Sunday, September 28, 2025

ছফিনায়ে-ছফর

সূচি
ছফিনায়ে ছফর ৩৫৮
দোয়া দান আদান প্রদান ৩৬১
নবী সাহেব কবর হইতে ফায়েজ প্রাপ্তি হইতেন ৩৬৬
কবরের এলাকা ৩৬৯
মরণ লক্ষণ ৩৭৪
কবরে জিন্দা করা ৩৭৫
দাফন করার পর মুর্দারের বিবরণ ৩৭৭
তাজিম গোর ওয়াজিব ৩৭৮
মদদে কবর ৩৮২
মদদে রূহানী ৩৮২
দর্গা ও মঞ্জেল ৩৮৯
নোয়াখালীর অন্তর্গত ৩৯৭
ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত ৩৯৭
মোর্শেদ কবর উদ্ধার সঙ্গের সঙ্গি ও রাহাদার ৩৯৭
বিরহ ৪০৭
আদিতন ৪১০
হযরত ফতেহ্ আলী ওয়াইসী (রহঃ) এর ইহধাম ত্যাগে বিরহ ৪১৫
মোর্শেদী ৪১৮
পীরের অনুগ্রহ আশ্রয় করা কি? ৪১৯
মোর্শেদ কি? ৪১৯
তাছির কি? ৪১৯
মুরীদ কি প্রকারে সেই গুণ সত্য বলিয়া স্থির করিবে ৪১৯
কেতাব দেখিয়া মুরীদ বানান যায় কি না? ৪২০
স্বপ্নের কথা কি সত্য? ৪২১
মোর্শেদ স্বপ্নে কোন আদেশ করিলে তাহা যথার্থ কি না? ৪২১
নিশান হযরত ইমাম মেহেদী ৪২১
চন্দ্র গ্রহণ আর সূর্য গ্রহণ ৪২২
তন ও মন মাঝে যে সকল ফল বর্তমান তাহার দলিল কোরান ৪২৩
কবরের পরিমাণ ৪২৫
কবরের হেজাব ৪২৬
জানাজা নামাজের নিয়ত ও দোয়া (নিয়ত) ৪৩১
নামাজের বয়ান ৪৩১
আয়নায়ে ছালাত ৪৩২
আয়নায়ে কুতবী ৪৩২
আয়নায়ে খোদা নামা ৪৩৩
ছজুদা দুই কেন? ৪৩৩
রূকু কেন? ৪৩৪
দো রেকাত কেন? ৪৩৪
বসা কেন ৪৩৪
অয়নায়ে আলম ৪৩৪
চার রাকাত কেন ৪৩৪
রোজার বয়ান ৪৩৫

سفينه سفر
ছফিনায়ে ছফর
শুভকালে শুভদিনে শুভ নিরাঞ্জন।
লোভ রস রসনায়ে সুধা আস্বাদন ॥
বন্ধুসনে বন্ধু আত্মে দিয়ে মন মান।
গাইও কুকিল রবে তাঁর গুণগান ॥
হেরিও তাঁহার কায়ে জ্যোত সমুজ্জ্বল।
দর্পণ যাহার হৃদ হয়েছে বিমল ॥
ইসলামের নূর জ্যোতিঃ যাঁহার বদন।
হেরিবে চক্ষের পোতে ঘষিলে অঞ্জন ॥
অঞ্জন চক্ষের খুবি মঞ্জেলে আম্বুর।
ইয়াদে হোছেনে লায়লী আরশ কাংকুর ॥
প্রভাত ছেতারা কলি খেলিল যখন।
রায়হান বিলাসে গুঞ্চা হাসিল গগণ ॥
আঁখির কাজল হেরে চটক বিলাস।
সম্বন্ধ যাহার সনে মন অভিলাস ॥
হাস হাস হাস কলি রঞ্জিত খঞ্জনে।
গাইও মধুর গান রসনা রসনে ॥
সোহাগে রঞ্জন কর মধু লভিবার।
মধুকর মধু স্বাদে দাড়িম্ব আনার ॥
হইও আতর গন্ধ সালামের নূর।
ফেরত আসুক তান আওয়াজ বন্ধুর।
قوله تعالى – قل ما انفقتم من خير فللوا لدين
والا قوبين و اليتمى و المساكين و ابن السبيل
নেক চিজ নেক কাম কর নেক দান।
মাতা পিতা আত্মজনে সেই শানমান ॥
এতিম মেছকিন আর মোছাফের তরে।
খায়ের হালে নেক দেলে দেখিও নজরে ॥
ভালাই এহ্ছান নেকে করিও আদর।
এহ্ছান ওয়াজিব কোরান ভিতর ॥
قوله تعلى – وبا الوالدين احسانا وذى القربى
واليتمى والمساكين وقولوا للناس حسن ا
মা বাপ এগানা আর এতিম মেছকিন।

নেক বোল নেক দোয়া লোকে নেক চিন ॥
মা বাপ এগানা আর এতিম মেছকিন।
মোছাফিরে এহ্ছানী কোরানে একিন ॥
মা বাপের এহ্ছানী খোদার ফরমান।
হর হালে কোনমতে নাহিক এড়ান ॥
এতিম এছির আর রাহাগির তরে।
এহ্ছানি ওয়াজিব কোরান ভিতরে ॥
রাহাগির হন কিন্তু মা বাপ যখন।
এবনেচ্ছাবিল বটে তাঁহারাই হন।
মা বাপ রাস্তায় যদি হন মোছাফির।
ফরজন্দান কোন দেশে নিজে রহে স্থির ॥
তারপরে দোহুকুম ওয়ারেদ হয়।
খেদমত এহ্ছান যারে কোরানেতে কয় ॥
এতিম এছির হালে হলে মাতঃ পিতঃ।
ওয়াজিব ফরজন্দানে খেদমত ত্বরিত ॥
চার পাঁচ এহ্ছানে দরজা আদায়।
একস্তর হয় যদি রূধাত কোথায় ॥
পাঁচ হুকুমের মানি করন আদায়।
পাঁচ দরজা একস্তর হয়েছে যথায় ॥
মাতা পিতা তাঁরা যদি হন কয়দী হালে।
এছীর তাঁহার নাম হবে কিন্তু ফলে ॥
মুছাফের হালে কিন্তু হইবে যখন।
এবনেচ্ছাবিল নাম হইবে তখন ॥
মেছকিন এতিম হালে হইলে আবার।
এতিম মেছকিন নাম হইবে তাহার ॥
খেস কুটম্বের হাল উপস্থিত যাঁর।
জীল কোরবা বলে নাম হইবে তাঁহার ॥
পাঁচ নামে পাঁচ শান পাঁচ জন হয়।
হতে পারে একজন পাঁচ শানে রয় ॥
পাঁচ নৈলে চার হবে চার নৈলে তিন।
দুই একে কদাচন না হইবে ভিন ॥
জিন্দেগীতে ছিল যবে সুখের বাসর।
এহ্ছানীতে করিতেন মা বাপে আদর ॥
জিন্দেগী আখের হলে পৌছিবে কবর।
মুছাফের হাসরের দারাজ ছফর ॥
জিন্দেগী আখের হলে পৌছিবে কবর।
কয়েদ কবর মধ্যে লাগাত হাশর ॥
জিন্দেগী আখের হলে পৌছিবে কবর।
এতিম মিছকিন নহে তার বরাবর ॥
কে করিবে এহ্ছানী তখন তাহার।
কেবা আছে কোন ঠাঁই হেন ওফাদার ॥
কে দেখিবে তার দুঃখ কে হেরিবে তারে।
কোথা আছে হেন বন্ধু এভব মাঝারে ॥
রাখিয়া এ ভবপুরী চলিনু ছাড়িয়া।
কেবা জানে কোন দেশে কোথা রব গিয়া ॥
কোন দেশে ঠাঁই হবে কোথা বাড়ী ঘর।
কে জানে কি ঐ দেশে আত্ম নহে পর ॥
এগানা বেগানা আর ছাড়িয়া সকল।
কে জানে কি কোন ঠাঁই আমার আজল ॥
কি আছে কপালে লেখা কেবা জানে তায়।
দেহ ছেড়ে প্রাণ পাখী কেন চলে যায় ॥
এ দেহ মাটির ঘর জাগীর মাটির।
আছিল পালঙ্ক নিশি বিছান পাটির ॥
কে জানে কি এই দেহ রহিবে কোথায়।
দেহ ছেড়ে প্রাণপাখী কেন চলে যায় ॥
একেলা আসিনু আমি একা চলে যাই।
অসার আমার সার আর আশা নাই ॥
যেন বৃক্ষ স্বাভাবিক না পারে দুলিতে।
না পারে চলিতে পদ না পারে বলিতে ॥
এইরূপ এতিম এছীর হয় যারা।
লাচারিতে হেলিতে দুলিতে নারে তারা ॥
তাই বলি আলম স্বভাব ত্যাগে যেই।
এতিম এছীর হতে শত গুণে সেই ॥
কবরের কারাগার হারে কি বিষম।
স্মরিলে যাহার নাম ঝংকারে পশম ॥
মরিতে না চাহে কেহ মরিতে না চায়।
ছাড়িয়া কি ভব খেলা প্রাণপাখী যায় ॥
এ সুখ আলম দ্বীপে বেলওয়ার পাঞ্জরে।
মুহূর্তে কি তার সাধ পারে ভুলিবারে ॥
মাতা পিতা ভাই বন্ধু ত্যাগিয়া সকলে।
কেমনে যাইব কোথা প্রাণপাখী বলে ॥
একেলা যাইয়া আমি রহিব কোথায়।
কি হবে আমার গতি কি হবে উপায় ॥
দুলাল হইয়া যদি পারি রহিবার।
ছাড়িয়া আমাকে দাও কছম তোমার ॥
ছিড়িলে হায়াত ডুরী ডুবে যাবে তরী।
বাঁচিবার আশা নাই আহা মরি মরি ॥
এ গরল চিত্তে হবে কবর যাহার।
শত কারাগার হৈতে কারাগার তার ॥
এর বেশী এতিম আর নহে কদাচন।
এর বেশী দুঃখী আর নাহি কোন জন ॥
শত সুখী হৈলে সেই দুখের সাগরে।
এভব জুদাই দুঃখ সহিবারে নারে ॥
তন কাঁদে মন কাঁদে প্রাণ কাঁদে আর।
জুদাই দাপটে অঙ্গ করে হাহাকার ॥
ঝাঞ্জীর ছিদ্রের ন্যায় ছেদিয়া পাঞ্জর।
জোয়ারে উথলে যেন বানেতে সাগর ॥
নবী অলী সাধু জন এ ভবেতে যারা।
আখেরে জুদাই রোলে কাঁদিলেন তাঁরা ॥
তাই এবে তাঁহাদের করিয়া স্মরণ।
আশীর্বাদ অভিলাষে সদা দিও মন ॥

দোয়া দান আদান প্রদান

এবে যারা আশীর্বাদে অনিত্য ভাঞ্জন।
উদ্ধারিতে তাঁহাদেরে করিও স্মরণ ॥
এহ্ছান মালী কিম্বা এহ্ছানী বদন।
আরাম পাইবে তায় মুর্দা দুঃখীগণ ॥
মালের ছওয়াব আর নেক বদনের।
মুর্দারে পৌছান তাহা হাদীসে জেকের ॥
জিন্দা লোক মুর্দাগণে সওয়াব রেছানী।
আজাব হইবে কম পৌছিবে এহ্ছানী ॥
যাহার আজাব নাই কবর মাঝার।
কিম্বা সেই কোন কালে নহে গুণাগার ॥
তারে যদি ছওয়াব রেছান কোন জন।
হাছেল এনাম তার বুজুর্গি কারণ ॥
কিন্তু যে এহ্ছানী করা হুকুম আল্লার।
এতিম এছির জিন্দা কিম্বা যে মুর্দার ॥
বিষম কঠিনে যেই হন গ্রেফতার।
এহ্ছানী লাজেম চাই তেমন তাহার ॥
তাই নবী করিতেন কবরে গমন।
বদন ভরিয়া নূর লইয়া আপন ॥
রৌশন করিয়া লিত অজুদ চেরাগ।
পশর করেন তাথে কবরের বাগ ॥
আন্ধার কঠিন ঠাঁই করেন উজ্জ্বল।
হেদায়েত নূর যার অজুদ জামাল ॥
অজুদের নূর তান অজুদের ঘর।
হেদায়েত বাতি নূরে করেন পশর ॥
এহ্ছানী নেক তার তামাম বদন।
নিয়ত একিন যার আলম রৌশন ॥
সেই কেন কষ্ট হেতু কবরে গমন।
কিন্তু দোয়া করিবারে মুর্দারের কারণ ॥
যাবত জীবন দুঃখ হেরিয়া মুর্দার।
কবরে গমন তান দোয়া করিবার ॥
এইতো এহ্ছান তান এহ্ছান রব্বানী।
দুঃখে দয়া খোদাতালা প্রকাশে আপনি ॥
ويطعمون الطعام على حبه مسكينا ويتيما واسيرا
এতিম মিছকিনে তাম দিও বন্ধীগণে।
খেলাইবে বান্ধাগণ বন্ধু হেন মনে ॥
মহব্বত সঙ্গে তারে খেলাইবে খানা।
বন্দীগণে আদরেণ এলাহি রব্বানা ॥
বন্দীগণে কবরের করিও স্মরণ।
তুমিও কবরে যাবে হইলে মরণ ॥
তুমি যদি এ সময় স্মরিবে তাহায়।
তোমার কবরে বান্দা স্মরিবে তোমায় ॥
অতএব নবিবর স্মরণে মুর্দার।
কবরেতে যাইতেন দেখা করিবার ॥
প্রথমে যাইয়া তিনি করিত সালাম।
পরে আর মুর্দা সঙ্গে করিত কালাম ॥
তোমরা চলিয়া এলে ছাড়িয়া সংসার।
আমরা আসিতে আছি পিছনে তোমার ॥
তোমাদের যেই দশা হয়েছে এখন।
আমাদের সেই রূপ হবে পরক্ষণ ॥
তোমরা আছহ এবে কয়েদ কবরের।
আমিও তোমার মত হইব আখের ॥
মাটিতে মিশিছে তব মাটির পঞ্জর।
ভাবিতে তোমার ন্যায় হবে নারী নর ॥
তোমাদের যেই দশা হৈয়াছে এখন।
ক্ষণেকে আমার দশা হইবে তেমন ॥
قوله تعالى -منها خلقنا كم وفيها نعيدكم
ومنها نخرجكم تارة اخرى
মাটি হতে তোমাদেরে করিনু সৃজন।
আবার মাটিতে সবে করিবে শয়ন ॥
সে মাটি হইতে পরে উঠাব তোমায়।
পুনর্বার কেয়ামতে দেখিবে তাহায় ॥
গভীর দুঃখের বাণী মরণ নিশান।
কোরানেতে দয়াগুণে বলেন এহ্ছান ॥
তাই তুমি আদরিও হেন রাহিগণে।
আদর করিও আর গরীব অতনে ॥
ভাই বন্ধু কবরেতে নাহি কোন জন।
এতিম মিছকিন হালে আপনি আপন ॥
দমে দমে তাহাদেরে স্মরণ করিও।
হর হালে কবরেতে নজর রাখিও ॥
দিনে দিনে তাহাদেরে দিও দোয়া দান।
মাসে মাসে সালে সালে রাখিও ধেয়ান ॥
ছদকা রাখিও জারি ধার্য্য করে দিন।
সকলে মিলিয়া তায় করিবে আমিন ॥
তায়েন রহিল দিন দেশ দেশান্তরে।
মিলিত হইয়া কার্য্য করিবারে পারে ॥
ছোট বড় জমাতের সকলে মিলিয়া।
কবরে করিবে দোয়া মুর্দার লাগিয়া ॥
তাই অলী আউলিয়ার ফাতেহা নেয়াজ।
সর্বদা আছেন জারি পৃথিবীর মাঝ ॥
তাই নবী পয়গাম্বর হাবিব আল্লার।
দিন ধার্য্য করিলেন আমির হামজার ॥
দশ আর বিশ দিন রোজ চল্লিশার।
ছঃ মাহা ফাতেহা জারি আর সালিয়ানার ॥
হাদীসে সোয়াব নেক নাহিক বারণ।
সামনে ফতওয়া মাঝে দেখ সর্বজন ॥
ছাওয়াব করিলে বন্ধ করিয়া এঙ্কার।
মুর্দার আজাব হয় নাহি দেখ তার ॥
আজাব দেখিবে কেনে চক্ষু রৈতে কানা।
আন্দাজে লাঠির ভরে না দেখিয়া মানা ॥
কিন্তু যদি দেখিতেন আহওয়াল মুর্দার।
কোন হালে মালুম হইয়া যেত তার ॥
কিম্বা যদি দলিলের দেখিত অছুল।
হরগেজ এমন কামে না করিত ভুল ॥
কিম্বা যদি আউলিয়ার জানিত কারণ।
কখন নেকের কাজে না রৈত বারণ ॥
কিম্বা যদি জানিতেন রূহু ভেদাভেদ।
কখন নেকের কাজে না করিত জেদ ॥
কবর আজাব আর কবর রাহাত।
রাহাতন্নাছের জন্য এই নেক বাত ॥
নেক লোক করিলেন পছন্দ নেকের।
বানালেন হরকাম আল্লা ইয়াদের ॥
যে কাম করুন নেক ছওয়াব তাহায়।
যে ছুরতে যে হালেতে করেন আদায় ॥
তাই আল্লা ফরমিলেন ডউল (ছুরত) নেকের।
খাড়া বসা সোয়া হালে আমার জেকের ॥
দমে দমে হরকামে হরেক ছুরতে।
হর হালে নেক কাম কর হর বাতে ॥
قوله تعالى – قل كل يعمل على شاكلته
কহ নবী লোক দিকে আমল করিতে।
আমল করেন যেই আপন ডৌলেতে ॥
যেমন আমল যার ছুরত তেমন।
নেক লোকের নেক কামে হরেক গঠন ॥
গঠনেতে নানারূপ আমলেতে নেক।
বাতেনেতে নেক তার জাহেরে প্রত্যেক ॥
বাতেন কলব চাই নেকের দরকার।
যথায় দেলের নেক দলিল তাহার ॥
নেক দেলে নেক আমল উহার দলিল।
হাদীস তাহার দেল নহে কাল কিল ॥
كذا فى عين العلم استفت عن قلبك وان افتك الفتون
নেক দেল কলবেতে ফতওয়া তলব।
যদ্যপি করেন মানা মুফতিগণ সব ॥
নেক লোকের দেলে নূর দলিল তাহার।
বেনূর লোকের তার নাহি দরকার ॥
কোরানে আসল তার হেদায়েত নূর।
নেকের আছর সেই কলবে জহুর ॥
তাই প্রভূ ফরমিলেন কোরান মাঝার।
কোরান জেকের হয় কলব যাহার ॥
নেক লোকের দেল মধ্যে ঠাহরে কোরান।
দলিল তাহার এই কলবের শান ॥
নেক লোকের দেল নূরে হেদায়েত নূর।
কোরানের হেদায়েত যাঁহার জহুর ॥
তাই আল্লা ফরমিলেন কোরানের শান।
হেদায়েত নূর নহে কাগজ কোরান ॥
قوله تعالى : قل من انزل الكتاب الذى جاء به موسى
نوراوهدا للناس تجعلونه قراطيس تبدونها وتخفون كثيرا
কহ নবী কে ভেজিল মুসা সনে নূর।
হেদায়াত সেই নূর তৌরাতে জহুর ॥
হাকিকত তৌরাতের কলব মাঝার।
হেদায়াত যেই নূরে হয় নেককার ॥
লোকে তারে বানাইল কাগজের ছাপা।
ওরক তুমার পড়ে বলেন মারহাবা ॥
মনমত বেশী করে কোরান ভিতর।
ছাপাইয়া গোপনেতে রাখে বহুতর ॥
শুনিতে কি তার কথা কহিছে কোরানে।
বরং সামেল সেই গাফেলের সনে ॥
قوله تعالى- ولا تطعم من اغفلنا قلبه عن ذكرنا
নাহি শুন তার কথা হও খবরদার।
গাফেল করিছি আমি কলব যাহার ॥
তাহার কপাট দেলে লাগা রৈছে তালা।
বেগর মোর্শেদে কুঞ্জি নাহি যাবে খোলা ॥
যাহার কলব নাই থাকিতে কলব।
বুঝিয়া না বুঝে সেই কথার মতলব ॥
দেখিয়া না দেখে সেই কোরানের বাণী।
মনে মনে বুঝে আমি আরেফ রব্বাণী ॥
এলেম আহওয়াল নূর কলব আন্দর।
তাই ব্যাখ্যা করিয়াছেন কোরান ভিতর ॥
قوله تعالى : ان فى ذلك لذكرى لمن كان له قلب تحقيق
اسمين ذكر اسكى لئى هى كه جسكى لئى هى قلب
কোরান জেকের হবে কলব যাহার।
কলব ব্যতীত নহে কোরান তাহার ॥
কলব আহওয়াল নাই যাহার তলব।
কোরান পড়েছে শুধু বুঝে না মতলব ॥
কেচিমেচি করে সেই কোরান বাতায়।
যাহা মুখে আসে বলে না ডরে খোদায় ॥
তাই রব ফরমিলেন বজ্জাতি বান্দার।
বেশী কমি করে কহে কোরান আমার ॥
হেন লোক ওফাদার নহে কদাচন।
তাই তারে চিনালেন প্রভূ নিরাঞ্জন ॥
তাই যারা ওফাদার কোরান মাঝার।
নাহি ভয় নাহি ডর শানে আসে যার ॥
নাহি ভয় চলনেতে নাহি ভয় শানে।
নাহি ভয় জাহেরেতে না ভয় বাতেনে ॥
قوله تعالى – الا ان اوليا الله ولاخوف عليهم ولاهم يحزنون
هشيا رتحقيق اولياء الله لو كون ير كوى ذونهبن اور نه اون ير كوئ غم طارى هوكا –
আউলিয়ার শরা যাহা আমল এছরার।
আওয়ামের শরা কোথা তাহার কেনার ॥
যাহার তরিক হয় তরিক রছুল।
চলিবে তাহার পন্থে না করিয়া ভুল ॥
তাহারাই দিয়া থাকে ফাতেহা নেয়াজ।
তাহারা সদায় করে মুর্দারের কাজ ॥

