অনাগত ভবিষ্যতের শরিয়ত ও মা’রেফতের মহাকাশ জুড়িয়া যাহার বিচরণ ক্ষেত্র হইবে, সেই মহামানব, মা’শুকে মাহবুব হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বা (রাঃ)-র পৃথিবীতে আগমনের মহাবার্তা সকলের অজানা থাকিলেও তাঁহার নারীকুল আদর্শ স্থানীয়া মহীয়সি মাতা সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের অসীম কৃপায় গর্ভাবস্থাতেই সুসংবাদ প্রাপ্ত হইয়া ছিলেন। তাঁহার গর্ভস্থ সন্তান যে পৃথিবীতে আগমন পূর্বক একজন মহামানব তথা একজন মহান আউলিয়া হইবেন এবং যাঁহার সংস্পর্শ ও উছিলায় পথ ভ্রষ্ঠ মানুষ পথের সন্ধান লাভ করিবে, নিস্প্রভ মনের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হইবে, ধর্মের বিকৃত রাহুগ্রাসে আক্রান্ত ভয়াবহ তিমিরাচ্ছন্নতা হইতে সমাজ মুক্তি লাভ করিবে এবং ধরণী আল্লাহর ইশ্ক তথা প্রেমে জাগিয়া উঠিবে তাহা তিনি বিভিন্নভাবে এবং বহুবার জ্ঞাত হইয়াছিলেন।
বর্ণিত আছে, সুরেশ্বরী বাবা মাতৃগর্ভে থাকাকালে মাওলায়ে দো’আলম, সৃষ্টির সূত্র নবী সম্প্রাট হুজুর পূরনুর আহাম্মদ মোজতাবা মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) স্বপ্নে তাঁহার মাতাজান ক্বিবলাকে গর্ভস্থ সন্তানের কোতবেএরশাদ হওয়ার সুসংবাদ জানাইয়াছিলেন। হযরত খাজা খেঁজের (আঃ) স্বপ্নে তাঁহাকে জানাইয়াছিলেন যে গর্ভস্থ সন্তান তাঁহার বন্ধু এবং মারেফত গগনের পূর্ণ রবি হইবেন। হযরত মুসা কলিমুল্লাহ্ ও তাঁহার গর্ভস্থ সন্তান সম্পর্কে অনুরূপ সুসংবাদ জানাইয়াছেন। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় তিনি দো’জাহানের নারীকুল শিরমণি হযরত মা ফাতেমা (রাঃ), সর্দারে আউলিয়া গাউসুল আযম হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ), সুলতানুল হিন্দ খাজায়ে খাজেগা গরীবে নেওয়াজ খাজা মাইনুদ্দীন চিশ্তী (রাঃ), হযরত বাহাউদ্দিন নকশেবন্দী (রাঃ) স্বপ্নে তাঁহার গর্ভস্থ সন্তানের জগদ্বিখ্যাত আউলিয়া হইবার সুসংবাদ জানাইয়া ছিলেন। ইহা ছাড়াও তিনি হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বা গর্ভে থাকা কালিন বড় বড় অলি আউলিয়া আম্বিয়া (আঃ) দেরকে স্বপ্নে দর্শন করিতেন। একদা তিনি স্বপ্নে দেখিয়াছিলেন যে আকাশের পূর্ণচন্দ্র তাঁহার কোলে উদয় হইতেছে।
সবচাইতে আশ্চর্যের বিষয় হইল যে, বাবা জানুর জন্মের সময় তাঁহার মাতা স্বাভাবিক প্রসব বেদনা টুকুও অনুভব করেন নাই। বাবা জানু ভূমিষ্ঠ হইবার সঙ্গে সঙ্গেই আপন গর্ভের মা’রেফত রবিকে স্বাগত জানাইবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষয়মান মহীয়সি মাতা আবেগের আতিশয্যে বিসমিল্লাহর সহিত শুকরিয়া আদায় করিয়া সন্তানের হেফাজতের জন্য মোনাজাত করিলেন।
অতঃপর বড় বড় আম্বিয়া (আঃ), সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এবং উঁচুস্তরের অলি গণের ভবিষ্যত বাণী সমূহকে শিরতাজ করিয়া কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানবকুলের মুক্তি পথের দিশারী হইয়া আল্লাহ্ পাকের সীমাহীন মেহেরবাণীতে বাংলা ১২৬৩ সনের ২রা অগ্রহায়ণ সোমবার সোবহে সাদেকের সময় ভুবন আলোকিত করিয়া বাবা জানু মাতৃক্রোড়ে আগমন করিলেন।
No comments:
Post a Comment