সূচি
নূরেহক্ব গঞ্জেনূর ১
মোর্শেদ নবীর পুত্র ৫
নূরেহক্ব ৭
নূরেহক্ব তালাস করা ফরজ ৯
এমাম ফখরে রাজির নকল ১৪
মুরীদ কি ১৯
পীরের নিকট দীক্ষিত না হইলে ২০
দ্রব্যগুণ ২৩
নূরেহক্ব সঙ্গের সাথী ২৫
নিজের উপদেশ নিজে দেওয়া কর্তব্য ২৭
ভক্তিই মূল পদ ২৮
পাগলকে মন্দ বলা কর্তব্য নহে ৩৫
নিয়ত ব্যতীত কোন আমল হয় না ৩৬
নামাজীগণের প্রতি মুক্তি কোথা ৩৯
মাদ্রাসা পাশ করে কেহ নবী হন নাই ৪২
মছনবি ওজনে ছোট পদ ৪৩
আল্লাহ্ লফ্জের অর্থ ৪৪
কাননে পাইবে না কিন্তু ভজনে পাইবে ৪৫
পীর মুরিদ ৪৬
মোর্শেদ অমর ৫০
আল্লাহ্ পাকের উক্তি ৫২
হজরত মোজাদ্দেদ সাহেব রহমে হুমুল্লাহ্ ৫৫
মেস্কাত শরীফে লেখা আছে ৫৯
তালেবানের দশটি রেজালত পরিবর্তে ৬২
জিকেরের কিঞ্চিৎ বিবরণ ৬৩
হাস্তিদেশ ও ছুলুক ৬৫
নেস্তিদেশ ৬৭
মোরাকেবা সমূহ ৬৯
নেছবত পরীক্ষা ৮৪
কোন ব্যক্তি দূরে থাকিলে তাহার অবস্থা নির্ণয় করা ৮৪
বিমারী নির্ণয় করা ৮৫
তালেবানের লতিফা ও মোকাম নিদর্শন করা ৮৫
নামাজের ফায়েজ ৮৬
কাশ্ফ কুবুর ৮৭
দুঃসাধ্য কথার মতলব খোলা ৮৮
খবর আয়েন্দা ৮৮
চিন্তাপতীর মন হইতে চিন্তা বাহির করিয়া দেওয়া ৮৮
পথিকের দেও দূরাচার হইতে রক্ষা ৮৯
দফে বালা ৮৯
দফে আজার ৮৯
ঝড়ি ও তাহার বালা হইতে রক্ষা ৯০
আছেব হাজের করা ৯০
আছেব ছাড়ান ৯০
ছিনা কবজ ও ফায়েজ বন্ধ হওয়ার লক্ষণ ৯১
ফায়েজ আবদ্ধ হইলে তাহা খোলার কায়দা ৯৪
কোন আউলিয়ার কবর ও মাজার হইতে ফায়েজ পাওয়া ৯৪
পৃথক পৃথক নূর ও তাজল্লি চিনন ৯৬
জেকের করার নিয়ম ৯৬
মোর্শেদ গায়েব কি দূরে রহিলে ফায়েজ পাওয়া যায় ৯৮
খত্মে মোজাদ্দেদী ৯৮
জেকের করিবার সময় তালেবানের যে হাল হয় ৯৯
রুজি কম হইবার কারণ ১০০
মুরব্বী বচন ১০২
ফকির এক প্রকার নহে ১০৩
আবেদ গোলাম আশেক আজাদ ১০৭
খোদা লোকের সনে কেমন করিয়া হইতে পারে ১০৯
শবে বরাত ও কদরের নামাজের নিয়ম ১১১
চাঁদ দেখিবার নিয়ম ১১২
এস্তেখারা ১১৩
প্রভুর খেলা ১১৩
সাত ভুমে সাত আদম ১১৫
প্রত্যেক সময়ের পৃথক পৃথক গুণ ১১৮
“খোলাছা মানী” ১১৯
সকল বস্তুর গুণ ও তাহার কারণ জানা আবশ্যক ১২০
রাখা বস্তু কাজে লাগে ১২১
বুধবার মনহুছ ১২৪
সময়ের ফল ১২৪
বাদলের আলামত ১২৫
সনের আলামত প্রথমেই পাওয়া যায় ১২৬
গরকী ও তুফানের আলামত ১২৭
যোগার পাখীর বিরহ ১৩১
উদাসী ১৩২
ভাব ১৩৩
বিলাপ ১৩৩
বন্ধুর নাম স্মরণ করিলে পাপ মোচন হয় ১৩৫
نورحق گنج نور
নূরেহক্ব গঞ্জেনূর
হাম্দ বেহদ নূরেহক্ব নূরুন আলা নূর।
দরুদ ছালাত নূরে অসীম প্রচুর ॥
সংসারের সার সেই সর্ব্বত্র প্রচার।
জীবের জীবন সেই সেই সারোদ্ধার ॥
জল স্থল স্বর্গ মর্ত্ত সাগর কানন।
জীব জন্তু নর নারী দেও পরিগণ ॥
শৃগাল কুকুর সিংহ তুরঙ্গ কুরঙ্গ।
মশা মাছি কুম্ভ মীন কীট ও পতঙ্গ ॥
সেই সে নূরের খেলা জগৎ রৌশন।
এক নূর হৈতে এক একই ঘোষণ ॥
সকলেরি বীজ নূর ভেবে দেখ সার।
কাফের মোমেন এতে নহে সুবিচার ॥
পাক নাপাকের কোন নহে সমাগম।
যথায় ফেকিবে বীজ প্রকাশে বিক্রম ॥
মল মূত্র পঁচা গলা সুস্থান কুস্থান।
হয় না পবিত্র বীজে হেন কোন স্থান ॥
বীজের সামান্য তেজ নহে গুণ কম।
সুস্থান হইতে দেখি কুস্থানে সক্ষম ॥
গু-গোবরে রোপে যদি করিয়া যতন।
মলস্থল চিরকাল প্রকোপ চেতন ॥
ভালকে করিবে ভাল সে কথা কেমন।
মন্দতে হইলে ভাল প্রশংসা নিপুণ ॥
নাপাক বিক্রমে পাক পাথর ছেদিয়া।
এক পরিচয় দেয় শির উঠাইয়া ॥
যতই হইবে ফাস চেতে তত ঘাস।
অল্পকালে চাহে তরু ধরিতে আকাশ ॥
বীজ চাহে ফাস মাটি, মাটি বীজে মিশ।
নির্গুণের গুণ তত্ত্বে গুণী পায় দিশ ॥
দিশাহীনে দিশ আছে সদৃশ ভরমে।
হীম পদ পাবে তত্ত্বে আছয় গরমে ॥
অন্ধকারে দীপ চাহে দীপ অন্ধকার।
অন্ধকার বিনা দীপে কিবা লাভ তার ॥
রোগের আরোগ্য লাভে দাওয়ার তালাশ।
রোগ না হইলে দারু কিসেতে প্রকাশ ॥
পরিষ্কার লাভ হেতু সাবুন দরকার।
ময়লা বিহনে ফল কি হইবে তার ॥
ভোকেতে আহার চাহে আহারেতে ভোক।
ভোক না হইলে খাওয়া কি হইত সুখ ॥
বেমানে ঈমান চাহে ঈমানে বেমান।
বেমান না হ’লে কেবা লইত ঈমান ॥
كلام نظامى
(কালামে নিজামী)
گناه من ارنامد د رشمار
ترانام ك بود امرزگار
(গুণাহ্ মান আরনামুদে দারসুমার
তেরা নাম কায়ে বুদে আমুরজেগার।)
গুণাগারে নবী চাহে নবী গুণাগার।
গুণাগার বিনা নবী কিসের দরকার ॥
মুরিদে মোর্শেদ চাহে মোর্শেদে মুরিদ।
পথহারা না হইলে কিসের মোর্শেদ ॥
নূরে হক্ব নবী হইতে মোর্শেদেই পায়।
নূরে হক্ব নাহি যাতে মোর্শেদ কোথায় ॥
নূরেহক্ব দানা বীজ যথায় রুপিবে।
না পাকে ফেলিলে বীজ পাক নিকলিবে ॥
নোৎফা পেটেতে পড়ে নাপাকে নাপাক।
নাপাক হইতে দেখ হয় কিনা পাক ॥
আজরের মণি হইতে হয় পাক নবী।
কেন হইল যদি তাতে না রহিত খুবি ॥
মোর্শেদের নূরেহক্ব যথায় বুনিবে।
সহস্র হইলে পাপ তাতে কি করিবে ॥
যদি শিষ্য নূরেহক্ব জাগা দিতে পারে।
এক দমে শত পাপ চারিপাশে ঝরে ॥
চোর চাহে ভর বাড়ি ঘোর অন্ধকার।
দীপ জ্বালাইলে চোর কোথা থাকে আর ॥
কি করিবে পাপে তায় কি করিবে তাপ।
নূরেহক্বে পাপ তাপ নূরেহক্বে ছাপ ॥
জলেতে ঢালিলে চিনি সব মিষ্টময়।
লোনা তিক্ত কটু কষা কখন না রয় ॥
পানির বৃহৎ গুণ কহন না যায়।
সকল ধুইয়া ছাফ জলে শুদ্ধ পায় ॥
বাতাসের গুণ কিবা দেখ চূড়ামণি।
আগুন সমান তনু করে দেয় পানি ॥
আগুনের গুণ কিবা কহন না যায়।
কঠিন লোহাকে করে মোম সম প্রায় ॥
সাবুনের কিবা গুণ বুঝে উঠা ভার।
হইলে শতেক ময়লা করে পরিষ্কার ॥
কি কব সুরের গুণ সুর সুমধুর।
সুরে বিমোহিত সর্ব আলম প্রচুর ॥
যথা তথা হেরি এই সুর বিনা নাই।
সুরেই জগৎ মোহ, মোহ যে কানাই ॥
মাতঙ্গ মাতিয়া সুরে পদেবি শৃগাল।
কুরঙ্গে মাতিয়া রঙ্গে গলায় শিকল ॥
ললিত মধুর রবে শরীর অস্থির।
রণ ভুমে যোদ্ধাগণ ধায় যেন তীর ॥
সুরেতে মাতিয়া বীর রণে দেয় মন।
গেয়ান থাকে না রণে জিয়ন মরণ ॥
দারুন মধুর সুরে সর্প অজগর।
সাধিয়া বন্ধনে পড়ে ছাড়িয়া গর্ত্তর ॥
এ খেলা লীলার খেলা খেলা মিষ্টময়।
সকল পদের মূল নূরেহক্ব হয় ॥
কিসের নামাজ রোজা কিসের কোরান।
নূরেহক্ব বিনা তাহা সকল বেজান ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তায়ালা)
ان فى ذالك لذكر لمن كان له قلب
(ইন্না ফি যালিকা লিজিক্রি লিমান কানা লাহু কাল্বুন)
যাহার কলবে নূর হয়েছে রৌশন।
কোরান জেকের জান তাহার কারণ ॥
মূল শূন্য বিনা নূরে কি হইবে লাভ।
মৌখিক কীর্ত্তন রিয়া সকল খারাব ॥
নামাজের শর্ত আদি করিলে আদায়।
বেগর মানসে বল নামাজ কোথায় ॥
নামাজে মানস যদি হইবে দরকার।
তবে সে নামাজ বটে খোদা সিদ্ধ সার ॥
খাওনে লজ্জত শুধু পেট ভরা তায়।
লজ্জত বিহনে পেটে যাইবে কোথায় ॥
অতএব নূরেহক্বে হক্ব দরকার।
সে নূরে মানস পুরে পাইবে দিদার ॥
অতএব নবী বাক্য সুরস মধুর।
পাইয়া উচিত ঠাঁই করিল জহুর ॥
(حديث) من عرف نفس فقد عرف ربه
(হাদিস-মানআ’রাফা নাফ্সাহু ফাকাদ আ’রাফা রাব্বাহু)
من عرف كاجس دل مين پهچان رهيگا
اس دل من تلا وت سدا قران رهيگا
من كان فى هذه قران مين ايا
سمجهى گانه جواسكووه حيو ان رهيكا
باريك هى نكته يهان سمجها اسى جسنى
كو نين مين دانم وهى انسان رهيگا
(মান্ আ’রাফা কা জিস্ দিল্মে পাহচাঁন রাহেগা।
উস্ দেলমে তালাওয়াতে সদা কো’রআন রাহেগা
মান কানা ফি হাজিহি কো’রআন মে আয়া।
সাম্ঝোগাঁ না জোঁ উস্কো উহঁ হায়রান রাহেগা ॥
বারিক হ্যাঁয় নুক্তা এহাঁ সামঝা ইসে জিস্নে।
কাওনাইন মে দাঁয়েমে উহি ইনসান রাহেগা) ॥
নিজেকে চিনেছে যেই চিনিছে খোদায়।
এই সে রছুল বাণী শুন মনকায় ॥
তুমি যথা আমি তথা কহে আর সাঁই।
তোমা সঙ্গে আমি আছি তুমি দেখ নাই ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
وهومعكم اينما كنتم وفى انفسكم افلاتبصرون
(ওয়া হুয়া মা’আকুম আইনামা কুন্তুম ওয়াফি আন্ফুসেকুম আফালা তুব্সেরুন)
নূরেহক্বে হক্ব আছে হক্ব চিন আগে।
এবাদত কর যদি পার শেষ ভাগে ॥
না চিনিয়া এবাদত করিবে কাহার।
ভুতের বন্দেগী হবে হবে না খোদার ॥
নূরেহক্ব জাগা পায় যাহার মনেতে।
মন আর নামাজেতে যাবে না বনেতে ॥
এলেম হেলেম আর পাগড়ি যুব্বায়।
কেমনে পাইবে সাঁই না রইলে হিয়ায় ॥
দীর্ঘ মোনাজাত কত দুই চারি হাত।
বেখুলুছে কিবা ফল ডেকে দিন রাত ॥
খুলুছে জুলুছ চাই মোর্শেদ কান্ডারী।
তবেই মানসপুরে পৌঁছিবারে পারি ॥
ফাওয়াইলুল্ বলে সাঁই কোরানেতে কয়।
বেনুর মোছল্লি যাবে নরকে নিশ্চয় ॥
কেননা কাহিলী জন্মে সে নূর বিহনে।
উৎপত্তি হইবে ছুস্তি অন্ধকার মনে ॥
তাহা হইতে রক্ষা দিবে মোর্শেদ সুজন।
অতএব কহে প্রভু কোরানে আপন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
فاسئلوا اهل الذكر انكنتم لاتعلمون
(ফাস্আলু আহলিজ যিক্রী ইন কুন্তুম লা তা’আলামুন)
আমাকে স্মরণ যেই করে নিরন্তর।
না জানিলে জিজ্ঞাসিবে তাঁহার গোচর ॥
এবে খোদা পাঠাইল পীরের সমীপে।
জানিলে খোদাকে ঝুট সারিবে কিরূপে ॥
খোদাই বান্ধব বটে করিতে নিস্তার।
গাঁথিল শিষ্যের গলে পীর স্বর্ণহার ॥
মোর্শেদ নবীর পুত্র
মোর্শেদ নবীর পুত্র কেমনেতে হয়।
ফলে কিন্তু পুত্র বটে মুখে বলা নয় ॥
রূহানী ওজুদ এক বাতেন আছয়।
জাহেরা শরীরে সেই মূল পদ হয় ॥
حديث
من سلك طرقى فهو ال
(হাদীস- মান সালাকা তারিকী ফাহুয়া ইলা)
সে মূলেতে প্রেম পয়দা তাছির সকল।
সে তাছির সর্ব্ব অঙ্গ যত দলাদল ॥
সে তাছির সূচনীয় মাখন আকার।
ধুয়া জোরে খোয়া যেন হয় জলাধার ॥
সে মেঘে বাদল পূর্ণ ঘোর অন্ধকার।
শত শত জলফোঁটা তাহাতে নির্দ্ধার ॥
কড়া পরে সরা দিয়া জোশ দিলে জল।
সরা পরে জল ধার করে টল টল ॥
উঠিবে ধুয়ার সঙ্গে জলের কিরণ।
জলহীনে কড়া শেষে হইবে বিরণ ॥
কিন্তু যে গরম জোরে পানি উর্দ্ধে ধায়।
বাচ্চাদানি হইতে পানি মুরিদ বানায় ॥
মোর্শেদ শরীর হইতে মুরিদ শরীর।
একাযুক্ত মিষ্ট যেন পানিতে চিনির ॥
যত পানি সব চিনি মিঠা সমুদয়।
এখন কোথায় চিনি ভিন্ন বলা হয় ॥
এই সে হুজুরী বিদ্যা মিরাস নবীর।
কোথায় কাগজে আছে তাহার তাছির ॥
হাজার কাগজ যদি পড়ে যায় তল।
কি হইবে গুরুজন রহিলে সকল ॥
গুরুজন পৃথিবীতে না রহিলে আর।
কি হবে কাগজ তবে রহিলে হাজার
কাগজের সাথে ভেসে যেই বিদ্যা যায়।
কোথায় এহেন বিদ্যা মোর্শেদ ছিনায় ॥
কমল বিহনে গন্ধ কেবা দিবে আর।
কিন্তু সেই গন্ধ পাবে গোলাপ মাঝার ॥
খাছনূর ছানাওরি সেই নূরে নবী।
সেই নূর পীর নূর তাতে ফায়েজ পাবি ॥
مولانا روم رح
(মাওলানা রুমী রঃ)
پير ره شبريت اخمر امده است
سينه ازبحر خضر امده است
(পিরেরাহ ছাবরিয়াত খামার আমোদাস্ত।
সিনাহ্ আজ বাহ্রে খিজির আমোদাস্ত)
পরশ পাথর হেন ত্বরিকত পীর।
ছিনা তার জান যেন সাগর গভীর ॥
ভয়ানক সমুদ্দুর নাহিক কেনার।
মাল মাত্তা মনি মুক্তা তাহাতে অপার ॥
নূরেহক্ব
হুজুরী নামেতে যেই এলেম নবীর।
নূরে খোদা তারে বলে সেই নূরে পীর ॥
হুজুরী শিখিতে হয় হাজেরী দরকার।
নিজ সনে রূজু হওয়া আবশ্যক তার ॥
চক্ষু মুখ কর্ণ নাসা দরজা সকল।
বন্ধ করে একান্তই হুজুরী আমল ॥
ইহাই প্রবল ছিল আমল নবীর ॥
শিক্ষিতে ওস্তাদ আর দীক্ষিতের পীর ॥
ওস্তাদ শিখায় বিদ্যা নিরখিয়া দেখ।
মোর্শেদ কহেন বাপু চক্ষু মুদে থে’ক ॥
চক্ষু বন্ধ বিদ্যা এই খুলিলে কি হবে।
খোলা জন এই ভেদ কভু নাহি পাবে ॥
তাহাকে ঈমান কহে সেই শরিয়ত।
ত্বরিকত হাকিকত সেই মারফত ॥
বীজ হইতে বৃক্ষ শাখা ফল ও লজ্জত।
সারতত্ত্ব এই জাতে সজীব জগত ॥
ফল পে’লে গাছপালা তাহাতে সকল।
ফল পে’লে ডাল তোড়ে কেমন আজল ॥
ঔষধ তালিকা জান শরিয়ত ঘর।
পড়ে সদা রাখে না সে দ্রব্যের খবর ॥
পড়নে তালিকা রোগ কোথা হয় দুর।
ঔষধ তৈয়ার চাই তরিকে দস্তুর ॥
বানাইলে কি হইবে যদি নাহি খায়।
ঔষধ বানানে রোগ আরোগ্য কোথায় ॥
পড়নিয়া মনে ভাবে পড়নেই ফল।
ওরক উল্টানে ভাবে এতেই মঙ্গল ॥
এক মন তনে যেই সাধন সাধিবে।
নফ্ছের পাকিতে মুক্তি কোরানে দেখিবে ॥
কোরান দেখিলে শুধু না হবে নিস্তার।
কোরানের মূল তত্ত্ব করহ বিচার ॥
কোরানের হাকিকত আছে নিজ মনে।
পীরেতে পাইবে তাহা পাবে নহে বনে ॥
মূলতত্ত্বে ফল হবে আমল দরকার।
শরিয়ত উৎপন্নের এই ঘর সার ॥
মাথা হয় মূলতত্ত্ব চুল হবে তায়।
শিরে শরিয়ত চুল আপনি জালায় ॥
কোথায় বিচারে চুল মাথা যার নাই।
ঘর বিনা সিঁড়ি তার হইবেক নাই ॥
কেমনে হইবে বেটা শাদী না করিলে।
বাপ বোলাইবে তারে ছাওয়াল জন্মিলে ॥
খোজা যদি শাদী করে বোঝা হবে তার।
সন্তান কেমনে হবে করহ বিচার ॥
হাগিবার জাগা ভাই আগেতে বানালে।
খানা নাহি কি খাইয়া হাগিবে সকালে ॥
চিরদিন নছিহত অন্যকে করিনু।
নিজ নছিহত আমি কভু না শিখিনু ॥
আমি বলি ঐ বেটা বড়ই খারাপ।
সেই বলে তার অতি হইবে আজাব ॥
কহিছি অন্যের পাপ গলা দিয়া টানা।
দেখিতে নিজের পাপ হই বুঝি কানা ॥
নূরেহক্ব যেইজন করিল সাধন।
এসব অলীক পথে নাহি যাবে মন ॥
তেই সে কহিল প্রভু সার্থক বচন।