নবী সাহেব কবরের দুঃখে দুঃখী এবং
সুখে সুখী হওতঃ ঐ কবর হইতে
ফায়েজ প্রাপ্তি হইতেন

আর যদি নবীবর কবর আজাব।
দেখিতেন মনস্তাবে হ’তেন বেতাব ॥
আর যদি দেখিতেন কোন জনে খোশ।
কবরের খোশে আপে হতেন সন্তোষ ॥
কবরের নূরে নিজ হ’ত মুনওর।
যেমন প্রদীপে ঘর করেন পশর ॥
যেমন সুগন্ধি করে গোলাব আতর।
যদ্যপি রহিবে গন্ধ সঙ্গেতে অপর ॥
তেমনি কবর যার ফায়েজ রৌশন।
সেই ফায়েজ হইতেন নিজে ফায়দা মন ॥
যেমন পিতার সুখে সুখ ফরজন্দের।
তেমনি ফরজন্দ সুখে সন্তোষ বাপের ॥
অতএব জেয়ারত নবী আম্বিয়ার।
বেহেস্ত গোলজার নূর কবর আউলিয়ার ॥
কবর গোলজার যার নূর মুনওর।
সে নূরে চমক মারে আরশ উপর ॥
আরশ কান্দিল যার চমকের নূর।
মোকাম মাহামুদ সনে করিছে জহুর ॥
আউলিয়া আম্বিয়া আর সাধু আশেকান।
মকাম মাহ্মুদে যার অনিত্য মকান ॥
যথায় মকাম যার চমক তথায়।
দোজখের শান কান্তি বদনে দেখায় ॥
কোথায় দোজখ আর কোথায় বদন।
দোজখ চমক মারে বদনে কেমন ॥
তেমন বদন যার সুধা জ্যোতির্ময়।
আলম লাহুতে তাঁর সেই জ্যোতিচয় ॥
হেরিতে এছলাম নূর যার অধিকার।
ফুটিলে তাহার চক্ষু দেখে অনির্বার ॥
তাই তাহা সংক্ষেপেতে আদেশে কোরানে।
পেশানিতে আছর ছজুদ মোমিনানে ॥
আছে যার সে নিশান কবরেতে তার।
দেখিয়া চিনিবে তারে হাশর মাঝার ॥
যে নিশান বলন্দির উচা নূর শান।
উলিছে যাহার নূর কপালেরে চাঁন ॥
ঘষা মাজা ছজুদের দাগ নহে সেই।
ছেতারা বলন্দ যার কপালেতে এই ॥
হৃদি দেশে জ্যোত যার আছর আনওয়ার।
চেহারাতে জ্যোতি নূর চিক মারে তার ॥
আছর ছজুদ এই অজুদ বেলওয়ারে।
ছেতারা বুরুজে তার হৃদে জ্যোত মারে।
কবর আকাশ তার হইবে রৌশন।
আরশ মদির নূরে যেন সিংহাসন ॥
মাটির মন্দির তন আরশ আকাশ।
সুরুজ বুরুজে নূর হইলে প্রকাশ ॥
মুহূর্তে বলন্দ সেই হইবারে চায়।
কাননে অনল হেন চারি দিগে যায় ॥
যে দেশ যাহার দেশ জহুর তাহার।
আছর এলাকা তাঁর হয় অনির্বার ॥
তাই গোর আখেরের প্রথম কদম।
ছফর মঞ্জিল এই হাশর আলম ॥
আমল এখলাছ আর বন্দেগী আনওয়ার।
দ্বিগুণ হইতে রবে মুহূর্তে তাহার ॥
বেলায়েত নূর যার হুজুরি আনওয়ার।
হাশর মাহশর তক নিত্য দুনা তার ॥
যে বান্দার হবে শান এমত নছিব।
সে বান্দার এবাদত খোদার করিব ॥
দোন আলমের শান এবাদত তার।
যে কাম করুক কিন্তু বন্দেগী খোদার ॥
চলা ফিরা খানা দানা নিন্দ কিম্বা ঘুম।
এবাদত শানে তার খোদাই হুকুম ॥
রেজামন্দি বিনে তার কোন কাজ নাই।
খেজেরের শানে নেক বুরাতে ভালাই ॥
যে জন এমন জনে দিবে মন মান।
বদল তাহার শানে হবে নিজ শান ॥
যে জন এমন জনে করিবেন খোশ।
আছরে তাহার অঙ্গে মিটে যাবে দোষ ॥
যে জন এমন জনে রাখেন খবর।
ধরিবে তাহার শানে উছিলা আছর ॥
না ভুলিও হেন জনে না ভুল কখন।
পাইবে উছিলা তার আল্লার স্মরণ ॥
খাওন খেলান আর দেওন দেলান।
নিয়ত বরকত পান্থে পাবে মুক্তি দান ॥
খেদমতে রহমত তাঁর রহম আল্লার।
পাইবে বান্দার শানে এনাম বান্দার ॥
তিলে ফুলে তেল তায় তাছির আতর।
দূর হ’তে দান করে গন্ধ মনোহর ॥
করিম তুম্বার বদ নাহিক বিচারে।
পাইলে নাকের রন্ধ্র গন্ধ দেয় তারে ॥

    কবরের এলাকা

কবরের সাথে আছে এলাকা বাতেনী।
হাকিকতে মূল যার মোহিত রূহানী ॥
আরওয়া লতিফ নূর বাতাস অজুদ।
হাকিকত জিনিষের হামেসা মৌজুদ ॥
যেন হাকিকত রূহ্ জমিন মাঝার।
মজুদ রহিতে হয় সকলের সার ॥
ফুলে ফল ফলে জল রস আস্বাদন।
প্রত্যেকে প্রত্যেক রঙ্গে প্রত্যেকের তন ॥
একই মাটির সঙ্গে গুণ অবিচার।
অনন্ত মহিমা গুণ অনন্ত সংসার ॥
কে আছে মাটির গুণ গণিবারে পারে।
হেন জন কেবা আছে বলহ সংসারে।
যবে এ মাটির গুণ পারে না গণিতে
কেমনে রূহের গুণ পারিবে বুঝিতে ॥
শত গুণ আছে তাঁর শত গুণ তাঁর।
কিন্তু গুণ হাকিকত নবী আউলিয়ার ॥
রূহু গুণে গুনি কিন্তু জীব জন্তু যত।
বাছা রূহু নবী অলী সোনা রূপা মত ॥
কবরেতে নবী অলী রূহের তাছির।
প্রত্যহ মোহিত হালে এলাকা হাজির ॥
এলাকা আল্লার শানে এলাকা বান্দার।
মজুদ রহিতে হয় খাজানা ভান্ডার ॥
তাইত কবর হয় আল্লার মঞ্জুর।
যেমন গন্ধক সনে আগুন জহুর ॥
গন্ধকের সাথে যদি হয় মনিছাল।
আঘাতে আওয়াজ দেয় আপন উজ্জ্বল ॥
যে জিনিস যার সনে করিবে মিলিত।
দুগুণের এক গুণ শামীলে জড়িত ॥
গুণে গুণে শত গুণ গুণেতে হাজার।
এক হতে আর হয় আর হৈতে আর ॥
এসব রূহানী গুণ বাতিন তাছির।
প্রত্যেক অজুদে আছে রূহু পৃথিবীর ॥
নূর হবে নূরে যার নূর মন তন।
আচম্বিতে নূর তনু দিবে দরশন ॥
হবেন মস্কেল কোসা মস্কিল আছান।
মোদাব্বের নূর রূহু এই শান মান ॥
হতে পারে যেতে পারে প্রকাশ্য অজুদ।
মোদাব্বের রূহু নূর সদাই মজুদ ॥
মোদাব্বের নূর আত্মা অলী আম্বিয়ার।
সদায় জহুর করে পৃথিবী মাঝার ॥
আসে আসে করে নূর প্রকাশ জহুর।
হয় তনু নয় তনু তাজল্লির নূর।
মোজাহারে মোছবেতা হয় তনু তন ।
নেস্তি হতে হাস্তি শানে যেমন স্বপন ॥
ইহকাল পরকাল করিতে উদ্ধার।
উদ্ধারিবে মন দুঃখ হাশর মাঝার ॥
কবরেতে কান্তি নূর মোছবেতার সনে।
বন্ধু তাঁর রবে সঙ্গী কবর আসনে ॥
কেরামত হিত পথে হইয়া হাজির।
মোচন করিবে দুঃখ বান্দা এলাহির ॥
ইহকাল পরকাল অলী আম্বিয়ার।
দায়েম মোছবেতা শান জহুর যাহার ॥
আকাশ মেঘের ন্যায় জহুর তাহার।
ক্ষনে আছে ক্ষণে নাই হয় অনির্বার ॥
কেমন মেঘের গতি কেবা জানে তায়।
কিরূপে কেমনে ছিল আছিল কোথায় ॥
তেন রূপে অলী নবী মেঘ সনে শান।
গায়েব জাহের হয় আল্লার নিশান ॥
তাই স্বপ্নে, কাশ্ফে দেখে নবী অলী তরে।
এক সাথে এক রাতে শতেক হাজারে ॥
জামে নূরে লেখা গেছে রূহের সম্বন্ধ।
দেখিলে বুঝিবে তায় যেমন পছন্দ ॥
যে যেমন তে তেমন দেখে আম্বিয়ায়।
প্রত্যেক ছুরতে ছবি প্রত্যেক দেখায় ॥
মুহূর্তে হাজার ছবি কি রূপেতে হয়।
কোথা হতে কি ছুরতে কহ কি বিষয় ॥
حديث شريف – من رانى فقد راء الحق

যে দেখেছ মোর তরে সত্য দেখা সেই।
নবী অলী হকে হক্ব হাকিকতে এই ॥
আমাকে দেখিছে যেই সত্য দেখা তাঁর।
আমার দেখনে হয় দেখন আল্লার ॥
খাবে কিম্বা কাশ্ফে দেখে কিম্বা সে জাগনে।
সত্যই নবীর দেখা রাখা চাই মনে ॥
বল দেখি কি কারণে একই সময়।
শতজনে শতস্থানে দেখিবারে পায় ॥
নূর রূহ্ সর্বদা প্রকাশে সর্ব ঠাঁই
অপ্রকাশ জাগা তাঁর হেন জাগা নাই ॥
আনওয়ারে মোছবেতা এই রূহের বদন।
হতে পারে হর রঙ্গে সদা সর্বক্ষণ ॥
মোছবেতা জহুর যেন আগুন অজুদ।
হেন কোন জাগা নাই নাহিক মজুদ ॥
কাষ্ঠে কাষ্ঠে ঘষাঘষি জোরেতে আঘাত।
শিলে আর পাথরেতে মেঘে বজ্রাঘাত ॥
জাহের হইতে পারে তামাম আলম।
এইত মোছাবেতা গুণ নহে বেশকম ॥
ছাবেত জাহের যেই হইবারে পারে।
গায়েব হাজের নাই তাঁহার হুজুরে ॥
চেরাগ আগুন যেন নিবাইলে নাই।
আছে কিন্তু সেই ঠাঁই কিন্তু জ্যোত নাই ॥
মোজাহারে লাতায়েন বলে এর নাম।
থাকিতে সে নাই কিন্তু আজব কালাম ॥
যেই চিজ পৃথিবীতে হৈছে আর হবে।
কোন চিজে রূহু নাই বল দেখি এবে ॥
রূহুর সমষ্টি সার চিকন আসল।
দুধে নণি বীজে মনি ফুল মাঝে ফল ॥
রূহের রূহু যেই জাতে সেইত খোদা।
এলাকা আছর যার কভু নহে জুদা ॥
চিকণের চিকণ সেই সকলের মানী।
আমরে রব বলে তাই কোরানেতে ধ্বনি ॥
ফলে রূহ্ খোদা নহে হুকুম খোদার।
জাতের হুকুম রাখে জাত হৈতে তাঁর ॥
প্রথম দরজাতে হয় খোদার অজুদ।
দোছরা দরজাতে হয় আরওয়ার মৌজুদ ॥
দুধে নণি সার তাঁর ঘৃতে সার তাঁর।
গুণাগুণ জুদা নহে দোহের মাঝার ॥
উভয় উভয় গুণে পুষ্প আর বাস।
এক গুণে দুই গুণ শ্বাসেতে প্রশ্বাস ॥
তাই নবী হাদীসেতে শানে ও গুণের।
জ্ঞান গুণ ছুরতের জাত ছেফাতের ॥
حديث شريف- خلق الله ادم على صورته
নিজরূপে সৃজিলেন আদমের তরে।
ছেফাত মোছবেতা গুণ যাঁহার অন্তরে ॥
ছেফাত ছুরত পরে আদম ছুরত।
শান গুণ সেফাতের যাঁহার মূরত ॥
ছেফাত যাঁহার নাম গুণ বলে তারে।
শান গুণ না হইলে জাত হইতে নারে ॥
যেথায় মৌজুদ জাত মৌজুদ ছেফাত।
ছেফাত বিহনে কভু নাহি ঠরে জাত ॥
জাতেতে ছেফাত আর ছেফাতেতে জাত।
দোন মিলে এক সাথে ছুরত ছিরত ॥
ছুরত নহিক যার ছিরত তাহার।
কেমনে জাহের হবে বলহে আবার ॥
ছিরত জাহের হওয়া ছুরত দরকার।
ছুরত বিহনে জাত নাহি হইবার ॥
কিন্তু ছুরতের মানী নহে কদাচন।
জাহেরা অজুদ খালী আদমের তন ॥
তন তার পুরসার মোছবেতা জহুর।
দোন আলমের ছানা আদমের নূর ॥
খাছ গুণ সেই গুণ ছেফাত আল্লার।
যে ছেফাতে যে ছুরত সে ছুরত তাঁর ॥
তেমন ছুরত যার মোছবেতা জহুর।
তেমন অজুদ চাই হওন জরুর ॥
দোন আলমের বিচে যতেক ছুরত।
আদমের মত নহে কেহুর মুরত ॥
বুলন্দ ছেফাত জাত বলন্দির শান।
তাই বীজ অঙ্কুরেতে হয় বিদ্যমান ॥
যেই বীজের যেই গুণ সেই গাছ তাঁর।
জাহের হইল তরু ছিল নিরাকার ॥
নিরাকার রূপে যবে খোদার অজুদ।
আদম তাঁহার শান বাতেনে মৌজুদ ॥
হাকিকত আদমের হাকিকত তাঁর।
জাহের বাতেন তাঁর আদমের সার ॥
রূপেতে অরূপ কভু অরূপ ছুরত।
নিরাকার রূপ গুণ অরূপ মুরত ॥
আস্বাদের রূপ ছবি নহে কদাচন।
না থাকিলে স্বাদ গুণ সব অকারণ ॥
যার যেই রূপ গুণ তেমন জহুর।
জাগা গুণে রূপ কয় জাগা গুণে নূর ॥
স্থল গুণে নাই কয় স্থুল গুণে আছে।
আছে নাই এক ঠাঁই হাকিকত কাছে ॥
কবরের সাথে যথা এলাকা বন্দার।
ছাড়াইতে না পারিবে করিলে হাজার ॥
যথায় পরাণ পাখি করিবে গমন।
নেক বদ সাথে সাথে যাইবে আপন ॥
রূপে তনে দেখা যাবে তাহার আছর।
যেন কোন চিজ রহে বেলওয়ার ভিতর ॥
কিন্তু যবে রূহু আসে বদন বেলওয়ারে।
পেশানী ফানোশে তাঁর শান জ্যোত মারে ॥
আদম ছুরত পরে আদম ছুরত।
লা মহল এই বাক্য জবানী আদত ॥
যাহার ছুরত যার ছুরত তেমন।
এমত উত্তর নহে হবে কদাচন ॥
আদম তারিফ আর আদমের গুণ।
বুঝিবারে আদি কথা ছিল ধুনা ধুন ॥
যেকালে আদম জাত ওয়াহেদের জাতে।
গুণ জ্ঞান শান মান ছিল এক সাথে ॥
সেকালের আদি কথা হাদীসের সার।
জাহের বাতেন শান নাহি ছিল যার ॥
তখন খোদার জাতে আছিল আদম।
নৈরাকার এই মানী নহে বেশকম ॥
এরাদা আলমে নহে হয় নৈরাকার।
এরাদা ছেফাত হয় বাহের তাহার ॥
এরাদা জাহের হয় যেই শান পরে।
মোছবেতা তাহারে কয় গুণ অনুসারে ॥
মোছবেতা জাহের হওয়া গুণ আর শান।
পয়দা বলিয়া যারে কহে বিদ্যমান ॥
পেয়েছে খোদার গুণ হয়েছে খোদার।
মৌজুদ খোদার গুণ রহিবে তাহার ॥
قوله تعالى – قل كل من عند الله
কহ নবী যথা যত জগত মাঝার।
খোদা হতে হইয়াছে সকলি খোদার ॥
জাত হৈতে জাত পয়দা নূর হৈতে নূর।
শান গুণ ছেফাতের মান ভুরা ভুর ॥
বহু ছেফাতের যোগে বলায় ছুরত।
তখন মৌজুদ জাতে দেখায় মুরত ॥
জহুর জাহের আর পয়দা কহে তারে।
তাজল্লি বলিয়া কভু নাম হয়ে পড়ে ॥
খোদার গুণের সার জাহের আদম।
মখলুক তাহার নাম নহে বেশকম ॥
এই জন্যে মখলুকেরে বান্দা বলা যায়।
বান্দা পদে ধরা কিন্তু না জাবে খোদায় ॥
আদম হইতে পয়দা হইলে খোদার।
আদমের বান্দা সেই হইত প্রচার ॥
যার বান্দা তার গুনে গুণি বান্দাগণ।
তাঁর রঙ্গে তাঁর ঢঙ্গে তাঁর তনে তন ॥
তাই তাহা সার বাক্য আদেশ কোরানে।
সকল হইবে রুজু আসলের পানে ॥
قوله تعالى- كل شئ يرجع الى اصله

   মরণ লক্ষণ

মুর্দা বেরাম যেই মউত বিমার।
তারপরে নেগাদারী কর বারে বার ॥
মরণ নিকটে হয় মন পেরেশান।
খসিয়া পড়িতে রহে জিন্দেগী নিশান ॥
বদনে আদিম সার নিকলিয়া যায়।
অধৈর্য্য নিরস হয় সেই মন ঘায় ॥
শুনিতে না পারে সেই কেহর বচন।
এত নূর মন গেলে হইবে মরণ ॥
মরণ বিলাস করে অন্তরে যাহার।
দিনে দিনে তনু ক্ষয় হয়ে যায় তার ॥
কমিবে হাটুর বল বাড়িবে চঞ্চল।
দিন দিন শরীরের কমে যাবে বল ॥
যে দেশের মনপাখী সে দেশে যাবার।
আকাক্সক্ষা চঞ্চলে চাহে সদা উড়িবার ॥
কাঙ্কুরা খসিয়া গেলে ভেঙ্গে যাবে ঘর।
নিভিলে দীপের বাতি রবে না পশর ॥
যাহার আদিম ঘর ভাঙ্গা গেছে আগে।
বুঝিতে না পারে সেই অনুরাগ রাগে ॥
চক্ষু মুখ টলে যাবে নাভি টলে ধির।
জমের মুরলী ধার হইবে বাহির ॥
কর্ণ নাসা কান্তি ভঙ্গ বিলাস আসন।
খসিলে তারের মুখ হইবে মরণ ॥
যাইবে সঙ্গের সাথী দেখিবে স্বপন।
ভাই বন্ধু এ স্বপনে হবে অনে¦ষণ ॥
যাইবে সঙ্গের সঙ্গী সঙ্গী হামজাদ।
ঘুচিবে অরূচি মধু রসনা আস্বাদ ॥
সে সময় তারে সবে করিও আদর।
ইয়াদ আল্লার নাম তার বরাবর ॥
গুণা মাফ তৌবা করে খোদার দর্গায়।
সকলে মিলিয়া দোয়া করিবে তাহায় ॥

কবরে জিন্দা করা

কবরের জিন্দা করা রূহের সম্বন্ধ।
যেমন বিজলী বাতি কথা নহে মন্দ ॥
তারে আসে তারে যায় তারের খবর।
মুহূর্তে আলোক হয় তামাম শহর ॥
এই রূপ রূহু সনে মোছবেতা জহুর।
হাজার আঞ্জির দানা এক বটে নূর ॥
শতেক বৃক্ষের বুটি রূহু দানা সার।
এক হতে আর হয় হাজারে হাজার ॥
জিন্দেগী জহুর পন্থে যার জেন্দেগানী।
যথায় যেরূপ জিন্দা একি তার মানী ॥
তনে জিন্দা রূহু সনে বেলওয়ার অজুদ।
মন জিন্দা কুল আলম সম্বন্ধ মৌজুদ ॥
সম্বন্ধ রূহের জিন্দা তনের স্বপন।
সে সম্বন্ধ দুনিয়ার বাচন মরণ ॥
রূহের মরণ নাই জহুর সম্বন্ধ।
দুঃখ সুখ তাঁর সাথে একই পছন্দ ॥
তনে সুখ যেইরূপ মনের আছর।
মনে সুখ মন তনে তন বরাবর ॥
তন্মধ্যে তন পুশিদা তনের ভান্ডার।
এক তনে শত তন তামাম সংসার ॥
যত তন খাইয়াছ পেটের মাঝার।
সেই তন তনে গোর হইবে তোমার ॥
মাছ মাংস দুম্বা ভেড়া পোনা মীন যত।
তব পেটে গোর তার হবে শত শত ॥
সে গোর তোমার পেটে হইবে যেমন।
তুমিও বাঘের পেটে হইবে তেমন ॥
তুমি কি একেলা যাবে একেলা কবর।
তব তন কবরেতে শত তন ঘর ॥
শত পরাণীর তুমি হয়েছ কবর।
সুখ দুঃখ তাহাদের তোমার ভিতর ॥
তুমি যদি সুখ দিয়া থাক তাহাদেরে।
পাইবে তুমিও সুখ কবর ভিতরে ॥
মগ কুকী পাহাড়েতে যারা সাপ খায়।
হিসাব হবে না বুঝি বুঝেছ তাহায় ॥
হিসাবের কালে সাপ নেকলিবে যবে।
কবরেতে সেই সাপে তারে নাহি খাবে ॥
খাইয়াছে যারে যেই দাইক তাহার।
কাটিবে তাহারে হয়ে সাপের আকার ॥
যেই যাহা করিয়াছ গ্রহণ ভোজন।
নেয়ামত আশীর্বাদে করিও শোধন ॥
বদন কবরে তাই তাহাদের সুখ।
আরাম পাইবে তবে আল্লার মুল্লুক ॥
ছওয়াল কবরে তবে হইবে না দায়।
আবাদ মুল্লুকে ডর রহিবে কোথায় ॥
ইনসাফ রব্বানী সনে আবেদের ঘর।
তাহুত ছোলতানী কবে আসে তারপর ॥

