইয়া উঠিলেন। তাহাদের মুখে বাবা স্মরণ
করিয়াছেন, শুনিয়া আরো শংকিত হইয়া গেলেন। ভয়ে অশ্রু শুকাইয়া গেলেও
তাঁহার মধ্যে কান্নার গোমট ভাব লক্ষ্য করা যাইতেছিল। এমতাবস্থায়ই সৈয়দ
সাহেব আসিয়া হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলার পদপ্রান্তে লুটাইয়া পড়িয়া অঝোরে
কাঁদিয়া বলিতে লাগিলেন, “বাবা অপরাধ করিয়াছি। আমাকে মাফ করিয়া দিন, আমি
আর কোন দিন বাড়ি যাইব না”। তখন হযরত বলিলেন, “হে সৈয়দ সাহেব! আপনাকে
গোয়ালন্দ ট্রেন ষ্টেশন হইতে আল্লাহর হাবীব নবী করিম (সাঃ) ফেরৎ না
পাঠাইলে, আপনি তো বাড়িতে না যাইয়া ফেরত আসিতেন না”। নবী করিম (সাঃ) এর
স্বপ্নের নির্দেশ হযরত সুরেশ্বরীর পাক জবানে শুনিয়া সৈয়দ সাহেব আরও অধিক
অস্থির হইয়া চিৎকার করিয়া কান্নায় ভাঙ্গিয়া পড়িলেন এবং মাটিতে
গড়াগড়ি যাইতে লাগিলেন। মুর্শিদের প্রতি প্রেমাবেগ, বিশ্বাস ও ভক্তি আরও
বহুগুন বাড়িয়া গেল। হযরত সুরেশ্বরী বাবা উক্ত মজলিস ত্যাগ করিলে অন্যান্য
পীর ভাইদের নিকট ভরা মজলিসে তাহার স্বপ্নের আনুপূর্বিক ঘটনা বর্ণনা
করিলেন। তাহার এই কাহিনী মুখে মুখে এতটাই বিস্তৃতি লাভ করিয়াছে যে,
সুরেশ্বর দরবার শরীফের শিশুচিত্তও জানে। জানা যায় সৈয়দ সাহেবকে সুরেশ্বরী
বাবা বাড়িতে যাইবার অনুমতি দেওয়া স্বত্বেও শাহ্ সূফী হযরত সৈয়দ সাহেব
আর কোন দিনই বাড়ি যান যাই। তিনি সুরেশ্বর দরবার শরীফেই ইন্তেকাল করেন।
হযরত সুরেশ্বরী বাবার পবিত্র রওজা মোবারক সম্মুখস্ত মাঠের পূর্ব পার্শ্বে
দরবার শরীফেরই একান্ত গোরস্থানে হযরত শাহ্ সূফী হযরত সৈয়দ সাহেবের পবিত্র
মাজার শরীফ রহিয়াছে।
এখানে আরো উল্লেখ্য যে, হযরত সৈয়দ সাহেব
বলিয়াছেন, তিনি বীরভূম হইতে আসিয়াছেন এবং সৈয়দ সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন।
তাহার ব্যাক্তিগত পরিচয় এবং নামধাম সম্পর্কে ইহার বেশী কিছুই জানা যায়
না। তবে তিনি যে সম্ভ্রান্ত পরিবার এবং সৈয়দ ধারার সাথে কোন না কোন ভাবে
যুক্ত ছিলেন, তা তাহার চালচলন, আচার আচরণ এবং হাব ভাব দ্বারা বুঝা যাইত। এই
জন্য হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা যেমন তাহাকে উঁচু নজরে দেখিতেন তেমনই
ত্বরিকতের ভাইরাও তাহাকে শ্রদ্ধা করিতেন। তিনি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)
এর নির্দেশে দরবারে আসিয়াছেন, ইহা সকলেই জানিত। এই জন্যও তাহার প্রতি
সকলের একটু অতিরিক্ত শ্রদ্ধাবোধ ছিল।
উল্লেখ্য যে, তের-চৌদ্দ বৎসর পর
প্রাকৃতিক কারণে সৈয়দ সাহেবের কবর ভাঙ্গিয়া গেলে সুরেশ্বরের আপামর জনতা
দেখিয়াছিলেন যে কবরের ভিতরে লাশ মোবারক যেমন ছিল অবিকল তেমনি রহিয়াছে। এই
ঘটনা সুরেশ্বরের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করিয়াছিল।
Thursday, September 25, 2025
সুরেশ্বরী ক্বিবলার নিকট মুরিদ হওয়ার জন্য নবী করিম (সাঃ) এর নির্দেশ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
কালামে সুরেশ্বরী
হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বা ছিলেন অত্যন্ত বুৎপত্তিময় কবি ও লেখক। তাঁহার রচিত বাংলা ও উর্দু কিতাবগুলি মারেফত রাজ্যের এক বিশাল ভান্ডার। গ্...
No comments:
Post a Comment