ওয়াবতাগু ঢোর সবে উছিলা আপন ॥
নূরেহক্ব বিনা হক্ব কভু পাবি নাই।
উছিলাতে নূর আছে নূরেহক্ব পাই ॥
নূরেহক্ব তালাস করা ফরজ
তত্ত্ব করা নূরেহক্ব ফরজ একিন।
কহিয়াছে খোদা কুনু মায়াচ্ছাদেকিন ॥
পীর ধর যথা পার কহিয়াছে সাঁই।
পীরের উছিলা বিনা হবে না ভালাই ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ياايها الذين امنوا اتقوا الله وكونوامع الصادقين
(ইয়া আইয়ুহাল লাজিনা আমানুতাকুল্লাহা ওয়া কুনু মা’আস্ছোয়াদেকিন।)
ওহে লোক যাহাদের তক্লিদি ঈমান।
ডরাও খোদাকে হও সঙ্গী ছাদেকান ॥
যতেক ফরজ আছে হুকুম আল্লাহ্র।
তরক করিলে তাহা হবে গুণাগার ॥
কিন্তু যে ফরজ আছে রাখন ঈমান।
রাখন লওন বটে দোনই সমান ॥
কিন্তু সে রাখনে হবে লওনের ফল।
না রাখিলে লওনেতে ঘটে অমঙ্গল ॥
উজিরানা সাহা যেন দিয়াছিল কায়।
না রেখে তাঁহার বিধি শেষে মারা যায় ॥
অতএব বলে সাঁই সবার কারণ।
আমাকে ডরিয়া ধর পীরের চরণ ॥
শুনিয়া ডরিছ বটে দেখিয়া চিনিবে।
শুনে কিহে দেখা ফল কখন পাইবে ॥
শুনা কথা দুনা হয় না হয় একিন।
এরূপ একিনে শেষে ঘটায় কুদিন ॥
এমন ঈমান যদি ঈমান হইত।
কথায় কথায় তবে কেমনে টুটিত ॥
তছদীকি পীরের পাশ যে সব ঈমান।
টুটিলে ধরিতে পীর হ’ত না ফরমান ॥
তবেই তৌহিদ ঘরে দেখহ সুজন।
ফরজের ফরজ এই চির মূলধন ॥
ঈমান ফরজ ছেড়ে গুণা নাহি হবে।
কিন্তু সে বেমান বটে কাফের হইবে ॥
এজন্যে তছদীকি শিখ ছাদেক গোচর।
তছদীক তকলীদে আছে অনেক অন্তর ॥
শুনে কি কাগজে দেখে তছদীক না হয়।
তাহাকে তকলীদি কহে জানিবে নিশ্চয় ॥
এমন ঈমানওয়ালা হবে যেই জন।
যেমন পানির ফোঁটা ফোটে ঠনাঠন ॥
দমেতে মোমিন হয় দমেতে কাফের।
কখন দিনেতে আর কখন বাহের ॥
এমন ঈমান পরে নির্ভর করিয়া।
ফকিগণ ফেকা আদি দিয়াছে লিখিয়া ॥
ঈমান যাইবে কিসে রহিবে আবার।
অনেকের ইহা শুধু মৌখিক বিচার ॥
জানে না তছদীকি কভু টোটা নাহি যায়।
নিজ ভাবে অন্য জনে মশ্রেক বোলায় ॥
তছদীকি একিন বটে একিন মাকুল।
যেমন আফতাবে কভু নাহি আছে ভুল ॥
ভানুর দলিল দেওয়া একথা কেমন।
ভানুর দলিল হয় ভানুতে লক্ষণ ॥
আকাশের তারকার তারাই দলিল।
অন্ধগণে এ দলিলে হইবে মুস্কিল ॥
কোথায় উদিছে তারা কি দেখিবে তায়।
কোথায় খেলিছে জুনী অন্ধ কোথা পায় ॥
কেবল শুনিলে তাহা দেখা নাহি যাবে।
শুনে কিহে জুনী পোকা তালাসিয়া পাবে ॥
অতএব কহে সাঁই সার্থক বচন।
এক মন চিত্তে শুন কোরান কথন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
من كان فى هذه اعمى فهو
فى الاخرة اعمى واضلوا سبيلا
(মান্কানা ফি হাজিহি আ’মা ফাহুয়া
ফিল্ আখিরাতি আ’মা ওয়াদাল্লু সাবিলা।)
ইহকালে অন্ধ যেই পরকালে হবে।
পরকালে খোদা দরশন কোথা পাবে ॥
কিন্তু ভাই শেরেকের ডর রাখে যারা।
শেরেকের অর্থ কিবা বুঝিয়াছে তারা ॥
মুখেতে শরীক কৈলে শরীক না হয়।
রুমের বাদশাহী মোর কেহ যদি কয় ॥
তাহাতে বাদশাহী তার হইবে কোথায়।
হইল মিথ্যুক নিজে কহিল বৃথায় ॥
তেমনি মৌখিক যারা শেরেক যে কয়।
খোদার বাদশাহী কেবা কেড়ে নিবে তয় ॥
এ কথার বোধশক্তি যার মনে হবে।
কেমনে মুশরেক সেই বল দেখি এবে ॥
তৌহিদ ঘরেতে হয় হাকীকি ঈমান।
সে ঘরের আলেফ, বে, খোদা এক জানো ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ان الظن لايغنى من الحق شيئا
(ইন্নায্জোন্না লা‘ইউগ্নি মিনাল্ হাক্কি সাঁইয়া)
একিনী না হলে আর হবে না নিশ্চয়।
গায়ের একিনী খোদা কভু হক্ব নয় ॥
অতএব কহে সাঁই ছাড়িতে তকলিদ।
তকলিদ আন্ধার লাঠি ছামনে রসিদ ॥
লাঠি ধরে অন্ধগণ চলে ধীরে ধীরে।
সার সার সার বলে তবু ঘুরে পড়ে ॥
বিনা কি কানার লাঠি ধরিবে কখন।
চক্ষু মুদি রবে কিহে যেন অন্ধগণ ॥
চক্ষু মুদে লাঠি ধরা হইবে কোথায়।
ধরিলে আন্ধার লাঠি চক্ষু খুলে যায় ॥
هردم برسد بعارفن ذوق جديد
خود مجتهد اند نه زاهل تقليد
شرون نخو رد ند جز شكار جودرا –
روباه خورد فتاده لحم قديد –
(র্হদম্ বারাছিদ্ বা আরফানে জোওক জাদিদ।
খুদ্ মুয্তাহাদ্ আন্দ নাহ্ জ’আহ্লে তাক্লিদ ॥
সিরুন্ নাখোরদান্দ যোযা সিকার যোদারা।
রূবাহ্ খোরদ্ ফাতাদাহ্ লাহ্মু কাদিদ্ ॥)
আরেফের দমে দমে নয়া ভাব হয়।
নিজে মোজতাহেদ কার মোজহাবে নয় ॥
নিজ শিকার ভিন্ন বাঘ না খায় কখন।
বাঘ খাওয়া অবশিষ্ট খায় রূবাগণ ॥
হুছুলী এলেম যদি পঞ্চাশ হাজার।
শিখিলে একিন ঠিক হবে নাকো তার ॥
ছামনে আসিবে এক তাহার নকল।
ফখরে রাজি এমামের ঘটে অমঙ্গল ॥
দমে দমে হতে সেই পারিবে বেমান।
তাহাতে উহার আছে অনেক সন্ধান ॥
এমন একীনে তারে শয়তান দেওয়ানা।
কাড়িবে ঈমান তার দিয়া এক হানা ॥
নহে যেই বাপ, সাপ, বাঘ, চিনে আর।
বাপ, সাপ, বাঘ, ভোলে কেমন বিচার ॥
চান্দা মৎস্যে ভানু যদি কহে কোন জন।
পৃথিবীতে বল কেবা করিবে শ্রবণ ॥
মাতাকে করিতে শাদী কেহ যদি কয়।
কেমনে অচিন হবে বলহ নিশ্চয় ॥
সে কথা রাখিয়া পিছে বলি যে তোমায়।
সোঁনা রূপা বদলে কে কড়ি নিতে চায় ॥
এমনি কি জোক, পোকা না ভোলে কখন।
খোদাকে ভুলিয়া যাবো এ কথা কেমন ॥
তেমনি খোদার জাত যে নর চিনিবে।
চিনিলে কাফের সেই কেমনে হইবে ॥
অতএব মোজাদ্দেদ লেখে মক্তুবাতে।
কাফের মকবুল বটে জান ত্বরিকতে ॥
দরজা তরক্কি হবে খুলিবে বুরূজ।
নছিব বলন্দ হবে হইবে উরূজ ॥
মরদুদ হইবে যদি শরিয়তে হয়।
শরিয়ত বিধানেতে নরকী নিশ্চয় ॥
هرچند كافرشر يعت مرد وده است مستحق عذاب
وكافرطريقت مقبول است مستجب درجات
(হার চান্দ কাফের শরিয়ত মারদার্দ আস্ত মোস্তাহাক আজাব।
ও কাফের তারিকত মাকবূল্ আস্ত মুস্তাজিব দারজাত ॥)
হর ঘড়ী চূর্ণ হয় তকলীদি ঈমান।
যেমন কাচের শিশি লাগে যদি শাণ ॥
কিন্তু সেই হাকিকতে নাহিক ঈমান।
ঈমান হইলে কেন হবে বেঈমান ॥
বাজিগর নাহি এই বানরের ছাও।
খাঁচা ভেঙ্গে বন পশু দৌড় দিতে চাও ॥
ঈমান ছুটিয়া গেলে বলে ধর ধর।
বেড়া ভেঙ্গে এই পথে ঈমান দিছে লড় ॥
ধাওয়া ধাই করে লোকে ঈমান দৌড়ায়।
বন পাখী ছুটে গেলে পাইবে কোথায় ॥
মাণিক পীরে দুধ কলায় ঈমান যাবে ভাই।
মাণিক পীর কোন্ খোদা, খোদা বুঝি নাই ॥
মাণিক উছিলা মোর দুধ কলা তার।
তাঁহার দোয়াতে মোর হইবে উদ্ধার ॥
পীরানের পরে যদি পৌঁছাব ছওয়াব।
আশীর্ব্বাদে মাফ মোর হইবে আজাব ॥
তাতে কি শেরেক হবে বল দেখি নর।
তবে যে মানস তব নামাজের ঘর ॥
সে ঘরে তোমার খোদা নহে কদাচন।
তবে মান্য নিজ খুতি ভরিবা কারণ ॥
নিজ মান্য নিজে খাই তাতে দোষ নাই।
এই কি আসিল কাল ফিরিল দোহাই ॥
আসিল অসৎ কাল হরে নিল ধন।
ডাকাত হইল দেশে নাহি মহাজন ॥
মান্য গণ্য ধন্য দেশে আছিল যখন।
না খাইলে পীরে কভু খেত না কখন ॥
যদি না খেলাতে পারে খাইবার কালে।
মনে ভক্তি দোয়া দরূদ পড়িয়া সকলে ॥
পরেতে খাইত যাহা খেলা’ত খোদায়।
এই সে খাওন ন্যায় পীরে আগে খায় ॥
খাইবার কালে যদি নাহি ভোলে পীর।
কেমনে না হেন জনে হবে দস্তগীর ॥
যত ইতি অলীগণ পৃথিবী মঙ্গল।
তাঁহাদের পরে যদি কেহ করে বল ॥
শয়তান তাহার পরে জগতের সার।
পাঠাবে ঈমান ছিনে লইতে তাহার ॥
একিন রবে না তার মরণ সময়।
একিন অলীর ঠাঁই মোর্শেদ আলয় ॥
পৃথিবীতে নানা কষ্ট যতেক বালাই।
হাদিছের কথা এই ঝুট হবে নাই ॥
এমাম ফখ্রে রাজির নকল
শুনেছি নকল এক পড়িল স্মরণ।
এক মন চিত্তে শুন আজব কথন ॥
আছিল এমাম এক ফখ্রে রাজি নামে।
বিস্তর জাহেরা বিদ্যা শিখে পরিণামে ॥
প্রধান পন্ডিত ছিল আলেম ছরদার।
ছিল নাকি তছনিফাত কতেক হাজার ॥
এতেক কেতাব যার আছিল রচনা।
এবে শুন কহি তার কিঞ্চিৎ ঘটনা ॥
এক দিন পরকাল করিয়া স্মরণ।
অলীর নিকটে এক করিল গমন ॥
কাতর বচনে কহে করিয়া বিনয়।
পরকাল ধন কিছু দিবে মহাশয় ॥
কহিলেন অলী তারে পরম বচন।
ভুলিলে জাহেরী বিদ্যা দিব সেই ধন ॥
করিব দীক্ষিত বিদ্যা তোমাকে প্রদান ॥
শিক্ষিত ছাড়িলে পাবে আখেরী সন্ধান ॥
একথা বিচার করে মনের ভিতর।
ছাড়িয়া জাহেরী বিদ্যা লাভ কিবা মোর ॥
এতেক ভাবিয়া মনে ফিরিল এমাম।
কহিলেন অলী তারে ভেবে পরিণাম ॥
খালি নাম এমামেতে কিবা তার লাভ।
বুঝিল না পরকালে ললাট খারাব ॥
অতীত হইল যদি কিছু কাল তায়।
আসিল আসন্ন কাল মরণ সময় ॥
সেকালে রহিত হল অঙ্গে যত বল।
শয়তান আসিয়া তথা উপস্থিত হল ॥
শয়তান কহিল এবে বল মোর তরে।
ঈমান এনেছ তুমি কোন খোদা পরে ॥
কহ কোন খোদা পরে এনেছ ঈমান।
কেবা তোকে সৃজিয়াছে কহ সে সন্ধান ॥
কোন রূপ কোথা ঘর কিবা নাম তার।
কোথা খায় কোথা সোয় কি তার আহার ॥
পাইয়াছ কভু তারে দেখিয়াছ তায়।
এক বলে কেমনেতে হইল প্রত্যয় ॥
তুমি কহ এক সাঁই বেটা বেটি নাই।
ফিরিস্তারা খোদা পুত্র কহিছে ইছাই ॥
তোমা হৈতে ইংরেজের আছয় এলেম।
শত রূপ বিদ্যাবান প্রবল আলেম ॥
খবরিয়া জুম্লা যাহা কাগজেতে হয়।
ইনসাঁইয়া না হইলে কে করে প্রত্যয় ॥
চক্ষে না দেখিয়া কিসে হইল বিশ্বাস।
কহ সেই গুপ্ত কথা মোর সমপাস ॥
চক্ষে না দেখিলে তারে খবরিয়া কয়।
দেখিয়া বিশ্বাস করা ইন্সাঁইয়া হয় ॥
খবরিয়া সত্য কভু হইতে না পারে।
তাহার দলিল আছে কোরান ভিতরে ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ان اظن لايغنى من الحق شيئا
(ইন্নায্জোন্না লাইউগনি মিনাল হাক্কি সাঁইয়া)
একিনী না হলে তাহা হবে না নিশ্চয়।
খোদা কহে এতবারি কভু হক্ব নয় ॥
কানে কি কাগজে লিখা যে দলিল হয়।
খবরী এতবারি তাহা বিশ্বাসের নয় ॥
এ সকল কথা যদি কহিল খান্নাছ।
এমাম শুনিয়া অতি হইল তরাস ॥
মরি বাঁচি বলে দিল হাজার দলিল।
কিন্তু সে শয়তান আগে হইল জলিল ॥
কোথায় শয়তান আগে রাজির এলেম।
তার নোক্তা নাহি বোঝে সহস্র আলেম ॥
শয়তানের এলেম যেন সাগর প্রবল।
পৃথিবীর আলেমগণ এক বিন্দু জল ॥
শয়তানের বরাবরে আলেমান যদি।
করিবেন পারিবে না কেয়ামতাবধি ॥
কিন্তু সে কাতর আছে এস্কের বিদ্যায়।
আশেক মাশুক ভেদ পাইবে কোথায় ॥
مقوله سعدى
(মাকুলা শাদী)
ميان عاشق ومعشوق رمزيست –
كراما كاتيبن راهم خبر نيست –
(মিয়ানে আসেক ও মাসুক রমুযিস্ত।
কেরামান্ কাতেবিন রা’হাম্ খর্ব নিস্ত ॥)
আশেক মাশুক আছে যেরাজ অন্তর।
কেরামান কাতেবিন তাহা রাখে না খবর ॥
কেমনে তাহাতে দাগা দিবেক শয়তান।
ফেরেস্তা বুঝিতে নারে যাহার সন্ধান ॥
সহস্র এলেম পতি তার কাছে ঘাস।
আরেফের দমে ভাগে সহস্র খান্নাছ ॥
এবে শুন এমামের হল কি উপায়।
শয়তানের সাথে যদি দিসা নাহি পায় ॥
কহিল কি শিখেছিনু হায় ধান্দাবাজি।
খোয়ানু সকল শির ঝুলে গেল আজি ॥
এই বলে ধোকা তার এসে গেল মনে।
কোথায় ঈমান তার দেখ জনে জেনে ॥
হেন কালে শুনে এক গায়েবি আওয়াজ।
আকাশ হইতে যেন পড়ে গেল বাজ ॥
গায়েব হইতে যেন সেই অলী কয়।
বেদলিলে খোদা এক দলিলে কি হয় ॥
গায়েবি আওয়াজ শুনে হিম্মত অপার।
কহিল প্রভুর জাতে দলিলে কি কার ॥
হিম্মত বাতেনি তারে করিল আছর।
তেই সে রাজির মুখে বলে দরাদর ॥
নহে রাজি পরে বাজি করিত শয়তান।
সে বাজিতে রক্ষা কোথা পাইত ঈমান ॥
مقوله مولانا روم
(মাকুলা মাওলানা রুম)
شيخ نورانى زراه اگاه كند –
پاى سخنش نيز همراه كند
(সাঁইখে নূরানী যাঁরাহ্ আঁগা কোন্দ
পাঁইয়ে সাখুনাস নেজা হামরাহ্ কোন্দ)
জোতির্ম্ময় পীর যারে করে জ্যোতির্ম্ময়।
কালামের সৃষ্টি মূল তার মধ্যে হয় ॥
একথা শ্রবণে কহে শয়তান দেওয়ানা।
এমামতি লিয়াছিনু দিয়া এক হানা ॥
কোথায় কেতাব তব কোথায় কোরান।
কোথা তব তছনিফাত কেমন ঈমান ॥
ازتفسير مولا نا يعقوب چرخى رح
(আজ তাফসীরে মওলানা ইয়াকুব চারখি (রহঃ)
كربااستد لال كارين بودى –
فخر رازى راز دان دين بودى –
پاى استد لاليان چوبين بود –
پاى چوبين سختپ تمكين بود –
(কারেবা ইস্তেদালাল্ কারে দিনে বুদে।
ফাখ্রে রাজি রাজদাঁনি দিনে বুদে ॥
পাঁইয়ে ইস্তেদালালিয়ান চৌবিনা বুদ্ ।
পাঁইয়ে চৌবিনা সাখতেপেঁ তাম্কিন্ বুদ্॥)
দলিলেতে দ্বীনদারী হ’ত যদি শেষ।
ফকরে রাজি রাজ দান পে’ত উপদেশ ॥
দলিল কাঠের পাও চলা মহা দায়।
পদ বিনা কাষ্ঠ পদে কোথা চলা যায় ॥
বেগর পীরেতে তব ঈমান কোথায়।
ভান্ড খালি নাম অলী কি হইবে তায়।
মোর্শেদ ঈমান বটে আমল তোমার।
মোর্শেদ মরণ কালে হবে রাহাদার ॥
মোর্শেদ কবরে গতি সময় উদ্ধার।
পিতামাতা যে কালেতে কেহ নহে কার ॥
মোর্শেদ হাসরে গতি খলিফা নবীর।
শত নবী সাথী নহে কিন্তু নিজ পীর ॥
পোলেতে মোর্শেদ কোলে হয়ে যাবে পার।
ভক্ত মোর্শেদ জান খোদা পীর তার ॥
হুর নূর সেই পুর ফল ফুল জল।
মান কান সাঁই পীর দিদার কেবল ॥
ইহ ধাম সেই নাম তার কাম সার।
পীর মান সেইস্থান তাহাতে উদ্ধার ॥
তুমি যদি খোদা বলে ডাকিবে হাজার।
না শুনিবে খোদা তাহা হাদিসে প্রচার ॥
পার যদি পীর মুখে ডাক দেও তায়।
ডাকে ডাকে ডাক পাবে যাবে না বৃথায় ॥
না বল খোদার নাম না বল রসূল।
এক চিত্তে পীর মুখে বোলাও কেবল ॥
তব জন্য পীর যদি করে আরাধন।
তবেত সন্তোষ হবে প্রভু নিরাঞ্জন ॥
তুমি পাপী শত পাপী তাতে দোষ নাই।
নিজে ফানি পীর ধনী তার স্থানে চাই ॥