দাফন করার পর মুর্দারের যে অবস্থা
হয় তাহার বিবরণ

মাটি দিয়া মুর্দ্দাগণে আসিবে যখন।
রূহু দিলে জিন্দা দেহ হবে পরক্ষণ ॥
ছুটিয়া যাইবে তার ঘুমের খোমার।
চক্ষু মোছে আঁখু পাখু করে বার বার ॥
বেলা যেন অস্ত যায় দেখে তৈল রূপ।
সন্ধ্যা হল দিবাগতে আসিলে গরূব ॥
চল যাই কার্য সারি যার যেই কাজ।
সার সার দিন যায় আসে সাম সাজ ॥
যার সেই কার্য সারে নর ধরাধাম।
অস্ত গেলে রবি বেলা এলে নিশা সাম ॥
তেন রূপ কার্য করে মন অভিলাষে।
পন্থগতি তালাসিবে গোর চারি পাশে ॥
না পাইয়া পথগতি বলিবে কি হায়।
কি হইবে মম গতি আসিনু কোথায় ॥
সার চিন্তা মনে গতি হইবে তখন।
কোথায় যাইব আর হয়েছে মরণ ॥
তাই মোরে রাখিয়াছে এক বর ঠাই।
যাইবে কেমনে কোথায় যাবার আসা নাই ॥
সঙ্গে নাই মাতা পিতা পুত্র পরিজন।
ভাই বন্ধু কেহ নাই একেলা গমন ॥
ছাড়িয়া আসিনু যবে এ ভব সংসার।
কি হবে আমার গতি কি হবে আমার ॥
ধুনিবে কলেজা কলি তুলা ধুনা সাটে।
ফুটিবে কমল তালু চিন্তে হিয়া ফাটে ॥
কান্দিবে পতিত হয়ে অকুল সাগর।
কেমনে সমুদ্র জলে ভাসিবে পাথর ॥
ওহে কাল ইহকালে কি হবে আমার।
কি হইবে কোন গতি নাহি যদি আর ॥
চিন্তায় কাতর তনু পশে অঙ্গে বাণ।
বিপাকে ধমকে তার উড়িবে পরাণ ॥
চারি ধার ছন্দ সুর আওয়াজ রটনা।
আসে কেহ যায় কেহ এই কি ঘটনা ॥
বাঘের আওয়াজ আর শূকরের বোল।
একেবারে দিকে দিকে পড়ে গেছে রোল ॥
হেনকালে চক্ষু খুলে দেখবে তাবত।
চারি পাশে বাঘ, ভাল্লুক নানান আফত ॥
কেহ চাহে মারিবারে কেহ খাইবার।
সাপ, চেলা, ডাশ, নেশ মারিবে আবার ॥
এমন আজাবে মুর্দ্দা হলে গেরেপ্তার।
জিন্দা যদি রক্ষা গতি করিবে তাহার ॥
দোয়া দেলী একিনেতে বাতেন আছর।
সদকা খয়রাত কিম্বা জেয়ারৎ কবর ॥
আজানে মুর্দ্দার রক্ষা কবরের পাশে।
বাঘ ভালুক সেই কালে ভাগিবে তরাশে ॥
আজানে পনর ফল যেই যথা দিবে।
হুস কর কথা ধর দেখহ কেতাবে ॥
আজান আজব চিজ ইয়াদ আল্লার।
বহুতর লাভ আছে ভিতরে তাহার ॥
একা যেতে রাহা পরে রাত্র অন্ধকার।
ভূত প্রেত তুফানাদি পথ ভুলিবার ॥
বেটা বেটী জন্মকালে রাহাত আজান।
পাইবে বহুত বালা হতে পরিত্রান ॥

তাজিম গোর ওয়াজিব

নেকতন আদমের ছুরত নেকের।
আদাব লেহাজ নেক বনি আদমের ॥
যাহার আদাব নাই ফরজন্দ আদম।
পশুর জীবন তার নহে বেশ কম ॥
চক্ষের আদাব আর আদাব মুখের।
হস্তপদ আদাব আর আদাব দেলের ॥
নিচ আঁখি বাক্য ধীর বচন মধুর।
হাত পা রঞ্জন যেন বেহেস্তের হুর ॥
আদাবে বসন যেন মসজিদ মিম্বার।
শয়নে সজ্জিত যেন তাক্যা মনোহর ॥
চলনে আদাব যেন খঞ্জন রঞ্জন।
বুলবুলের মত হবে মুখের বচন ॥
হরিণ শরীর ন্যায় শরীর কোমল।
মুরব্বী গমনে শান্ত যেমন আজল ॥
জানিয়া না জানে যেন চালাক চতুর।
পুছিলে কহিবে কথা জবান মধুর ॥
হাসি মুখ সাদা মন রাখিবে সদায়।
কহিবে সার্থক কথা কথায় কথায় ॥
বেশী কথা রাষ্ট্র হাস লম্পট চঞ্চল।
ধৈর্য্যহীন সহ্যঘাতি মনরীতি খল ॥
না জানে এমন জন গভীর স্বভাব।
গাইছে গবিন্দ সুরে নামের কেতাব ॥
আদাব শিখিতে হয় আদিবের সনে।
শিখিলে পাইবে ধন রাখিবে যতনে ॥
শিখিলে আদাব চাল চলিবে তখন।
শুনিবে না কার কথা করিলে বারণ ॥
আদাব দস্তুরে চাই শিখন কেতাব।
পড়িলে গাবরগণ সেই বে আদাব ॥
নবী অলী বোজর্গান আদাবের সনে।
শিখেন আদাব রস দেখিয়া কোরানে ॥
ফাজেল চতুর তাঁরা ছিল না কখন।
মাটির স্বভাবে যেন ছিল সাদাতন ॥
তাঁদের ছুরত ছবি পছন্দ খোদার।
তাইত রহিল জারি পৃথিবী মাঝার ॥
সালামে আদাব বলা নত করা শির।
যে যেমন তে তেমন আমির ফকির ॥
ছোট বড় মুরব্বির রাখহ লেহাজ।
হাদীসে ছাবেত যাহা বুজর্গের কাজ ॥
জামেনূর কেতাবের সালাম ভিতর।
লেখা গেছে দেখ তায় আদাব সত্তর ॥
জীবনে আদাব যার চাই জিন্দা হালে।
মরিলে আদাব তাঁর করিবে সকলে ॥
ধরিবে তাজিম সনে করাবে গোসল।
ভব মায়া ত্যাগে যেই হয়েছে অচল ॥
পরাবে কাপড় তাঁরে অতি সযতনে।
শোয়াবে কবর ধামে পরম আছনে ॥
ভাই বন্ধু আত্ম আর কিম্বা স্বামীবর।
উতারিলে ভাল হয় কবর ভিতর ॥
উতারেন আলী শাহা ফাতেমা মাতারে।
গোসল দেলাতে পারে বিবি মিঞা তরে ॥
কেতাবে লিখিত এই হাদীস কথন।
বুঝিয়া সুঝিয়া কাজ করহ চলন ॥
হব্ব জব্ব নাহি চাই নামের কেতাব।
তমিজ কেতাব যেই উলুল আলবাব ॥
ভাল কাষ্ঠে দেওয়া চাই গাথনী গোরের।
চার পানে ঘিরা চার কিম্বা সে ইটের ॥
তার পরে বিছাইবে পাটি কি চাটাই।
খের কুটা আদমের শানে আসে নাই ॥
মোছলেম বুজর্গ জাত ফরজন্দ আদম।
খের কুটা গোরে তার কিসের ভরম ॥
حديث – انزل الناس على قدر منازلهم
যে যেমন কদরের জাগা চাই তার।
ফরজন্দ আদম নহে পশুর আকার ॥
দেওয়ার চেরাগ দেওয়া গোম্বজ দালান।
কবরে দুরস্ত তাহা তাজিমের শান ॥
রহিত হইল ঘর কোথা ঘর তার।
আখেরে শোয়াবে তায় কবর মাঝার ॥
এক দিন করিবার কর যাহা হয়।
আর না আসিবে ঘরে ঘরে কাম নয় ॥
তার ঘরে থাক যেই দোয়া দিও তারে।
আর না আসিবে সাধে ফিরে ঐ ঘরে ॥
পদ দিয়া পদ মথা না কর গোরের।
বেয়াদবী শান ইহা জান মুর্দ্দারের ॥
তাজিম আদাব চাই হাদিসের বাণী।
চারি পানে যদি হয় আগুনের ধ্বনী ॥
কাপড় জ্বলিবে তাতে জ্বলিবে শরীর।
তবু নাহি কবরেতে পদ কর স্থির ॥
শিয়রে কবর দিয়া নাহি সোও আর।
হাদীসেতে মানা ইহা আজাব মুর্দ্দার ॥
আজাব মুর্দ্দার যদি হইল শয়নে।
আজাব না হবে কেন পায়ের চটনে ॥
জুতা পদে নাহি যাও সদনে অলীর।
বে আদব সান ইহা সমান কাফীর ॥
বে তাজিমে দুঃখ পায় রূহু মুর্দ্দাগণ।
দ্বীন দুঃখী সেই দুঃখে হয় সর্বজন ॥
খের কুটা বেতাজিম কেবল সঞ্চয়।
পাত কাটা ডাল ভাঙ্গা কাম সভ্য নয় ॥
অসভ্য অফল গাছ ফলে বদ ফল।
রূহুগণ দিলে দোয়া ঘটে অমঙ্গল ॥
মুণী মানী লোক যদি অছিয়ত করে।
পাগ টুপী পোষাকাদী দেলাবে কবরে ॥
দিবে তাহা কেতাবেতে রওজা আছে তাঁর।
না দিলে তেমন জনে হবে গুনাগার ॥
ঝাড়ু কষি গোর নূর কর মনোহর।
হইবে সন্তোষ মন রূহের পশর ॥
নাদানের চাট পাটি কবরে এছরাফ।
খড় কুটা ইনছানের বুজর্গ খেলাফ ॥
সাজ শোভা তাজ টুপি জিন্দা লোক সনে।
এছরাফ না হল তাহা জানিল কেমনে ॥
দশে বিশে টাকা যার জামা জোড়া গায়।
সুন্দর মকান ঘর বেহুদা টাকায় ॥
তাহাতে এছরাফ বুঝি নহে কদাচন।
চাট পাটি কবরেতে এছরাফ কেমন ॥
হইল দুর্গতি দশা বাঙ্গালা দেশের।
সাজ শোভা উঠাইয়া নিল কবরের ॥
সাজ শোভা দূরে রহে বুরিয়া চাটাই।
অধর্মী তাহুতীগণ দিতে দেন নাই ॥
বলে ইহা এছরাফের সাজ নীতি কাজ।
মছজেদ দিও তায় পড়িবে নামাজ ॥
কে দিল মছজেদ আর কে পড়ে নামাজ।
উল্টা মার দিয়া লুঠে কবরের সাজ ॥
লক্ষ লক্ষ পরাণীর মাটির কবর।
না দিল কাহার পাটি মসজিদ ভিতর ॥

                     মদদে কবর

নেকতন অলীগণ কবরের শান।
জহুর কোরবত যার খোদাই নিশান ॥
এভব ছলবী পর্দা হইয়া গেলে দূর।
বাতেনের শানে নফছি এলাকা জহুর ॥

   মদদ রূহানী

মদদ রূহানী হয় মদদ আল্লার।
এলাকা জাহের শান রূহু নাম তাঁর ॥
রূহু নামে নাম যার নূর জাতে পুর।
আকাশ পাতাল ব্যাপী যাঁহার জহুর ॥
যে রূহু নূরাণী হয় রূহের ছরদার।
পৃথিবীর ভালা বুরা হাতে রহে তাঁর ॥
নেকতন রূহুগণ তাবেদার যত।
এক পরে এক রহে তাবে অবিরত ॥
পৃথিবীর ভাল মন্দ হাতে রহে তাঁর।
সমাধা করেন কাম এরাদা আল্লার ॥
তাই নাম মোদাব্বের উপাধি রূহের।
ভালা বুরা পৃথিবীর শানে খেজেরের ॥
নেকতন রূহুগণ যাহার সংসারে।
গাড়িলে নিশান ঝান্টা কে লাড়িতে পারে ॥
এস এস মোদাব্বের গাড়হ নিশান।
থাকুক তোমার দেশে এলাহির শান ॥
যে ঘরে হইবে নূর আসন তোমার।
কে পারে হেলাতে তাহা আসন খোদার ॥
যে বাসরে যেই রূহু করিছে আসন।
রহুক অটল সাধ তাঁর সিংহাসন ॥
ধরিবে গুরুর পদে সিংহাসন যাঁর।
লড়িবে না হেলিবে না এ ভবেতে আর ॥
গুরু সুতে গাঁথা গেছে যে দানা চন্দন।
এক সনে আর রবে হবে না মরণ ॥
চন্দন গলার মালা গাঁথা গেছে যাঁর।
খসিয়া পড়িতে নারে থাকিতে সংসার ॥
ধন্যবাদ রূহু নূর শত ধন্যবাদ।
দেখিও ভবের খুবী পুরাইও সাধ ॥
নেকতন রূহুগণ নবী আউলিয়ার।
মুরব্বির আরওয়া আছে যার অধিকার ॥
সদায় রহিবে তাঁর অটল আসন।
বিপদে তাঁহার কভু হবে না মরণ ॥
ভাসিবে তাঁহার ডিঙ্গা কহর দরিয়ায়।
ধরিবে রূহানী বৈঠা মাঝি মাল্লা তায় ॥
মরিলে কবর মাঝে সঙ্গী হবে তার।
কি ভয় আউলিয়া মাঝি যাহার ডিঙ্গার ॥
গুরু ধামে নূর মাঝি আরোহণ নায়।
ভাসিতে ভাসিতে গিয়া লাগে কেনারায় ॥
কেনারা পেয়েছে ডিঙ্গা বিষম ছফর।
আল্লা আল্লা বল সবে ধরিয়া ছাপ্পর ॥
উঠ এবে কেনারায় লাগিয়াছে নাও।
যার যথা যাইবার সেই দিগে যাও ॥
আস কান্ত কর শান্ত ভুলনা আমায়।
চড়িয়া তোমার ডিঙ্গে এনু কেনারায় ॥
দেখিছি তোমার ডিঙ্গা সত্যই অটল।
ভয়ানক সমুদ্দুরে নাহি পড়ে তল ॥
দেখিছে অনেক সাধু ছওয়ার ডিঙ্গার।
ইহ ভব সমুদ্দুর হৈয়া গেছে পার ॥
যাহারা হইবে পার রহিয়াছে আশে।
দেখহ অটল ডিঙ্গা কেনারায় ভাসে ॥
দেখিয়া অটল ডিঙ্গা হইও ছাওয়ার।
নিমিষে এ ভব নদী হয়ে যাবে পার ॥
না দেখিয়া ডিঙ্গা যারা রহিয়াছে আশে।
কহর নদীর পরে ভেরা ভুরা ভাসে ॥
কোন দিক হতে ভুরা কোথা নিয়া যায়।
গাঙ্গের তরঙ্গ মাঝে খেলিয়া বেড়ায় ॥
তাই তারা নূর ডিঙ্গা চিনিল না হায়।
কভু না পৌঁছিল ভেরা গিয়া কেনারায় ॥
তাই তারা করিছে না তালাস ডিঙ্গার।
ভুল ডিঙ্গে আরোহণে ভুল হয়েছে তার ॥
ভুল ডিঙ্গে মাঝি মাল্লা চালাক চতুর।
নূরী ডিঙ্গা বলে তারা দেখাইছে ভুর ॥
ডুবাল মাল্লার জাত গরল অন্তর।
সরল লেবাছ সাজে ভরিল কহর ॥
ওপারে তুলিবে বলে ডুবাইয়া মারে।
মরিল আজল বালা না চিনিয়া তারে ॥
যে জন না জানে ডিঙ্গা নূরানী খবর।
ভব নদী পার হতে হইবে সত্তর ॥
বুঝিবে তখন তারা করিলে গমন।
রহিবে না কোন গতি পড়িলে সমন ॥
সমন থাকিতে কর গমনের গতি।
অকালে না হবে কেউ কাহার সারথি ॥
নেক রূহু আপনা আওলাদ ফরজন্দানে
তালাশ করিতে রহে ইয়াদের সনে ॥
ইয়াদ আদর যেই করেন আত্মার।
রূহু আত্মা নেগাবানী করেন তাহার ॥
স্মরণ রাখিলে আত্মা স্মরিবে তাহারে।
নিত্য আত্মা দেখা দিবে তাঁর সমাদরে ॥
নিত্য আত্মা সদা যদি রাখিবে স্মরণ।
বোলাইলে আসিবেন তাহার সদন ॥
হইবে আত্মার সঙ্গী আর্শি নূরী সনে।
যেমন আতশ আর্শি সূর্যের কিরণে ॥
সূর্যের কিরণ আর্শি নিজ গুণে টানে।
টানিয়া গরম আগ জ্বলন্ত আগুনে ॥
তেমনি আত্মার গুণে আপনার গুণ।
করিবে পশর বাতি করে ধুনাধুন ॥
আলো সনে আলো যেন পশর উজ্জ্বল।
হইবে আছর তেজ ফুটিবে জামাল ॥
রূহু গুণ গুণ যার গুণে সম্মিলিত।
ধরিবে বিজলী জ্যোতিঃ মেঘে আচম্বিত ॥
ওয়াইছিয়া গুণ এই ফায়েজ রৌশন।
জ্বলিবে যাহার ঘর দেখিবে আপন ॥
চুমুক হায়ওয়ানী কহে এই গুণ তরে।
মোর্শেদ রাশেদ নৈলে পাইবারে নারে ॥
তাই যারা ওফাদার নহে কদাচন।
কভু না হইতে পারে রূহের ভাজন ॥
জেয়ারত কবরের রূহের তাছির।
তালাসিলে মুর্খগণ কহেন কাফির ॥
খেয়ালি মোর্শেদ আত্মা ছুরত খেয়াল।
আকর্ষণ সনে যার পাইবে জামাল ॥
সে জামালে কামালত এলাহির ফানা।
কোথায় পাইবে যেই চক্ষু রৈতে কানা ॥
কবর সুন্দর করা রাখন যতনে।
রৌশন পশর তায় আদাবের সনে ॥
রূহু তারে দোয়া দিবে দেখিলে সুন্দর।
যে জন কবর সাফ করিল ছাপ্পর ॥
فى شرح برزخ
واذا تحير تم فى الامور فاستعينوا باهل القبور
সরে বরজখেতে তাই লেখিছে সুন্দর।
ডরানি কার্য্যরে চাই মদদ কবর ॥
ভয় ভিত কোন কামে হইবে যখন।
মদদ কবর হতে লও নেকতন ॥
নেকের কবরে রহে মোছবেতা জহুর।
আরশ ভেদিছে যার কবরের নূর ॥
হাদীস উম্মতি সনে হৈয়াছে ছবুত।
আউয়াল আখের তক রৈয়াছে মজবুত ॥
আদম হইতে নিয়া রোজ কেয়ামত।
নেক লোক এই শানে আছেন তাবত ॥
মালুম হইয়া গেছে তাহা সবাকার।
রৌশন হয়েছে দেলে হাজারে হাজার ॥
দেখিয়া কবর খুবি দোয়া দেন অলী।
শতে শতে দেখিছেন তাই যাই বলি ॥
দেখিছে দেখিবে আর নেক লোক যাঁরা।
আন্ধার ওহাবীগণ রহিবে আন্ধেরা ॥
ওহাবীর দেলে নূর নাহি কোন কালে।
ছাগলে চাটিবে গোর লেখিলে কপালে ॥
নিজ গোর ছাগলের নহে তাতে দায়।
নেক লোক বেতাজিমে রূহে দুঃখ পায় ॥
নেক রূহু দেখে যদি কবরের শান।
কহেন আরওয়ার তরে এই মোর মান ॥
দেখ মোর বেটাগণ আমার কবর।
বানালেন শান ছবি রূপে মনোহর ॥
এই রূপ বলিলেন নবী অলীগণ।
এই রূপ কহিলেন নেক রূহু তন ॥
এই রূপ বলিবেন কেয়ামতাবধি।
আজমাস করিয়া দেখ সত্য হও যদি ॥
আজমাস নেকের ভাগ হিস্যা আম্বিয়ার।
এলহাম মোলহেমা কাস্ফ হাদীস প্রচার ॥
আজমুদা হাদীস বাত্তি নেক সনাতন।
সে বাত্তি বদের দেলে হবে না রৌশন ॥
তাই তাহা ফেকার কেতাবে লেখা সার।
ঘর গুম্বুজ দেয়া চাই নেক আউলিয়ার ॥
জামেনূর কেতাবেতে লেখা গেছে তায়।
দেখ এই রেছালাতে আখেরী ফৎওয়ায় ॥
ফাতেহা বলিতে হয় নামে আউলিয়ার।
কোন নামে ছওয়াব আদি পৌছাব কাহার ॥
কি প্রকারে নিয়ম আদি শিন্নী ও মিঠাই।
চিনি কত দুধ কত ঘৃত কত চাই ॥
না দেওয়া নিমক আর মরিচ অম্বল।
কোন অলী শিন্নী খিরে দিত ফলাফল ॥
যে দস্তুর ছিল যার অলীর মাঝার।
সেই অর্থে নাম রৈল ফাতেহা তাঁহার ॥
বরকত নেওয়াজ রৈল নামে ফাতেহার।
সত্য পীর সত্য শিন্নী পৃথিবী মাঝার ॥
ফাতেহা কুন্দরী হয় (আজ) ওয়াজ তাহাদের।
ফাতেমা হানিফা, আর ঘরানা ঘরের ॥
খোদেজা আয়শা আর কুলছুম জয়নব।
হাফছা নাম সাত তন বিবিগণ সব ॥
ইমামের নেয়াজ আর ফাতেহা আলীর।
সামাদার নেয়াজ আর নেয়াজ খিজির ॥
কলন্দরী নেয়াজ আর শিন্নী বড় পীর।
শেখ ফরিদ মান্য আর নেয়াজ গাজির ॥
একে একে যত মান্য ফকিরানা ঘরে।
বখসেস এনাম আল্লা দিয়াছেন যারে ॥
কাস্ফ আর এলহামাদি কিম্বা সে স্বপন।
পেয়েছে গায়েব রত্ন আখেরের ধন ॥
সে রত্নে করেন যত্ন যেই রত্নাকর।
ফজল রহম এই অলীর নজর ॥
সেই নামে নাম তাঁর খোদাই আসল।
নামাজে নিয়ত যেন সুন্নত রসূল ॥
ফলে কিন্তু নামাজেতে মানস আল্লার।
রাসূলের নাম আর ছজুদ কা’বার ॥
তেন রূপ নজরেতে মানস খোদার।
কোরবত নেয়াজ ধার্য আছে যে প্রকার ॥
তাহাকে শেরেক কহে মশরেক যে জন।
আউলিয়ার রাস্তা নেক খোদার স্মরণ ॥
যে জন খোদাকে খাবে দেখেনা কখন।
কেমনে সে জানে তারে শেরেক কেমন ॥
না জানে ছেফাত আর নাহি চেনে জাত।
নাহি জানে শানমান না জানে হালাত ॥
নাহি জানে এত্তেহাদ না জানে এরফান।
ইসলাম কাহারে বলে কাহারে ঈমান ॥
মোসলমান কোন জন মুমিন কে আর।
শরার তারিফ কেবা এগানা খোদার ॥
আশেকের শরা আর আহকাম অলীর।
শরিয়ত আব্দাল আর শরিয়ত খেজের ॥
বদরের সাহাবির শরা আহকাম।
মরদের শরা যাহা আওরাতে হারাম ॥
জাহেরা ইমাম যারা খেলাফ তামাম।
একের হালাল আর অন্যের হারাম ॥
এমত খেলাফ আদি এখ্তেলাফ যত।
হানাফি হবে না কভু মালেকির মত ॥
জাহেরানা ঘরে যবে এমত কালাম।
একের হালাল আর অন্যের হারাম ॥
বাতেন যাহার নেক নিশ্চয়ই সে নেক।
বাতেন যাহার নাই তারে বলে ভেক ॥
পৃথিবীতে হেন নেক নহে কোন কাম।
এখ্তেলাফি শানে যারে না বলে হারাম ॥
তাই এ উম্মত মধ্যে গোর গোর যত।
এক গোরো নহে কভু আর গোরো মত ॥
ফাছেক কাফের কেউ কহে কার তরে।
দ্বীনেতে গাফেল তাই ফাছাদ খাতেরে ॥
যদি কেহ নেক হালে করিতেছে নেক।
গাফেলান বলে ইহা হারাম শেরেক ॥
নাহি জানে মূলে যার রহিয়াছে নেক।
কস্মিন তাহার কাম হবে না শেরেক ॥
শেরেকেতে পাক হন নবী অলীগণ।
কোরানে যাহার ব্যাখ্যা অলীর মোচন ॥
তাঁর কাম হর হালে খোদার পছন্দ।
বুঝিতে না পারে যারা লেগে যায় ধন্দ ॥
আউলিয়ার নিকটেতে নাহিক এঙ্কার।
সকল খোদার কাম ভালা বুরা তাঁর ॥
আপে ভাল পরে ভাল ভাল সর্বকাল।
হর কামে নেক যার নাহিক জঞ্জাল ॥
حديث
تخلفوا باخلاق الله
ছেফাত খোদার সনে করহে তোমার।
বদল আখলাক কর আখলাক আল্লার ॥
তাই তব ছহব্বতে পাওয়া যাবে রব।
নহে যত দলাদলি অকারণ সব ॥
পিরাপিরী নাহি জানে অলী আলীগণ।
নিরবধি যার ঘরে খোদার স্মরণ ॥
স্মরণের নিকটেতে পাইবে স্মরণ।
স্মরণের সাথে তবে হইবে মরণ ॥
মরণ যাহার হবে স্মরণের সনে।
চিরজীবি হবে সেই স্মরণ মরণে ॥
মরণ যাহার হবে চিরজীবি আশ।
মরিলে জীবন পাবে অলীর সমপাশ ॥
মরিছেন যেই জন আগে মরণের।
হইছে মন্দের মন্দ মন্দ সকলের ॥
সে মন্দ পছন্দ নেক নিকটে খোদার।
সে নেক নেকের সার পৃথিবী মাঝার ॥
পৃথিবীতে যত নেক সে নেকের নেক।
যাহারা না জানে তাই নেক নহে ভেক ॥
ভেকেতে নেকের ভেক নহে নেক কাম।
বন্ধুর আদর ভেক নহে সে হারাম ॥