তবে গতি তার মতি তার স্থিতি পাই।
স্থিতি যার কিবা তার পীর যার ভাই ॥
ভাব হাদি আহ্মদি নিরবধি পীর।
অকেলেশে সে মানসে মন রশ ধীর ॥
মাটিতে রুপিলে গাছ হইবে শিকড়।
ডাল পালা ফল ফুল হইবে তৎপর ॥
শিকড় না হইতে যদি লিবে উঠাইয়া।
না ধরিবে ফল তাতে যাইবে মরিয়া ॥
সেইরূপ জাহেরান যত আলেমান।
ফল রহে গাছ তার নাহি পায় স্থান।
কেহ বলে চল হেন কেহ করে মানা।
দুই পক্ষে দলাদলি বিষম যন্ত্রণা ॥
একিন গাড়ীতে তারা মাটি নাহি পায়।
কৃষকে রুপিলে গাছ ছাগলে উঠায় ॥
একিনের গাছ হতে ফল ধরে তায়।
গাছ না হইলে ফল কিসে জন্ম পায় ॥
জমিনেতে ফল ভাই নাহি কদাচন।
অবশ্য ধরিবে ফল করিলে রোপন ॥
মোর্শেদ রুপিলে গাছ হইবে প্রবল।
উঠাইতে পারিবে না করে মহা বল ॥
ওয়াজ আওয়াজ কভু শুনিবে না কানে।
রহিবে তাহার নেগা একিন কোরানে ॥
ফখরে রাজি ইমামের ঈমান কোথায়।
আছিল ফকির দোস্ত তাতে রক্ষা পায় ॥
ইহাতে মালুম হৈল এই বাত সার।
যাহার নাহিক পীর শয়তান তাহার ॥
العلم حجاب اكبر
(আল্ ইল্মু হিজাবু আকবার)
মুরীদ কি
মোর্শেদের ছিনা আহা কি কব বাখান।
নিরবধি প্রভু নাম তাহাতে আসন ॥
এক নামে তরে পীর এক নামে মরে।
এক নামের শত গুণ তাঁহার অন্তরে ॥
এক নামের মহব্বত এক নামের জ্বালা।
দিবা নিশি জ্বলে নামে তনু হয় কালা ॥
এক নামের শত রঙ্গ, রঙ্গ ধরে তায়।
সেই নামে কত নাম কে বুঝিবে হায় ॥
এক ফলে শত ফল দানায় দানায় মূল।
মূলে মূলে গাছ পালা ডালে ডালে ফুল ॥
ফুলে ফুলে শত ফল তার কোন ফল।
খাইতে পারিলে ফল তারে শিষ্য বল ॥
হাত ধরে তওবা করে যে হয় মুরিদ।
সে কভু মুরিদ নহে জানিবে মারিদ ॥
মোর্শেদ পাইলে সেই মুরিদ নিশ্চয়।
অযথা বলিয়া পীর শুধু ঝুট কয় ॥
এসব অলীক কথা শয়তানি ফিকির।
মোর্শেদের বদনামি ভুত তার পীর ॥
حديث شريف
(হাদিস শরীফ)
من ليس له الشيخ فشيخه الشيطان
(মান্ লাইসালাহুস্ শাইখু ফাস্শাইখুহুস্ সাঁইতোয়ান)
কেতাবেতে আসিয়াছে যার পীর নাই।
শয়তান তাহার পীর নিশ্চিত বালাই ॥
যে জন পীরের ভাব চাহে বুঝিবারে।
আহ্মদি ভাব বিনা পাইবে না তারে ॥
পীরের নিকট দীক্ষিত না হইলে
কোন বন্দিগী কবুল হয় না
দীক্ষিত না হয় যেই পীরের সমীপে।
মন তন বেন্ধে সেই রাখিবে কিরূপে ॥
জংলি ঘোড়া মাঠে ফিরে সহিস বিহনে।
দেও ভুতে দৌঁড়াইয়া ফিরে বনে বনে ॥
বিরাণ ঘরেতে হয় দেওয়ের আছর।
বসতি কঠিন জান তাহার ভিতর ॥
ভুতুম পেঁচকা যথা নিরবধি ডাকে।
বিরাণ পাইলে জাগা সদা বসে থাকে ॥
যে জাগাতে হয় জান ঘোর অন্ধকার।
কখন কি হয় তথা লোকের গুজার ॥
চোরের বসতি হয় যে ঘর মাঝার।
দেশপতি চোর যথা চোর কর্মকার ॥
তথায় বসতি করা হইবে কঠিন।
বসতি করিলে হবে চোরের অধীন ॥
বক্তেক উজির যার হইবেক পীর।
দাগাদারি কাম তার করিবে তাছির ॥
নামাজেতে খাড়া যদি খোদা করে মনে।
পবনের আগে মন চলে যাবে বনে ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
من شر الوسواس الخناس
(মিন্সাররিল ওয়াস্ ওয়াসিল্ খান্নাছ)
শয়তান হইতে পানা ধরিবে খোদার।
পাইতে খোদার পানা পীর দরকার ॥
নতুবা শয়তান পীর হয় তা সবার।
দমে দমে দাগা দেয় হেন দাগাদার ॥
এ কারণে এবাদতে নাহি পায় মজা।
করিতে জেকের তার ঘাড়ে চাপে বোঝা ॥
কিছুতে না ফল পায় যত করে চাষ।
খোদার জেকের যেন ঠেকে বন ঘাস ॥
অতএব কহিয়াছে কোরানে আপন।
মন নিবেশিয়া তাহা শুন বন্ধুগণ ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
فى قلوبهم مرض فذاد هم الله مرضا
(ফি কুলু বিহিম মারাদুন ফাজাদা হুমোল লাহু মারাদা)
ওদের মনের মধ্যে বেরাম যখন।
আরও বেশি করে খোদা বেরাম তখন ॥
যাহার ঘরেতে করে মোর্শেদ আসন।
খোদা বই কোথা হয় মনেতে স্মরণ ॥
পীর ঘরে প্রভু নাম নিরবধি জমা।
জল কুপে জল যেন নাহি পায় ক্ষমা ॥
ঝরণার জল যেন করে কল কল।
নিরবধি বহে যেন করে মহাবল ॥
বেগেতে পবন ধায় হুহু কভু করে।
ধুম ধুম হুম হুম রবে যেন ঝরে ॥
মহা অগ্নি কোপ যেন ধাঁ ধাঁ ঘোরতর।
সাগর তরঙ্গ হেন সাঁ সাঁ শব্দে স্বর ॥
মেঘের নাদেতে ধ্বনি শ্বন শ্বন সোর।
যত বেগে চলে গাড়ি হুহু তত পর ॥
তেমনি পীরের দেহে গভীরতা জল।
যে ডুবিল সেই জলে পড়িলেক তল ॥
সে জলের তলদেশে খেজের আসন।
খেজের রক্ষক তথা খেজের শাসন ॥
দূতগণ চৌকিদার খেজের সমীপে।
ভুতগণ দাগাদারি করিবে কিরূপে ॥
প্রবেশ করিল যেই পাতাল মাঝার।
জলাকার বিনা কভু দেখিবে না আর ॥
নাক মুখ বন্ধ করে কানে দিয়া তালা।
জল তলে ডুব দিয়া হিম কর জ্বালা ॥
যে তরীর হবে ভাই মোর্শেদ কান্ডারী।
সেই তরী চালাইতে দাঁড়ি হবে বারি ॥
সোনার পুত্লা আগ্ ভোটে ইঞ্জিন চালায়।
কল ঘরে টেন্ডেল সাঁই টিপ দিলে ধায় ॥
ইষ্টিমের জোর ভারী বাইলেট ডবল।
পাখা বেগে উজান ধায় হু হু সোরগোল ॥
অন্ধকার ধন্ধকার আর খোয়াকারে।
ঘুচিবে মোর্শেদ দিলে দিয়াবাতি তারে ॥
খস্ খস্ দিয়া বাতি যখন ঘসিবে।
ফশ ফশ করে আলো বাহির হইবে ॥
ঘেস কলে ঠেস দিয়া দেখ একবার।
একই কলের চাপে জ্বলিবে হাজার ॥
যথায় হাজার বাতি জ্বলে দিবা রাতি।
তথা কি হইবে আর চোরের বসতি ॥
চোর চাহে ভরা বাড়ি ঘোর অন্ধকার।
হাজার দীপের আগে কোথা চোর আর ॥
খাড়া হও নামাজেতে করহ বন্দেগী।
হইবে না হইবে না কখন রান্দেগী ॥
যতক্ষণ আছ তুমি নামাজে খোদার।
আসিবে না আসিবে না কু-ঘটনা আর ॥
কেরাত পড়িবে যদি তাবত কোরান।
হইবে না হইবে না কভু পেরেশান ॥
রুকু দিয়া দিন ভর যদি তুমি রবে।
কখন না কখন না মছিবত হবে ॥
ছজুদাতে যেয়ে যদি রাখিবেক মাথা।
হইবে না হইবে না কখনই ব্যথা ॥
একেলা জামাত পড় ঘরেতে বসিয়া।
নিজ এমামের তব মোক্তাদি হইয়া ॥
একেলা জামাত করে পড়িবে কোরান।
একেলার জন্য শত করিও বিছান ॥
এক এক বিছানে কর শতেক কাতার।
এক এক কাতারে লোক সহস্র হাজার ॥
সহস্র জবান হবে একের জবান।
এক এক জবান হবে সহস্র সন্ধান ॥
এক এক সন্ধানে যদি পড়িবে নামাজ।
এক এক নামাজে হবে শতেক মে’রাজ ॥
দ্রব্যগুণ
প্রত্যেক বস্তুর হয় নব নব গুণ।
কেতাব দলিল তাতে নাহি প্রয়োজন ॥
সূর্য্যরে পরম তেজ সদা দরশন।
ভানুর দলিল হয় ভানুতে লক্ষণ ॥
শিয়াল দেখিলে হয় কম্পিত বদন।
কেতাবের মানা নাহি শুনিবে তখন ॥
যে নর ডুবয় জলে বন্ধ হবে শ্বাস।
কোথায় কোরানে করে তাহার তালাস ॥
সুগন্ধে মোহিত মগ্ন হইবে যথায়।
তাহাতে মগজ বাড়ে যে রহে তথায় ॥
যথায় সুমিষ্ট বায়ু করে সঞ্চালন।
মহাতাপী হইলে তথা পুলকিত মন ॥
শুনিলে মধুর সুর আনন্দ কৌতুক।
দুঃখে কাল কাটে যার তবু তার সুখ ॥
আঘাত লাগিবে যদি শরীর মাঝার।
খামোখা আসিবে উহু কি করিবে তার ॥
তামাকের ঘটে যদি আতর রাখিবে।
সুগন্ধি হইবে নহে খামিরা বনিবে ॥
আতর বিনাশ করে গন্ধ মন্দ চয়।
সুবাসিত তৈল আদি ফুলে জন্ম হয় ॥
প্রভু নাম গুণ যদি তব মনে রবে।
নিজ গুণে গুণি তুমি কেতাবে কি হবে ॥
প্রভু নাম গুণ তাহা কে করে স্থাপিত।
ভাবিয়া তাহাকে নর হলো সশঙ্কিত ॥
জল স্থল যত বল ভূবন মাঝার।
প্রভু পদে পদ পেয়ে হয়েছে নির্দ্ধার ॥
গজবের নূরে সৃষ্টি হইল আগুণ।
রহমতি নূরে জন্ম ঠান্ডা গুণাগুণ ॥
লতিফ নূরে নরম পয়দা ঝড় ও বাতাস।
কছিফ নূরে মোটা পয়দা পাহাড় আকাশ ॥
ঘোর নূরে চোর জন্ম ডাকু রাহাজান।
ধীর নূরে মুণি জন্ম আর মহাজন ॥
যে জন এসব গুণ করিবে সাধন।
নিজ গুণে গুণি সেই কর নিরূপণ ॥
আপন নিঃশ্বাস পরে বিশ্বাস করিয়া।
নিজ মন কোরানেতে লহ তালাসিয়া ॥
অতএব কহে নবী হাদিস কথন।
দেল হইতে তালাসিবে ফতওয়া মুণিজন ॥
حديث – ازعين العلم
(হাদিস-আজআইনুল ইল্ম)
استفت عن قلبك وان افتك المفتون
(ইস্তাফ্তা আন্কালবিকা ওয়াইন আফ্তুকাল মাফ্তুন)
মুফতী যদি করে মানা নাহি শুন তায়।
কি হবে শুনিলে ফতওয়া না রৈলে হিয়ায় ॥
মন ঘরে ধন রৈলে ফতওয়া কিছু নয়।
কাঁচা মনে সাচা ফতওয়া বৃথায় নিশ্চয় ॥
কেতাবেতে লাইলী নাম আছয় লিখন।
তবে কি কেতাবে লাইলী আছে কদাচন ॥
লাইলী লাইলীতে আছে কেতাবেতে নাই।
মজনুতে লাইলী আছে কহিয়া জানাই ॥
ভুতের আছর যদি কার পরে হয়।
মনুষ্য ছুরত পরে ভুতে কথা কয় ॥
আসেক মাশুক যদি জুদা জুদা হয়।
হাকিকতে এক দেহ কিন্তু জুদা নয় ॥
পিরিতে পিরিতে আছে এক আলাপন।
নর হৃদে বাস করে দেহেতে গোপন ॥
অগ্নি যত পৃথিবীতে এক অগ্নি হয়।
তেমনি মাশুক জান অভিন্ন হৃদয় ॥
একই সকল বায়ু করিবে বিশ্বাস।
জানিবে সকল দম একই নিঃশ্বাস ॥
দম দম এক দম দম নাহি আর।
পাইবা দমের ঘরে প্রভুর দিদার ॥
ঝাড়িলেই চক্মক্ জ্বলিবে আগুন।
পুরাণে কোথায় আছে বলত আগুন ॥
তব সনে আছে সাঁই নাহিক কোরানে।
এহেন প্রভুর বাক্য নাহি শুন কানে ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
نحن اقرب اليه من حبل الوريد
(নাহনু আকরাবু ইলাইহি মিন্ হাবলিল ওয়ারিদ)
সাহারগ হৈতে তব নিকটেতে ঠাঁই।
কহ সেই স্থান কোথা কোথা আছে সাঁই ॥
মাবুদ চিনিতে যদি চাহে কোন জন।
সাবুদ করিয়া চিনে নিজ তন মন ॥
প্রেমের অনল হেন মন মাঝে ঘোষে।
শ্রম করিয়া তায় প্রেমিকেতে তোষে ॥
কাহার শিক্ষিত নহে প্রেম রস ধন।
এবে যার প্রেম আছে জানে তার মন ॥
অযথা পুরানে কেন করহ ভ্রমণ।
পুরানে কোরানে নাহি পাবে দরশন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
هومع كم اينما كنتم
(হুয়া মা’আকুম্ আইনামা কুন্তুম্)
নিজ সনে আছে সাঁই নিজে জানি নাই।
এ বড় বিষম বোকা দারুণ বালাই ॥
নিজে কানা অন্যে মানা গলা করে টান্।
চোর হাতে ছোরা রাখে বধিতে পরান ॥
নূরেহক্ব সঙ্গের সাথী
নূরেহক্ব বিনা গতি নাহি ত্রিভূবনে।
সে নূর সঙ্গের সাথী মরণে জীয়নে ॥
মরিলে মোর্শেদ মাল বাড়িবে দ্বিগুণ।
কম নাহি জান কভু যেমন আগুন ॥
কালাম রব্বানি নামে কেতাব ভিতর।
নূরেহক্ব সঙ্গের সাথী জান নিরন্তর ॥
বড় পীর কহে নূর সঙ্গী সমুদয়।
কবরে হাসরে তাহা বিনে গতি নয় ॥
সাথে যাবে নূরেহক্ব আমল তোমার।
কবরে হাসরে হবে নিত্য দুনা তার ॥
নিত্য দুনা হবে গুণা আমল ততপর।
মার্জ্জন হইতে রবে লাগাত হাশর ॥
জারিয়া আমল এই মোর্শেদীরে কয়।
বসে বসে দুনা ফল পাইবে নিশ্চয় ॥
পবিত্রতা নূরেহক্ব করে যদি মন।
পবিত্র হইলে মন শুদ্ধ হবে তন ॥
শুদ্ধ যদি তন হবে হইবে পাষাণ।
পাষানেতে কীড়াগণ করে না আসন ॥
আসন করিবে পোকা যাহার অন্তর।
অন্তরে কি হবে তার পড়িলে মন্তর ॥
মন্তর সামান্য কথা মুখের পাঁচালী।
পাঁচালী কোরান জান মন যার খালি ॥
মন ভান্ড খালি যার খালি সংসার।
সংসার অসার হবে হলে অন্ধকার ॥
ইহকালে অন্ধকার হবে যেই জন।
পরকালে কোথা পাবে খোদা দরশন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ان فى ذالك لذكر لمن كان له قلب
(ইন্না ফি যালিকা লি জিক্রি লিমান্ কানা লাহু কাল্বুন)
যে জানে কলব ব্যাখ্যা মন আছে তার।
কোরান জেকের হবে কারণে তাহার ॥
কোরান কলবযুক্ত তবে সে কারণ।
ইহাই খোদার কথা কোরানে প্রমাণ ॥
নিজের উপদেশ
নিজে দেওয়া কর্তব্য
উপদেশ দিতে চাহি পরের কারণ।
নিজে উপদেশ নাহি দেই কদাচন ॥
কোরানেতে মোর নাম কোথা লিখিয়াছে।
স্বর্গীয় বলিয়া আমি কিসে জানা গেছে ॥
নিজে যদি স্বর্গীয় হইতাম ভাই।
বাঁচাইতে পাতকীরে দিতাম দোহাই ॥
আমি যদি ফেরাউন নাহি হইতাম।
অনুক্ষণ লায়ান্নত তারে করিতাম ॥
ফছুছ কিতাবে আছে এমত লিখন।
ফেরাউন হইতে বদ জানহে আপন ॥
নহে ভাল তোমা হইতে ফেরাউন হবে।
নিজে বুরা, অন্যে ভাল যদি না জানিবে ॥
নবুয়ত আসিয়াছে যাহার উপর।
সেই কেন বাতাবে না হয়ে পয়গাম্বর ॥
কায়েম মোকামে যেই হইবে নবীর।
বাতাইলে পাপ নাহি পাইলে তাছির ॥
বেদরকার সেই যদি পারে বাতাইতে।
সার্থকে মানস যদি নাহি রাখে তাতে ॥
নিজের হইলে হিত অন্যে পাবে হিত।
হিতাহিত না রহিলে হবে বিপরীত ॥
পরীক্ষা দিবেন ছাত্র শিক্ষক বিচার।
শিষ্য গুরু কিসে হল কহ নামদার ॥
নিজে শিষ্য হলে শিষ্য করিবে অন্যেরে।
নিজে পীর হলে পীর হবে তত পরে ॥
যে নর পতিত হয় মহা সমুদ্দুরে।
কেমন করিয়া সেই বাঁচাবে অন্যেরে ॥
যে জন নিজের কুল পারে না করিতে।
সে জন অন্যের ভুল পারে কি সারিতে ॥
নিজ তত্ত্ব যেই নর রাখে না খবর।
নরকে যাইবে কিবা বেহেস্ত ভিতর ॥
কেমন করিয়া সেই অন্যেরে ত্বরায়।
সক্ষম হইল কিসে হায় হায় হায় ॥
অতএব কোরানেতে কহিয়াছে সাঁই।
হাস্যভাবে কোন কৌমে না কহ বুরাই ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
يا ايها الذين امنوالا يسخر قوم من قوم عسئ ان يكونوا خيرا منهم ولانساء من نساء عسى ان يكن خيرا منهن ولا تلمزوا انفسكم ولاتنا بزوا بالالقاب بئس الاسم الفسوق بعد الايمان من لم يتب فاولئك هم الظالمون –
(ইয়া আইউ হাল্লাজিনা আমানু লা ইয়াস্ খার কাওমুম্ মিন্ কাওমিন্ আসা আই ইয়াকুনু খাইরাম মিনহুম ওয়ালা নিসাউম মিন্ নিসায়ি আসা আইয়া কুনা খায়রাম্ মিন্ হুন্না ওয়ালা তালমিজু আন ফুসাকুম্ ওয়ালা তানাবাজু বিল আলকাবি বি’ইসাল ইসমুল্ ফুসুকি বাদাল্ ইমানি মান্লাম্ ইয়া তুবু ফাউলায়েকা হুমুজ জালিমুন।)