    দর্গা ও মঞ্জেল

তাহাদের তাবেদারী দর্গা ও মঞ্জেল।
যে মতে আউলিয়ার খোশ থাকে দেল ॥
মাজার মঞ্জেল আর কবর তৈয়ার।
যেমতে তাজিম রহে অলী আম্বিয়ার ॥
তাই আরব আজমেতে আর হিন্দুস্থান।
কবরেতে শতে শতে গম্বুজা দালান ॥
মদিনা গম্বুজ নূর নবী মোস্তফার।
বেহেস্ত বাগান চক পৃথিবী মাঝার ॥
কত সোনা কত রূপা কত বেলওয়ার।
চান্নি ও গেলাফ আর ফানোসের ঝার ॥
ঝুলিতেছে সারি সারি কাতারে কাতার।
যে দিগে নজর লাগে দেখিতে বাহার ॥
ঝাড়ু কশি খাদেমান করেন দর্গার।
মছলন্দ ফরাস কত চৌদিকে তাহার ॥
শত শত আলেমান তাহার খাদেম।
ঝাড়ু কশি করিতেছে হইয়া নাদেম ॥
বেদ’আত বলিয়া বদ বলিতেছে যারা।
তুড়িবারে কয় বার গিয়াছিল তারা ॥
পারে নাই পারে নাই ফজলে খোদার।
রহিছে দ্বীনের শান নবী মুস্তফার ॥
আর কত কবরেতে মসজিদ মন্দির।
দেশে দেশে বর্তমান অলী ও নবীর ॥
বায়তুল কুদ্দুস আর বোগদাদ শরীফ।
রৌশন আরশ ন্যায় যাহার তারিফ ॥
সামের মছনদ আর রুমের ভান্ডার।
সারি সারি ইমারত অলী আউলিয়ার ॥
মিছির ফারছ আর কাবুল কান্দাহার।
কত ঠাঁই কত গোর কবর মাঝার ॥
নেজাম মুল্লুক আর পেশওয়ার বোম্বাই।
না আছে কবর দর্গা হেন জাগা নাই ॥
শাহে চিস্তী নূরে এলা হাবিব আল্লার।
আজমীর শরীফ যার কবর আনওয়ার ॥
কবরে মন্দির শান আল্লার নিশান।
দেখিয়া যাহার খুবি ফেরেস্তা হয়রান ॥
দিকে দিকে ইমারত রহিছে অঙ্কিত।
কোঠার কেবিনে শামা জ্যোতিঃ প্রজ্বলিত ॥
হাতা ও বাজুতে তার কত শামাদান।
মকমল জরিতে ঘর বেহেস্ত মকান ॥
সোনার ডালেম্বে জারি লহন বুটার।
খানে খানে চারিদিেিক জ্বলিতেছে ঝার ॥
ছেহেনের চারি পাশে পাকা ইমারত।
লোভিছে প্রভুর নাম জেকেরে তাবত ॥
শত শত আশেকান সে ঘর মাঝার।
নানারূপে করিতেছে জেকের খোদার ॥
নানারূপে অলী আর নানান ফকির।
নানারূপে ভঙ্গিমাতে করেন জেকের ॥
কেহ বা আলেম কারি কেহ বা আমির।
সূফী ছাফি কোন জন রৌশন জামির ॥
গাঞ্জা হোক্কা খায় কেহ জটা রাখে শিরে।
গাজি আশা চিমটা কেহ চলে ধীরে ধীরে ॥
মেয়েদের মত কেহ করিছে ছেঙ্গার।
গাইছে গজল গান গৎ সারিন্দার ॥
বেহালার সুরে কত গাইছে গজল।
সেতারার টানে কত হয়েছে পাগল ॥
গাইছে তায়ফার সখি সুমধুর গান।
আশেকের ঐ টানে হানিছে পরাণ ॥
ভূমি ধামে কত লোক গড়াগড়ি যায়।
পাগড়ি খুলিয়া কেহ ফেকে মারে গায় ॥
কোরান পড়িছে কেহ হাদীস বয়ান।
শুনিয়া আশেক লোক হইছে হয়রান ॥
আর কত ধুমধাম উরসের দিন।
বেহিসাব কারবার কে করে তাইন ॥
আগনের বার কিম্বা তের দিন হয়।
দেখে এস বন্ধুগণ যার মনে লয় ॥
আদাবের সাথে আর তথায় যাইও।
মিথ্যা হলে এসে মোরে (তবে) গালি দিও ॥
বড় পীর দস্তগীর গাউসে আজম।
আরশ মঞ্জেল যার ছফরে আলম ॥
দর্গা মাজার যার রৌশন গোলজার।
স্থানে স্থানে ইমরাত চৌদিকে তাহার ॥
বহুতর মাঠ ভূমি তাহার ছেহেনে।
হাজার হাজার লোক রহেন সেখানে ॥
রাত্রেতে মোমের বাতি জ্বলিতেছে ঝার।
সামাদান দেওয়াল গির কাতারে কাতার ॥
জরি আর মখমলে ঘেরা মোরাব্বা নূরানী।
জালওয়া করিছে নূরে আরশ রব্বানী ॥
উরসের দিন তান হাসরের শান।
দেখিয়া লোকের খুবী আলম হয়রান ॥
জেকেরের রোল তায় শানে কেয়ামত।
আওয়াজ ধরিছে জোরে শুনিলে হায়বত ॥
মোজাদ্দেদ আলফেছানি হাবিব আল্লার।
আফতাব বলন্দি নূর আকাশ মাঝার ॥
তাঁহার মোরাব্বা নূরী জরী ঝালরের।
সোনার মেরাপ ঝুমকা দেওয়াল আঙ্খোর ॥
খোদার আশেক আর নবীর দেলবন্ধ।
পাক্কা ছেহেন দর্গা শহর ছেরহিন্দ ॥
দিল্লির শহর ঘর শোভিছে সুন্দর।
শতে শতে ইমারত মাজার কবর ॥
হিন্দুস্থানে নানা দেশে কত কব নাম।
কোন ঠাঁই বাকী নাই আলম তামাম ॥
বাঙ্গালাতে বর্দ্ধমান চব্বিশ পরগনায়।
আশে পাশে চব্বিশ জিলা শহর কলকাতায় ॥
কত রঙ্গে সাজ শোভা কবর মন্দির।
মাওলা আলী, কবল আলী বাবা জুমন পীর ॥
গোরক পীর, ফতে শাহা আর জামাল পীর।
কত ঠাই পাকা গোর গম্বুজ মন্দির ॥
ঢাকা ধামে আজিমপুর ভিতরে কোব্বায়।
লেংটা শাহী পাগল শাহী বাহের হাতায় ॥
মগ বাজারে লাল বাজারে অলীর বারাম।
সাত রৌজা শহরেতে প্রকাশ তামাম ॥
পল্টনের বাহিরেতে রৌজা ঠাঁই ঠাঁই।
নেয়ামত বুত সেকান মজ্জুব মনাই ॥
মিরপুরে শাহে আলী বোগদাদী সুলতান।
বুজর্গির শানে যার আলম হয়রান ॥
পীর শাহা সুলতান দর্গা মদনপুর।
নাছিরাবাদের মাঝে কামেল মশহুর ॥
শ্রীহট্টের জালাল শাহী দরগা গুরুধাম।
বাজিল যাহার ডঙ্কা মল্লুক তামাম ॥
আরেফিন দর্গা আছে পাহাড়ের শিরে।
যাত্রিগণ শিখরেতে রহে নদী তীরে ॥
ফরিদপুরে আলমচাঁদ জমির মামুর।
বাজিল যাহার ডঙ্কা আওয়াজে ঝুমুর ॥
উদিত নক্ষত্র গুরু আকাশ মন্ডলে।
বুলন্দ সেতারা যাঁর উলিছে কপালে ॥
গঞ্জেরাজ বলে নাম প্রকাশ যাঁহার।
আব্দুল আজিজ গঞ্জেরাজ ব্যাখ্যা তাঁর ॥
বিক্রমপুর অধিনতা ফরিদ শামীল।
ফরিদপুরের কিয়দংশ বিক্রমের মিল ॥
তাঁর বিচে আছে কত মঞ্জেল আরাম।
জানি যাহা কহি তাহা একে একে নাম ॥
সিড্যা নামে গ্রামেতে দর্গা ফকির ঢোন।
আবির ঠাকুর নামে প্রকাশ রৌশন ॥
মুসলমান হন তান ঠাকুর পদবি।
লক্ষে লক্ষে আছে যার বুজর্গির খুবি ॥
ধনই নামে গ্রামেতে সানূর মঞ্জেল।
ধামসি ভূমে পাগল সাঁই ফকির কামেল ॥
তেলিপাড়া ছয় দর্গা এলাহির নূর।
একস্থানে একখানে সমান জহুর ॥
মালাখানে দেওয়ান শাহ্ জাহান মাসুর।
মৌলভী নামেতে বেটা ভেঙ্গে করে চুর।
তুড়িল নূরাণী দর্গা রৌশন মঞ্জেল।
অধীর না হয় নূরে কাফেরের দেল ॥
ধর্ম কর্ম যাঁহাদের ছিল বিদ্যমান।
লক্ষে লক্ষে তাঁহারাই করেন সম্মান ॥
হিন্দু কি মোসলেম আদি গুণী মানী যাঁরা।
এক বাক্যে এক কালে নতশির তাঁরা ॥
তুড়িল সোনার খাট নূর এলাহির।
সে অবধি মান গুণ গেল মৌলভীর ॥
অলী অহঙ্কারে মান রবে না কাহার।
পুত্র পরিজনে ধনে হানী হবে তার ॥
মজলিশ শাহার গোর পাতরাল গেরাম।
মানাইর সাকিনে আছে দর্গা মন ধাম ॥
মনাই ফকির নাম যাহার মশহুর।
বুজর্গির শান তাঁর কত দূরে দূর ॥
বরিশালে খাঞ্জে পীর সাহে আরেফিন।
জাগা জাগা কত নূর কে করে তাইন ॥
কুমিল্লাতে কল্লা শহীদ সরাইল অন্তর।
লাল শাহা পাগল শাহা এক তত পর ॥
কাশেমপুরে বদ্দূ শাহা হুজুরিসা আর।
বৈল ঘরে গুরুধাম মঞ্জেল যাঁহার ॥
বারেল্যাতে পীর মিঞা কুমিল্লা ভিতর।
ভাওয়ালেতে শাহা মন্দির ঢাকার অন্তর ॥
সাহেব আলী শাহা আর দর্গা মাদার।
মুল্লুক দাপট চোটে কাঁপিতেছে যার ॥
সাভাজপুরে কাছেম শাহা ধামে গঙ্গাপুর।
কেরামত যাঁর জারি নূরণ আলা নূর ॥
চাঁনপুরে লাল শাহা নশ্বিনপুর ধারে।
সুধারামে লেংটা শাহা দালাল বাজারে ॥
সন্দ¡ীপের চাঁন শাহা আজমপুরি পীর।
কাঞ্চনপুরে মিরন শাহা নূর এলাহির ॥
সাত রৌজা এক স্থানে সারি সারি শান।
আকাশ গম্বুজ যেন উলিয়াছে চাঁন ॥
তার পরে যেয়ে দেখ নেদামে মোদাম।
সূফী নূর মুহাম্মদ গোলজার বারাম ॥
উলিছে যাঁহার নূরে নূর মহাম্মদ।
গণিয়া কে করে শান তাঁর হদাহদ ॥
গণিবারে তাঁর শান সাধ্য আছে কার।
ফিরিত যাহার বাক্যে উজান ভাটার ॥
আহা কলি কোথা গেলি না দেখি স্বপনে।
নাম রৈল শামে হায় রহিলি গোপনে ॥
নিশা জলে নাশা ভিজে দামে দম বন্ধ।
ছিলি কোথা গেলি কোথা খেলা খেলি ছন্দ ॥
এ খেলায় গেলরে বেলা বেলা গেল হায়।
নিশি ভোরে ঘুমে রৈলি দিন বয়ে যায় ॥
চিংরি সাহা নেদামপুরে মহাজনের হাট।
দক্ষিণাংশে বাজারের ধরিয়াছে ঠাট ॥
সীতাকুন্ডের পূর্ব কোণে বার আউলিয়ার।
দর্গা ও মঞ্জেল শান বশন জাগার ॥
সে জাগা দেখিলে জাগে মনের বাসনা।
ভিজে অঙ্গশির সঙ্গ চক্ষু ও রসনা ॥
আহা পীর দস্তগীর কহ সমাদরে।
কি লাগিয়া এসেছিলে জঙ্গল ভিতরে ॥
কে তোরে আনিল সাধু এ কানন মাঝে।
কি দেখিলি কি শুনিলি ছোবে সন্ধ্যা সাজে ॥
আহা কি কানন তব শুভ জন্মে বল।
এমন গৌরব সঙ্গে হইলি জঙ্গল ॥
কত শত মুণি জন এ গৌরব সনে।
বিধাতা গুণের ত্বরে ফিরিতেছে বনে ॥
তব অনে¦ষণে নাম করিয়া স্মরণ।
মরিছে মরিবে আর কত মহাজন ॥
থাক থাক শুভ ধাম সুধা গুন সারে।
আসিবেন কত সখা তোমার দুয়ারে ॥
আসিবেন সখা যারা দিও পদে স্থান।
রহিবে তোমার দ্বারে তাঁহার নিশান ॥
আহঃ হারে অদৃষ্টের এই ফলাফল।
না দেখিনু না হেরিনু গাইনু গজল ॥
আফতাব তরঙ্গ জ্যোত হেরিয়াছে যাঁরা।
দেখিয়াছে চিনিয়াছে পাইয়াছে তাঁরা ॥
পাইয়াছে পায় যাঁরা পাবার কারণ।
দেখিয়াছে দেখে যাঁরা দেখার দেখন ॥
চল মন বলি এবে বলন বোলার।
বলিবে তোমার বোল বলনে তোমার ॥
তারপরে চাটগাঁতে করহ নজর।
ক্ষনেকে যাঁহার নাম হইল শহর ॥
এ জাগা পতঙ্গ নিশি নদী সরোবর।
আছিল যাহার তীরে ফকির বদর ॥
সরাসরি সর যবে আসে পূর্বকালে।
হুহু শব্দ সোরসার আকাশ পাতালে ॥
ইশারা করেন তায় আপন আঙ্গুল।
সে অবধি ঐ সরে নাহি আছে বোল ॥
সে কথা বলিয়া আর নাহিক দরকার।
মাজার গোলজার যার রৌশন খোদার ॥
আমানতে আমানত হল যেই মাল।
আমানত নামে অলী খোদার জামাল ॥
টাউনের পরে আছে সে নূর আম্বুর।
বলিছে চক্ষের সুরমা নূরে কোহে তুর ॥
অলী মাঝে শেখ নামে উপাধি যাঁহার।
ফরিদ বলিতে গুরু হন সবাকার ॥
এভবে ফরিদ হেন আছে কোন জন।
কে করিল জঙ্গলেতে এমত রোদন ॥
রোদনের চশমা রৈল ভূমে কূপ জারি।
গাহিছে পরম কথা লোকে সারি সারি ॥
তার পরে আগে চল টিলা শির ধাম।
ঐ দেখ কোব্বা নূর বাজিদ বোস্তাম ॥
নিশান গদ্দির স্থান জাগা বসনের।
বানালেন খাদেমান ছবি কবরের ॥
সে ছবির খুবি নূর মোহিত রূহানী।
অলীর এলাকা এই কেছমত বাতেনী ॥
তাই মদিনাতে গোর বিবি ফাতেমার।
দুই রওজা দুই ঠাঁই হয়েছে তৈয়ার ॥
জেয়ারত করে লোক দোন কবরের।
মোলাকাত পান তাঁর যে হন জায়ের ॥
দূর দেশ হতে যবে হয় জেয়ারত।
স্বপনে কি খাবে দেখে কিম্বা কাশাফত ॥
কিম্বা পীর তাছাওর করেন যখন।
যে যেমন তে তেমন পায় ফয়জ ধন ॥
তেমনি বসন জাগা মোরাব্বা নূরানী।
রহিছে তাহাতে শুধু এলাকা রুহানী ॥
তাই তাঁর জেয়ারতে দেয় যবে মন।
পাইবে রূহানী দেখা যেমন স্বপন ॥
স্বপন নাহিক সেই দিদার রৌশন।
মোলাকাত করে যেই জানে সেই জন ॥
তার আগে রহিয়াছে গাজীর আসন।
আছিল গভীর বনে যার সিংহাসন ॥
মাদার পীরের চুলা রৈয়াছে অঙ্কিত।
এলাকা গহিন বনে শান প্রজ্জ্বলিত ॥
লেমুয়া নামেতে গাও পূর্ব ধারে তার।
আসন গৌছিয়া ধাম রৈয়াছে তৈয়ার ॥
কবরের ছবি খুবি গাউসে আযম।
যাহার এলাকা লাগা তামাম আলম ॥
ইছাপুরে কামালাত আহাম্মদ পীর।
নবী নামে নাম যার নূর এলাহির ॥
যাহের বাতেন যার নূর বেলায়েত।
আছহাব বদর শান যাঁহার তাবত ॥
মুহাম্মদ হানীফ নাতি নবী মুস্তফার।
মুহূর্তে ঘুরেন দেশ আলম ছাওয়ার ॥
রোখামের ছয় সাত মঞ্জেল দক্ষিণ।
হেফাজতে দর্গা ধাম ধরা আছে চিন ॥
দর্গা মছজেদ কত কতবা আসন।
দেশ ঘুরে পর্যটনে দেখিছে সুজন ॥
দেখিছে গহিন বনে আসন গাজীর।
রহিছে বসন স্থান অলী ও নবীর ॥
ফেরেস্তা তাজিম যার করেন সদায়।
হারে অন্ধগণে কভু নাহি দেখে তায় ॥
যাহার তাজিমে হয় তাজিম খোদার।
হায়বতের জাগা স্থান নবী আউয়িলার ॥
ভেদিছে যাহার নূর আকাশ পাতাল।
আরশ মন্দিরে নূর যাহার জামাল ॥
কলম আল্লাহ্র লেখা কলিমের বাণী।
গাইছে গভীর গান সুরেশ্বর ধনী ॥
তুমি গুরু আছ ভাল আমি কেনে মরি।
দয়া হেন কর তুমি যোগে যোগে তরি ॥
শুর ধামে তাঁর নাম রৈয়েছে অঙ্গিক।
সুখে থাক সুখ মতি হয়ে হরষিত ॥
আশীর্বাদে সদা বন্ধু রহিও ভাজন।
জীবিত রহিও সখা হইয়া মরণ ॥
তোমা সনে দুই বন্ধু আসনে তোমার।
আদরে আসন লয় আসন মাঝার ॥
ঢাকার ওসমান নূর শাহাদাতা বর।
আব্দুল আজিজ সাধু সুধারামে ঘর ॥
এ তিন সাধুর টানে সাধু ফতে আলী।
হাবিলাস মন সদা করিতেছে কেলী ॥
আহা গুরু কল্পতরু সুলতানে আযম।
ফতে নামে ফতে সার মুল্লুক আলম ॥
ফতে সারে সুরেশ্বর ফতে দিও সার।
থাকুক তোমার সার সংসার মাঝার ॥

      নোয়াখালীর অন্তর্গত

সামপুরে দরগা নূর আলম মশহুর।
জকিয়দ্দিন নামে সাহা নুরূন আলা নূর ॥
বড়ালিয়া গ্রামেতে থানে লক্ষ্মীপুর।
নেওয়াজ আলী মুন্সী নামে এলাহীর নূর ॥
তার পরে সাম পাড়া মৌজার আন্দরে।
গোপনে পুসিদা গুরু ছিল গুনসারে ॥
প্রকাশের কালে যদি আসিল সম্পাস।
কত কালে দরগা ধাম করিলা প্রকাশ ॥

ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত
সুরেশ্বরে সাহা মির সৈয়্যেদ মিরণ।
প্রকাশে গোপন ছিল আখেরের ধন ॥
তন ছফিনা রৈছে বান্ধা লবে কলকাতায়।
মন ছফিনা বাদাম দিয়া সদা আসে যায় ॥
সেই ছফিনার পাশিঞ্জার বড় গুরু পীর।
পিছনে ধরিছে বৈঠা খাজায় খিজির ॥
মহাম্মদী ঘাটে ডিঙ্গা আসে আর যায়।
সাত সমুদ্দুর পারে গিয়া লাগে কিনারায় ॥