ওহে লোক ঈমানদার হও খবরদার।
হাসি ঠাট্টা নাহি কর অন্য কৌমে আর ॥
কে জানে হইবে ভাল সে কৌম নিশ্চয়।
হাসি গেল্যা কর নহে বিনা পরিচয় ॥
আর নাহি ঠাট্টা কর বিবিগণ যারা।
অন্য কোন বিবিগণে জানিয়া মস্কারা ॥
তোমা হ’তে সেই বিবি হ’তে পারে ভাল।
আপসের মধ্যে আর ফাছাদ না ঢাল ॥
বুরানাম সাথে কার না কর খেতাব।
বুরাছেড়ে তওবা পড় না জান খারাব ॥
হেন কাজ হ’তে যদি নারলে বারণ।
নিশ্চয় জালেম সেই কোরানে লিখন ॥
ভক্তিই মূল পদ
ভক্তিতেই সিদ্ধ হবে মনের বাসনা।
ভক্তিতেই পূর্ণ হবে নানা উপাসনা ॥
ভক্তিতেই তৃণকুটা হইবে পর্বত।
ভক্তিতেই দূরে যাবে মনের কল্পত ॥
ভক্তিতেই পাপ তাপ মার্জ্জন হইবে।
ভক্তিতেই বেগতিক শরীরে না রবে ॥
ভক্তিতেই শক্তি হবে পাষাণ প্রখন্ড।
ভক্তিতেই খন্ড করে লিখন নির্ব্বন্ধ ॥
অভক্তিতে মিথ্যা হয় সত্য গুরুজন।
ঘাসে ভক্তি পাবে মুক্তি রুমের কথন ॥
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
پيرمن خس است يقين من بس است
(পিরে মান খাস্ আস্ত। ইয়াকিন মান বাস্ আস্ত ॥)
পীর যদি ঘাস হবে ভক্তি কর তায়।
ঘাসে ভক্তি পাবে মুক্তি যাবে না বৃথায় ॥
হাফেজ হেন ভক্তি শিখ ভক্তি কর যদি।
ভক্তি অঙ্গ পাপহীন রবে নিরবধি ॥
حافظ
(হাফেজ)
بمى سجاده رنگين كن گرد پير مغان گويد
كه سالك بيخبر نبود ز راه ورسم منزلها
(বামি সাজাদায়ে রাঙ্গিন কুন গুরদ্ পীর মগানে গুয়্যিদ।
কে সালিকে বেখবার নাবোদ জারাহা ওয়ারেস্মে মোন্জেলাহা ॥)
শরাবেতে “জানামাজ” করহ রঙ্গন।
“মগগুরু” কহে যদি করিতে এমন ॥
রাহা ঘাট রাখে পীর সকল খবর।
মদ দুধ এক জান তাঁহার গোচর ॥
কোন জন এ বয়াতে মরম কারণ।
দেশে দেশে জনে জনে করে অšে¦ষণ ॥
কেহ না কহিতে পারে মরম ইহার।
ঘোরে দেশ অবশেষ হইল লাচার ॥
তত পরে কহে তারে কোন সাধু জন।
পেতে পার বাক্য মোর করিলে শ্রবণ ॥
বলে ভাল কত কাল করিণু ভ্রমণ।
তাতেও পরম কথা করি না শ্রবণ ॥
তবে সে কহিল সাধু শুনহ সন্ধান।
আছে এক গদ্দিনীশি শরাবী মস্তান ॥
শরাব আফিং গাঞ্জা ভাঙ্গ সারি সারি।
দিবস রজনী মত্ত কোলে করে নারী ॥
পরীরূপ রেন্ডি কত চতুষ্পার্শে তার।
রজনী দিবাতে করে নেসা ব্যবহার ॥
ভক্তিরূপে কর যদি উপাসনা তার।
হাদিসের মর্ম্মে সিদ্ধ পাইবা বিচার ॥
صحيح حديث
(ছহিহ্ হাদিস)
من اغير مدفوع بالابواب لوقسم على الله لايره
(মান্ উগায়্যারা মাদফুউ বিল আবওয়াবে।
লাও কাসামা আলাল্ল্লাহে লা ইয়ারাহু ॥)
দেখিবে বিশ্রী রূপ কু-আকৃতি তার।
এহেন পুরুষ যায় দরজাতে যার ॥
গরদানা দিয়া তারে বাহেরে তাড়ায়।
কছম করিয়া যদি কহিবে খোদায় ॥
সত্য হবে বাক্য তার বৃথা হবে নাই।
আছেহে এমন অলী পৃথিবীতে ভাই ॥
সর্প মুখে মণি আর জঙ্গলেতে খনি।
কণ্টকেতে পু®প আর কাপুরুষে ধনী ॥
একথা শ্রবণে তার ভক্তি মনকায়।
নত শিরে রত হয় মস্তানের পায় ॥
মস্তান বলেন তারে হেথা যদি কাম।
তিন বাক্য পূর্ণ তবে কর পরিণাম ॥
মদে মত্ত বেশ্যাকারী নামাজ ছাড়িবা।
ইহা হতে কোন কাজ প্রথমে করিবা ॥
ইহাতে বিচার করে যুবক আপন।
প্রথমে নামাজ হইতে রহিব বারণ ॥
মস্তান কহিল তারে রহ কত দিন।
করারে রহিবা ঠিক থাকিয়া অধীন ॥
অধীনে রহিয়া ঠিক কত দিন যায়।
একদা প্রভাতে সেই নামাজ সময় ॥
ছটফট করে তনু নামাজ কারণ।
কিন্তু যে ফরজ পড়ে লইল তখন ॥
নামাজ পড়িয়া চাহে হইতে বাহার।
দেখেন রাছুল খাড়া সামনে তাহার ॥
অমাবস্যা রাত্রে যেন পূর্ণিমার চাঁন।
রাছুল ছিলেন খাড়া দেখিল যোয়ান ॥
ধনহীন পায় যেন মানিকের খনি।
বোবা যেন কথা শিখে হয় সুবচনি ॥
কিন্তু যে রাছুল কন বিনয় বচন।
আমার ছুন্নতে কেন রহিলে বারণ ॥
গায়েব হইল নবী এতেক বলিয়া।
তাজ্জব হইয়া কহে মস্তানে আসিয়া ॥
কহিল মস্তান গুরু শুন মন কায়।
ফরজ ছাড়িলে আজ দেখিতে খোদায় ॥
যুবকেরে কহে পরে যাইয়া বাজারে।
টাকা দিনু নিয়া যাও বেশ্যানির ঘরে ॥
আছিল নিাশর কাল চলিল একেলা।
বেশ্যানি বুড়ির সাথে করে কহা বলা ॥
কত ছুড়ি আছে বুড়ি কহিল আমার।
দেখিয়া তাহার সনে কর ব্যবহার ॥
একথা শুনিয়া যায় কোঠার মাঝার।
দেখিল কান্দিছে ছুড়ি হয়ে জার জার ॥
কান্দিয়া আঁচলে ঢাকে আপনার মুখ।
কহিল যুবক তারে কহ কিবা দুঃখ ॥
এসেছি তোমার কাছে সুখের বিষয়।
শুনিয়া কাঁদন তব সহ্য নাহি হয় ॥
কি হেতু করিতে আছ এতেক রোদন।
বিবরিয়া কহ এবে আপনা বেদন ॥
বলিল আমার দুঃখ কহিব কাহায়।
শিকার বাঘের কাছে কোথা রক্ষা পায় ॥
আছিল কপালে লেখা ঘটে অমঙ্গল ॥
তাতে বিধি ঠেকাইল বাঘের জঙ্গল।
যুবক বলিল তারে শুনহ সুজন।
কেবা তুমি কোথা ঘর কহ কোন জন ॥
কহিল অমুক দেশ মোর বাড়ি ঘর।
পিতা মাতা শ্বশুরাদি নাহি আছে মোর ॥
ছিল কিন্তু স্বামী এক বয়াত লইয়া।
মর্ম্ম অন্তে বার সাল গেছে গুজারিয়া ॥
তাহার শোকেতে কাঁদি হইয়া কাতর।
তাহাতে বিপদ মম ঘটে বহুতর ॥
আমাদের গ্রামপতি পড়িয়া পশ্চাতে।
কৌশলে বিক্রয় করে বেশ্যানীর হাতে ॥
কিন্তু আমি আজ হতে ঠেকিয়াছি দায়।
অতএব কাঁদি আমি করে হায় হায় ॥
যুবক করিল যদি একথা শ্রবণ।
বেহুঁস হইয়া হইল মাটিতে পতন ॥
সতর্ক হইয়া কহে আমি সেই নর।
আছিনু বিদেশগামী তোমার সওহর ॥
গলাগলি হয়ে তারা কাঁদে দুইজন।
শুনিয়া বিনয় করে মৃত্তিকা গগণ ॥
করিয়া যুবক কত বিনয় বচন।
চলিনু পীরের আগে রহ কতক্ষণ ॥
যাইয়া পীরের পায় করিল প্রকাশ।
করহ গ্রহণ পীর আমি তব দাস ॥
একে একে প্রকাশিয়া কহিল সকল।
মোর্শেদ কহিল বাপু হইবে মঙ্গল।
বেশ্যানি বুড়ির তরে আপনি মাঙ্গায় ॥
পুছিল সতীর হাল একে একে তায় ॥
কহিল বেশ্যানি বৃদ্ধা মোর্শেদ ছামনে।
অবিকল প্রকাশিল না রেখে গোপনে ॥
কহে পীর বেশ্যানিগো যাও না ত্বরায়।
হেফাজতে এনে এবে দেখাও আমায় ॥
এ কথা শুনিয়া ধায় যেমন পাগল।
পৌছিল পীরের পায় ভাবিয়া মঙ্গল ॥
পীর তারে স্থির করে সন্তোষ বচনে।
নিরবধি রাখে তারে আপনা ছামনে ॥
পীর যারে স্থির করে চিনিবে খোদায়।
হারামে হালাল তারে মদে দুধ পায় ॥
তাহারা চিনিয়া পীর পাইল খোদায়।
না ভজি মোর্শেদ পদ হায় হায় হায় ॥
অতীত হতেছে কাল আসিবে না আর।
পীর বিনা পরকালে কি গতি আমার ॥
বেশ্যানি পীর পেয়ে হল সাবধান।
বুড়াকালে পীর গুণে পেল পরিত্রাণ ॥
তুমিও ভজহ গুরু হইবে মঙ্গল।
না ভজিলে কোন হেতু হইবে না ফল ॥
গুরু যদি প্রদানিবে মুর্দ্দার আমায়।
খাইব সে মুর্দ্দা আমি ভক্তি করে তায় ॥
শতেক কেতাবে যদি মানা করে তারে।
মানিয়া পীরের বাক্য রে’খে দিব ধারে ॥
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
صد كتاب وصد ورق درناركن
جان ودلرا جانب دلداركن
(সোয়াদ্ কিতাবো ওয়া সোয়াদ্ ওয়ারাক্ দার নারেকুন।
জান্ও দিলেরা জানিব্ দিল্দার কুন ॥)
শত কেতাব ফিকে মার আগুন ভিতর।
এক মনে ভক্তি কর তরফে দেলবর ॥
পরেতে যুবক মদ চলে খাইবারে।
মদে মধু পায় শুধু মদের ভান্ডারে ॥
একে একে যত মদ করেছিল ক্রয়।
খাইবার কালে তাহা মধু বিনা নয় ॥
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
ملت عشق ازهمه دينها جداست
عشقا نراملت ومجهب جداست –
(মিল্লাতে ইস্ক আজহুমা দিনাহা জুদা আস্ত।
আসেকানেরা মিল্লাত ও মাজহাব জুদা আস্ত ॥)
আসেকান মোজহাবে কেহ কার নয়।
নিজ নিজ মোজহাব তাদের নিশ্চয় ॥
قول عارف
(কাওল আরেফ)
عقشق رابا كافر ومؤمن نباشد احتياج
اينسخن در مسجد وبت خانه بايدمى نوشت –
(এস্কেরা বা কাফিরো মোমিন নাবাসাদ এহতেইয়াজ।
ই সাখুন দার মাসজিদো বুতখানা বায়েদ মিনোইস্ত ॥)
এই কথা লেখা চাই মছজেদ মন্দিরে।
প্রেম পাশে সমতুল্য মমিন কাফিরে ॥
چه موسئ چه عيسئ چه پيرمر سلان احمد
چه ترساومغا انجاهمه گست برابربيبن –
(চেঁ মূসা চেঁ ইসা চেঁ পিরে মারশালানে আহাম্মদ।
চেঁ তারসা ও মোগাঁ আজাঁ হামা গাস্ত বরাবর বিন্)
মুছা ইছা হবে কিবা শেষ পয়গাম্বর।
ফেরেঙ্গি ও মগ হেথা এক বরাবর ॥
সকল আগুন বটে একই আগুন।
আগুনে আগুনে নহে হবে গুণাগুণ ॥
এস্কের শরাব যেই খাবে এক জাম।
বেহুঁস হইবে ভোলে নিজ নিজ কাম ॥
توحيد نشنا خت هر كراحالى نيست
درراه طلب همت اوعالى نيست
خوش انكه ميان خويش حق رابشنا خت
اودر همه جااستهيچا جاخالى نيست –
(তওহিদ নাশানাখ্ত হরকেরা হালে নিস্ত।
দাররাহ্ তলব্ হিম্মাত আও আলা নিস্ত।
খুস আ’কে মিয়ানে খোয়িস হাক্রঁহ্ বা সানাখ্ত।
ওদর হামা জাঁআস্ত হিচ্ জাঁ খালি নিস্ত ॥)
হালাত না আসে যার তৌহিদ মাঝার।
কোথায় খোদার রাহে হিম্মত তাহার ॥
নিজ সনে চিন তারে সন্তোষ বিষয়।
ত্রিভূবনে তার ভিন্ন কোন জাগা নয় ॥
অন্ধ জনে করে যদি এভব ভ্রমণ।
আকাশের শশী কিহে দেখিবে কখন ॥
পাগলকে মন্দ বলা কর্তব্য নহে
পাগল আগল বটে পাগল জাগল।
কোথায় পাগল আগে দোজখ গরল ॥
পাগল উপরে হবে দোজখ হারাম।
ঝুট নহে জান এই হাদিছ কালাম ॥
বায়ুতে পাগল যেই তার হবে মাফ।
খোদার পাগল বটে কিন্তু কাল সাপ ॥
তাঁহাদের সনে যেই করিবে বেজায়।
সহে না তাঁহার দুঃখ আপনি খোদায় ॥
তাহার নকল এক পড়িল স্মরণ।
হাছানাতোল আরেফিনে আছয়ে লিখন ॥
ফরাহির বেটা কহে ছিলাম নৌকাতে।
নদী আরোহণ ছিল জুন্নুনের সাথে ॥
হেন কালে এক নাও আলেম ছওয়ার।
ফকিয়া পন্ডিতগণ যায় তরাতর ॥
তাহা হইতে কোন জন কহে জুন্নুনেরে।
যাইতেছে আলেমান বাদশার দরবারে ॥
কাফের বলিয়া তোকে সাক্ষী দিবে তারা।
ডোব্ বলি জুন্নুন তায় করিল ইসারা ॥
ডোব শব্দ সম্পূর্ণ নাহি হয়েছিল।
আলেমের নৌকা ডুবে সকল মরিল ॥
কহিনু আলেম তায় ছিল গুণাগার।
মাল্লাগণ ডুবে কেন মরিল আবার ॥
কহিলেন মাল্লা কেন হেন ঝুটাগনে।
লইয়া চলিতেছিল নৌকা আরোহণে ॥
আলেম বাহেছ করে কেতাব কোরানে।
পাগল বাহেছ করে বধিয়া পরানে ॥
ধন তন বিদ্যা আদি রূপ সুরেশ্বর।
ইহার গৌরব হয় আলম ফখর ॥
ধন জন রূপ রঙ্গ ত্যাগিয়া ফকির।
প্রেম বায়ু সঞ্চালনে সদাই অস্থির ॥
তাহাকে কাফের কহে আলেম বেহুঁস।
অক্ষর কীর্ত্তনে শুধু এত বড় যোস ॥
নিশ্চয় প্রেমের বিদ্যা পেত যদি হায়।
ফকিহ্ আলেমগণ কেন মারা যায় ॥
প্রেমেতে মগ্ন সদা মানস খোদার।
প্রেমিকের কটু বাক্য মিঠা লাগে তার ॥
পিরীতের পেরত যদি কটু কথা কয়।
কটুবাক্য মধু হেন সন্তোষ হৃদয় ॥
অপ্রেমিক নরগণ সরা সরা করে।
সার সার অদ্ভুত খোদা কহে তারে ॥
খোজা কি প্রেমের রস পারে বুঝিবারে।
আগুন কাপড়ে বেন্ধে কে রাখিতে পারে ॥
গোলাব হেন ঠোঁট যার শুধু মিষ্টময়।
মিঠা লব চাটে যার মিঠা লব হয় ॥
যে নর তুতীর কথা পারে বুঝিবারে।
ছলেমান বিনা কেবা আজ্ঞা দিল তারে ॥
قوله عارف ربانى
(কাওল আরিফ রব্বানি)
مرد ميبايد كه باشد حق شناس –
تشنا سد شاه رادر هر لباس –
(র্মদমি বায়েদ কেহ্ বাসাদ হক সাঁনাস।
তাস্নাসাদ শাহেরাহ্ দর হর লেবাস ॥)
যেই জন চিনিবারে পারিবে খোদায়।
পাইবে সাহার দেখা প্রত্যেক জামায় ॥
অন্ধজন করে যদি এ ভব ভ্রমণ।
আকাশের শশী কি হে দেখিবে কখন ॥
নিয়ত ব্যতীত কোন আমল হয় না
حاديث
(হাদিস)
انما الاعمال بالنيات
(ইন্নামাল আমালু বিন্ নিয়াত)
আমল কারণে খালী মানস দরকার।
কোথায় মানস বিনা আমল তোমার ॥
আমল করিতে যদি চাহ কোন জন।
মানস নিয়ত চাই করিতে সাধন ॥
বেগর মানসে যদি করিবে সাধন।
সাধন বিফল হবে যাবত জীবন ॥
একিনে হালাল হবে হারামে ছওয়াব।
করিলে হালাল দান ঘটিবে আজাব ॥
রেয়াতে দানের ফল কিছু না রহিবে।
দেখা যদি রেয়াকার আমল করিবে ॥
পাইবে রেয়ার ফল নরকেতে ঠাঁই।
নিয়তে হইবে ফল নাপাকেতে পাই ॥
নাপাক পায়খানা দেখ হাগিবার কালে।
নিয়ত করিয়া দান পোকাগণে দিলে ॥
যত বেশী মল মুত্র হইবে তোমার।
ততই ছওয়াব পাবে খেলায়ে আহার ॥
চালাকিতে মল মুত্র না দিলে পোকায়।
কি হল ভালাই তব খোদার বান্দায় ॥
প্রভু যারে সৃজিয়াছে পোকা নাম তার।
তোমার পেটেতে রৈছে আহার পোকার ॥
কি হেতু তাহারে তুমি বালু চরে নিয়া।
না খিলাও পোকাগণে ধুপে শুখাইয়া ॥
যদি তব মনস্কাম হইত সাধন।
প্রভু যারে খাওয়াইছে করি তা সেবন ॥
তবেই প্রভুর মন হইতো সন্তোষ।
আমার সৃজন ব’লে কেবল মানস ॥
ভাবরে ভাবুকগণ মনে রাখ ভাব।
পোকাগণে তব মনে না জান খারাব ॥
পোকা হেন ব’লে যদি তব মনে রবে।
কিসে হ’ল পোকাগণ পাইয়াছ ভাবে ॥
কি আছিল পোকাগণ আসিল কোথায়।
কিসেতে হইল পয়দা কহ দেখি তায় ॥
দেখিতে ঘৃণিত যদি দেখ হেন পোক।
নাহিক প্রভুর জাতে তব ভাবটুক ॥
একই জাতের সৃষ্ট হইল সকল।
অজাত স্বজাত কিসে বল দেখি বল ॥
নিজেই নিজের রূপে এক নানারূপ।
একই ভাবের পদ কহিছে ভাবুক ॥
তোমার পেটেতে পোকা পেটে তুমি তার।
দেখহে তৌহীদ ঘরে খুলিয়া কেওয়ার ॥
শত পোকা তব পেটে খাইছে তোমায়।
তুমিও পোকার পেটে মল-মুত তায় ॥
সেই মল মুত ঠাঁই তোমার শরীর।
আব, আতশ, খাক, বাদ, তাতে পোক স্থির ॥
পোকের শরীরে আছে এই চারি চিজ।
তোমার ভান্ডারে আছে মূলপদ বীজ ॥
তুমি আমি এক ভান্ড ভান্ড আর নাই।
যথা তথা জল কুপ তাতে জল পাই ॥
জল পেটে স্থল আছে স্থলে আছে জল।
জলেতে কানাই করে জলুস কেবল ॥
তেইসে কহিছে সাঁই সার্থক বচন।
আলমেতে খোদা বটে কেবল রৌশন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
(سورة نور) – الله نور السماوات والارض –
(সূরাতু নূর)- আল্লাহু নুরুস্ সামাওয়াতে ওয়াল্ আরদ্।
আলো আলো এক আলো আলো নাহি আর।
শতেক প্রদীপে দেখ এক আলো সার ॥
শতেক প্রদীপ যদি এক ঘরে হবে।
প্রত্যেকের আলোগুলি এক আলো তবে ॥
আলো আলো মিশে যে’য়ে এক আলো হয়।
দেখিতে সকল দীপ যদি ভিন্ন রয় ॥
ঘড়াতেই ভরা জল প্রত্যক্ষ দেখায়।
একত্র করিলে জুদা হইবে কোথায় ॥
সোনা রূপা জুদা জুদা যত অলঙ্কার।
গালাইলে এক ঠাঁই ভিন্ন কোথা আর ॥
উখে রস জুদা জুদা দেখিতে সরল।
চিপে রস এক ঠাঁই কোথা ভিন্ন বল ॥
নকলেতে জুদা জুদা ভিন্ন ভিন্ন তায়।
আসলেতে ভিন্ন পদ হইবে কোথায় ॥
নামাজীগণের প্রতি মুক্তি কোথা
আউজ পড়িতে হয় শয়তান কারণ।
দাগা দিয়া নষ্ট যেন নাহি করে মন ॥
আল্লাজি ইউওয়াছবেছু পড়ে ছুরে নাছ।
পাগলেরে সাঁকোলারা কহিছে খান্নাছ ॥
ওরেরে মুছল্লিগণ মৌখিক নামাজি।
পাগলের সাঁকোলারা মনে পড়ে আজি ॥
ভাল কথা দাগা দিতে ভুলে ছিনু আগে।
স্মরণ দিয়াছ তাহা বোলাইয়া রাগে ॥
হেলাইব সাঁকো আজি মনের মতন।
কেনরে আউজ তুই পড়িলি এখন ॥
কেমন আউজ তব দেখিব এবার।
এহেন মন্ত্রেতে এবে কি হয় আমার ॥
তোমার মন্ত্রেতে আমি নাহি যাব দূর।
করিব মন্ত্রিতে আমি আজি সাঙ্গ চুর ॥
চিরস্থায়ী আছে যার সঙ্গে অদ্ভুদ।
কোথায় তাহার মন্ত্রে পালাইবে ভুত ॥
সামান্য মন্ত্রেতে যদি জ্বীন ধরা যায়।
তবে কেন ভুত ভয়ে চলনা রাহায় ॥
ভুতে দূতে কখন কি হইবে সমান।
তাতেই দেখিয়া ভুত উড়িবে পরাণ ॥
আচানক ভুত দেখে তারা মারা যায়।
কেমনে খান্নাছ তবে দৌড়াইবে হায় ॥
এক খান্নাছ ভয়ে শত ভুত ধায়।
কেমনে খান্নাছ তবে দৌড়াইবে তায় ॥
তোমার আউজে যদি খান্নাছ ডরিত।
নামাজেতে ওছওয়াছ কভু না হইত ॥
এবাদতে দাগাদারি করে যেই জন।
সামান্য চক্ষেতে যদি হত নিরীক্ষণ ॥
ভুরূকুটি দিতে তার হুস হারাইত।
কেমনে নামাজীগণ কেরাত পড়িত ॥
মুছল্লি কেরাতে শুধু গলা করে সার।
নহে কি কেরাতে ভুত ডড়িত না আর ॥
ভুতান্তি রোগীতে যদি শুনিত কেরাত।
শুনিয়া শতেক ভুত যাইত তফাত ॥
পালাইবে দূরে থাক নিজ থাকা দায়।
এবাদতে ভুত দৌড়া হইবে কোথায় ॥
এবাদতে দাগা দেয় নহে ছোট ভুত।
দেখে তায় নামাজীর পরে যেত মুত ॥
শরীর কম্পিত কেন একেলা ঘরেতে।
যখন নিরালা হয় নামাজ পড়িতে ॥
একেলা নামাজ পড় অরণ্য ভিতর।
দেখিব মনেতে তব আসে কিনা ডর ॥
অতএব মোজাদ্দেদ কহে সুবচন।
মহাসুখি ইবলিছেরে দেখে কোন জন ॥
বলে আয় বেকারেতে কেন আছ ভাই।
কহে সেই আলেমানে দিয়াছে রেহাই।
আলেমান বদ যারা আমার সঙ্গতি।
তাহারাই আজ বটে মম কাজে গতি ॥
তবে নাকি কহিয়াছে প্রভু করতার।
মনুষ্য ও জ্বীন হতে তারা দাগাদার ॥
অতএব আলেমের কাহেলী কীর্ত্তন।
পড়হ নামাজ খালি কি করিবে মন ॥
মন যদি বনে যায় তাতে দোষ নাই।
কেবল নামাজে খালি কেরাতই চাই ॥
বলে আয় আলী যবে পড়িত নামাজ।
আসিত বেহুদা বাত তার মন মাঝ ॥
তবে হায় ছোট বড় করহ বিচার।
পড়হ আউজ তবে কেন বারে বার ॥
তবে কি আউজ তব বেহুদা কীর্ত্তন।
হায় আলী আউজে কি ছিলেন বারণ ॥
নহে নহে তিনির যে আছিল কল্পনা।
যেই কালে মন পুরে ছিল না বাসনা ॥
যে কালেতে মনপুরে করিলেন বাস।
গুরু সিদ্ধ ধর্মে মন করে পাশ পাশ ॥
যেকালে বিষাক্ত তীর বিন্ধিল পদেতে।
কোন হেতু হইল না তীর নিকালিতে ॥
নামাজেই হেতু হল তীর খুলিবার।
ফকিরি ধর্ম্মের পরে প্রণয় তাঁহার ॥
ইবলিছের দাগা হতে হয়ে গেল দূর।
তেইসে খোদার পানা আউজ প্রচুর ॥
পানা পেতে মানা কোথা প্রভুর বচন।
পানাহীন পড়া শুধু একথা কেমন ॥
ভ্রমেতে মানির পরে দৃষ্টি করে নাই।
মৌখিক পাঁচালি শুধু কি হবে ভালাই ॥
তবে কি করিল সাঁই কোরানেতে ভুল।
নামাজে কাহেলী যত তাই ফাওয়াইলুল ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
فويل للمصلين الذين هم عن صلواتهم ساهون –
(ফাওয়াইলুল্ লিল্ মুসাল্ লিনাললাজিনা হুমআন্ সালাতিহিম সাহুন)
¬¬¬
নামাজেতে মন সিদ্ধ হইবে না যার।
তাহার কারণে করে দোজখ প্রচার ॥
করার না হলে মন হবে না নামাজ।
দেখহ নামাজিগণ কোরানের মাঝ ॥
سورت نساء
(সূরাতু-নিসা)
فاذا قضيتم الصلوة فاذكرو الله قيما وقعودا وعلى جنوبكم فاذا اتما
نلتم فاقيموا الصلوة ان الصلوة كانت على المؤمنين كتابا موقوتا –
(ফায়েজা কাজায় তুমুস ছালাতা ফাজকুরুল্লাহা কিয়ামান ওয়াকু’উ দান’ ওয়া আলা জুনু বিকুম ফাইজা ইত্মানান্তুম ফা’আকিমুছ ছালাতা ইন্নাস্ ছালাত কানাৎ আলাল্ মো’মিনিনা কিতাবাম্ মাওকুত ॥)
প্রকাশ্য নামাজ যবে করিবে আদায়।
খাড়া বসে শুয়ে কর জেকের খোদায় ॥
এহা তক কর সবে জেকের খোদার।
শান্তশীল হ’য়ে যাবে মন একাকার।
এখন কায়েম কর নামাজ সকলে।
ওক্ত মকরর এই বিহান বিকালে ॥
পাঞ্জেগানা কহে এই নামাজের তরে।
এরূপ নামাজ পড়া হুকুম সবারে ॥
এছাই খোদার বাক্য আকিমুচ্ছালাত।
বার বার কোরানেতে কহে এই বাত ॥
মাদ্রাসা পাশ করে কেহ নবী হন নাই
করে না মাদ্রাসা পাশ কোন নবীগণ।
এলেমেতে নবী নাহি হল কোন জন ॥
বিদ্যা শিখে নবী-অলী নিশ্চয় হইলে।
কোরানেতে প্রভু তবে কেন ইহা বলে ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
هوالذى بعث فى الاميين رسولامنهم يتلوا عليهم ايته ويزكيهم –
(হুয়াললাজি বায়াসা ফিল উম্মিয়িনা রাসুলাম মিনহুম ইয়াতলু আলাইহিম আয়াতিহি ওয়াইউ জাক্কিহিম)
উম্মিদেরে পাঠাইনু উম্মি নবীবর।
উম্মি পরে উম্মি ভেজা আশ্চর্য খবর ॥
শুনান কোরান নবী উম্মিদের তরে।
হুজুরী শিখাত তিনি পাক হইবারে ॥
ছাফাই করিতে হয় হুজুরি দরকার।
তেইসে ছিনার বিদ্যা নবী সবাকার ॥
নহেত নবীর বয়েস চল্লিশ সাল ছিল।
কারো উছিলাতে খোদা এলেম না দিল ॥
জাহেরী বিদ্যায় নবী আছিলেন আম।
বাতেনী এলেম সিদ্ধ ছিল মনস্কাম ॥
চল্লিশ বৎসর কালে হযরত জিব্রাইল।
ছুরে একরা সহ তিনি হ’লেন নাজিল ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
اقرأ باسم ربك الذى خلق خلق الانسان من علق –
(ইক্রা বিস্মি রাব্বিকাল্ লাজি খালাক্ খালাকাল্ ইন্সানা মিন্ আলাক্)
এ আয়াত নবীবরে দিলেন যখন।
বলে নবী পড়া আমি না জানি কখন ॥
বিবেচনা কর এবে ওহে বন্ধুজনা।
জাহেরী এলেম হতে চান তিনি পানা ॥
حديث – درشرعت الاسلام
(হাদিস-দরশারাআ তিল ইসলাম)
وقد كان رسول الله صلعم يتعوذ بالله من العلم لا ينفع ويقول لعلم علمان علم القلب فذلكعلم النافع وعلم اللسان فذالك حجة الله على ابن ادم –
(ওয়াকাদ্ কানা রাসূলআল্লাহ্্্্ (সাঃ) ইয়াতাআউয়াজু বিল্লাহি মিনাল্ ইল্মে লা ইয়ান্ ফা’উ ওয়াইয়া কুলুল্ উলমু ইল্মনি, ইল্মুল কাল্বি ফাযালিকা ইলমুল নাফ্ই ওয়া ইল্মুল লিসানি ফাজালিকা হুজ্জাতুল্লাহি আলা ইবনে আদামা।)
মছনবি ওজনে ছোট পদ
¬¬¬
জবানি এলেম নাম হল যার।
তাহা হতে পানা মাঙ্গে পয়গাম্বর ॥
খোদার দলিল বনি আদম পর।
তাতে ধরা যাবে আদম নর ॥
হুজুরি এলেম নাফা তাহা চাই।
মুনাফার বিদ্যা মোরে মিলা সাঁই ॥
در احياء – حديث
(দরএহিয়া হাদিস)
روى الحسن عن رسول الله صلعم انه قال العلم علمان فال علم الباطن فى القلب فذ الك هوالنافع –
(রাবিউল হাসান আন্ রাসূলআল্লাহ্ (সাঃ) আন্নাহু কালা আল্ইলমু ইল্মানি ফাল্ ইল্মু আল্ বাতিনু ফিল্ কুল্বি ফাযালিকা হুয়ান্নাফিয়ি ॥)
হাছেন রেওয়া নবী হ’তে করিল।
দুবিদ্যার বাতেন বিদ্যা সে ভাল ॥
এলমে নাফা কলবেতে জাগা তার।
শব্দ অর্থ সাথে সাথে লাগা যার ॥
কোরান কলবে আছে সে এলেম।
নিজ ছিনা পড়া লিতে মোয়াল্লেম ॥
মোয়াল্লেম মোর্শেদ বটে ছিনা তার।
ছিনা হতে ছিনা শিষ্য পরিস্কার ॥
দশ ঘর আঠার বাতী ছিনা স্থল।
কুটি ঘরে শও নগরে চিনাকল ॥
এক দীপে শত দীপ আলো পায়।
এক দানায় শত দানা গাছ তায় ॥
গুরু বাতি শিষ্য দীপে লাগিল।
ছত্রিশ কোটি নিবা বাতি জ্বলিল ॥
লাগিছে লাগিছে আগুন লাগিছে।
অন্ধ ঘর তাজাল্লিতে ভরিছে ॥
কত রূপ তাজাল্লির আলোতে।
রূপ রঙ্গ নানা ঢঙ্গ হেরিতে ॥
আগুন্দানে আগুনের গরম ভাপ।
শীতে রক্ষা পাবে তার কিছু তাপ ॥
বেহুস দারু সোঙ্গাইতে বেহুসির।
দারূ হেন মনে জান ছিনা পীর ॥
মাতা স্তনে দুগ্ধ টুপ টুপ রয়েছে।
খেয়েছে অনেক মজা পেয়েছে ॥
ছেলে কাল হতে ভাল স্বাদ পায়।
প্রিয় স্তন হতে যেবা দুধ খায় ॥
আহা কি সুন্দর বাণী মিঠাময়।
শুনে মন রশিকের রসোদয় ॥
তবে যে জাহেরী বিদ্যা পড়া চাই।
জাহেরে বাতেনে আছে মিলা সাঁই ॥
আল্লাহ্ লফ্জের অর্থ
ازفصوص
(আজফছুছ্)
আরবী জবানে আল্লাহ্, ইব্রাণী জবানে বাদ্দুহে, ফারসি জবানে খোদা, ফচুছে দেখুন; এবং ইংরাজী জবানে গড্, বাংলাতে ঈশ্বর অথবা প্রভু প্রভৃতি ॥
بمعنى صاحب حيبت وماله
(বামানি সাহেব হায়বাত ওয়ামালাহু)
আল্লামানী হায়বত কর্তা ও বেহুঁশ
নামেতে বেহুঁশি যার, জাতে কি বেহুঁশি তার
আছে না।
সুধা মন প্রিয় সন, মোহন রূপে ভুলায় মন
বাঁচে না ॥
এস্ক ভরা মেস্ক গাও, শরাবের জাম পেলাও
ছাকিয়া।
ছাকি গুরু কল্প তরু দেওগো শিশি মদ ভরো
বাকিয়া ॥
শিশি রূপ কলব রূপে, মদ পূর্ণ প্রিয় রূপে
ভুলাদে।
কলব খানি আর্শ জানি, প্রভু বারাম তথা ধ্বনি
মিলাদে ॥
কাননে পাইবে না কিন্তু ভজনে পাইবে
কাননে পাবে না যারে পাইবে ভজনে।
জাগনে পাবে না যারে পাইবে স্বপনে ॥
জাগন যাহার হেন হইবে স্বপন।
ভজন ব্যতীত মন জানিবে কানন ॥
জীবনে পাবে না যারে পাইবে মরণে।
রচনায় পাবে না যারে পাইবে স্মরণে ॥
জীবন যাহার হেন হইবে মরণ।
রচনা সকল ভুল না রলে স্মরণ ॥
স্মরণে পাবে না যারে ভুলে পাবে তায়।
বাচনী পাবে না যারে পাইবে বোবায় ॥
স্মরণ রহিতে যেই হবে বিস্মরণ।
পাইবে রহিত মুখ হলে অবচন ॥
আন্ধারে পাবে না যারে পাইবে পশরে।
মন্দিরে পাবে না তায় পাইবে গর্ত্তরে ॥
চক্ষু না মুদিলে কোথা হবে অন্ধকার।
গর্ত্তর ব্যতীত কোথা দেখিবে আনওয়ার ॥
আরসে পাবে না যারে পাইবে ফরাসে।
কোরানে না পাবে যারে পাইবে বাতাসে ॥
ফরাস অজুদ যার আরস আকার।
বাতাস কোরান দম ঘর জান তার ॥
বেহেস্তে পাবে না যারে পাইবে দোজখে।
দুঃখেতে পাবে না যারে পাবে তারে সুখে ॥
এস্ক আগুন যার নরক আকার।
নরকে গরক সদা তবু সুখ তার ॥
حديث شريف
(হাদীস শরীফ)
الدنيا سجن المؤمنين –
(আদ দুনিয়া সিজ্জিনুল মো’মিনিন।)
দুনিয়া মমিন জান পিরীত আগুন।
আগুন দ্বিগুণ আর কষ্ট গুনাগুণ ॥
কঠোর হাটর তার নহে সে আরাম।
কোথায় কঠোর তার আগুন হারাম ॥
প্রভুতে না প্রভু পাবে পাবে পীর সনে।
পীরেতে পাইবে কোথা পাবে নিজ তনে ॥
কোথায় নিজের তন এক তন তাঁর।
এক বিনা জগতেতে কোথা তন আর ॥
তন মাঝে মন আছে মন মধ্যে ধন।
সে ধনের কুঞ্জি তালা জানিবে স্মরণ ॥
স্মরণেতে ভুল জন্ম ভুলে আছে মূল।
সে মূলের স্থূলতত্ত্বে নাহি পাবে কুল ॥
পীর মুরিদ
যদ্যপি হউক জানশরীফ নিশ্চিত।
পাক বলে জানে কহা নহে হরষিত ॥
হাকিকতে আহাম্মদ আলি যে মোকাম।
সাধিতে পারিলে সিদ্ধ হবে মনস্কাম ॥
যে কাজের আরম্ভেতে ফতে নাম হবে।
ফতে বই কোথা হবে পরকাল ভবে ॥
বিছমিল্লার শির পুঁঞ্জি এই ফতে নাম।
ফতে বিনা ফতে নাহি হবে মনস্কাম ॥
আজলেতে সাহা নাম আছিল স্থাপন।
পৃথিবীতে সূফী নাম হইল কীর্ত্তন ॥
আজলে আশেক ব্যাখ্যা ছিল সুবিকাশ।
ভুবনে মাশুক ব্যাখ্যা পাইল প্রকাশ ॥
আজলে মহেব নাম নিজ সিংহাসনে।
মহীতে মাহ্বুব বলে রঞ্জিত বচনে ॥
আজলে আরেফ ব্যাখ্যা ছিল প্রকাশিত।
ভবেতে মারূফ পদে ভুবন রঞ্জিত ॥
আদি মূলে ছিল যথা রূহের বাসর।
সে বাসরে নিজে ছিল খোদ পয়গাম্বর ॥
টাকা সঙ্গে আনা যুক্ত আছিল যথায়।
মধু মদ্যে মিষ্ট ভাব যাইবে কোথায় ॥
বাজারেতে আছে শত মধুর পশারী।
পশারীতে নহে মিষ্ট মধু সারি সারি ॥
যে বলে এমন খালি মুখের পাঁচালি।
নহে কোথা মিষ্ট বিনা গুড় হয় খালি ॥
مولانا روم
(মাওলানা রোম)
چونكه ذات پيررا كردي قبول –
هم خدا درذات امد هم رسول –
درمدان ودرمبين ودر مخوان –
خواجه رادر خواجه خود محودان –
كر جدا بينى زحق اين خواخثرا –
گم كنى هم منن وهم دبها جه را –
اوليا وانبيا راحق بدان –
سومخفى باتو كر دم من عيان –
دربشر روير ش امد افتاب –
فهم كن والله اعلم بالصواب
(চুকে জাতে পীরেরা কারদি কবুল।
হাম খোদাদার জাতে আমাদ্ হাম্ রছুল ॥
দোর মাদান ও দোর মোবিন ও দোর মাখোয়ান।
খাঁওয়জারা দর খাঁওজা খোদ মোহ্দান ॥
করে জুদাবিনি জাহক্ব এঁখাওয়াজারা।
গাম্ কুনি হাম্ মানান্ অহাম দিবাজারা ॥
আওলিয়া ও আম্বিয়ারা হক্ব বোঁদান।
র্ছেরে মুখ্ফি বাতো কারদাম মান্ইয়া ॥
দার বাসারো রোয়েরাস আম্দ আফ্তাব্।
ফাহাম্ কুন ওয়াল্লাহু আলাম বেস্ছোয়াব ॥)
যখন কবুল তুমি কৈলে পীর ধন।
তাহাতে প্রভুর জাত আর নবী তন ॥
খাজাতেই রাজা আছে মহা সমুদয়।
দেখ শুন পড় তারে জুদা হেন নয় ॥
নবী অলী হক্ব নামে হক্ব জান তায়।
ভেদ বাক্য প্রকাশিয়া কহিনু তোমায় ॥