মোর্শেদ কবর উদ্ধার সঙ্গের
সঙ্গি ও রাহাদার
যে মুরিদ পরে পীর অধিকার হবে।
রহিবে না ভয় ভীত পরকাল ভবে ॥
ইহকাল পরকাল উদ্ধারেন যেই।
হাশরের কর কুঞ্জি মোর্শেদের এই ॥
যে দেশে রশিদ তালা খোলা গেছে যার।
মোর্শেদী এলাকা জারি হইবে তাহার ॥
ছাবেত এজহার নূর করিবে জহুর।
মোর্শেদের রূপ নূর আসিবে হুজুর ॥
মোর্শেদের পরে যদি পরিবে নজর।
মনের আন্ধার যাবে হইয়া পশর ॥
ভীত মন ডর যদি হইয়া যাবে দূর।
কবর এলাকা নূর হবে দূরা দূর ॥
নেক রূহু তার ঠাঁই হবেন প্রকাশ।
আসিবেন নেক দূত লইতে তালাশ ॥
আসিবেন অলী আলী তাঁর মদদগার।
বাতেন তালাশ ভেদ নবী আউলিয়ার ॥
খুসির তরঙ্গে খোলে সাগরের মূল।
সে তরঙ্গে ভব মায়া পড়ে যাবে ভুল ॥
তরঙ্গ মুহিত সনে নেকামল তার।
মোকাম বুলন্দি ঘর খুলে দিবে দ্বার ॥
সে দ্বার খুলিলে তার পথের অন্ত নাই।
যথা যাবে সঙ্গি সাথী রবে সব ঠাঁই ॥
সঙ্গীয় সারথী যথা মোর্শেদ মমিন।
সঙ্গের সারথী সনে হইবে না ভিন ॥
আগে যারা গেছে তাঁরা সঙ্গি হবে তাঁর।
সুখের বাসর হবে স্বর্গ অধিকার ॥
কবর এলাকা হবে স্বর্গ সুখ ধাম।
যথায় রহিবে তার সকল আরাম ॥
যে ছেতারা যার দ্বীপ দুনিয়া সকল।
রহিবে পরম সুখে তাহার ভিতর ॥
ছেতারা আলম দ্বীপ দুনিয়া সকল।
দেখিতেছ যত ইতি করে টলটল ॥
বেহেস্ত দোজখ আছে এ তারার মাঝ।
হইবে যাহার জাগা যেমন সমাজ ॥
এতারা হেরিছে যারা হেরে নিজপুর।
দর্পণ মমিন দেল আরশ কাঙ্গুর ॥
আরশ যাহার দেলে উজ্জ্বল দর্পণ।
আরশের নূরে যার ছুরত মোহন ॥
পরকাল পরদেশ চিনেছেন সেই।
আখেরাত আলামত মুমিনের এই ॥
পরম সুখের ঘর পরকাল দেশ।
যে মুমিন মনপুরে হইবে খাহেশ ॥
উড়িবে বিরহ মন মাশুকের রসে।
প্রত্যাশ সুখের সুখী যাবে সুখ দেশে ॥
পতঙ্গ বিরহ মন গমন সরল।
নিজপুর যাইবার অভ্যাস গরল ॥
আকাক্সক্ষা যাহার মনে সুখের অঞ্চল।
এভব গৌরব তার বিরস চঞ্চল ॥
এভবের লোভ রস রহিবে না মনে।
গৌরব সুখের দিন যাব কত দিনে ॥
বিরাজিবে সুখ রস যাহার অন্তর।
সুখ দেশ বিমোহিত চিত্ত কলেবর ॥
এভবের সুখ শান্তি রহিবে না মনে।
বাসনা রহিত দেশ যাব কত দিনে ॥
¬¬¬রেয়া, কেনা, হাছদ গং ইহারা দশ জন শরীরের রিপু থাকা বিধায় প্রত্যেক শরীরের মধ্যে দশটি স্থান অধিকার করিয়াছে তাহাই রাজ্য সঙ্গে তুলনা করা হইল।
দশ রাজ্যে দশ জন আছে রাজ্যেশ্বর।
হাকেম হোকামাগণ সৈন্য সেনাবর ॥
বিধর্মীর গোত্রে তারা ধর্ম লেশ নাই।
সে সংসারে কার নাই ধর্মের দোহাই ॥
কিন্তু তাঁরা ধর্ম বেশে সত্য উল্লাসন।
করিয়া সত্যের সার করিছে গোপন ॥
ঈমান লুটিয়া নিতে সাধু সন্ন্যাসীর।
দিয়াছে রাজত্ব ভার শাসন তদবির ॥
গাইছে চিকন সুর নরম জবান।
মিষ্ট মিষ্ট বাক্যে ধন লোভিছে পরাণ ॥
সাধু হতে সাধু তাঁরা পুরুষ উত্তম।
এক হতে এক বেশী নম্রপূর্ণ মোম ॥
রাজা প্রজা মন্ত্রীগণ উজির নাজের।
ধর্ম রূচী গান যেন মুখে তাহাদের ॥
করিছে নেকের সুরে নেকের ওয়াজ।
নেক বিনা নাই কার মুখের আওয়াজ ॥
বলে যদি হরে নিতে না পারিবে ধন।
কলে ছলে মায়া মুগ্ধে করিবে হরণ ॥
যে অফিস যেই স্থানে দেওয়ান কাচারী।
বসা আছে চৌকিদার ঘাটে সারি সারি ॥
সাজিছে ধর্মের সাজ লেবাছ সুন্দর।
আবা কা’বা পাগ শোভা মালা মনোহর ॥
কেতাব ধর্মের সাজ ভারত পুরাণ।
ধরিছে ওয়াজ সুর হাদীস কোরান ॥
দেখিয়া এসব সাজ ধর্ম লোভী যারা।
পতঙ্গ প্রদীপ জ্যোতে পড়িতেছে মারা ॥
না জানে তাহারা এই ঠগের দোকান।
ঠগিছে লোকের ধন হানিছে পরাণ ॥
যদি কেহ সন্ধান পাইয়া থাকে তার।
পড়ে না ধোঁকায় তার রহে হুসিয়ার ॥
সাধু অলী নেক যেই রাসেদ সুজন।
চিনিছে ধোঁকার দেশ রাজ সিংহাসন ॥
সঙ্গিগণ সঙ্গে লিয়া যেতে দূরাদূর।
অধর্মের পুরী পিছে রেখে ভূরাভূর ॥
এক রাজ্য ছেড়ে যদি অন্য রাজ্যে যায়।
এক পরে এক দেখে সাধু জামা গায় ॥
হরিতে লোকের ধন পাতিয়াছে জাল।
নরম মেজাজ শান সুরত জামাল ॥
ভঙ্গিমাতে না পারিলে ক্রোধভরে কয়।
মার মার মার বলে দেখাইছে ভয় ॥
যদি না শুনিল সাধে তাদের দোহাই।
চলহ ধর্মের বালা আর ভয় নাই ॥
তার পরে এক রাজ্য দেখে চমৎকার।
মিলিছে সুন্দর এক ধর্মের বাজার ॥
যে দিক নয়ন হেরে আঁখি ঠরে নাই।
ধর্মপুরী এই হবে এই ধর্ম ঠাঁই ॥
সঙ্গিগণ ছিল যত বলে কোথা যাব।
এরূপ গৌরব দ্বীন কোন দেশে পাব ॥
চল এবে মুরিদ হইবে পীর হাতে।
ছাড়িলে এমন দিন পড়িবে আফতে ॥
সত্য সাধু বলে এই ধর্ম রাজ্য নয়।
চলহ আমার সঙ্গে না করিবে ভয় ॥
বলে নয় সঙ্গিগণ একথা কেমন।
শুনি নাই কভু হেন মধুর বচন ॥
ডাকিছে সার্থক ডাক ধর্মের আচার।
লোভিছে আমার মন আল্লাহু আকবর ॥
যে জন পড়িল ফাঁদে রহিল সেজন।
মুরিদ হইল ভুলে দেখিয়া স্বপন ॥
বাকী যারা ছিল তারা অগ্র পানে যায়।
দেখিল ধর্মের খুবী ধর্ম রাজ্য তায় ॥
করিছে ধর্মের গৃহে ধর্মের বাসন।
দ্বীনের আলাপ দেশে তার সিংহাসন ॥
ওয়াজ-আওয়াজ তার হাদিস কোরান।
দেস্তার ধরিছে ছেড়ে আলেম প্রধান ॥
কত শত দিগে পাশে খলিফা জোগার।
যে যেমন তার সনে করে কারবার ॥
বলে ধর্ম এই ধর্ম আর ধর্ম নাই।
ধার্মিক রাজ্যের আগে চল এবে যাই ॥
খেলাফত দিবে আর সেজারা অলীর।
পৃথিবীতে হেন মান কোথা আছে পীর ॥
সঙ্গিগণ বলে হায় হেন দেখি নাই।
ছাড়িয়া এমন গুরু কোথা যেয়ে পাই ॥
জিন্দেগীর তরে আমি হইব খাদেম।
যায় যারা যাউক তারা হইবে নাদেম ॥
মূল সাধু সাধ যার ধর্মের অঙ্কুর।
ধর্ম রস তার মনে করিছে জহুর ॥
বলে এই ধর্ম নয় বটে ধর্ম চোর ॥
চলহ ধর্মের দেশে সঙ্গি হও মোর ॥
না আছে দ্বীনের লেশ চক্ষু কর্ণ নাসা।
দেখিয়া অধর্ম দেশ ধর্মই ভরসা ॥
ছাড়িয়া অধর্ম রাজ্য ধর্ম দেশে যাব।
ধর্ম রৈলে ধর্ম জয় সঙ্গে সঙ্গে পাব ॥
ছেড়ে গেল ধর্ম বলে অধর্মের স্থান।
পৌছিল সারথী সার খোদা মেহেরবান ॥
এক দুই দশ ধামে এড়ায় জঞ্জাল।
পৌছালেন রাহাদার সামাল সামাল ॥
পথে যদি ধর্ম সাজ না রৈত পশর।
ধর্মপূরে বরাবর যেত দরাদর ॥
রাশেদ বিহনে তাহা চিনা মহা দায়।
ধর্ম মাঝে ধর্মীগণ পন্থে যারা যায় ॥
ধর্মবাসে ভিক ভেক না আছে কখন।
মন রসে পরিপূর্ণ আপনি আপন ॥
যদি ভেক করে দেখ মন রস সার।
মন রসে বেশ ভূষা সকলি অসার ॥
درعمل كرش هرجه خواهى
پوش تاج برسرو علم بر دوش
আমলে কোশেস যার বেশ ভূসা তার।
কর তাহা চাহ যাহা নহে গুণাগার ॥
সার সার সার তার মানসিক মাল।
অমানসে মন রসে লোভের কাঙ্গাল ॥
কাঙ্গাল লোভের লোভী মনোবাঞ্ছা রসে।
সে লোভ জঞ্জাল হয় মনের অলসে ॥
মনের বিলাশ লোভ রস রসাঞ্জন।
ঘষিলে দেখিবে চক্ষে ধর্মের অঞ্জন ॥
আসন রসন রস ধর্মের বাসনা।
সে রস হেরিলে কার রবেনা যাতনা ॥
যাতনা যাহার টুক রসের জোগার।
সে রস লোভিলে লোভ রবেনা গো আর ॥
সে রস যাহার দেশ উপদেশ তাঁর।
উপদেশ রসে রস সকলি তাহার ॥
সঙ্গের সারথী যার নাহি এই ভবে।
পাইবে না রস দেশ রস পাবে কবে ॥
রস লোভে যায় যেই লম্বা রসনায়।
রস নামে কষ ঘষে জিহ্বার মাথায় ॥
দশ রিপু যার ঘরে সঙ্গি আছে যার।
রিপু দেশে অধর্মের কেবলি জোগার ॥
রেয়াকেনা হাছাদাদী লোভ মদ যত।
ধর্মনাশে ধর্ম ভেকে ধর্মে করে হত ॥
ধর্ম পথে দিছে মন ধর্মের সাগর।
পাগ টুপি আবা কা’বা রেয়ার নাগর ॥
চিকন চতুর রেয়া কেপায় উদ্দিস।
লবণ বিটনে রান্ধে বানাইল বিষ ॥
পাগ টুপি সুন্নতের যত সরঞ্জাম।
রেয়া বিষে এককালে হইল হারাম ॥
হারামে আরাম নাই খোদার দরবারে।
হারাম যাহার পাগ রাখ নাহি তারে ॥
এপাগ রহিলে মাথা রহিবে না আর।
দোজখে জ্বলিয়া খাল যাইবে মাথার ॥
রেয়ার রাজত্ব ভারী আরকান দৌলত।
দেওয়ান কাচারী থানা নানা ফজিলত ॥
রেয়া রাজা আপনার সিঙ্গে দিয়া ভার।
ধর্ম পথে ধর্ম সাজ সকলি তাহার ॥
দ্বীনপুরে যাইবারে পথে রেয়া রাজ।
দ্বীন নামে চোর ডিঙ্গে দিছে সাধু সাজ ॥
ডাকিছে রেয়ার গৌরী কাঞ্চনের সুর।
এস এস দ্বীনদার এই দ্বীন পুর ॥
গাইও দ্বীনের গান শিখহ কোরান।
লইও আখের পন্থ হইবে গেয়ান ॥
এ পন্থে ধর্মের কান্তে পাইবে সরল।
পাইবে না বিনা ইহা সকলি গরল ॥
নফছ যোগে শয়তান যোগে মিলে যোগাযোগ।
বিনাশে দ্বীনের রস করিতেছে ভোগ ॥
দ্বীন নামে দিয়া ঢোল দ্বীনের বাজার।
মিলিছে দ্বীনের ঘর কাতারে কাতার ॥
যেই আসে সেই কহে এই দ্বীন পুরী।
উপরে দ্বীনের কাম ভিতরেতে চুরী ॥
না পাইল টের তার নফছ রস বসে।
না গেল রাসেদ আগে মনের অলসে ॥
তাই লেখা গজ্জালীর এহিয়া ভিতর।
জাহেরান এ বিদ্যার রাখে না খবর ॥
নফছের এলেম যাহা শয়তানের কাম।
নাহি জানে জাহেরান আলেম তামাম ॥
হিতে বিপরীত হয় কিমিয়া সোনার।
মোরগের উমে ছানা না হয় আন্ডার ॥
যদিও রেয়ারপুরী পিছে ফেলে যায়।
কেনা কুট হতে বাঁচা হবে মহা দায় ॥
নেক দেখে নেক কেনা শেখ দেখে শেখ।
পীর দেখে পীর কেনা আলেম প্রত্যেক ॥
ধন্যবাদ কেনা রাজ্যে তোমারি আসন।
গুরু রাজ্যে কেনা কসা শিষ্যই ব্রাহ্মণ ॥
কেনা কুটে দংশিলেক যাহার অন্তর।
কাল বিষ নাহি খন্ডে পড়িলে মন্তর ॥
কেনার চিকন বেনা কে বুঝিতে পারে।
কেনা নাই যেই ধর্মে ধর্ম বলি তারে ॥
কেনা শিরে পদ দিয়া যদি কেহ যায়
হাছদ এড়ান বড় হবে মহা দায় ॥
যে যাবত হবে শান্ত হছদের থালি।
হবে না দ্বীনের কান্ত কলঙ্কের ডালি ॥
দ্বীন নামে দ্বীন বন্ধু আত্ম হবে যার।
হইবে ধর্মের বন্ধু এ ভব সংসার ॥
আদাওত কেনা তার রবে না কখন।
হইবে সরলপুরে মনের রঞ্জন ॥
আদাওত বদবালা সঙ্গেতে অলীর।
লড়ন খোদার সনে হইবে কাফীর ॥
আদাওত শিরে যদি পদ দিয়া যাবে।
লালসের রাজ্যে গিয়ে উপনীত হবে ॥
সে রাজ্য লালস কার্য উত্তম অধম।
সকলের মনপুরে লালস গরম ॥
সিংহাসনে আরোহণে সে বাজার লাল।
চকবাজারে দেশ ধামে জ্বলিছে মশাল ॥
সে মসালে পতঙ্গের বাড়ে অনুরাগ।
মরিছে পতঙ্গগণ দেখিয়া চেরাগ ॥
পীর হতে পীর এই ধর্ম রাজ্যে ভার।
ধরহ পীরের হাত তামাম সংসার ॥
সুন্নতের পীর এই সুন্নতের রস।
সাজ শোভা যত ইতি সুন্নত সরস ॥
রসুলুল্লাহ তক মেলে সনদ যাঁহার।
কে আছে এমন পীর বলহে আবার ॥
এ পীর খেলাফ যেই সেই পীর নয়।
তাড়াও তাহার তরে যথা মন্দচয় ॥
সত্যই লালচ গুরু হন সবাকার।
কে আছে এমন পীর এ ভবেতে আর ॥
লালসের লালাইত শোভা সাজ লাল।
ধরিছেন লাল কান্ত সুরত জামাল ॥
মনপুরে মন রস যাহার গরম।
সাজ শোভা তার পার্শ্বে কিসের ভরম ॥
হয় সাজ হউক সাজ সাজে কাম নাই।
সাজিছে আসল সাজ সুরত মনাই ॥
নবী বরে সাজ শোভা দেখিয়াছ কবে।
সুন্নতের সাজ শোভা কোথা পেলে এবে ॥
লালসের সাজ শোভা মুখে লম্বা দাড়ি।
লালসের অনুরাগ লালস শিকারী ॥
ধন্যবাদ লাল সাই শত ধন্যবাদ।
সকল ধর্মের রান্ধে তোমারি সংবাদ ॥
কিন্তু যেই দ্বীন লোভী দ্বীনের স্মরণ।
করিছে ধরিবে নয় তোমার চরণ ॥
স্বার্থক দ্বীনের খুবি যার সনে আছে।
যাইবে স্বার্থক বর স্বার্থকের কাছে ॥
স্বার্থক তাহার পীর হবে দস্তগীর।
লালস যাহার আগে নোয়াইছে শির ॥
দশ রিপু যার পন্থে কণ্টক বিশাল।
হইছে না হইবে না হবে কোন কাল ॥
পথের পথিক তারে ধরহে নাগর।
সঙ্গের সারথী এই রাশেদ সাগর ॥
قوله تعالى
والله يهدى من يشاء الى صراط مستقيم
চাহে যারে দেয় তারে সিদা রাহা তার।
মদদ মোর্শেদ নূর অলী আউলিয়ার ॥
قوله تعالى
يضل من يشاء ويهدى من يشاء
গোমরা করে চান যারে হেদায়েত করে।
ভাল মন্দ আসলেতে খোদা বরাবরে ॥
রেহাই করিবে যারে কেবা মানা করে।
দেখিয়াছ হেন জন কে আছে সংসারে ॥
মাফ কর পাক সাঁই পাকের সংসার।
নাপাক করিতে পাক কেবা আছে আর ॥
কিন্তু যেই লালসার লয়েছে মন্তর।
তাড়াইলে দ্বীপে ঘর হইবে পশর ॥
দশ রিপু ভাগ্য গুণে বশ হবে যার।
রৌশন হইবে ঘর এ ভব সংসার ॥
দশ দেশ পাক গৃহ পার হবে যেই।
হেরিবে ধর্মের দেশ ধর্ম দেশ সেই ॥
সে দেশ ধর্মের দেশ ধর্ম অনুরাগ।
উলিছে আকাশ তারা জ্বলিছে চেরাগ ॥
পাইবে পাপের লেশ পাপের নিশান।
চিনিবে দ্বীনের ঘর দ্বীনের সম্মান ॥
ধর্ম সাজে রিপুগণ যত রাজ্য ধর।
মানিবে তাহার দ্বীন ভাগিবে সত্তর ॥
খেলওয়ারের খেল ছিল জুয়াচুরি তাস।
দ্বীন নামে রিপুগণ করে সর্বনাশ ॥
চিন দিলে পালাবার আর সাধ্য নাই।
থাকিবে নেকের দেশে নেকের দোহাই ॥
কর যাহা করিবার সময় করার।
শুভ গৃহে শুভ ফল ফল অবিচার ॥
আবা কা’বা পাগ টুপি সুন্নতের সাজ।
সুন্নতের জাগা এই সুন্নতের কাজ ॥
না পারিবে ইতিপূর্বে সুন্নতের খুবি।
না পারিল অলীগণ না পারিল নবী ॥
রিপু জর্জরিত যেই সদা সর্বক্ষণ।
করিতে না পারে যেই রিপুর দমন ॥
পাগ দিলে নিজ শিরে রিপু শির তায়।
অনুরাগ রিপুগণ শিরে শোভা পায় ॥
ছাওয়াবের কামে রেয়া ঠেকায় হেজাব।
রিপুগণ ছাওয়াবেরে করিছে আজাব ॥
দশ রিপু দশ দেশ শরীর মঞ্জেল।
রিপু বসে খোদা দেশ হইবে হাসেল ॥
রিপু বসে পীর চাই সহা সরঞ্জাম।
ছাড়াইবে রেয়া কেনা হাছদ তামাম ॥
রিপুগণ দমনের নফসের লড়াই।
জেহাদ আকবর এই হাদীসেতে তাই ॥
মরিলে কাফের হাতে শহীদ সে কম।
মারিলে নফছেরে হবে শহীদ আযম ॥
নফছেরে মারিলে হবে নিজের মরণ।
রেয়া কেনা রহিবে না যাবত জীবন ॥
করিবে না কারে কভু খোষ্কা নছিহত।
লইবে না কার কভু খোষ্কা খেলাফত ॥
চলিবে না চাল কভু খোষ্কা রস বসে।
হইবে না বস কভু খোষ্কা মধু রসে ॥
ধরিবে না পেচ পাগ মাথা ছের তাজ।
সাদা সিদা কাম তাঁর আল্লার নেয়াজ ॥
হয় পাগ হউক পাগ সুন্নত নবীর।
না হইলে তালাসিবে বাতেন খুবীর ॥
বাতেন এলাকা নবী সুন্নত নেকের ।
নহে পাগ শিরে দিলে সুন্নত নফছের ॥

বিরহ
এসে ছিলাম ভব সাগরে, সাগর খেলা কল্লাম তায়।
এসে ছিলাম ভব সাগরে, সাগর খেলা কল্লাম তায় ॥
জল তরঙ্গ আসে যায় আর,
জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
পিতা মাতা পিতঃ পিতঃ সকলে খেলিছে তায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
জল কেহ ঘোলে কুলে কেহ ঘুম পাতালে যায় ॥
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
কার নিন্দে প্রাণ কাঁন্দে, কার হিয়া জ্বলে যায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
সন্ধ্যাকাল নাও ডুবিল অঙ্কুরে কাঁদিছে মায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
আহা নৌকার মাঝি কেঁদে বলে ডুবল নৌকা হায়রে হায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
তাত গরিল ডিংগা ডোবে ডোবে গলই দারির কি উপায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
দুই ধারে দুই রক্ষী মাঝি তারা জলে ঝাম্ফ খায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
আরী মাঝি পেশেঞ্জার তাদের দেহ তরী ভেসে যায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
মাথা উভি জলতরঙ্গ ডুবল তরী হায়রে হায়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জল তরঙ্গ আসে যায় ॥
ভবসাগরে ডুবল তরী তোরা দেখবি কারা আয়রে আয়।
জল তরঙ্গ আসে যায়, আর জলতরঙ্গ আসে যায় ॥