মানুষের রূপান্তরে আসিল আফতাব।
বোঝহ খোদার বুঝ অনেক ছওয়াব ॥
কোতব এর্শাদ ছিল মূল পদ যার।
ভবেতে মোর্শেদ নাম হইল প্রচার ॥
জবরুত বাগানে সাহা আছিলেন অলী।
ভবেতে উদয় ভানু সাহে ফতে আলী ॥
উদয় হইতে ভানু তারকা সকল।
আমল আসিতে তারা করে টল টল ॥
উদয় হইতে রাত হইল বিদায়।
আন্ধারে নিদ্রিত ছিল জাগিল সবায় ॥
কিন্তু যে আজলি মরা রহিল স্বপনে।
উদয় হয়েছে ভানু কেমনে সে জানে ॥
উদয় হইয়ে দিন করিয়া রৌশন।
আসিল সামের কাল হইল গোপন ॥
গোপন হইয়া যদি গেল সেই ধনী।
পাইয়া মণির খনি রহে যেয়ে মণি ॥
কিন্তু সে মানিকে বটে চটক অপার।
ছেদিয়া চটক হল খনির বাহার ॥
কিন্তু সে চটক নহে এলাহির নূর।
মাণিকতলা দেল্লিবাগ হইল জহুর ॥
কলিকাতা মণিকতলা দেলওয়ার বাগ।
মাজার গোলজার যিনি রৌশন চেরাগ ॥
আকাশ পর্যন্ত নূর উঠে দীপ্তিমান।
অকাতরে দেখে লোক তাজ্জবে হয়রান ॥
মশাল চৌগুণ নূর হেন পরিষ্কার।
কেহ না দেখিয়া হবে জগত মাঝার ॥
চন্দ্ররূপ হতে অতি দেখিতে সুস্থির।
বাতিরূপ নহে সেই আগুন শরীর ॥
পরলোক হল যবে পৃথিবী ছাড়িয়া।
কবরে এহেন নূর উঠে চমকিয়া ॥
কতবার হেন রূপ হইল প্রকাশ।
দেখিল অনেক যারা ছিল আশ পাশ ॥
এখন পস্তায় লোক হায় কি করিনু।
থাকিতে জীবনে মোরা হায় না চিনিনু ॥
হেলায় পরশ মণি হাত হতে যায়।
হায়রে নছিব মোর মরিলে পস্তায় ॥
লোকান্তরে অকাতরে এই কেরামত।
জীবনেতে কেরামত ছিল শত শত ॥
জ্বীন ও মানুষ্য শিষ্য ছিল অগণন।
দেখিতো শতেক লোক ভাবুক যেজন ॥
এত্তেহাদি তাওয়াজ্জুতে করেন তালিম।
এক তাওয়াজ্জুতে ফল যুগের আজিম ॥
দৃষ্টিপাতে ঝরে পাপ অজুদ বিমল।
কলব দর্পন রূপ জ্যোতে ঝলমল ॥
এক নজরেতে ছিল যুগের হাছেল।
পরলোক হয়ে লোকে করিল কামেল ॥
এখনও ভাবুক যদি জেয়ারতে যায়।
অপূর্ব্ব মাণিক পায় মাণিক তলায় ॥
পেয়ারের গাছ পাশে মেন্দীর তলায়।
পেয়ারে মেন্দীর রঙ্গ ভাবুকে লাগায় ॥
এমন মেন্দীর রঙ্গ পাতার তাছির।
লাগাইবা মাত্র লাগে যেমন আবির ॥
কুসুমের রঙ্গ তার নহে সমতুল।
গন্ধরাজ বিমোহিত সুগন্ধে আকুল ॥
এইসব মেন্দী পাতা হয়ে হরষিত।
সুরেশ্বরে নানাবিধ গাইতেছে গীত ॥
সে গীতে উদাস হয় ভাবুকের মন।
সে ভাবে সতত হয় ভাবের কীর্ত্তন ॥
ভাবুকের সেই মেন্দী লাগাইবা কালে।
পড়েছিল এক বিন্দু লাগানু কপালে ॥
কপালে লাগাতে মেন্দী মাথা ধরে তায়।
সে দরদে কাঁদি আমি করে হায় হায় ॥
সকল ভাবুক চাহে সে মেন্দী লাগাই।
আমি বলি বাঁচি নহে কেমনে ছাড়াই ॥
ছাড়াইতে চাহি বটে লেগে বসে দাগ।
আচম্বিতে সে দরদে ফুটিল দেমাগ ॥
দেমাগ হইল খালি রহে মাত্র খোল।
সেই খোলে রোদনেতে বাজাই তবল ॥
শুনিয়া তবল মম কেহ পেরেশান।
রোদন দেখিয়া কত হাসিয়া হয়রান ॥
আমিও হাসিনু কত কান্দনে আমার।
আমার কান্দনে লোক কান্দে জারে জার ॥
কতেক হাসিনু আমি করে খলখল।
সে হাসনে কাঁদি শুধু চক্ষে বহে জল ॥
সে জলে আগুন জ্বলে ধাঁ ধাঁ ঘোরতর।
সে অনলে জ্বলে যায় সাগর লহর ॥
জ্বলিল সকল জল আর কিছু নাই
কেবল রহিনু আমি একেলা কানাই ॥
তখন ভাবিনু আমি, আমি একজন।
আমি নাহি আমিতে যে, সে আমি কেমন ॥
একা আমি ছিনু আমি হৈনু দুইজন।
দুই আমি একাযুক্তে হনু তিন তন ॥
চতুর্থ আমির মধ্যে যখন আমি যাই।
সব আমি খ্যান্ত দিয়া হইনু কানাই ॥
মোর্শেদ অমর
একদা বিরলে বসি দুঃখানল মন।
গুরু শোকে সে বাগানে করেছি রোদন ॥
ঝরিছে চক্ষের জল করে ঝর ঝর।
হেন কালে দেখি হেথা এসে এক নর ॥
করুণা বচনে কত করেছে আলাপ।
বিনয় কথনে শত করিছে বিলাপ ॥
হে রাজন মহাজন মম পানে চাও।
দয়া করে অধমেরে ভূবন ত্বরাও ॥
দয়াকর দয়াকর দয়াকর যদি।
দয়াগুণে পার তবে হব ভব নদী ॥
এতই সকালে তুমি ছাড়িবে সংসার।
এ কথার লেশ মনে না ছিল আমার ॥
মস্তক উপরে কভু হাত মারে জোরে।
মাটিতে রাখিয়া শির চারি পাশে ঘোরে ॥
অনেক বেতাবে শেষে দাঁড়ায়ে উঠিয়া।
হেন কালে কেহ যেন আমায় ডাকিয়া ॥
কহিলেন শুন সখা কর না রোদন।
অদেখা আশেক পানে করহ গমন ॥
বল তারে রুজু হয়ে বসে মম পানে।
পিলাব সরাব জাম তাহাকে এখনে ॥
একথা শুনিয়া যাই নিকটে তাহার।
কহি সাবধানে হও রুজু একবার ॥
শুনিয়া পরম কথা হরষিত মনে।
আদবে বসিল গিয়া কবর সামনে ॥
অতীত মিনিট দশ হয়েছিল তার।
জজবাতে এসে সেই হল বেকারার ॥
খুলিল ঝাপটে তার কলবের দ্বার।
যথায় আগুন ধুয়া নিশান তাহার ॥
বেহুঁসী নিশান শুধু সরাবের হয়।
সাগরে নিশান ঢেউ পবনে নিশ্চয় ॥
অতীত কিয়ত কাল জোশ নিবারণ।
আশীর্বাদ দিল কত আমার কারণ ॥
মানসিক রস পরে করিল প্রচার।
শুনিয়া হইল মম সুখের সঞ্চার ॥
দেখিনু বিশেষ জন এই মহীতলে।
পীরহীন পীর পায় মম কৃপা বলে ॥
পীর বিনা হল যেই বিশাল কাতর।
কৃপা বলে পীর ভাই হইলে অমর ॥
জীবন থাকিতে ভাই হইবে আমার।
সত্যমিথ্যা এবে এসে দেখ একবার ॥
যে কেহ অমর গুরু চাহে সাধিবারে।
আহাম্মদি ভাব বিনা পাইবে না তারে ॥
এমন অমর গুরু হয় কদাচন।
মরিয়া দেখায় পথ সে নর কেমন ॥
আসেক বিহনে কোথা হইবে অমর।
না হইবে আসেকে কভু কবর হাশর ॥
ديوان حضرت خواجه معين الدين پشتئ رح
(দিওয়ানে হযরত খোয়াজা মাইনুদ্দিন চিস্তী (রাঃ)
حساب عمر صد عاقل بمحشر بگذر د يكدم
حساب يكدم عاشق بصد محشر نميگنجد –
(হিসাবে উমর শোয়াদ আকেল বা মাহ্সার বাগুজারদ ইয়ক্ দম্।
হিসাবে ইয়াকদম্ আসেক বাসোয়াদ মোহাশর নমি গন্জদ্ ॥)
হাসরেতে নিকাসের আমল কিতাব।
এক দমে হবে শত আবেদ হিসাব ॥
আসেকের এক দম, হিসাব যাহাই।
শত হাসরেতে তাহা হবে না সামাই ॥
এস্কের আগুন যার বুকের ভিতর।
দোজখের অনল তথা নহে কার্যকর ॥
প্রভুধন যার মনে করিবে আসন।
শ্মশান ভসান দাহ সব নিবারণ ॥
পীরের কদমে কোথা লাগিবে অনল।
হয় হউক মধু তুল্য বন্ধুর গরল ॥
দেওয়ান ওয়েছি পীর করিল তছনিফ।
আসেকের ভাব আর দেখহে তারিফ ॥
হাসিয়া করিল পীর দেওয়ান হাফেজের।
তাহাতে বুঝিবে ভাব কিবা আসেকের ॥
যে হবে আসেক জন ভাব বোঝে তার।
আসেক না হবে যেই করিবে ইঙ্কার ॥
শতে শতে পাইয়াছে হেন প্রাণ দান।
তুমিও অমর হবে পাইলে সন্ধান ॥
আল্লাহ্্ পাকের উক্তি
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
واذ كرربك اذانسيت –
(ওয়াজকুর রাব্বাকা ইজা নাসিতা।)
ভুলিলে স্মরণ তারে চাহি অনুক্ষণ।
প্রত্যেক দমেতে কর প্রভুর স্মরণ ॥
যাহার কলব হয় ভুলেতে পতিত।
স্মরণ কারণে তারে করেন তুরিত ॥
ভুলে মূল পেলে ভুল ভুল সর্ব্বদায়।
মূলে ভুল হলে ভুল না ভুল বৃথায় ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ولا تطع من اغفلنا قلبه من ذكرنا –
(ওয়ালা তুতেমান আগ্ফাল্না কাল্বোহো মিন্জেক্রে না।)
নাহি শুন তার কথা হও খবরদার
প্রভুর স্মরণে মন গাফেল যাহার ॥
প্রভুর স্মরণে মন যাহার গাফেল।
শুনিলে তাহার কথা হইবে মস্কেল ॥
প্রত্যেক দমেতে হয় স্মরণ যাহার।
পীর বই সেই ভেদ কোথা পাবে আর ॥
পীর বিনা গাফলত কোথা যাবে দূর।
ওয়াব্তাগু তবে কেনে কহিল গাফুর ॥
গাফ্লাত ছুটিলে শেষে হইবে তছকিন।
ভ্রম যাইবে দুর ফিরিবে কুদিন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
هوالدى انزل السكينة فى قلوب المؤمين ليزدادوا ايمانا امع ايمانهم
(হুয়াল লাজি আনজালাস সাকিনাতা ফি কুলুবুল মো’মিনিনা লিইয়াজ্দাদু ইমানাম্ মা’ইমানুহুম)
খোদা পাক মমিনের অন্তর মাঝার।
উতারে তছকিন শুধু ভরসাই সার ॥
ঈমানের সাথে বেশী হইবে ঈমান।
সন্তান যুবক যেন ছিল সে সন্তান ॥
এহাতে জেকের মর্ম্ম বুঝে লহ সার।
বেগর জেকেরে মন হবে না কারার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
الابذكر الله تطمئن القلوب
(আলা বেজেক্রেল্লাহে তাত্মাইনাল কুলুব।)
হুসিয়ার হয়ে শুন কোরান কথন।
জেকেরেতে শান্তশীল হবে কিনা মন ॥
মন যদি পরিষ্কার হইবে তোমার।
একমাত্র ভরসাই মানসিক সার ॥
মানস যাহার হবে প্রভু আজ্ঞা চয়।
আবেদ মাবুদ ভাবে ভাবুক নিশ্চয় ॥
কিন্তু যে জেকের আছে জান দুই প্রকার।
একিনীতে সার পদ এতবারি উসার ॥
যেমন নামাজ শুধু জেকের এতবারি।
পাইবে এতবারি ফল কহি ব্যাখ্যা করি ॥
বহুতর আছে যেন নামাজ নফল।
এক এক রেকাত তার কত হজ্ব ফল ॥
তবে কি হইল হজ্ব মক্কা না যাইয়া।
হজ্ব রেখে পড় তবে নামাজ বসিয়া ॥
একিনী হবে না হজ্ব এতবারি হবে।
একিনী হইলে হজ্ব মক্কা কেবা যাবে ॥
এমন জেকের যত এতবারি হয় ॥
অতএব দেল তার কারার না রয় ॥
একিনী জেকের যেন আপ্তাবের ধূপ।
তাতে প্রভু কহিয়াছে মোৎমাইন্যাল কুলুব ॥
মোৎমাইন হবে ভাই কলব যাহার।
দুজাহান হইতে চক্ষু উঠে যাবে তার ॥
তাতেই কহিল সাঁই সার্থক বচন।
খুলিয়া দিয়াছি আর দেখিছ রৌশন ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
لقد كنت فى غفلة من هذا
فكشفنا عنك غطا ئك فبصرك اليوم حديد
(লাক্াদ কুন্তা ফি গাফ্লাতিন মিন্হাজা ফাকা সাফ্না
আন্কা গিতা আকা ফাবাস্সোরুকাল্ ইওমা হাদিদ্)
শুধু গাফলাতে পড়ে আছিলা ভরমে।
খুলিছে তোমার চক্ষু আমার করমে ॥
অতএব দৃষ্টি তব তেজ অতিশয়।
মোকাসেফা তেজ এই আর কিছু নয় ॥
খোদার জেকেরে মন করে জাগরণ।
ফাড়িয়া বাতেনী পর্দ্দা দেখিছে রৌশন ॥
সেই যে রৌশন বাতি মনপুরে জ্বলে।
বুঝিবে না অন্ধগণ আহাম্মদি বলে ॥
একিন অন্ধল ভবে হবে যেই নর।
সহস্র এলেম পতি পাবে না পশর ॥
এরূপ ভাবুকে সখা হয়ে নিরাঞ্জন।
আদরে ডাকিছে ডাক শুনহ বচন ॥
قوله تعالى
কাওলাহু তা’আলা
الله ولى الذين امنوا يخرجهم من الظلمات الى النور
আল্লাহু ওয়ালিউল্লাজিনা আমানু ইখ্রিজুহুম
মিনাজ্ জুলুমাতে ইল্লান্ নূর ॥)
খোদাই বান্ধব বটে মমিন সকল।
নিকালিছে নূর পানে করিয়া বিমল ॥
ঈমান তকলিদী বটে অন্ধকার ঠাঁই।
হবে না মোর্শেদ বিনে ঈমান রোশনাই ॥
হজরত মোজাদ্দেদ ছাহেব রহমে হুমুল্লাহ্
আপন মকতুবাতে লিখিয়াছেন-
اى دريغا كين شرعيت ملت اعامئى ست –
ملت ما ملت كافروهم ترسائى ست –
كفروا يمان زلف روى اپرى زنبائى ست –
كفروايمان هر دواندر راه مايكتائى ست –
(এদারিগাঁ কি শারিয়াত মিল্লৎ আমা ইস্ত।
মিল্লাত মা মিল্লাত কাফেরো হাম্ তারসা ইস্ত ॥
কুফরো ইমান জুলফ্ রুয়্যি আপরে জেবা ইস্ত।
কুফরো ঈমান হরদু আন্দর রাহ্ মাইয়াকতা ইস্ত ॥)
অন্ধ মুজহাব এই শরিয়াত হয়।
তরছাই মুজহাব মম কাফেরী নিশ্চয় ॥
কাফেরী আন্ধার বটে ঈমান রৌশন।
কাল কেশ আলো মুখ পরীর যেমন ॥
ঈমান কুফরী মোর দোন সমতুল।
দুই রাস্তা কোথা হবে যাতে এক মূল ॥
অনেক পীরিতি এবে করহ খোদার।
তবেই পাইবে ভেদ এহেন কথার ॥
قوله تعالى
কাওলাহু তা’আলা
والذين امنوا اشد حبا الله –
(ওয়াল্লাজিনা আমানু আসাদ্দু হুব্বাল্ লিল্লাহ ॥)
ওরে রে মমিনগণ কি ভেবেছ মনে।
বেহদ করহ প্রেম আল্লা পাক সনে ॥
বেহদ কহিল আল্লাহ্্ হদ নাহি তার।
মহব্বতে যাবে খোলা মনের দুয়ার ॥
দুয়ার খুলিলে আর দেখা নাহি দায়।
আমরে রব নিজ রূপ দেখিবে তথায় ॥
قوله تعالى
কাওলাহু তা’আলা
قال الروح من امر ربى وما اوتيتم من العلم الاقليلا
(কালাররূহু মিন্ আম্রি রাব্বি।
ওয়ামা উতিতুম্ মিনাল্ ইল্মে ইল্লা কালিলা ॥)
কহ নবী রূহু বটে হুকুম রব্বানী।
কিঞ্চিৎ এমন লোক পেয়েছে রুহানি ॥
না দিছি এলেম কথা নহে কদাচন।
কিঞ্চিৎ দিয়াছি রূহু চিনিবার কারণ ॥
তাহা যদি নাহি হবে কেমন করিয়া।
রূহুগণ আদমের শরীরে থাকিয়া ॥
নিকালিছে রূহু সব বনি আদমের।
করিছে ফিরিস্তাগণ রুহের জেকের ॥
এই যে বিমল রূহু অতি পরিষ্কার।
নবী অলী হবে এ’রা ভবের মাঝার ॥
ঐ যে কুরঙ্গ রূহু কালা সমুদয়।
ভূবনে পাতকি এরা হইবে নিশ্চয় ॥
ফলে যদি রূহুগণ না আসে গঠনে।
ধলা কালা দূতগণ দেখিল কেমনে ॥
তবে যে হুকুম বলে কহে নিরাঞ্জন।
এহুদি উত্তরে এই খোস ছিল মন ॥
এর বেশি এহুদির এলেম না ছিল।
অতএব প্রভু বাক্যে সন্তোষ হইল।
নহে কি এমন কথা হইবে কখন।
রুহের শরীর নাই নাহিক গঠন ॥
নিজ হতে বেখবর হল যেই জন।
কেমনে চিনিবে সেই প্রভু নিরাঞ্জন ॥
হে মানব যে না জানে নিজ পরিচয়।
কেমনে চিনিবে সেই অন্যের হৃদয় ॥
কাফের হইল কেবা কে হবে মমিন।
অন্যেরে চিনিবে রহে নিজে চিন হীন ॥
দেখ যত ফকিরান ছায়ের সোগলে।
মোকাশেফা হয় যবে আলম মেছালে।
তখন দেখিতে পায় রূহু কোন নর।
অন্ধজন কি জানিবে প্রদীপ খবর।
ফানাফিশ্শেখে এবে নজর করিয়া।
দেখ তায় রূহু মর্ম্ম গিয়াছে লিখিয়া ॥
নিজ রূহু যেই জন পাবে পরিচয়।
প্রাণের প্রাণ তবে দেখিবে নিশ্চয় ॥
প্রাণের প্রাণ সেই অসীম আকার।
অসীমের সীমা নাই সীমা ঘর তার ॥
حديث قدسى
(হাদীসে কুদ্সী)
لايسعنى ارضى ولا سمائى
ولكن يسعنى قلب عبد المؤمنين
(লা ইয়াস্ আনি আরদু ওয়ালা সামায়্যি ওয়ালা
কিন্না ইয়াস্ আনি কুলুব আব্দুল মোমেনিন)
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
گفت پيغمبر كه حق فرمو ده است
من نهمى گنجم دو ان بالا وپست
در زمين وآسمان وعرش نيست
عن نه گتجم تو يقين دار اى عزيز
دردل مؤ من بگنجم اى عجب
گو تومى جونى در ان د لها طلب.
(গুফ্তা পয়গাম্বারকে হক্ব ফরমুদাস্ত।
মান্নামি গুন্জাম দারানে বেলা ওপস্ত।
দর জমিনো আসমান ও র্আস নিস্ত।
মান্না গুন্জাম তু ইয়াকিনে দারাই আজিজ ॥
র্দদিলে মো’মিন বা গাঞ্জম আয় আজিব্
গোতুমি জোয়্যি র্দায়া দিলহা তালেব ॥)
আকাশ পাতালে মম হয় না সামাই।
মমিনের দেল ঘর জান মোর ঠাঁই ॥
মমিনের দেলে থাকি একথা মস্কিল।
তুমি যদি চাহ মোরে ঢোড় সেই দিল ॥
মনুষ্যের ভেদ মর্ম প্রভু নিরাঞ্জন।
মানব খোদার ভেদ হাদিস কথন ॥
অতএব কহে প্রভু চিকন রচনা।
দেখহে মানস তার মানব ঘোষণা ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
فاذكرونى اذكركم
( (ফাজকুরুনি আজকুরুকুম)
আমার জেকের এবে করহ সকল।
আমিও জেকের তব করিব কেবল ॥
আরেফ জেকের যদি করিবে আল্লার ॥
নিরাঞ্জন মোরাকেবা করিবে বান্দার ॥
আসেকের লতিফাতে মাবুদ স্মরণ।
মাবুদের দেহ তত্ত্ব বান্দা দরশন ॥
আসেকের আখি ঝরে বিনয় কথন।
মাবুদ রোদন করে করুণা বচন ॥
আহা দুঃখে ফেটে যায় প্রেমিকের বুক।
মাবুদ মালেক তাতে পাইতেছে দুঃখ ॥
প্রেমিক বিরলে বসে ডাকে যদি তায়।
নিঘোরে মালেক মোর করে হায় হায় ॥
প্রভু যবে উচাটন দহিয়া শরীর।
তখন প্রেমিক ভাবে হইবে অস্থির ॥
তার ভাব না হইলে কোথা ভাব আর ॥
ভাবুক বিধুর ভাবে ভাব গতি তার ॥
পৃথিবীতে নাহি কিছু তাহার সেওয়ায়।
কোথা হইতে আসে ভাব কহ দেখি তায় ॥
আবেদ ফানা মাবুদেতে মাবুদ একজন।
মাবুদে না হবে ভাব একথা কেমন ॥
ভাবহীন নরগণ তারা হেন নর।
মাটির মুরতে যেন কহা যায় নর ॥
তাতেই রছুল বাণী করিছে প্রচার।
দো-বাশুন এলেম এক বলিব না আর ॥
মেস্কাত শরীফে লেখা আছে
حديث شريف
(হাদিস শরীফ)
وعن ابى هريرة قال حفظت من رسول الله صلعم
وعائين فاما احد هما بثثته فيكم واما الاخر فلوفبثثته
(ওয়া আন্ আবি হোরায়রাতা কালা হাফেজাতে
মিন্ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ওয়াইন্ ফামা আহাদুহামা
বাসাস্তুহু ফিকুম ওয়ামাল আখিরু ফালওফাবাসাস্তুহু।)
কহে আবু হোরেরা রাখিনু স্মরণ।
দো-বাশুন বিদ্যা বলে রাছুল কথন ॥
তাহা হইতে এক বিদ্যা সবে গেছে বলা।
দ্বিতীয় কহিলে মোর কাটা যাবে গলা ॥
এইত সর্তক করে রাছুল সভায় ॥
বাতেনের বিদ্যাগুলি আছে না তোমায় ॥
তোমরা বাতেন যদি নিশ্চয় জানিতা।
কখন আমার তরে গলা না কাটিতা ॥
এই সে ইসারা কথা আল্লা রাছুলের।
ভাবহীন সে বিদ্যার কোথা পাবে টের ॥
মনছুরের ভাব কথা যারা না বুঝিল।
পশু হেন সমতুল অলীকে মারিল ॥
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
كاريا كافر اقياس ازخود ميگر –
گرچه باشد درنوشتن شير شير –
(কারেইয়া কাফেরা ক্যায়াস আস্ খুদ মিগার।
গারচে বাসদ্ দারনু ইস্তান শেরো শির ॥)
মুণি হেন নিজ কাম না জান গভীর।
সমান অক্ষরে যদি লেখে শের শির ॥
দূতে ভুতে কখন কি হইবে সমান।
আবেদ আসেকে আছে অনেক দৌড়ান ॥
মুণি জন দমে দমে খোলে শত ভেদ।
পশু তুল্য নরগণ করে সুধু জেদ ॥
بيخردى چند زخود بيخبر
عيب پسنديد زبرعم هنر
بادشد اندر چراغ مى رسند
دودشد اندر دماغ مى رسند
(বেখরদি চান্দেজা খোদ্ বেখবর।
আয়েব পসন্দিদ যা র্ব আম্ হুনর ॥
বাদেসাদ আন্দার চেরাগ মিরাসিন্দ।
দোদাসোদ আন্দার দেমাগ্ মিরাসিন্দ ॥)
কতেক নাদান নিজে রাখে না খবর।
আয়েব গেয়ান করে দেখিয়া হুনর ॥
বাদ হয়ে চেরাগ গোল করিতে ইচ্ছুক।
ধুয়া হয়ে দেমাগ নষ্ট করিবার উজ্জুক ॥
আছে না গেয়ান যার কোরানের ভাব।
কোরানের নামে খালি করে পেচতাব ॥
দেখ শক্ত কহে প্রভু করিতে জেকের।
তবে পোক্ত গুণ তার হইবে বাহের ॥
নরম খেলাপ যাহা সেই শক্ত নাম।
তাহাতে তোমার হবে কেমনে বদনাম ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
ولذكر الله اكبر
(ওয়ালা জিক্রুল লাহে আক্বার।)
বড় করে কর, নহে বেশী কর যদি।
কোরানেতে কহে ভাল না হইবে বদী ॥
পৃথিবীতে আছে যত সৃজন আল্লাহ্্র।
সবাকে হুকুম হইল ডাকিতে অপার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
واذ كر الله زكراكثيرا –
(ওয়াজ কুরুল্ লাহা জেক্রান কাছিরা।)
যত পার তত কর জেকের খোদাই।
খোদাকে ডাকিলে তব কিছু দোষ নাই।
নিজ নিজ ভাবে ডাকে নবী অলীগণ।
দেখনা মাইনদ্দিন চিস্তি করিল কেমন ॥
দেখ বাবা শেখ ফরিদ মাথা নীচে ঝোলে।
ছত্রিশ সাল পরে নাকি তবে খোদা মিলে ॥
ওয়ায়েজ করনি দেখ যাবত জীবন।
পাগলের বেশে করে প্রভুর কীর্ত্তন ॥
এই মতে কত অলী কত নামদার।
প্রভুর ডাকেতে জান করিল নেছার ॥
তুমিও খোদার ডাকে লাগাইবা মন।
যত পার তত কর প্রভুর কীর্ত্তন ॥
হযরত দাউদ এত করিত জিকির।
জবুর পড়িত কভু হইয়া অস্থির ॥
বেহুঁস হইয়া তিনি এতই কাঁদিত।
শত জন সেই রোলে পরান ত্যাগিত ॥
কাঁদিয়া মাটিতে কত হইত পতন।
আছাড় পাছাড় কেহ কেহ হুতাশন ॥
জল বিনা মীন যেন করে ধড় ফড়।
অস্থিরে মস্তির ভাবে করে থর থর ॥
তালেবানের দশটি রেজালত পরিবর্তে
দশটি লতাফত হাসেল হওয়া চাই
রেজালত এইÑ
(১) হারাম (২) মিথ্যা (৩) রেয়া (৪) হাছাদ (৫) কেনা (৬) আদাওয়াত (৭) সাহাওয়াত (৮) গীবত (৮) তকব্বরী (১০) তহমত।
ঐ দশটি বুরা হইতে তালেবান দূরে থাকিলে তার পরিবর্তে দশটি লতাফত হাছেল হইবে। যথাÑ (১) তৌবা (২) এনাবাত (৩) জোহদ (৪) রেয়াজাত (৫) অরা (৬) কেনায়াত (৭) তাওয়াক্কুল (৮) তাছলিম (৯) ছবর (১০) রেজা।
নিম্নে তাহার অর্থ প্রকাশ করিয়া লেখা গেল।
১। তৌবা অর্থাৎ গুনা হইতে বাঁচিয়া থাকা।
২। এনাবাত অর্থাৎ আল্লাতায়ালার নিকট রুজু থাকা।
৩। জোহদ অর্থাৎ পৃথিবী হইতে বেরগবতি হইয়া থাকা।
৪। রেয়াজাত অর্থাৎ এবাদতে পরিশ্রম করা।
৫। অরা অর্থাৎ পরহেজ করণ।
৬। কেনায়াত অর্থাৎ অল্পে তুষ্ট হওয়া।
৭। তাওয়াক্কুল র্অথাৎ আল্লাহ্্তা’লার উপর নির্ভর করা।
৮। তছলিম অর্থাৎ আপনা কাম খোদাকে সঁপে দেওয়া।
৯। ছবর অর্থাৎ দুঃসময়ে আপনাকে থামিয়া রাখা।
১০। রেজা অর্থাৎ খোদার খুশিতে খুশি থাকা।
জেকেরের কিঞ্চিৎ বিবরণ
প্রথমে জেকের করা পরেতে ফিকির।
ছুলুকের মোরাকেবা তার অন্তে স্থির ॥
অজুদেতে দশ জন আছয় ফকির।
তাহারাই নিরবধি করেন জিকির ॥
লতিফা বলিয়া কেহ রাখে তার নাম।
হরফ বলিয়া কেহ কহে পরিণাম ॥
অজুদ বলিয়া ঘর সে ঘর আপনা।
আছয় কুঠরি দশ কেহ কহে থানা ॥
যে নিয়মে মোজাদ্দেদ সে ঘর সাজায়।
কতিপয় প্রকাশিয়া কহিব এথায় ॥
সে হরফের নাম এবে শুন কহি তায়।
কলব, রূহু, ছের, খফি, আখফা, নফস্ হয় ॥
আব, আতশ, খাক, বাদ্ এই দশ জন।
নিজ স্থানে বসে করে প্রভুর কীর্ত্তন ॥
ডাহিন বামে দো পেস্তান দো আঙ্গুল তলে।
দক্ষিণে লতিফা রূহু কলব্ বামস্থলে ॥
ছের খফি দো পেস্তান উপরেতে হয়।
দো আঙ্গুল উপরেতে জানিবা নিশ্চয় ॥
নীচু স্থানে ছিনা মধ্যে আখফার বাসর।
দুই ভোয়ার মধ্যে খানে আছে নফস্ ঘর ॥
আব, আতস, খাক, বাদ্ অজুদ মাঝার।
সর্বস্থানে আছে তারা নাহিক নির্দ্ধার ॥
মোর্শেদের তাওয়াজ্জুতে লতিফা সকলে।
মনে মুখে একিনেতে আল্লা আল্লা বলে ॥
মন মুখ নাম কাম চার অলঙ্কার।
চারিপদে এক পদ আল্লা নাম সার ॥
শিকারী বন্দুক তার পড়িবে শিকার।
বারুদ গোলা এই চারি তার অলঙ্কার ॥
লতিফা ফকির যারা অজুদ মাঝার।
তাহারাই দেশ পতি ঘরের মোক্তার ॥
তাহারাই বাধ্য যদি হইবে নিশ্চয়।
মুল্লুক আবাদ হবে না রহিবে ভয় ॥
যার পরে হইয়াছে রাজত্বের ভার।
তাঁহার আধারে হয় মুল্লুক আন্ধার ॥
অজুদ মুল্লুকে যেই মালেক ফকির।
তারা যদি রত হবে করিতে জিকির ॥
শরীর পাতল হবে কাগজ আকার।
কখন ছুটিবে নূর দেখে চমৎকার ॥
বিজলী মাফিক কভু দেখিবে নজরে।
পৃথিবী রৌশন কভু পাইবে অন্তরে ॥
দম তার মোটা হবে থামা নাহি যায়।
বেতাব হইয়া কভু করে হায় হায় ॥
রোনাজারি করে কভু আছাড়ে পাছাড়।
হালেতে আসিয়া কভু করে হাহাকার ॥
লতিফা আতশে যবে ছালেক বসিবে।
গরম হইবে দেহ আগুন দেখিবে ॥
আবেতে বসিবে যবে করিতে জেকের।
পানি কি বাদল ন্যায় পাবে তাতে টের ॥
যেমন লতিফা গুণ তেমনি পাইবে।
যেমন মোর্শেদ শিষ্য তেমনি হইবে ॥
ছরিওল আছর বটে হবে যেই পীর।
বসা মাত্র পাবে তায় এরূপ তাছির ॥
হইবে এমন পীর পৃথিবীতে কম।
দো চার মিলিতে পারে তামাম আলম ॥
তার পরে একাযুক্ত দশ লতিফায়।
করিলে জেকের কহে সুলতানী তাহায় ॥
সুলতান জেকের হবে হেন আশ্বাদন।
ধনহীনে পায় যেন অমূল্য রতন ॥
কাঁপিবে বদন তার করে থর থর।
আল্লা আল্লা রোমে রোমে নিরবধি স্বর ॥
শুনিলে এমন লোক আল্লাহ্্র কোরান।
বেচইন হবে আর শুনে যদি গান ॥
নামাজে হইলে খাড়া এসে যাবে জোস।
কোন জন একেবারে হইবে বেহুঁস ॥
লেখিয়া সে সব কথা কে করে তামাম।
এবে শুন ছুলূকের কিঞ্চিৎ কালাম ॥
হাস্তিদেশ ও ছুলুক
উপরেতে মূল যার তাহার প্রত্যাশি।
তলেতে পতিত হয় ভরে দুই রশি ॥
দোরশা ফানোস কসা দমে করে ভর।
দমে আসে দমে যায় দমে রইছে ঘর ॥
যেমন ফানোস ঢোলে রশির উপর।
তেমন ফানোস জান পৃথিবীতে নর ॥
সে ফানোসে দশ গাছি আছয় জিঞ্জির।
উপরেতে টান তার চৌদিগেতে ঘির ॥
উপরেতে পাঁচ গাছি টানা পাঁচ ঠাঁই।
নীচু পানে পাঁচ রশি জিঞ্জির এছাই ॥
সেই ডোর দশ গাছি যাহার উত্তম।
কোন কালে হেন জন হবে না অধম ॥
সে রশি উত্তম ভাই হইবে না যার।
ছিড়িয়া পতিত হবে চূর্ণ হবে হাড় ॥
উপরেতে পাঁচ রশি নাম শুন তার।
কলব, রুহ, ছের, খফি আখফা জান আর।
একেক রঙ্গের হয় একেক জিঞ্জির।
পৃথিবীর রঙ্গ তাতে হইয়াছে স্থির ॥
সে রশির মূলদেশে আছে যেই সুত।
তাহা হইতে এই রশি হইল প্রস্তুত ॥
প্রত্যেক রশির সুতা অন্য রঙ্গ ধরে।
কোন ডোরের কিবা রঙ্গ শুন কহি তারে ॥
হরিদ্রা কলব আর রূহু লাল হয়।
কাল রূপ ছের, আর খফি সাদাময় ॥
সবুজ বরণ নূর জানিবে আখ্ফার।
ত্রিভূবন রঙ্গে মোহ রঙ্গে সারদ্বার ॥
আকাশ মঞ্জিল রঙ্গে তারকা সকল।
বাগান রঙ্গেতে মোহ ফুটিল কমল ॥
রঙ্গেতে মাতিয়া অলী করে রঙ্গ গান।
ভবের বাজারে যত রঙ্গের দোকান ॥
রঙ্গেতে বেরঙ্গ আছে, আছে মধ্যে নাই।
নাইতে সকল আছে পাইয়াছে ঠাঁই ॥
পাঁচ ডোরে ছয় নবী আছে আমলদার।
তাহারাই রশি মূলে করেন কারবার ॥
এ মোকাম সাধিবারে ইচ্ছুক যে জন।
তাঁহাদের পদ সেবা কর অনুক্ষণ ॥
নবীগণ নাম এবে কহিয়া জানাই।
যাহার তোফায়েল হইতে নিজ দেশ পাই ॥
ইছা মুছা ইব্রাহিম নুহু নবী আর।
প্রথম আর শেষ নবী এই হয় সার ॥
প্রভুর করুণা হয় হযরত উপর।
যাদের মহিমা ক্রমে যাব নিজ ঘর ॥
কিন্তু সে রশিতে খিচা সকল জাহান।
যেন সর্বস্থানে আছে অজুদে পরান ॥
এক বালু পরিমাণ রশি ভিন্ন নাই।
আপনাতে অতএব সকল সামাই ॥
যেমন শরীরে রগ সকল জুড়িয়া।
বাকি নাহি কোন ঠাঁই দেখ বিচারিয়া ॥
আব আতশ খাক বাদ শরীর মাঝার।
আছে কিন্তু দেখি নাই বড় চমৎকার ॥
যেমন দুধেতে নণি দেখা নাহি যায়।
তেমন চক্মকে আলো আছে পুসিদায় ॥
যেমন মাকড় পেটে আছে কত আশ।
যত লয় তত হয় একি সর্ব্বনাশ ॥
লতিফাতে দেখা যায় কুদরত আল্লার।
এক দানা মূল পদে শত দানা তার ॥
এহাকে ছুলূক কহে আর ত্বরিকত।
দূরে যেয়ে নিজ ঘরে পায় হাকিকত ॥
কোন জন জ্বর পীড়া তালাস করয়।
ধাবিত বিক্রম চোটে তার পীড়া হয় ॥
নিজ ঘরে পীড়া আছে ঢোড়ে অন্য ঠাঁই।
স্বপন দেখিল যেই পোছ তারে ভাই ॥
আমরা না বুঝি তাহা কেমন স্বপন।
দেখি নাই উপরেতে মনেতে রৌশন ॥
এই যে ছুলূকে আছে আঠার মোকাম।
বুঝাইতে তালেবেরে বটে মনস্কাম ॥
কুন্ডলীর ঘর সেই দ্বায়রা কহে তারে।
সে ঘর নিজের ঘর যে বুঝিতে পারে ॥
ফানাফিশ্শেখে নামে রেছালা ভিতর।
লেখা গেল দ্বায়রা সব করহ নজর ॥
নেস্তিদেশ
আরশ উপরে যত মুল্লুক আছয়।
হাস্তি ও আমর বলে তার নাম হয় ॥
নিচু পানে আরশের আছে যত দেশ।
নেস্তি ও খাল্ক নামে জানিবে সম্বেশ ॥
সে দেশের পাঁচ রশি মনুষ্যের স্থির।
ফানোষেতে নিচু পানে যেমন জিঞ্জির ॥
সে জিঞ্জিরে রাখে সিধা ফানোষের ভার।
পবনেতে নাহি ঢোলে রহিবে কারার ॥
সে রশির পাঁচ নাম শোন মন কায়।
আব, আতস, খাক, বাদ, নফছ লতিফায় ॥
বেগুনি রঙ্গের তারা যেন জ্যোতির্ম্ময়।
নফছ ডোরে সেই রঙ্গ জানিবে নিশ্চয় ॥
আগুনের কাল রূপ নিলা রূপ পানি।
পবনে সবুজ রূপ, মাটি রূপ ধানী ॥
আছয় এ ছয় নূর অজুদ মাঝার।
এক নূরে শত পাবে খুলিলে সে দ্বার ॥
দরজা খুলিতে যদি চাহে কোন জন।
খোদার জেকের চাহি করিতে সাধন ॥
খোদাকে বোলাও এবে না বোলাও নাম।
নাম কভু জাত পাক হবে না মোদাম ॥
নাম কভু খোদা নহে খোদা একজন।
নাম কাম এক হবে একথা কেমন ॥
খোদার কালাম যদি পড়িবে সদায়।
খোদা না পড়িলে খোদা পাইবে কোথায় ॥
কালাম পড়িয়া সবে কাল কাটাইল।
জনমেতে কোন জন খোদা না পড়িল ॥
কালাম পড়িতে আছ দেখিয়া কালাম।
কেমনে দেখিবে রূপ দেখে যেবা নাম ॥
অদেখা প্রভুকে আমি কভু দেখি নাই।
তাকিয়া চিনিতে তারে পারিবেক নাই ॥
অক্ষরেতে প্রভু ধরা যাবে না কখন।
ধুমপানে পেট পূর্ণ হবে না যেমন ॥
তবে কি কালাম খালী ছরঞ্জাম তার।
এছেম শুনিলে হবে জেছেম দরকার ॥
জেছেমে দরকার যদি হবে কোন জন।
কালাম পড়িতে কর কলীম কীর্ত্তন ॥
কলীম কীর্ত্তন যদি চাহে কোন নর।
আশ্রয় লইবে তার রাখে যে খবর ॥
আশ্রয় প্রদান যদি করে গুণমণি।
প্রত্যেক কালাম এক হবে মণি খনী ॥
তবেই সর্ব্বদা সেই করিবে জেকের।
সক্ষম হইয়া করে জেকের ফেকের ॥
তেইসে সক্ষমে প্রভু কহিছে বচন।
খাড়া বসা শুয়ে কর আমার স্মরণ ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
الذين يذكورن الله قيا ماوقعودا وعلى جنوبهم
(আল্ লাজিনা ইয়াজ কুরুনাল লাহা কিয়ামাও ওয়াকুউদান ওয়া আলা জুনুবিহিম।)
খাড়া হালে চলা ফিরা সকল সামাই।
বসা হালে খাওয়া দাওয়া কিছু ছাড়া নাই ॥
সোয়া হালে চিত কাইত নিদ্রা আদি যত।
প্রভুর স্মরণ তাহে কর অবিরত ॥
সর্ব্বদা স্মরণে প্রভু খুলিবে হালাত।
তাঁর নাম মোরাকেবা জেকেরের সাথ ॥
মোরাকেবা জারি হয় যে সব জাগায়।
কিন্তু মন ভানু হয় তাহাতে উদয় ॥
মন সূর্য্য উদয়ের কলব আকাশ।
তাহার বুরুজে হয় সুরুজ প্রকাশ ॥
কতেক মকাম হয় বুরুজ আকার।
তাহাতে স্মরণ ভানু হয় নমুদার ॥
মুল্লুক পশর করে গরম স্বভাব।
কিন্তু সেই গরমেতে আছে শত ভাব ॥
যেখানে যে ভাব হয় সেই নাম তার।
সেই নামে মোরাকেবা হইবে প্রচার ॥
লতিফাতে মোরাকেবা পাইবে যখন।
তাহাকে ছুলুক বলে ডাকে কত জন ॥
ছুলূকে খুলিবে ভাব যখন তোমার।
শত মোরাকেবা হবে তাহাতে নির্দ্ধার ॥
মোরাকেবা সমূহ
প্রথম মোরাকেবা-অকুফে কলবী
অকুফের মানি এবে সুনহ খবর।
নিরবধি নেগাদারি কলব উপর ॥
কলব প্রভুর নাম করিছে স্মরণ।
হর হালে তার পরে ধেয়ান রাখন ॥
তবেই কলব ঘর জন্মিবে খেয়াল।
সে খেয়ালে মন ভাব হইবে উজ্জ্বল ॥
মোরাকেবা হবে তায় খুলিবেক নূর।
রঙ্গ রঙ্গ মোকাশেফা হইবে জহুর ॥
মোশাহেদা হবে তার হয়ে গেলে ফানা।
তখন প্রভুর জাত পাইবে ঠিকানা ॥
দ্বিতীয় মোরাকেবা
অকুফে আদদী ও পাছ আন্পাছ
ভাটা উজান দুই দম আসে আর যায়।
ভাটাতে আল্লার নাম ‘হু’ নামে উজায় ॥
ভাটা উজান দুই ধার করিলে সাধন।
তাহাতে প্রকাশ পাবে গোপন রতন ॥
উঠাইতে মণি মুক্তা দোন দরিয়ার।
কোরানে ইশারা কথা আসিয়াছে তার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
ويخرج منهما اللؤلؤوالمرجان