বিরহ
শুইয়া শোয়াইয়া গেলি শয্যা বসুধাম।
ভুগিয়া ভোগাইয়া গেলি চিরশ বেরাম ॥
দুঃখ পেয়ে দুঃখ দিলি হারে চির দুঃখ।
সুখ হর সুখ হরে নিলি সর্ব সুখ ॥
উজ্জ্বল নক্ষত্র চক্ষু হরে চক্ষু ধন।
হরিল মস্তক পুঞ্জে মাথা কুঞ্জবন ॥
হরে নিল কর্ণ নাশে মম কর্ণ নাশা।
দেহ পুঞ্জ নিল তব এ দেহ ভরসা ॥
বাহু হরে নিল তব এ বাহুর বল।
পদ হরে নিতে পদ হইল অচল ॥
আঙ্গুল কমল তব হরে নিল হাত।
খসিল কলম নখ চিরুনীর দাঁত ॥
সুবচনে হরে নিল মুখের বচন।
সুগমনে হরে তব সারদা গমন ॥
সুগেয়ানে হরে তব গেয়ান সরল।
সামর্থ সঞ্চয়ে নিল এ দেহের বল ॥
মধু হাস্যে হ’রে নিল এ হাস্য বদন।
কৌতুকে শুষিয়া নিল হৃদয় বেদন ॥
মন দিয়া মন হর হিরামন পাখী।
কেমনে মাটিয়া দেহে প্রাণ পাখী রাখি ॥

বিরহ

গুরু ক্ষেত্রে তব দশা তাঁরা শিরোমণি।
বুধের মঞ্জেল লেশ শনির রজনী ॥
তাই তব রাজ নূর শশীর মন্ডল।
শত শত শিরা কাশে করে টল টল ॥
অতএব হৃদ দেশে বিধি সিংহাসন।
অল্প কালে শক্তি পুঞ্জ ভেদিছে গগণ ॥
রাজশক্তি একোকালে শরীর মন্ডলে।
বিধিগতি তেকারণে ছিল অল্পকালে ॥
ইহকাল পরকাল সঞ্চয় কারণ।
মুহূর্তে বিরহ তেজ ছিল না বারণ ॥
আছিল সুখের শয্যা মাটি অনির্বার।
ছিল না বিছান গদি কখন তোমার ॥্
শীতের দাপটে পুষ্প হৃদ বিচলিত।
গরমে বরফ ন্যায় রৌদ্রে প্রগলিত ॥
জীবনে রসের খাদ্য কর না ভোজন।
শেষকালে চাহ প্রিয় আম্র আস্বাদন ॥
সেকালে তোমায় বৎস নাহি দিনু আম।
কলেজা বিন্ধিল বান সে আমের নাম ॥
থাক বৎস সুখে থাক পৃথিবী অসার।
কার জন্যে কাঁদ মনু কেবা ভবে কার ॥
যে বাসনা ভব খেলে রহিল তোমার।
ইহকালে পূর্ণ কিহে হইবে আবার ॥
চিত্ত দূর না করিও ওহে বৎস ধন।
চিরজীবি ইহ ভবে নহে কোন জন ॥
আগে গেলি আগ ভাগে আগের সঞ্চয়।
ধন্যবাদ সুখে রহ দিয়ে পরিচয় ॥
যে জন তোমায় ডেকে নিল আচম্বিত।
রহ বালা তাঁর সনে হয়ে হরষিত ॥

বিরহ

এই কি সুন্দরময় ভবের বাগান।
হেরিলে যাহার পানে জুড়ায় পরাণ ॥
সারি সারি বৃক্ষ আদি ভবের মাঝার।
আহা কি ধরিছে সাজ জুড়িয়া সংসার ॥
ডালে ডালে সাজে শোভা পাতায় পাতায়।
বৃক্ষে বৃক্ষে সাজ শোভা লতায় লতায় ॥
কতই সুন্দর বন কতই সুন্দর।
হেরিলে নয়ন সুখ বিভোর অন্তর ॥
পুষ্পরাশি শাখা শিরে যেন শোভাকর।
শোভিত করিছে কুঞ্জে এ বন সুন্দর ॥
ঝিলে পদ্ম শোভাকর শাপলার শিরে।
খেলিছে তরঙ্গগণ এ জল গভীরে ॥
পৃথিবী জুড়িয়া আছে বন ভয়ঙ্কর।
কে করিল হেন বন সংসার ভিতর ॥
যে জন করিল এই ভব পুষ্প বন।
হৃদ পুষ্পে দাও পুষ্প তাঁহার আসন ॥

আদিতন
খাক তনের আদিতন ধৈর্য্য সহ্য গুণ।
পরম গুণের গুণ যাহাতে নিপুণ ॥
পর ধরম গুণে জগৎ নির্ম্মাণ।
করিয়া প্রকাশ তায় নিজ সম্মান ॥
এ জগতে গুণ অন্ত ক্ষান্ত নাহি যার।
আদি অন্তে অন্ত সার মহিমা তাঁহার ॥
মহিমা কেবল তাঁর গুণের সঞ্চার।
এ মন্ডলে শত শত দেখ বারে বার ॥
মূলে নিরাকার গুণ আকার ধারণে।
লক্ষ লক্ষ কমল আদি ফুটিতেছে বনে ॥
ললিত কমল দল সুন্দর বসন।
ধরিছে মেঘের সাজ জুড়িয়া কানন ॥
বসন কাননে মেঘ সুন্দর সকল।
বিজলি সমান কুঞ্জ করে ঝলমল ॥
মৃত্তিকা মাতার পেটে এরূপ সুন্দর।
ধৈর্য্য গুনে সন্তানেরে দিছে তাই বর ॥
এস এস আদি গুণ হৃদে কর বাস।
যেই স্থানে যেই গুণ করহ প্রকাশ ॥

শাহান শাহে আলমে হাকিকত গৌহরে একতা মদনে মারেফৎ রশিদে রাশেদ ও কোতবে এরশাদ হযরত মাওলানা মোর্শেদানা শাহে ফতে আলী সাহেব মাগফুরের সন ১২৯৩ সাল মাহে আশ্বিনে ইহধাম পরিত্যাগ সম্বন্ধে বিরহ

মনে আসে আশ্বিন মাসে জুড়িয়া আকাশ।
লক্ষ লক্ষ তারাগণ ছোটে পাশাপাশ ॥
ঝাঁকে ঝাঁকে তারাগণ ছুটিয়া বেড়ায়।
এক দিক হতে তারা আর দিকে যায় ॥
আগত হইতে নিশি লাগাত প্রভাত।
দিকে দিকে তারা খেলা ছিল সারা রাত ॥
ঘর বার আমাদের ছিল আগমন।
ছিল না মনের শান্তি শরীরে বসন ॥
হুতাসে মনের শান্তি নাসিতে কেবল।
নিশি ভর ছিনু সবে যেমন পাগল ॥
অশান্তি হইল মম ধৈর্য্য অনুকূল।
শান্তশীল ছিল মন হইবে আকুল ॥
তার পরে শীঘ্র গতি কলকাতা নগর।
সেবিবারে পীর পদ মন কলেবর ॥
এ বিরসে ধৈর্য্য সহ্য রহিল না আর।
মনে আশা জিজ্ঞাসিব নিকটে পিতার ॥
একদিন জিজ্ঞাসিনু আগে গুরুপিত।
আদেশিবে আশীর্বাদ মন আছে ভীত ॥
এইরূপ কেন দেখি আকাশ মন্ডলে।
শুনি নাই দেখি নাই কভু কোন কালে ॥
নির বাক্য রণ পীর না করিয়া বাণী।
আছু আঁখে চক্ষু হতে নিকলিল পানি ॥
মুহূর্তে রাহুর মেঘ এ চন্দ্র কপালে।
পূর্ণিমাতে দাগ চিহ্ন প্রকাশিল ভালে ॥
অধির হইয়া পুনঃ দেন আশীর্বাদ।
শুন শুন বৎস ধন বিদায় সংবাদ ॥
কেহ না রহিবে ভবে কাজা এলাহির।
যেতে হবে একদিন ত্যাগিয়া শরীর ॥
বন্ধু বিনা রক্ষা যার নাহি এই ভবে।
বন্ধুই বান্ধব তাঁর বোলাইলে যাবে ॥
মিলিবারে বন্ধু সনে মনের বাসনা।
পুরিবে মনের সাধ ঘুচিবে যাতনা ॥
তাই অতি শীঘ্র গতি এক দেল বর।
ত্যাগিবে এ মায়া পুঞ্জ দেখিবে সত্তর ॥
অতএব দূতগণ ফিরিস্তা আল্লার।
খুশির নিশান তোলে মাফিক তারার ॥
লক্ষ লক্ষ দূতগণ তাঁর আগুয়ান।
সেই জন্য দেখ বৎস এইত সম্মান ॥
ভীত পদ দাস কহে করিয়া প্রণাম।
হাফেজ জামাল তাই ত্যাগে এই ধাম ॥
বলে নহে বৎস ধন সে হাফেজ নয়।
দেখিবি ক্ষণেক কালে হইবে প্রত্যয় ॥
একেলা আছিনু দাসে কহেন একেলা।
একেলা সদায় মনে রহে কহা বলা ॥
আশ্বিনের শেষ পক্ষে মোর্শেদ আলম।
প্রকাশিল নরাধমে আল্লার কলম ॥
এ ঋতু হেমন্ত কার্ত্তিক কাল যায়।
আগন আগতে শীত পাইবে না হায় ॥
সমন সংহারে কান্তে করিল গমন।
বাজিলে ছফর ডংঙ্কা হইবে চলন ॥
বাজিলে ছফর ডংঙ্কা কে রহিতে পারে।
আলবেদা আলবেদা নর কহ সমাদরে ॥
এক দুই তিন যায় বিগত আঘন।
না রহিবে বিশ ক্ষেত্রে পৌঁছিলে সমন ॥
আট, নয়, দশ, যায় বিশ আঘণের।
এ দম ভরসা শান্তি হইল আখের ॥
চলিল খোদার বন্ধু নিকটে খোদার।
মুহূর্তে পরাণ পাখী ছাড়িল সংসার ॥
বিশেতে বিষম ক্ষেত্র উপনীত বাস।
কাঁদিয়া অধীর মন হইল তরাশ ॥
কি দেখিলাম কি হইলাম কি হইব আর।
কেমনে জীবিত রব এ ভব সংসার ॥
কোথা হৈতে পেয়েছিনু কোথা চলে যায়।
কোথা হতে দিল দেখা আছিল কোথায় ॥
অহরহ যার সাধ ছিল না বারণ।
সে সাধ ভুলিবে কিসে হইল কেমন ॥
কেমনে চলিলে বন্ধু কে হরিল তোরে।
আসহে আমার নাথ দেখা দাও মোরে ॥
কে নিল হরিয়া হারে এলাহির নূর।
কোথায় ছাপিল হারে নূর কোহে তুর ॥
কেমনে ডুবিল হারে আখেরি ছফিনা।
কোথায় ভাসিয়া গেল গোলজার মদিনা ॥
কে করে গারুব হারে এ নূর বিম্বর।
কে করে বিলোপ হারে চন্দ্র শোভাকর ॥
কি লাগিয়া খসে গেল আকাশের তারা।
কি লাগিয়া লোপ হল নূরাণী ছেতারা ॥
কি কারণে গোম হল আকাশ মন্দির।
কে করিল অন্ধকার নূর এলাহির ॥
আছিল খোদার শান যে শান বান্দার।
কে হরিল সেই শান ভূবন আন্ধার ॥
জাগনে দেখিনু কিবা দেখিনু স্বপন।
জীবিত রহিল কিবা হইল মরণ ॥
মনে বুঝি স্বপন দেখিনু এইবার।
আসিবে আমার পিতা দেখিব আবার ॥
দুচক্ষু মুদিত দেখি নিশির স্বপন।
ভাসিল জোয়ার জলে চক্ষের অঞ্জন ॥
ছুটিল নয়ন তারা চক্ষের পুতলি।
কেমনে হইল লোপ হৃদপিন্ড কলি ॥
অধির হইয়া কাঁদে তোমার বাসনা।
মধু স্বরে কর বাণী খুলিয়া রসনা ॥
কেনে হারে চঞ্চলতা তোমার এমন।
আচম্বিতে কেনে সখা হইলা গোপন ॥
মাতা পিতা ত্যাগে যার সঙ্গের সঙ্গীন।
কেমনে তাহাকে দূরে করে দিলা ভিন ॥
তবে আর এ ভবে কে সারথী আমার।
আহা পিতঃ আহা গুরু সঙ্গে যাব কার ॥
নৈরাশ করিলে কাহে অবোধ ছাওয়াল।
কার আগে দাঁড়াইব অনাথ কাঙ্গাল ॥
বিশাল মধুর বাণী শুনিব কাহার।
হেরিব কমল মুখ কার বারে বার ॥
তবে যদি ভাসাইলে দাসে সমুদ্দুরে।
ধরিতে অনাথ কর, কে কহিল তোরে ॥
মুহূর্তে ভুলিতে যারে না পারি কখন।
চির লোভে কেমনেতে রহিবে গোপন ॥
আস নাথ অনাথেরে দেখা দিয়া যাও।
ধরি করে ধরি গলে ধরি তব পাও ॥
আমার সে সাধ শান্তি কে পুরাবে হায়।
যাইব কাহার আগে বলিব কোথায় ॥
চির তরে দাস আমি হইয়াছি যার।
সেজন ব্যতীত আর কে আছে আমার ॥
যথা রব চিরকাল না হইব ভীন।
ভীনেতে অধীর নহি যায় যাক দিন ॥
কমলের মধু লোভে যারা মধুকর।
কেমনে এই সুধা স্বাদ ত্যাগিবে সত্ত্বর ॥
মধুর কাঙ্গাল অলী ফুলের বাসনা।
তাড়াইলে নাহি যায় বিষাদ যাতনা ॥
যায় যাক প্রাণ যাক পঙ্গ মধুকর।
অনাসে পরাণ বধে দেখিয়া পশর ॥
প্রভাত কামলে রস যারা মধু খায়।
বিভোর অলীর দল তাহারে বোলায় ॥
ওহে পাখী ডাক কিন্তু সুধা বিদ্যমান।
অনিত্য রসের মদে দিছ কি পরাণ ॥
খবর আসে না যার হৈয়াছে খবর।
দাবির আওয়াজে কিহে পাবে দেলবর ॥
اه هرگاه كه در بستان بد ميدگ چه خرش شود دلمن
يگذ ار اى دوست تابوقت بها درسيزه بينى دميده برگل
আহাকি কমল কুঞ্জ হেরি দলে দল।
চমক আকাশ তারা যেন টল টল ॥
কি সাধ হেরিতে আজ ফুলের বাগান।
এস বন্ধু দেখ আজ মম অভিমান ॥
শুয়েছি মাটির তলে কবরে আমার।
ধরিছে মেঘের সাজ ফুলের গোলজার ॥
যে বাগানে যেয়ে আমি লভিতাম ফুল।
সে ফুল আমার কক্ষে করিয়াছে মূল ॥
দেখ এসে তামসিক ফুলের তামাসা।
ক্ষণেকে তোমার কিহে হবে এই দশা ॥
ছিল যাঁরা দেখ তাঁরা কুসুম বিলাস।
কেহ না করিল পূর্ণ ভব অভিলাষ ॥
শত শত অভিলাষী এসেছিল যাঁরা।
এ ভব কুসুম কুঞ্জে রহিছে কি তারা ॥
شنوحافظ بتو گيم كه گل تازه غمى ماند
اگر ماند شبى ماند شى ديگر غمى ماند
পুষ্পধামে পুষ্প তাজা এক রাত রয়।
রেহাফেজ পুষ্প তনু রাতের বিষয় ॥
অন্য রাত পুষ্প রাশি রবেনা গো আর।
এ ভব বাগান তনু পুষ্পের সংসার ॥

বিরহ
ফল ফলে ফলে; যেই যাহা বলে;
যে করে রোপন যার।
আঞ্জির আঙ্গুর; ডালেম্ব লেবুর;
যে বিছন ফল তার ॥
বীজ বন্ধু যার; বন্ধু গাছ তার;
বন্ধু বৃক্ষে ফলোধর ॥
বন্ধুর বিহঙ্গে; বন্ধু রস সঙ্গে;
বন্ধু জালে বন্ধ কর ॥
এবার মথুরা; কে যাবিগো তোরা;
চল যাইগো মম সঙ্গে ॥
বদন ভরিয়া; লইবি দেখিয়া;
মাতাল হইবি রঙ্গে ॥
কামিনী কাজল; সকলি আজল;
সঙ্গের সঙ্গিনী নয় ॥
বেহাগ মন্দিরে; যাব ধীরে ধীরে;
এই কথা সবে কয় ॥
বিরাগে বৈরাগ; যার অনুরাগ;
পবন তাঁহার সখা।
পবন উল্লাসে; পবন বিলাসে;
পবন না যায় রাখা ॥
মনের বাদাম; চলিলে আরাম;
যে দিকে ধরিবে পাল ॥
যায় গুরু ধামে; বিরহ বাদামে;
নদ নদী বিল খাল ॥
সে বিক্রম বলে; চলে জলে স্থলে;
সে বল কাগজে নয় ॥
কাগজ কামিনী; রবিও যামিনী;
সে তনে উদিত হয় ॥

বিরহ
(রাগ ত্রিপদী)
কি নাম জপিতে কয়; কাগজ দেখিতে হয়;
কাগজ লিখিতে হয় কিসে ॥
কাগজ দোয়াত কালী; কেতাব কোরান বলি;
দোয়াতে সকলি রৈছে মিশে ॥
অক্ষর আকার যত; কালির পুতুল মত;
কোন কুমারে গড়েছে গো কায়া ॥
পুতলী মাটির ছন্দ; দোয়াতে রৈয়াছে বন্ধ;
সেই কালী বল কার মায়া ॥
মিছা কায়া মিছা মায়া; পড়া লেখা ছায়া কায়া;
কালীর অক্ষর প্রভু নয় ॥
যার নাম লিখ পড়; তাঁরে যেয়ে তালাশ কর;
কোন অক্ষরে আছে দয়াময় ॥
শরীফি তা নিজাক্ষরে; পেয়েছিল রত্নাকরে;
তাই রত্ন যত্ন করে সার ॥
সে অক্ষর ভ্রম করি; ইকার আকার সারী;
এ সংসারে হৈয়াছে অসার ॥

        বিরহ

আসিবার কালে বান্দা আছিলা বেহুশ।
যাইবার কালে বান্দা রহিবে না হুশ।
কেমন বেহুশ কাল বুঝিতে না পারি।
নিদ্রা ভোরে কেনে দিনু কাল নদী পাড়ি ॥
জাগিয়া রহিতে চাই আলাপ নিজ্জুম।
দো-চক্ষু মুদিত রাখে নিশি ভোর ঘুম ॥
জাগিবার কালে যদি বিলাসিবে ঘুম।
কেমনে জাগিবে যবে হইবে নিজ্জুম ॥
কেন ঘুম কোথা ছিলি কোন দেশ তোর।
কি লাগিয়া ঘুম নিশি চক্ষু করে ঘোর ॥
ঘুমে ছিলাম ঘুমে রৈলাম যাব ঘুম দেশে।
জাগনে আসিলে ঘুম কি করিব শেষে ॥
ওরে ঘুম কেবা তুই বুঝিতে না পারি।
কি লাগিয়া হলাম এবে তোমার ভিখারি ॥
জাগন বাসনে যত রহিনু চেতন।
ততই মোহিনী ঘুম করে অচেতন ॥
কাল ঘুমে নিশি ভোরে রলি অচেতন।
ধন জনে মূলে নাশ হলি না চেতন ॥
যে ঘুমে বিনাশ কাল আহা পরকাল।
সে ঘুম সঙ্গের সাথী চিরস জঞ্জাল ॥
যে দিলি আমায় ঘুম জাগাও আমায়।
জাগিলে কেমনে আমি হেরিব তোমায় ॥
হেরিলে তোমার মুখ হরে মন দুঃখ।
জাগিলে নিশার ভোরে যাবে চির দুঃখ ॥
জাগাও আমায় কাল তুমি সচেতন।
বন্ধু কবে বন্ধু তরে রাখে অচেতন ॥
কালুকা আমায় তুমি রাখ নিশা ভোরে।
ছুটিল সে কাল ঘুম হেরিলাম তোরে ॥
হেরেছি তোমার মুখ বিলাসিছে সুখ।
মম মুখ তব মুখ হেরি এক মুখ ॥
আমি হে তোমার মুখ তুমি হে আমার।
দুই মুখে এক বাক্য রূপে নিরাকার ॥

          বিরহ

গ্রীষ্মাগতে বর্ষা এল আষাঢ় সাওন।
হেমন্ত শরৎ গতে কার্ত্তিক আঘন ॥
পৌষ মাঘে শীত যায় ফালগুনে বসন্ত।
কালে কালে কাল গতি একাল অনন্ত ॥
ছয় ঋতু বার মাস সংসারের কাল।
সাত দিনে বিরহিত ভব সরজাল ॥
ঘড়িকালে কাল বেগ মুহূর্ত্ত সমন।
স্বর চক্রে বিশ হাজার দম নারায়ণ ॥
কমল বদন পিন্ডে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস।
হরিছে এ ভব মায়া মুহিনী আকাশ ॥
ভোজন দমের বায়ু শরীর রতন।
কান্তিপুর নির গতে মুহূর্ত্তে পতন ॥
পতন বিরাজ যার অঙ্কুর আসল।
কালের মাহাত্ম্য এই সংসার গরল ॥
ওহে কাল ইহকাল সকলি তোমার।
অনিত্য অসার দেশ তব অধিকার ॥
যেই দেশে গেলে হবে সুধা স্বাদ মন।
সে দেশে তোমার ভয় রবে না কখন ॥
সে দেশের প্রিয় যারা যাবে সেই দেশে।
রহিবে না ইহ ভবে বৃথা পড়ি আসে ॥

বিরহ
সকলি সকল ভাবে ভবের ভাবনায়।
কেও না ভাবে সন্ধ্যা গতে রহিব কোথায় ॥
কি লাগিয়া এলাম ভবে সঙ্গে যাব কার।
কে হবে সঙ্গের বন্ধু সঙ্গ সহাকার ॥
ছিল যারা বন্ধু তারা আছে না এখন।
আছে যারা যাবে তারা পাইলে সমন ॥
সমনে গমন যার ভবের বিদায়।
এ ভব বন্ধুর দ্বারে আসিবে না হায় ॥
রহিছে বন্ধুর দয়া বন্ধু নাই আর।
আসিবে না ফিরে বন্ধু ভবের মাজার ॥
ভব কালদন্তে যারে করিছে সংহার।
ফিরিয়া আসিবে কি হে এ ভবেতে আর ॥
এসেছিলা কেনে ভাই ভাব এইক্ষণ।
কি লইয়া যাইব দেশে হইলে চলন ॥
চল এবে দেশে যাই বেলা যায় যায়।
বেলা গেলে নিশি গতে কি হবে উপায় ॥
দিন গেল নিশ এল ঘোর অন্ধকার।
পাইবে না কারে কভু ভাঙ্গিলে বাজার ॥
সকলি চলিয়া যায় যার যেই দেশে।
একেলা রহিলে তুমি কি হইবে শেষে ॥

মোর্শেদী
উঠ উঠ শিশুগণ মন মন্ডলে চলে।
মোর্শেদের নাম নিয়া ডুব দিও জলে ॥
যে ঘাটে মোর্শেদ ডুবি করিছে শীতল।
সেই ঘাটে ডুব দিয়া যেও জল তল ॥
অঙ্কুরে আষাঢ়ে নদী মাঘে ঘোর শীত।
শুকনা জলে খেলে মৎস্য মনে নাই ভীত ॥
বৎস থুইয়া গাভী ডাকে গাভের আশায়।
উজান পবনে ডিঙ্গা বাদাম দিয়া যায় ॥
কাঙ্গালের মাণিক ধায় কোলের বাছুর।
বৃদ্ধকালে স্নেহ-সুত আসিবে না তোর ॥
যার যেই কাল ঘোড়া দৌড়াইয়া যায়।
শরীফি তুই কার জন্য রলি কার আশায় ॥

পীরের অনুগ্রহ আশ্রয় করা কি?
উঃ- ফরজে আইন। এসম্বন্ধে কোরান, হাদিস, এজমা কেয়াছ প্রভৃতি বহু সংখ্যক কেতাবে তাহার দলিল মৌজুদ আছে। সুতরাং প্রত্যেক ফেকার তমহিদে এই আখেরাত প্রাপ্তি বিদ্যার আলোচনা করা গিয়াছে। বাকী “জামেনূর” নামক কিতাবে ঐ আখেরাত প্রাপ্তি পন্থাগুলির ব্যাখ্যা করা গিয়াছে, উহাতে দেখুন।
মোর্শেদ কি?
মোর্শেদ এক অনির্বচনীয় আশ্চর্য ধন। তাহার তাছিরে লোকের পাপ মোচন হইয়া, পরকালীন সদগতি লাভ হয়।
তাছির কি?
তাছির মোর্শেদের আধ্যাত্মিক এক প্রকার তড়িৎ শক্তি সঞ্চারণবৎ গুণ বিশেষ। চুম্বক হইতে যেমন অন্য লৌহে ঘর্ষণ দ্বারা চুম্বকধর্ম্ম বিস্তারিত হয়, তদ্রুপ মোর্শেদের আত্মা হইতে শিষ্যের আত্মায় ঐ অব্যক্ত গুণ সম্মিলিত হইয়া বিস্তৃত হইতে থাকে।
গুণ কোথায় থাকে, উহার দ্বারা কি হয়? গুণ প্রাণে থাকে। ঐ আছর শরীরস্থ হইলে, তাহাকে গুণ বলিয়া জানা যায়। যেমন বৃক্ষের গুণ ফল, তাহা খাইলে স্বাদ জানা যায়। এই জন্য গুরু রূপ বৃক্ষের ফল ভক্ষণ না করিলে, কেহ চিরজীবি হইতে পারে না। সেই ফলের রসই আবেহায়াৎ। অতএব পীরের ফায়েজ লওয়া ফরজ।

মুরীদ কি প্রকারে সেই গুণ সত্য বলিয়া স্থির করিবে
ফলের গুণ ফলেই পরিচয় দিয়া থাকে। ফলতঃ বৃক্ষের একটি গোটা দেখিলেই চিনা যায়, কিন্তু মোর্শেদ মানুষ বইত আর কিছুই নহেন। তাঁহাকে দেখিয়া চিনা যায় না। তাঁহার গুণ শরীরে বিকশিত হইলেই তাঁহাকে চিনা যায়। তাঁহার আছর লও, তবেই বুঝিতে পারিবে। ফল খাইলে যেরূপ তাঁহার স্বাদ বুঝা যায়, সেইরূপ পীরের আছর গ্রহণ করিলেই তাঁহার স্বাদ বুঝিতে পারা যায়। চক্ষু দ্বারা দর্শন করিয়া রস চিনা যায় না। চক্ষু বন্ধ কর, মনে ভক্তি কর। কাহারও চাকচিক্য দেখিও না, মানসিক চাকচিক্য দেখিলেই জানিতে পারিবে।
অর্থাৎ ঐ আছর লইলে পীরের মাহাত্ম্য বুঝিতে পারিবে। কিন্তু ইহাতো কেবল বিসমিল্লা মাত্র। তৎপরে যতই তলে ডুবিতে থাকিবে, ততই তাঁহার গভীরতা অনুভব হইতে থাকিবে। যেই পীরের গুণের গভীরতার ইয়াত্তা নাই দেখিবে, তাঁহাকে সমুদ্র তুল্য জ্ঞান করিবে।
আবার চরা জলে সকল নৌকা চলে না, বরং সময় বিশেষে ঐ জল শুকাইয়াও পড়ে। তদ্রুপ অগভীর গুণ বিশিষ্ট পীর নাকেছ। ঐরূপ পীরেরা মধ্যে মধ্যে অন্যান্য মহা পীরকে ঘৃণা করে ও অনুপযুক্ত বলিয়া চর্চা করিয়া থাকেন। বলা বাহুল্য ঐ প্রকার পীরের মুরিদেরাও তাহাদের পীর অপেক্ষা অধিক গভীরতা প্রাপ্ত হইতে পারে না। তাহারা কেবল আপনাদিগকেই পবিত্র মনে করিয়া থাকে। কিন্তু ইহা মহা ভ্রম।

কেতাব দেখিয়া কেবলমাত্র তদনুসারে
মুরীদ বানান যায় কি না?
ওগো বাবু! ঐরূপ করাত একটি চক্রান্ত মাত্র। কেননা গাছ ভিন্ন যেমন ফল হয় না, আবার ফল ব্যতীত রসও নাই। তবে কেতাবে রসের নাম আছে বলিয়াই কি তাহাকে ফল বলিতে হইবে? খোদা প্রাপ্তি পন্থ কেতাবের অতিরিক্ত। কেতাব ঔষধের তালিকা স্বরূপ মাত্র। কেবল উহাতেই (তালিকা পাঠে) রোগ দূর হয় না; ঔষধ প্রস্তুত করিয়া সেবন করিতে হয়। প্রকাশ্য বিদ্বানগণ (আলেমগণ) মাত্র এই প্রকাশ্য বিদ্যা দ্বারা পীরের কার্য করিতে পারেন কি না? না। আধ্যাত্মিক ক্ষমতাহীন ব্যক্তিরা কখনই মুরীদের হৃদয়ে মানসিক শক্তি সঞ্চারপূর্বক মারেফতের বীজ বপন করিতে সক্ষম হন না। কিন্তু মানসিক শক্তি প্রাপ্ত মুরিদগণও অন্যের হৃদয়ে ঐ শক্তি বিস্তার করিতে পারেন।

স্বপ্নের কথা কি সত্য?
হ্যাঁ, সত্য লোকের স্বপ্ন নবুয়ৎতুল্য। অর্থাৎ আসমানি কেতাব যেমন নিজ প্রমাণে সত্য, তেমনই গৌরবানি¦ত, সিদ্ধ মহাপুরুষের স্বপ্নও সত্য।

মোর্শেদ স্বপ্নে কোন আদেশ করিলে তাহা যথার্থ কি না?
হ্যাঁ। যে ব্যক্তি নিজে সত্য, তাঁহার পীরও সত্য, তাঁহার স্বপ্নও সত্য, তাঁহার আহ্য়াল এবং এল্হাম প্রভৃতি সকলই সত্য।

মোর্শেদ স্বপ্নে বা কাস্ফে কোন আদেশ করিলে তাহা সমাধান করা দুরস্ত কি না?
হ্যাঁ অবশ্যই ঐ আদেশ পালন করা কর্তব্য ও দুরস্ত। বিশেষতঃ উহা পালন না করিলে বিশেষ ক্ষতির আশঙ্কা। এমন কি ধন প্রাণহানি হওয়ারও সম্ভাবনা আছে। সুতরাং ইহা ফরজ তুল্য। ইহাকে নবুয়তে বাতেনী বলা যায়। এই জন্য পৃথিবীর যাবতীয় নবী, অলী, গুণী মানী পূর্ব পুরুষ হইতে ঐ কার্যের প্রতি শ্রদ্ধা করিয়া চলিয়া আসিতেছে এবং হিন্দু মুসলমান প্রভৃতি সকল জাতিই ইহার পক্ষপাতী।

কাস্ফ কিম্বা স্বপ্ন দ্বারা নেক লোকেরা কোন কার্য সমাধা করিয়াছেন কি না বা কোন কার্যে ফল প্রাপ্ত হইয়াছেন কি না?
হ্যাঁ। ইসমাঈল নবীর কোরবানী স্বপ্নের আদেশে সমাধা হইয়াছিল। হযরত ইউসুফ (আঃ) স্বপ্নের ফলে মিসরের বাদশা হইয়াছিলেন। আমাদের নবী সাহেবের নামকরণ ও অন্যান্য অনেক কার্য স্বপ্নের আদেশ মতে হইয়াছিল।

নিশান হযরত ইমাম মেহেদী
আলায়হেচ্ছালাম
আখের জামানা যবে দুনিয়া আখের।
হবেন আখের অলী শানে সিদ্দিকের ॥
তছদিক এলেম নূর রস বেলায়েত।
তামাম করিবে রস সে রসে তাবত ॥
করিবে রৌশন দেশ এরফানের জ্যোতি।
ফকিরী নামক বিনা না রহিবে গতি ॥
হইব মুল্লুক ধামে ফকিরের ধুম ॥
জাগিবে আরেফ জ্যোতি পড়িবে হুজুম ॥
জাগিবে আল্লার শান ভাগীবে শয়তান।
দিন দিন সাধু সনে বাড়িবে ঈমান ॥
যখন গোলজার হবে বাতেন আনওয়ার।
হবেন খাতেম অলী নিশান তাঁহার ॥
আলামত হবে তাঁর জহুরের শান।
হাদীসেতে হাবিবুল্লাহ আপে ফরমান ॥
সেতারা উলিবে লম্বা দারাজ দোমের।
দেখিবে তাহারে সবে আওয়াল আখের ॥
দুইবার হেন তারা উজান আকাশ।
একে একে রজনীতে হইবে প্রকাশ ॥
এক মাসে দুই গ্রহণ চাঁদ সুরূজের।
জুম্মাবারে হবে রাহু মাহে রমজানের ॥
হইয়াছে এই দোন নিশান জহুর।
হবে না জহরত মেহ্দী আজি বহুদুর ॥
চন্দ্র গ্রহণ
বাংলা সন ১৩০০ সনের ৯ই চৈত্র ১৩ই রমজান জুমে রাত অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত্রে।
আর সূর্য গ্রহণ
বাংলা সন ১৩০০ সনের ২৪ই চৈত্র ২৮ শে রমজান শুক্রবার হইয়াছে। কেহ কেহ বলিয়াছেন কোরান শরীফে الشمس والقمر حمع ঐ গ্রহণ উপলক্ষে ব্যাখ্যা করা হইয়াছে, অতএব দারে কুতনীর হাদীসে ইহার এই রূপই তফসীর লিপিবদ্ধ করিয়াছেন।
আসিবেন মেহ্দী শাহা আহাম্মদ নামে
নামে নাম মুহাম্মদ না জানি কি কামে ॥
পুত হন আব্দুল্লার মাতা আমেনায়।
লিখন দলিল পাতে এই পাওয়া যায় ॥
হযরত ইমাম মেহদী সাহেবের শীঘ্র আগমনের একটি প্রবল কারণ ও চিহ্ন এই হযরত আদম (আঃ) ও হযরত নবী সাহেবের দরমিয়ান প্রায় ৯০০০ বৎসর গত হইয়াছে। হযরত আদম (আঃ) ষাট গজ লম্বা ছিলেন। তবে দেখা যায় যে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ষাট গজ হইতে সম্প্রতি সাড়ে তিন হস্ত বরং তাহা অপেক্ষাও হ্রাস হইয়াছে। এইক্ষণ বিবেচনা করিলেÑ এই সাড়ে তিন হাত হতে পিপীলিকার ন্যায় হওয়ার মানুষের অধিক বিলম্ব নাই বলিয়া বোধহয়। আবার ঐ ষাট গজ এই ক্ষণের গজ নহে; উহা নবী সাহেবের সময়ের পরিমাণ। বর্তমান সময়ের বিবেচনায় উক্ত পরিমাণ আরও বেশী কেননা জিদ্দায় মা হাওয়া (রা:)’র কবর দেখিতে পাওয়া যায় উহা ৩৬ ইঞ্চির গজের (৩০০) তিনশত গজের বোধ হয় কম হইবে না। আর মা হাওয়া (রা:) হযরত আদম (আঃ) অপেক্ষা অধিক লম্বা ছিলেন না।

তন ও মন মাঝে যে সকল ফল বর্তমান তাহার দলিল কোরান
তাই কোরানের নূর অলীর বদনে।
নবী অলী বীজ গুণে ফল তরু তনে ॥
সে তরু চিনিলে পারে ফল খাইবারে।
না চিনিলে ফল নামে কস খেয়ে মরে ॥
সিজ খেয়ে দিস যার হয়েছে ভরম।
ফল খেতে মানা বোঝে আখের ধরম ॥
তাহা হতে সত্য খাব কোরানের সার।
নবী অলী পায় নূরে খাবের দিদার ॥
নবুওয়ত হিস্যা সেই হাদীসেতে কয়।
সেই হিস্যা আম্বিয়ার নেক তনে রয় ॥
খাব কিংবা কাস্ফ আদি এলহামের নূর।
রাজ নেয়াজের সার যাহার জহুর ॥
ভেদাভেদ কাজ এই আছর রাব্বানী।
যার দেলে সেই ভেদ সেই জন গণী ॥
তাহা হতে যেই নূর হয়েছে জহুর।
খোদাই তাঁহার মূল নূর হতে নূর ॥
সে নূরের আকিদায় আছহাব তামাম।
সে নূরের গাছ ফল ত্বরিকার নাম ॥
ত্বরিকা বলিতে হয় নেছবত অলীর।
যেই ডালে যেই ফল হৈয়াছে বাহির ॥
মাজহাব বল আর মৌলুদ কেয়াম।
রাজ নেয়াজের খুবি আল্লাহ্র নেয়াম ॥
এলহামের নেয়ামত এসব তামাম।
রাজ পন্থে যাহাদের প্রকাশ মুদাম ॥
শত শত আলী অলী এলহামের নূরে।
লইছেন যে জিনিষ মুল্লুক সদরে ॥
গায়েব খাজানা ছিল খোদার ভান্ডারে।
নেক লোক পান তাহা অলীর আদরে ॥
এলহামে পেয়েছে যাহা নেয়াজ খোদার।
খাবেতে দলিল কোথা বল দেখি তার ॥
স্বপন দেখিছে যেই জানে সেই জন।
নবীগণ জিব্রাইলে সাক্ষী কোন্ জন ॥
যে কাজের গাওয়া নাই কি বিশ্বাস তার।
নবী অলী কিসে হল কহ নামদার ॥
জিব্রাইল বলে হৈল কিসেতে একিন।
কিন্তু এই নূরে হোদা বাতেনের চিন ॥
আর্শী জ্যোতে নিজ জ্যোত যেন জ্যোত ধরে।
হাদি নূরে হেদায়াত চিনে সে প্রকারে ॥
হেদায়াত করে যেই তার হুদা নূর।
হেদায়াত পান যেই তাহাতে জহুর ॥
যার দেখা তার চিন তার জ্যোত হয়।
দেখে যেই চেনে সেই চিনন বিষয় ॥
তাই তার নূরে হোদা হেদায়াত কাম।
নবী অলী হতে মিলে মৌলুদ কেয়াম ॥
ত্বরিকত ত্বরিকার শরা মাজহাব।
ফতেহা নেয়াজ আর এলহামাদি খাব ॥
পাইয়াছেন পায় যাঁরা পাবে সর্বক্ষণ।
মনপুরে নূরে হোদা যাহার রৌশন ॥
মন দেশে নূরে হোদা নাহি আছে যার।
দেখা নাই শুনা নাই সব অন্ধকার ॥
গাইছে গোবিন্দ সুরে জবানী ওয়াজ।
বেদ’আত হারাম তার মুখের আওয়াজ ॥
নূতন সকল কাম বেদ’আত হারাম।
নূতন হইছে হবে পৃথিবী তামাম ॥
বেদ’আত বলিছে যেই সেওত নতুন।
নূতন কেতাব নাম নূতন রাখন ॥
এই কি আজাব এল কোথায় থাকিয়া।
বেহেস্তের লোক নিতে দোজখে ধরিয়া ॥
বেহেস্তের রাহে যেই হৈয়াছে তৈয়ার।
পিছু হৈতে খুলে দেয় দোজখের দ্বার ॥
ডেকা ধরা পোলাপানে ধরে নিয়া যায়।
নবুওয়ত রাহা থুয়ে দোজখ দেখায় ॥
খাব আর কাস্ফ আদি হিস্যা নবুওয়ত।
নেক লোকের এই শান রাহে মারফত ॥
স্বপ্ন ঘরে বাস যার না আছে কখন।
বেদ’আত বলিয়া কিহে দেখিত স্বপন ॥
সত্য যদি সত্য ঘরে দেখিত স্বপন।
নবুওয়ত রাহে তবে জানিত আপন ॥
নফ্সের স্বপন এই নফ্স রস বসে।
না গেল রাসেদ আগে মনের অলসে ॥
নামের তাজিম আর তাজিম জাতের।
খাড়া বসা কেয়ামাদি সঙ্গে মৌলুদের ॥
জামেনূর কেতাবের দোছরা হিস্যায়।
তাজিমের হদাহদ লেখা গেছে তায় ॥
কিন্তু যে না জানে কিম্বা হবে নাবালেক।
পর সাথে লড়ালড়ি সদাই প্রত্যেক ॥
কামালতে যেই জন হয়ে গেছে পুর।
ঝগড়া ফাসাদ নাহি তাহার জহুর ॥
খোদাওয়ালা বোবা ধন জানিয়া না জানে।
এ সংসারে যার তার রব্বি গুণ শানে ॥
তাই তার এ সংসারে রৈয়ে যায় মান।
গুণে গুনী নিজে ফানি আল্লার নিশান ॥
তাই যাঁরা অলী আল্লা হিংসা নাহি তাঁর।
সুখের বাসর হয় সয়াল সংসার ॥
মরিলে সকলে মিশে করে আশীর্বাদ।
কেয়ামত তক থাকে তাহার ইয়াদ ॥

কবরের পরিমাণ
১। প্রত্যেক কদান্দাজ অর্ধেক উভ ও প্রশস্ত হইলেই ভাল হয়। যদি স্থান বিশেষে ইহা অপেক্ষা কিছু কম বেশী হয় তাহাতেও ক্ষতির কারণ নাই।
২। সিন্ধুক গৌর কিম্বা লহদ কবর অর্থাৎ কবরের ডাহিন পার্শ্বে কিঞ্চিৎ ফাঁক (বোগল কাটা করা) কে লহদ কহে, আবার ইহাই ভাল বলিয়া উল্লেখ আছে, যেহেতু সরে বেকায়া নামক কেতাবে উহা উত্তম বলিয়া বর্ণিত আছে। সিন্দুক গৌর বলিয়া কবরের উপর দিয়া ছাদের ন্যায় কাষ্ঠ বিছাইয়া, মাটি আবদ্ধ করা এবং লহদের কেহ কেহ খাড়া চারও দিয়া থাকেন।
৩। মুর্দ্দারকে কবরে ডাহিন কেরেটে কিঞ্চিৎ কাইত ভাবে রাখা সুন্নত, কিন্তু এরূপ কেরেটও ভাল নহে, যাহাতে মুর্দ্দারের কষ্ট বোধ হয়।
৪। কবরের মাটি নরম কিম্বা সময় গতিকে তাহাতে জল কাদা থাকিলে, তাহাতে বিছান কিম্বা খাট দেওয়া কর্তব্য। নেক লোকের কবরে খাট দিলেও কোন দোষ নাই।
৫। যাহারা কবরে মৃত্যুকে উতারিবেন, তাহাদের পক্ষে বিছমিল্লা কিম্বা অপর কোন দোয়া দরূদ পাঠ করান ছুন্নত, আবার তৎক্ষণাৎ নূরে কবর দ্বারা কবরকে মাহফুজ করিয়া দিতে পারিলে মৃত ব্যক্তির আছান হওয়ার কারণ, যাহা আউলিয়া ও মুর্শেদের মধ্যে প্রচলিত ও বিদ্যমান। এমন কি সময় বিশেষ কোন কবরের ভীত ভয় পর্যন্ত ঐ নূরে রহিত হওত কবর রৌশন হইয়া থাকে। এমন কি যে ব্যক্তির মধ্যে নূরে কবর সদা সর্বদা বিরাজমান, সেই ব্যক্তি অন্য কবরকেও রৌশন করিয়া দিতে পারেন। সুতরাং মুর্দ্দারদিগকেও আপন নূর দ্বারা নূরাণী করিয়া দিতে পারেন। ঐ নূরের দ্বারা বেঈমানকেও ঈমান দিয়া জাগরণ করাইতে পারেন। ইহাকে তছরোফে বেলায়েত কহে। এইরূপ তছরোফের দ্বারা অলী লোকেরা অনেক কার্য্য সমাধা করিয়া থাকেন। এমন কি গুণাগারের তৌবা করান শক্তি ও মনকে শানে বেলায়েত এবং খোষ্কা ইসলামাবলম্বীদিগের ঈমান বিরহিত করাও তছরোফের অধীনতা। কিন্তু সাদা মুসলমানগণ কোন অলীর বেলায়েত ছিনাইয়া লইতে সক্ষম নহেন বরং অলীর হাতেই উহাদের আয়ত্ব ও বিলুপ্ত।
৬। মুর্দ্দারের ছিনা কিম্বা কপাল ও কাপড়ের উপর শাহাদাত অঙ্গুলী দ্বারা কল্মা শাহাদাত কিম্বা চারিকুল ইত্যাদি লেখা মুর্দ্দারের পক্ষে ভাল। শামী ও অন্যান্য কেতাবে ইহাই লিখিয়াছে, কলম দ্বারা লিখিলেও ক্ষতি নাই, যদ্যপি ইহাতে এখ্তেলাফ বর্তমান।

কবরের হেজাব
১। মৃত দেহকে দাফন কাফন করতঃ কবরের চারি কোণে চারিজন দন্ডায়মান হইয়া চারিকুল পাঠ করিলে কবরের হেজাব হইয়া থাকে, অর্থাৎ কবর বালা হইতে রক্ষিত হয়। এমন কি যদি হেজাব ভাল রূপ হইয়া যায় তবে কবরের উৎপীড়ন অর্থাৎ শিয়াল কুকুরগণ কবরহইতে যে মুর্দ্দা উত্তোলন করিয়া ফেলায়, তাহা হইতেও রক্ষিত হয়। সে বিষয় অনেকগুলি প্রণালী থাকা হেতুও এই স্থানে তাহারবিবরণ বর্ণনা করা গেল না।
২। মুর্দ্দা দাফন কাফন করিয়া তাহার চারি পার্শ্বে দাঁড়াইয়া তাহার জন্য মানসিক বলে আশীর্বাদ করা কর্তব্য এবং উহার উপর খোদার রহম উৎসারিত থাকা পর্যন্ত বিলম্ব করিবে। যদি ইহাতে সক্ষম না হয় তবে দীর্ঘকাল পর্যন্ত বিলম্ব করিবে। যদি ইহাতে সক্ষম না হয় তবে দীর্ঘকাল পর্যন্ত ঐ স্থানে গৌণ করা আবশ্যক। তাহার পরিমাণ মেস্কাতে জানওয়ার জবেহ করত বাতচিত করিতে যত সময় লাগে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিলম্ব করিতে হইবে, কিন্তু ইহা ঐ খয়ের খাহির কেবল শেষ পক্ষ মাত্র। নতুবা যতক্ষণ পর্যন্ত কবরের নিকট দোয়া কালামে মনোণিত থাকিবে, ততই ফল এবং মৃত ব্যক্তির সুখের বিষয়।
৩। গোরে যখন মাটি চাপাইতে হয়, হস্ত দ্বারা চাপাইবে কিম্বা কোনরূপ বেয়াদবি সরঞ্জামের দ্বারা না হয় সেইরূপ বস্তুর দ্বারা মাটি চাপান যথারীতি কার্য। ইহার বিপরীত দূরস্ত নহে। যদিও কেহ কেহ শুদ্ধ বলিয়া লিপিবদ্ধ করিয়া থাকেন, তাহা আদাবের রীতির মধ্যে পরিগণিত নহে।
৪। কবর মাহি পোস্ত অর্থাৎ মৎস্যের পৃষ্ঠের ন্যায় কিঞ্চিৎ উঁচা করা ভাল, কিন্তু ইহার কম বেশী করিলেও কোন ক্ষতি নাই। কবরের উপর বরই কিম্বা খেজুরের শাখা গাড়িতে কেহ কেহ বলিয়াছেন আবার ইহা হাদীস বলিয়াও বোধ হইতেছে এবং তাহার টিকা (ইল্লত) এই প্রকার কহিতেছেন যে ঐ শাখা জীবিত থাকা পর্যন্ত উহা আল্লাহু আল্লাহু জেকের করিতে থাকিবে। ইহার মানি কিছু বুঝা যাইতেছে না। কারণ বরই কিম্বা খেজুরের শাখাতো কাটা মাত্রই মরিয়া যায়, কিন্তু এই স্থলে যদি ঝিকা কিম্বা মাদারের শাখা হইতো, তবে উহা মরিত না বরং জেকের করিতে থাকিত, ইহার টিকা এই প্রকার সম্ভব পর নহে ইহার টিকা যে অন্য প্রকার হইবে তাহাতে সন্দেহ নাই।
৫। মুর্দ্দার মরিলে যদি তাহার বাড়ীতে ঐ সময় কিছু খাদ্য তৈয়ার করা হয়, তবে তাহার মধ্যে বিবেচনা করিতে হইবে যে, ঐ মরণ কোন শিষ্টাচার বেরামে হইয়াছিল কিনা। যদি ওলা উঠা কিংবা গুটি ইত্যাদি বেরামে হয় তবে তাহা খাওয়া একেবারেই সঙ্গত নহে। আর যদি সহজ পীড়াজনক মৃত্যু হয়, তবে দেখিতে হইবে মৃত ব্যক্তি কিরূপ বয়স্ক। আর যদি ঐ ব্যক্তি বুড়া অবস্থার লোক হয় এবং তাহার মরণে কাহার মন অতি বিচলিত না হয়, তবে তাহা খাওয়া যাইতে পারে; নতুবা মাকরূহ্।
৬। মরণের পর যে কয়েকদিন রূহু দোয়া দানের জন্যে আসে তাহার নাম তিজা, চাহারম, সপ্তমী, দশই, সাতাইসা, চল্লিশা, ছমাসি ও সাল্ইয়ানা।
৭। মুর্দ্দারের গোসল দেলান কুসম (অল্প) গরম পানি লইয়া সাবান ইত্যাদি দ্বারা ভাল রূপ ধুইতে হইবে, কিন্তু নাকে পানি না দিয়া অজু করান চাই।
৮। জানাজার পাঁচ কাপড় যেমন ইজার, চাদর, কোর্ত্তা, ছিনা বন্ধ ও দামন। প্রথমে ছিনা বন্ধ বিছাইয়া ক্রমে চাদর, ইজার পিরান ও দামন মাথার পেছসহ ছিনার দিগ লম্বা করিয়া দুই দিগে টানিয়া দিবে। সময় বিশেষে এক কাপড়েও হইতে পারে। মেয়েছেলে জাননার মধ্যে গণ্য এবং পুরুষ ছেলে মরদের মধ্যে ধরিতে হইবে। পুরুষের তিন কাপড় যথা চাদর, ইজার ও কোর্ত্তা। লোকেরা চাদর ইজার মাথা হইতে পায়ের তলায় অতিরিক্তই দিয়া থাকেন এবং পিরান গলা হইতে সেই পর্যন্ত হইলেও ক্ষতির কারণ নাই।
৯। গোসলের পানি গরমের সময় বরই পাতা এবং ওস্নান পত্র দ্বারা গরম করিয়া মুর্দ্দারের গোসল করান যাইতে পারে। ইহাতে কোন দোষ নাই বরং শরীরের ময়লা পরিষ্কার হইবার সম্ভব।
১০। মুর্দ্দারের তাবুত স্কন্ধে করিয়া নিতে হইলে তাহা বেশী ফায়দার কারণ। ফলে তাহাতে সুন্নতের রীতির একটি বড় আদবের কার্য্য সমাধা হইয়া থাকে।
১১। মুর্দ্দার স্কন্ধে করতঃ চল্লিশ কদম হাটন যে একটি উত্তম কার্য্য তাহতে আর সন্দেহ নাই। ইহার দলিল যে প্রকারই হউক না কেন কিন্তু এই একটি নেক ফাল ও নেকের আলামত বিধায় চল্লিশ কদমে হয়তঃ চল্লিশ বৎসরের গুণা মাফ হইতেও পারে নতুবা প্রত্যেক কদমে যে কতটি উত্তম প্রক্রিয়ারাহু কেরামত তাহার অছু ছাদতের মধ্যে বিরাজমান, তাহাই উহার পক্ষপাতি এবং পাপ মোচনের কারণ।
১২। মুর্দ্দারের নামাজ রোজা ইত্যাদি ফেদিয়া স্বরূপ প্রত্যেক নামাজ রোজার জন্য পয়সা ছদকার ন্যায় ধরিয়া যত টাকা হয় তাহার পরিবর্তে এক জেলেদ কোরান লইয়া কোন ব্যক্তিকে অর্পণ করতঃ সে আবার অন্য এক জনকে দান করেন, এ রকম অনেক বার দান করিলে পরে প্রথম যাহাকে দান করা হইয়াছিল তাহাকেই দেওয়া হয়। আর ঐ কোরান শরীফের মূল্য ফেদিয়া যত টাকা হইয়াছে তত টাকা নির্দ্ধার্য করা হয় কিংবা বেশ কিস্মতী বিধায় বহু কিস্মত বলা হয় যে ইহাও সত্য। আবার অপারগের জন্য এইটি এক প্রকার হিলা বরং নেক ফলের ত্বরিকা কিন্তু চালাকির নামকে অম্ল মুখ যে লবণ কাটা হইবে তাহার বিশ্বাস কি?
১৩। মুর্দ্দারের জন্য জানাজার পর দোয়া দরূদ যাহা পড়িতে হয় পড়িয়া শেষ পক্ষে এতিম মেছকিন ও তালবে এলেমদিগককে কিছু কিছু ছদকা দেওয়া ভাল। সুতরাং কাপড় কিংবা পয়সা ইত্যাদি দান করিলে মুর্দ্দারের পক্ষে অতি রাহাতের কারণ। আবার যাহারা এই ছদকা গ্রহণ করিবেন, তাহারা অল্পে তুষ্ট হইয়া মুর্দ্দারকে দোয়া করিবেন। পয়সার লোভ করণ নাই, ইহা অশুদ্ধ। আবার যাহারা ছদকা দান করিয়া থাকেন, তাহাদেরে পক্ষেও যেন কোন বেয়াদবি প্রকাশ না পায়, তাহা হইলে তাহার নেক থাকিবে না। কারণ মুখ কালা নেকের বালা; আর হাসি মুখে নেক বৃদ্ধি পায়। কালা মুখ বদকামের বিছমিল্লা; আর মনকালা বদকারের রীতি মূল।
১৪। কবর আমাদের দেশে উত্তর রোখেই করিতে হয়। যাহারা কা’বার পশ্চিমে অবস্থিত, তাহারা দক্ষিণ দিকে কবরের ছেরানা রাখেন। যাহারা ক’াবা শরীফের উত্তরাংশে তাহারা পশ্চিমে ছেরানা এবং যাহারা দক্ষিণাংশে তাঁহারা পূর্ব ছেরানা দিয়া থাকেন। আমাদের দেশেও কহে কেহ পূর্ব ছেরানা কবর দিয়া থাকেন, ইহাও অশুদ্ধ নহে। কারণ শোয়া ব্যক্তির নামাজে পূর্ব তরফই মাথা রাখিতে হয়, ইহাও কা’বার তাজিম বটে। এই জন্য এতদ্দেশে অনেক গোর পূর্ব রোখেই পাওয়া গিয়াছে।
১৫। জানাজার চারটি দোয়াকে র্অথাৎ মুর্দ্দারকে সামনে রাখিয়া তাহার সিনা বরাবর খাড়া হওতঃ চারটি দোয়াকে পাঠ করিতে হয়, ইহাকেই নামাজ বলিয়া গণ্য করিয়া থাকে। তাহার নিয়ম এই, প্রথম খাড়া হইয়া জানাজার নিয়ত করিবা মাত্রেই আল্লাহু আকবার বলিয়া নামাজের মত হাত কান পর্যন্ত উত্তোলন করণার্থে ছোবহানাকা পড়িয়া পুনরায় ঐরূপ তকবির বলিতে হয়।
১৬। যদি নিয়ত জানা না থাকে, তবে বাংলা হিন্দি কিংবা ফারসী জবানে হউক না কেন এই প্রকার কহিবে যে, আমি এই জানাজার চারি তকবির নামাজ পড়ি ইমামের পিছনে, যদি ইহা, মুখে বলিতে অসমর্থ হয়, তবে মনে মনে কহিলেই চলিবে। কারণ নিয়ত মুখে পাঠ করা ওয়াজিব নহে। ঠেকা বশতঃ যদি কোন দূর দেশে জানাজা পড়ার উপযুক্ত লোক পাওয়া না যায়, তবে ঐ প্রকার নিয়ত করিয়া এক তকবির কহিবে পরে নামাজের ছানা অর্থাৎ ছোবহানাকা লায়লাহা গায়রুকা তক পড়িয়া দ্বিতীয় তকবির কহিবে। আল্হামদু সূরা পাঠ করিয়া তৃতীয় তকবির কহিয়া কুলহুয়াল্লাহু সূরা পাঠ করতঃ চতুর্থ তকবির কহিয়া ডাইন ও বামে সালাম ফিরাইবে। এবং যে দোয়া দরূদ জানা থাকে, তাহা পড়িয়া মুর্দ্দারের বকশিস মানসে থাকিবে। তথাপি মুর্দ্দারকে বেজানাজায় রাখা কর্তব্য নহে। কারণ ইহাতে পৃথিবীর মধ্যে গজব নাজিল হওয়ার কারণ থাকে। অতএব বেনামাজীরও জানাজা পড়া উচিত। কেননা মুর্দ্দার উপর জানাজা পড়া ওয়াজিব নহে বরং উহা জীবিত লোকের উপর পড়া ওয়াজিব। আবার মুর্দ্দারকে কষ্ট দেওয়া কিংবা বেনামাজি বলিয়া র্ভৎসনা করা একেবারেই নিষেধ এমন কি মুর্দ্দার যে রকমই হউক না কেন তাহাকে দোয়া করিতে পারে। মুসলমান বলিয়া ওয়াজিব জ্ঞানে দোয়া করাই ওয়াজিব।

আবার হাদীস কোরানের অর্থ মত আম মতলব বুঝায় অর্থাৎ সকল মুর্দ্দারকে কার্য্য এহ্ছান করণ ইহাই সঙ্গত কার্য্য নতুবা কোন ব্যক্তিরও নম্বর নাই যে কে নেক ও কে বদ। যদি মৃত্যুর কালে বদের পরিবর্তে নেক ও নেকের পরিবর্তে বদে পরিগণিত হইয়া থাকে, তাহাই বা কে বলিতে পারে, তবে কেন বেনামাজির জানাজা পড়িবে না। যাহারা পঞ্চাতী অথবা তুরতুরী ও মোল্লাকী নামাজ পড়িয়া থাকেন র্অথাৎ সমাজের নামাজও ঘাটে মাঠে দুই করস্থ আঙ্গুলি লম্বা লাঠি সোটার উপর নমস্কার রূপে নামাজ পড়াকে তুরতুরী কহে। আবার মোল্লাকি নামাজ পড়িলেই যে হইল তাহা বরং নামাজের মন ঠিকসহ যে নামাজ কায়েম করা তাহা কোরানে স্পষ্টাক্ষরে বর্ণিত আছে। কিন্তু উহার খেলাপ যে নামাজ তাহাই মোল্লাকি নামাজ। তবে কি তাহারও জানাজা রহিত হইবে। জামেনূর কেতাবে যে কোরানের আয়াতে নামাজের ব্যাখ্যায় উল্লেখ আছে তাহার মর্ম্ম নামাজকে কায়েম করাই বুঝায়। আবার কোরানে ইহাও আসিয়াছে যে কোন লোকদিগকে বদগুমান করিও না, কারণ বদগুমান করার মধ্যে অনেকেই বদ আবার এহ্ছানার্থে হাদীস কোরানেও একই মতলব অর্থাৎ মৃতদিগকে নেক বলিয়া কল্পনা কর আমিও তোমাদিগকে নেকী প্রদান এবং মুর্দ্দাগণকেও আরাম প্রদান করিব।

জানাজা নামাজের নিয়ত ও দোয়া (নিয়ত)
نويت ان اودى اربع تكبيرات صلوات الجنازة الثناء لله تعالى والصلوة على النبى والدعاء لهذم الميت متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
মৃত স্ত্রীলোক হইলে لهذا الميت এর স্থলে لهذا المية পড়িবে। ও হাত কান পর্যন্ত তুলিয়া নাভীর নীচে বাঁধিবে। তৎপরে নিম্নলিখিত দোয়া।
سبحانك اللهم بحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك وجك ثنائك ولا اله غيرك –
পড়িয়া দ্বিতীয় তকবির কহিবে। তৎপরে নিম্নলিখিত দোয়া-
اللهم صل على محمد وعلى ال محمد كما صليت وسلمت وباركت ورحمت وتر حمن على ابراهيم وعلى ال ابراهيم انك حميد مجيد –
পড়িবে ও তৃতীয় তকবির কহিবে। এবং তৎপরে ম্নিলিখিত দোয়া
اللهم اغفر لحينا وميتنا وشا هدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وانثانا اللهم من احيته مناا فا حيه على الاسلام ومن تو فيته منا فتوفه على الايمان –
পড়িয়া চতুর্থ তাকবির কহিবে। আর মৃত শিশু হইলে চতুর্থ তকবির বালকের জন্য নিম্নলিখিত দোয়া।
الهم اجعله لنا فرطا واجعله لنا اجرا و ذخرا واجعله لنا شا فعا و
مشفعا –
পড়িয়া চতুর্থ তাকবির কহিবে। আর মৃত বালিকা হইলে অত্র দোয়ার اجعله শব্দে স্থলে اجعلها এবং شافعاومشفعا শব্দের স্থলে شافعا ومشفعة বলিবে ও চতুর্থ তকবির কহিবে। অতঃপর ডাহিন বামে ছালাম ফিরাইয়া জানাজা শেষ করিবে।

নামাজের বয়ান
নামাজ আজব চিজ সংসার মাঝার।
বহুতর নেয়ামত ভিতরে ইহার ॥
সদরে কোবরার কুঞ্জি জানিবে নামাজ।
রাজ ভান্ডারের ধন নামাজের মাঝ ॥
নামাজের বহির্ভাগ নবুয়তময়।
ভিতরেতে বেলায়ৎ পরিপূর্ণ রয় ॥
সদর কোবরার বিচে যত ধন আছে।
সব চিজ খুঁজে পাবে নামাজের বিচে ॥
অন্যত্র খুজিতে নাহি হইবে দরকার।
সমুদয় কামালৎ ইহার মাঝার ॥
এনায়ৎ এবাদত আর তকর রব।
তজম্মল ছলুকের ছফরাদি সব ॥
আফওয়াল আহওয়াল আর দোয়া ও নেয়াজ।
সংসারের হাকিকত নিজ তন মাঝ ॥
নিজ তত্ত্ব অন্য তত্ত্ব্ তত্ত্ব সংসার।
চেরাগ মানুষ খোলা মেয়ারাজ দ্বার ॥
সে চেরাগে নিজ দৃষ্ট কা’বা দৃষ্টতায়।
সে দৃষ্ট চেরাগ জোঁতে সব দেখা যায় ॥
সেই দৃষ্টে হেরে যারা নবী অলী তরে।
আশীর্বাদ ছালামেতে নামাজ ভিতরে ॥
السلام عليك ايها النبى وعلى عباد الله الصالحين

আয়নায়ে ছালাত
দেল দর্পণের নূর যাহার স্মরণ।
কেয়ামে জমিনে নেগা ছালাত দর্পণ ॥
খাড়া হালে উচ্চ দেশ শির অধিকার।
ছায়া নূরী আর্শি জ্যোত জমিন মাজার ॥
সে জ্যোতে আলম জাত চেরাগ ছফর।
মেরাজ ভেদাভেদ খোলে যার পর ॥
সে কেয়ামে নদী ডুবি করিছেন যাঁরা।
খাড়া হালে নামাজেতে রহিছেন তাঁরা ॥
আওতাদ অলীর এই কেয়াম নামাজ।
নামাজ দর্পণ ফল নূর মেয়ারাজ ॥
ছফর বুলন্দ হতে রাহাত মঞ্জেল।
আরাম রাহাত করা হয় খোশ দেল ॥
যার যেই দেনা পাওনা করণ আদায়।
নেয়ামত তহশিলের ঘাট কেনারায় ॥

আয়নায়ে কুতবী
কুতবী দর্পণ পরে রাখন নজর।
অতএব দৃষ্টি করা পায়ের উপর ॥
পায়ের আঙ্গুল গুরু কুতুব দোজন।
হস্ত পদে শ্রেষ্ঠ চার কুতুব বদন ॥
অতএব নীচে নেগা কুতুব অলীর।
কেয়াম বৃক্ষের ন্যায় উপরেতে শির ॥
বৃক্ষ ন্যায় এবাদত তাদের তাবত।
খাড়াভাবে বন্দীগীতে জিন্দেগী যাবত ॥
নামাজির রোকু ধাম নিকট মঞ্জেল।
কোরবত মোকামে সিদ্ধ নামাজ কামেল ॥
قوله تعالى- نحن اقرب اليه من حبل الوريد هم بهت قريب ترهين طرف اسكى گردان كى شهه رگ سى
ঘেটি মূল রগ হতে নিকট খোদায়।
রুকুতে ইসারা তাই গরদান ঝুকায় ॥
সে রগের শান খুবী যাহার গরদান।
তাহার নামাজ মূল তৌহিদ নিশান ॥
وهو معكم اين ما كنتم
নিকটির সার হতে একত্রিত গুণ।
নিকটস্থ হতে বেশী গুণেতে আপন ॥
দুই গুণ একসনে হওয়া এক সাত।
পানি চিনি এক স্থানে নহে সে তফাত ॥
মকাম ছজুদা এই পদ্দ তালুদেশ।
গোলাকার হৃদপিন্ডে খোদার খাহেস ॥
জাহের মজহার যার নহর মহমুদ।
দোন ভোঁর মধ্যে নাক আনওয়ার ছজুদ ॥
মকাম মাহমুদা নূর জাহের যাহার।
নাম মূলে ভুরু দ্বারে এঞ্জেন তাহার ॥
আয়নায়ে খোদা নামা
নাছিরা কুঞ্জির জোরে খোলে যার ধন।
খোদাই দর্পণ এই নহর মদন ॥
নামাজেতে নাক নেঘা তাই বরাবর।
নাক শিরে ছজদাতে করণ নজর ॥
ছজুদা দুই কেন?
দোন মধ্যে গুণাগুণ মূলে বেশ কম।
পিছান ছজুদা মূল অনেক উত্তম ॥
রূকু কেন?
ছফরের পরে হয় আবার ছফর।
ঠরণ মঞ্জেল তাই আরামের ঘর ॥
দো রেকাত কেন?
আপন শুকুর আর শুকুর খোদার।
দো’রেকাত জোড় জোড় একে বাদেগার ॥
বসা কেন?
দো’রেকাত পরে বসা দোন তরফের।
মোসাহেদা এক সনে আওয়াল আখের ॥
আয়নায়ে আলম
ছিনা বুকে নেগা করা আলম আয়নায়।
পৃথিবীর ভেদাভেদ প্রকাশিবে তায় ॥

চার রেকাত কেন?
চার রেকাত চার কোনা মোরাব্বা নূরানী।
তিনে হয় তিন দরজা গুণে গুণমণি ॥
মোর্শেদ রছুল গুণে গুণ নিত্য ধন।
রছুল আহাদ গুনে তিন একতন ॥
তিনে তনু মূলে মনু চার অলঙ্কার।
চার এক সব ফাক এক নিরাকার ॥
কেমন আকার আর কোথা নিরাকার
কে হে’রেছে কে দেখিছে বাক্য চমৎকার ॥
তিন কেন এক বলা সেও এক নয়।
এক বলা নৈরাকারে কিসে পরিচয় ॥
এক বলা নিরাকার হইতে না পারে।
এক দুই গুণগান হইতে হইবে সাকারে ॥
সত্য লেখ সত্য পড় সত্য কর গান।
ঘোড় ডিম্বু বাক্য মধু আকাশ সমান ॥
না হেরিলাম না দেখিলাম না শুনিলাম যারে।
আক্কল গেয়ানে যারে নহে ধরিবারে ॥
তবে তার কোন গুণে আনি অধিকার।
দেখিলে বা চিনি তারে নিকটে আমার ॥
কি গুণের ভক্তি তার গুণের নামাজ।
কর কার্য যার রাজ্য কর না সমাজ ॥
চিন দিলে চিনা নাই একি মহা দায়।
তালাসিলে যারে তুমি কাছে হতে যায় ॥
জিজ্ঞাসিছ যার ঠাঁই তাহার তালাশ।
সরলেতে চিন দিলে কর অভিহাস ॥
বিশ্বাসের ঘরে যেই নহে যাইবারে।
অবিশ্বাসে হাস্য করে তালাসিছে যারে ॥

রোজার বয়ান
নামাজের ন্যায় রোজা রাখাও ফরজ। রমজান মাসের ৩০টা রোজায় ৩০টা বুরাই দূর হইয়া ৩০টা নূর হাছেল হয়। এই রোজা দ্বারা ঈমান বিমল হয়, নেক কাজে মন যায় ও নানাবিধ পীড়া হইতে মুক্তি ঘটে। এতদ্ভিন্ন নফল রোজা রাখাতেও অনেক ফল কেতাবে লিখিত আছে। ইহার বিস্তারিত বিবরণ আমাদের “মদিনা” নামক কিতাবে লিখা গিয়াছে।

Ñ তামাম শোধ Ñ

No comments:

Post a Comment

কালামে সুরেশ্বরী

হযরত সুরেশ্বরী ক্বিবলা কা’বা ছিলেন অত্যন্ত বুৎপত্তিময় কবি ও লেখক। তাঁহার রচিত বাংলা ও উর্দু কিতাবগুলি মারেফত রাজ্যের এক বিশাল ভান্ডার। গ্...