(ওয়াইয়াখরুজু মিনহুমা লু’লউ ওয়াল্ মারজান)
كرنگاه دارى پاس انفاس –
به سلطانى رسا ندت ازبن پاس –
ترايك پند بس دوهود عالم –
كه پرنيايد زجانت بسى خدادم –
(কার নেগা দারি পাছ্ আনফাছ্
বে সুলতানি রেঁছানাদাত আজইয়ে পাছ্
তেরা এক পান্দে বাছ্ দোহুদ্ আলম
কে পর না ইয়া ইদ্ জাঁ জান্নাত বাছে খোদ আদম )
যদি তুমি নেগা রাখ পাছ আন পাছ।
ফানা ফিল্লায় পৌঁছাইবে সেই আনপাছ ॥
তৃতীয় মোরাকেবা-অকুফে জমানী
সম, সম, দম, দম রাখন খেয়াল।
স্মরণ করিনু কত ভুলি কত কাল ॥
হায় ভুলে গিয়েছিনু আপনা মাবুদ।
ভুলে দুর স্মরণেতে মাবুদ মৌজুদ ॥
এহাতেও মোরাকেবা খুলিবে উহার।
কিন্তু ভুল হতে চাই রতে হুসিয়ার ॥
চর্তুথ মোরাকেবা-নফি এছবাত
লা-ইলাহা নফি বটে ইল্লাল্লাহ্ এছবাত।
নাহিক দ্বিতীয় সাঁই সার এক জাত ॥
ঘুমাইবে পেচ দিয়া লতিফার পর।
নহে কলবেতে শুধু মারিবে টক্কর ॥
তাহাতে হালাত যত হইবে বাহের।
মোশাহেদা হবে জাত পাইবে জাহের ॥
পথিকের ডাহিন পদ চালাইবা কালে।
নফি শব্দ কহে আর বামে এছবাত বলে ॥
আসেক পথের পরে যায় সপাসপ।
প্রত্যেক কদমে নফি করে দপাদপ ॥
পদের পৃষ্ঠের পরে তাহার নজর।
এহাতে তাজল্লি তার হয় বহুতর ॥
তাহাতে হইবে ফানা চিনিবে মোকাম।
যত চলে তত তার বাড়িবে আরাম ॥
পঞ্চম মোরাকেবা
উচা পরে চলে কিবা নিম্নদিক যায়।
নফি ও এছবাত শুধু করিলে তাহায় ॥
ছালেকের যে মোকাম আছয় উরুজ।
এরূপ জেকেরে তার খুলিবে বুরুজ ॥
ঘোরে যদি ছালেকান নিজ পদ ভরে।
আজব তাজল্লি হবে তাহার উপরে ॥
পথিকের চলা কালে ঢোলে যদি হাত।
তাহতেও ছালেকান পাইবে হালাত ॥
ষষ্ঠ মোরাকেবা
মধ্যস্থল দুই চক্ষু গুরুর যথায়।
খেয়ালি নজরে যদি চলিবে রাহায় ॥
খুলিবে তাহার পরে শত কেরামত।
উর্ধ্বপানে ভেদাভেদ জানিবে আলবৎ ॥
পশর উদয় হবে পিছ পানে তার।
দীপ তুল্য পাবে তারে আরসের সার ॥
মাহমুদা মাকামের খুলিবে দুয়ার।
আরসের রাজধানী প্রকাশ ভান্ডার ॥
মোখালেফ পরে সেই আসিবে গালেব।
ফলিবে অদন্য ফল যাহার তালেব ॥
হাটিলে দৌড়িয়া তার কেবা লাগ পায়।
রাখিনু ভেদের কথা খুলিব কোথায় ॥
সপ্তম মোরাকেবা
ছাওয়ারিতে ছালেকান হইলে ছওয়ার।
নিমিষে মোকাম খোলে তাজল্লির দ্বার ॥
গুরু রূপ দীপ তত্ত্ব করিলে তখন।
ঘোর যাবে নূর পাবে দেখিবে রৌশন ॥
প্রদীপ পশর যেন করে অন্ধকার।
চক্ষু বিনা অন্ধ নহে আর কিবা তার ॥
শশীর আলোক জ্যোতে রাতে পূর্ণিমার।
পূলকে পথিক যেন বিনাশে আন্ধার ॥
অষ্টম মোরাকেবা
করাল পাথর কিবা নগীনা উপর।
এক দৃষ্টে ছালেকান করিলে নজর ॥
জেকের তরক্কি হবে ছাড়িবে ফিকির।
প্রকাশ্য নজর তার হয়ে যাবে ধীর ॥
তেনকালে মন চক্ষু হইবে রৌশন।
দেখিবে ত্রিজগন্নাথ তাজল্লি মগণ ॥
পাইবে আন্ডার খোলে এ সাত ভান্ডার।
গহন কানন আছে পেটেতে মশার ॥
মাছের বয়জার পেটে সাত সমুদ্দুর।
নানাবিধ মীন আদি হাঙ্গর ডংকুর ॥
খুজিলে পুতের পেটে মাতা দুধ খায়।
পুত্র গতি বিনে মাতা করে হায় হায় ॥
ফলেতে রয়েছে মিষ্ট মিষ্টে আছে ফল।
জলেতে রয়েছে মীন মীনে আছে জল ॥
খুজিলে স্ত্রীর পেটে পতির জনম।
শেষেতে প্রথম আছে নাস্তিতে আলম ॥
আন্ধারে আনওয়ার আর কুফরেতে নূর।
বেহেস্তে ইবলিস আর দোজখেতে হুর ॥
ইবলিছের গলে গাথা পেগাম্বরী হার।
তেকারণে তার দমে ফাঁশিল সংসার ॥
সকলে কি বুঝে হেন চিকণ রচনা।
কেমনে অন্ধল পাবে প্রদীপ ঠিকানা ॥
নবম মোরাকেবা
গহন কানন কিবা পাতায় পাতায়।
ছালেকান করে যদি দৃষ্টিপাত তায় ॥
হেরিবে রঙ্গের ফুল রঙ্গের কানাই।
হইবে তাজল্লি কত লেখা জোখা নাই ॥
নজর হইবে ফানা কল্পনা সকল।
হইবে শরীর ফানা হৃদয় বিমল ॥
দেখে বটে নজরেতে ফানা সমুদয়।
ভাব বিনা বদনেতে রবে না নিশ্চয় ॥
আহারে এহেন ভাব হইবে যাহার।
কি ভয় তাহার বল জগত মাঝার ॥
দশম মোরাকেবা
মহীপরে শূন্য ভরে আকাশের তলে।
একদৃষ্টে রবে যদি ভাবুক সকলে ॥
হেরিবে কদম্ব ফুল গোলাকার চাক।
হৃদয় আসন তান দেখিয়া অবাক ॥
দেখিবে মস্তক নূর তাজল্লির ভাবে।
দেখিবে মস্তকে শুধু যত ইতি ভবে ॥
হেরিয়া হইবে ফানা তাহার ভিতর।
ফলিবে বাকা ফল ফানা আগে কর ॥
মজমুয়া ফাতুয়াতে
اما التجلى فى صورة الانسان
فهوا جمع وافضل تجليه –
(আম্মাত্তাজ্জাল্লি ফিÑ ছুরাতিল্ ইনসানো
ফাহুয়া আজমাউ ওয়া আফজালু তাজাল্লিহা।)
মানব ছুরত পরে যে তাজল্লি হয়।
উত্তম তাজল্লি তাহা জানিবে নিশ্চয় ॥
যে ভাব উত্তম হবে তাজল্লির ফল।
ফানাওল ফানা সেই জানিবে কেবল ॥
মোর্শেদের জ্ঞান ভাব করহ শাসন।
হইবে নিজের ভাব প্রভুর আসন ॥
একাদশ মোরাকেবা
আকাশের শশী কিবা তারকা সকল।
হেরিবে তালেব যদি তার ঝলমল ॥
এক ভাবে নজরেতে রবে কতক্ষণ।
ভাবুক ভাবেতে যেন পতঙ্গ বিরণ ॥
ইশারাতে শশী তার শুনিবে বচন।
আসিবে নিকটে তার স্বভাব যেমন ॥
শশীর উপরে আছে জহুর খোদার।
প্রকাশ্য জ্যোতিকে চাহি ফানা করিবার ॥
তবেই পাইবে ফল খুলিবেক হাল।
নহে হবে চন্দ্র পূজা ঘটিবে জঞ্জাল ॥
পাইবে শশীর সাথে পরম আলাপ।
হৃদয় আসনে পাবে পরম বিলাপ ॥
(سعدىره
(সাদী রহঃ)
ابروبادو مه وخورشيد وفلك دركاراند –
تاتوانى بكف ارى و بغفلت نخورى –
همه ازبهر توسر كشته وفرمان بردار –
شرط انصاف نباشد كه توفر مان نبرى –
(আব্রো বাদো মো-হো র্খুশিদ ও ফাল্কে দারকার আন্দ।
তাতোয়ানী বাকাফ্কে আরি ও বা গাফ্লাতে না খোরী ॥
হামা আজ্ বাহ্রে তু সার গুস্তা ও র্ফামান র্বাদার।
র্সাত ইন্শাফ্ না বাছাদ্ কি তুর্ফামান নাবারি ॥)
মেঘবান চন্দ্র সূর্য্য আকাশ মন্ডল।
নিজ কামে নাহি খাও ভুলিয়া কেবল ॥
তাহাদের দৌড় বটে প্রভু অন্বেষণ।
মানব ভ্রমেতে করে খোরাক কীর্ত্তন ॥
তোমার খোরাক মূল প্রভু করতায়।
তাঁরে না ডাকিলে খোরাক পাইবে কোথায় ॥
যে জন তোমায় পালে করিয়া যতন।
যার হাতে রহিয়াছে পৃথিবীর ধন ॥
তাঁহাকে না ডেকে তুমি ডাকিছ খোরাক।
ছাড়িয়া খোরাক ডাক ডাক নিজ ডাক ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
وما من دابتفى الارض
الاعلى الله رزقها فى الارض
(অমা মিন্ দাব্বাতিন্ ফিল্ আরদে
ইল্লা আলাল্লাহে রিজ্কুহা ফিল্ আরদে ॥)
দ্বাদশ মোরাকেবা
মাটিতে শয়ন যদি করে ছালেকান।
মকাশেফা ভাব তাতে হইবে গেয়ান ॥
হইবে ভাবেতে রত মৃত্তিকার সনে।
খুলিবে মোকাম লাল মৃত্তিকা পতনে ॥
কেবল মানস তার শুইবারে হয়।
নিদ্রা কি জাগনে শুধু ভাবের বিষয় ॥
জাগরিত কালে মন রহিবে জাগিয়া।
নিদ্রা কি জাগনে ভাব পাইবে শুইয়া ॥
কিন্তু যে স্বপনে খোলে বাতেনী দুয়ার।
চল্লিশ ভাগ নবুয়ত নবী সাক্ষী তার ॥
স্বপনেতে ফল শুধু পাইবে আপন।
ছালেকের ভাব জান জাগিতে স্বপন ॥
কি ছার জাগনে হয় এক মনকায়।
স্বপনে গোপন ভাব জাগনে কোথায় ॥
স্বপন দেখিতে যদি করিবে বাসনা।
করহ কিয়ত কাল পীর উপাসনা ॥
ত্রয়োদশ মোরাকেবা
নিজ ছায়া কায়া হেন আরশী দরশনে।
এক দৃষ্টে দৃষ্টিপাত করি তার পানে ॥
নিজ রূপ ঘোল হয়ে যাবে একবার।
দেখিবে অরূপ শুধু ফানা হবে সার ॥
করিলে সকল নেস্তি হাস্তি পদ তায়।
হাস্তি বিনা নেস্তি পদ আছিল কোথায় ॥
খালী আরশী দেখা কভু নাহিক ছুন্নত।
কিন্তু তার কারণেতে নবী ছিল মত ॥
এ হেন গৌরব কথা রসিকেতে জানে।
নিজ তত্ত্ব নিজে কর পাবে নহে বনে ॥
চর্তুদশ মোরাকেবা
আপনার নাক পরে লাগাইবে তাক।
তাকিতে তাকিতে দেখা নাহি যাবে নাক ॥
তখন হালাত এক হ’য়ে যাবে তারি।
সকল হইবে ফানা কিন্তু জাত বারি ॥
রবে না খেয়াল তাঁর রূপ রাশি যত।
হইবে আজব ফানা কর না গলদ ॥
নামাজেতে এই জন্য নাক দেখা হয়।
না করিলে ফানা কিন্তু সেরেক নিশ্চয় ॥
মকাম মাহমুদা যেই চাহে সাধিবারে।
আহাম্মদী ভাব বিনা পাইবে না তারে ॥
পঞ্চদশ মোরাকেবা
সুর ধন কোন জন করিলে যতন।
পাইবেন ছালেকান তাহাতে রতন ॥
মোহিনী আওয়াজ হয় শুনিতে মধুর।
পাইবেন ছালেকান তাতে বহু নূর ॥
আওয়াজেতে খোলা যাবে তাজল্লির দ্বার।
ছুটিবে জজবার সৈন্য বলে মার মার ॥
হা হুতাসে অবশেষে হইবে মস্তান।
নহে শুধু ফানা হবে যোগ্য আরেফান ॥
লোহা যেন আগুনেতে গরম বিশাল।
আন্ত্রীক গরম আর রূপ হবে লাল ॥
কি সাধ্য থামিয়া তারে রাখে কোন জন।
আগুন প্রবল হইলে কে করে বারণ ॥
গরমে সরম তার সব যাবে দূর।
কেবল মানস তার আল্লাহু গফুর ॥
গান শুনে তান তার আসিবে না কানে।
মদহুস হবে ভাব থামিবে কেমনে ॥
কিন্তু যদি আশেকানে হবে রস গান।
শ্রবণেতে আশেকের বাঁচে না পরাণ ॥
কোরান কালাম যদি শুনে সুমধুর।
পদ্য গদ্য রসযুক্ত বাজা আদি সুর ॥
বচন রসের মূল সুর ও সঞ্চার।
প্রতি সুর অন্তরেতে আছে এক সার।
কোথা হইতে আসে সুর আছিল কোথায়।
কোথা সুর সার মণি কে সৃজিল তায় ॥
না পাইলে তাঁহে আজি দিব হে পরান।
সুরে সার না পাইলে কিবা ছার গান ॥
সংসারেতে নানাবিধ যত আছে সুর।
কেবল জেকের শুধু নহে কিছু দূর ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
وان من شئى الايسبح بحمده ولكن لاتفقهون تسبيحهم
(ওয়াইম্মিন সাঁইয়িন ইল্লা ইউসাব্বেহু বিহামদিহি
ওয়ালা কিল্লা-তাফকাহুনা তাসবিহা হুম ॥)
سعدى رح
(সাদী রহঃ)
بدكرش هر چه بينى درخروش است
ولى داند دين معنى ك گرش است –
(বা জিকিরাস হারচেঁবিনীদার খোরোস্ আস্ত।
ওয়ালি দানদ্ দিন্ মানি কে গোরাসআন্ত ॥)
জেকেরে যাহারে পাবে আওয়াজেতে তারে।
কিন্তু যদি রাখে কান অর্থের ভিতরে ॥
যতেক আওয়াজ আছে সংসার মাঝার।
আছয় তাহার মাঝে মানী পরিষ্কার ॥
দোতারা ছেতারা দফ জগ ঝম্প খোল।
নাকারা টিকারা ঢাক হারমণি ঢোল ॥
এসরাজ সারেঙ্গী বাঁশি বেগুলি সাঁনাই।
তবল কর্ত্তাল বেল মন্দলি জলাই ॥
এ সব আওয়াজে আছে আওয়াজের মূল।
হাকিকতে পাবে তারে না করিলে ভুল ॥
এরূপ সুরেতে খোলে তাজল্লির দ্বার।
তাজল্লি হইলে ফানা জাত পাক সার ॥
আরেফের মারফত প্রভু দরশন।
পাইবেন মোরাকেবা করিলে যতন ॥
হইবে খোদার সাথে ভাবের আলাপ।
এ হেন কথন বটে এলহামি বিলাপ ॥
টুক টুক ঢুক ঢুক হুঁ হুঁ সমুদ্দুর।
ভেন ভেন পেন পেন মশা মাছি সুর ॥
ঠন ঠন ঢন ঢন ঝন ঝন থাল।
স্বর স্বর গর গর কল কল খাল ॥
আঁহা উঁহু হাঁ হাঁ হুঁ হুঁ কাকা কুকু সুর।
এ সবার মোরাকেবা খুলে যাবে নূর ॥
যতেক আওয়াজ আছে সংসার মাঝার।
সকলেতে প্রভু নাম নামে আছে সার ॥
তাতেই গানের ব্যাখ্যা বিখ্যাত আরেফে।
শতেক প্রশংসা লিখা দেখ আওয়ারেফে ॥
যে জানে আওয়াজ মূল শুনা চাহি তার।
অপরে শুনিলে তাহা হবে গুনাগার ॥
ষষ্ঠদশ মোরাকেবা
লতিফা সকল আর অজুদ তামাম।
রাত দিন মোরাকেবা তাহাতে মোদাম ॥
শরীরের নেগাদারি শরীরে রাখিবে।
শরীরেতে মোসাহেদা হুজুরি পাইবে ॥
বদনে রাখিলে নেগা ফানা হবে তায়।
সে নেগা হইলে ফানা বদন কোথায়।
ফানাওল ফানা এই বাকা নাম তার।
নাম কাম হবে ফানা এক আল্লা সার ॥
তুমি আমি খেয়াল আদি মিটিবে যখন।
কহিবে আনালহক্ব মিশে গেলে তন ॥
কিন্তু যদি মকামেতে করিবে তাছির ॥
কল্পনা করিতে দূর করিবে তদবির ॥
কল্পনা বিষম বালা মনের ভিতর।
তাহার দরুনে দেলে হয় না আছর ॥
তিন প্রকার কল্পনা শুন মনকায়।
হাম তুল সহওয়াত জান তেসরায় ॥
কত শত কল্পনা মনের ভিতর।
নিরবধি মন মাঝে করে ধড় ফড় ॥
মন কল্পনায় লোক চারি পাশে যায়।
নহেত বসিয়া রইত আপনা জাগায় ॥
লইত প্রভুর নাম, হইত স্মরণ।
স্মরণ লাগিত মিঠা নহে উচাটন ॥
দৈয়মেতে তুল নামে খাতরাত আর।
ক্রমে ক্রমে আয়েন্দাতে বড় আশা তার ॥
এইক্ষণ না হইলে আগে পরে হবে।
কার পরে কি করিবে মনে মনে ভাবে ॥
তেছরাতে মনে বদ চক্ষের নজর।
অন্য নারী দেখে লোভী হয় তার পর ॥
এ তিন ফিকির রোজ সত্তর হাজার।
রাত দিন নয়া জন্মে মনের মাঝার ॥
এতেক ফিকির যদি মন ঘরে হবে।
প্রভুর স্মরণে বল জাগা কোথা পাবে ॥
জাগা রহে আমল নামা হইবে দপ্তর।
সে দপ্তরে শত পর্দ্দা কলব উপর ॥
খাতরাত শয়তানি বলে এর নাম।
ফিক্রে রহমানী তাই হবে না আঞ্জাম ॥
এ সব কল্পনা যদি হয়ে যাবে দূর।
কল্পনা রহমানী পরে করিবে জহুর ॥
এইত আল্লার ভেদ মনের কল্পনা।
লূলূ ও মারজান, এই অন্যে জানে না ॥
এইত গোপন ভেদ হিস্যা আরেফান।
নবীদের মন উক্তি হাদিছ বয়ান ॥
প্রত্যহ উৎপন্ন হয় মনের মাঝার।
নব নব হর দিন সত্তর হাজার ॥
তাতেই ভাবের সাথে ফকির বচন।
অলীক লোকেতে কহে গায়েবী কথন ॥
গায়েবী বুঝেছে তারা ফকিরি আলাপ।
লাঠি দেখে বলে বাপ এই কাল সাপ ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
كل يوم هوفى شان
(কুল্লু ইয়াওমা হুয়া ফিশান।)
ঘড়ি ঘড়ি এক সান আয়াত কোরান।
দমে দমে কাল যায় কালে কালে সান ॥
كلام اولياء
(কালামে আওলিয়া)
اصوفى ابن الوقت
(আছ্ সূফী ইব্নুল ওয়াক্ত।)
আচ্ছুফি এব্নোলওয়াক্ত কহে কোন অলী।
সময়ের পুত্র বটে আরেফ সকলি ॥
সপ্তদশ মোরাকেবা
আগুন চেরাগ আদি যত জ্যোতিময়।
এক দৃষ্টে নজরেতে রহিলে নিশ্চয় ॥
হইবে তাজল্লিময় ভাবুক অন্তর।
জেকেরে তরক্কি মন কাঁপে থর থর ॥
বেশীক্ষণ করে যদি মোরাকেবা তাঁর।
গরমি হইতে পারে রবে হুশিয়ার ॥
যদি সে গরমি তার হইবে ত্বরিত।
মোরাকেবা পানি জামে কর আচম্বিত ॥
অষ্টদশ মোরাকেবা
রাখিয়া পানির জাম ছামনে আপন।
এক দৃষ্টে রবে চেয়ে গলা করে টান
মোর্শেদের কুঞ্জি হতে খুলিবে দুয়ার।
নহে কর ইউছাব্বেহু জপ কত বার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তাআলা)
يسبح لله ما فى السموت والارض
(ইউসাব্বেহু লিল্লাহি মা ফিস্ সামাওয়াতে ওয়াল র্আদ।)
তাহাতে পাইবে নূর গুপ্ত আলামত।
পানিতে আগুন পাবে নূর হাকিকত ॥
উনবিংশ মোরাকেবা
দুই ঘড়ি দিন যবে হইবে উদয়।
রহিবে পশ্চিমে খাড়া এক দৃষ্ট হয় ॥
দৃষ্টিতে সৃজিত হবে নানাবিধ নূর।
শত শত রঙ্গে হবে তাজল্লি জহুর ॥
ঘড়ীতে ঘড়ীর ফল দিনে দিনে পায়।
বৈকালে দ্বিপ্রহর ফল কোথা পাওয়া যায় ॥
অসমে সমের ফল যদি হতে পারে।
সোম শুক্র বলে তবে ডাকিবে কাহারে ॥
দিবা গেলে রাত্রি আসে অন্ধকারময়।
রাত্রেতে দিবার ফল আর কিহে হয়।।
গরম দিবার ধুপ রজনী শীতল।
পাঞ্জেগানা পাঁচ সমে যার যে আমল ॥
দোহা, চাস্ত, ঈদ, জুম্মা, হজ্ব ও রমজান।
যার যেই সময়েতে তাহার সম্মান ॥
বুড়া কালে নাহি পাবে জওয়ানির ফল।
সময় থাকিতে কর যার যে আমল ॥
বিংশ মোরাকেবা
চাঁন্নি রাত হয় কিবা দ্বিপ্রহর পর।
দেখহে লতিফ ছায়া করিয়া নজর ॥
নিজ ছায়া দৃষ্টি করে রবে সাবধানে।
পরেতে নজর করে আকাশের পানে ॥
নজর আসিবে এক সাদা ছায়া তায়।
করহ তাহাকে ফানা এক মন কায় ॥
হইবে তাহাতে ফানী আতশে গরম।
তাজল্লি ধরিবে জোর ছুটে যাবে দম ॥
করিতে গরম দফা যদি চাহে নর।
দরুদের মোরাকেবা রবে না জরর ॥
একবিংশ মোরাকেবা
হইলে আধাঁর ঠাঁই অতি ঘোরতর।
তাহাতে তাজল্লি শুধু হইবে পশর ॥
আধাঁর না হইলে কোথা হইবে পশর।
জ্যোতি না হইলে কোথা হইবে নজর ॥
নজরের চক্ষু ঘোর কেবলি আঁধার।
আঁধারে পাইলে ঠাঁই রৌশন বাজার ॥
আঁধারেতে জ্যোতির্ম্ময় চাহ যদি ভাই।
ঘেষ কলে বাতি বই কোথা সে রোশনাই ॥
দ্বাবিংশ মোরাকেবা
চক্ষু মুখ কর্ণ নাসা অর্থে পঞ্চদ্বার।
কুম্ভক ভরিয়া দম না হয় বাহার ॥
পরেতে যাইয়া বস নিজ সিংহাসনে।
পাঠাও তাহুতিগণ তালাসিবে বনে ॥
যথায় মণির খনি রয়েছে গোপনে।
পাঠাও তাহুতিগণ উঠাবে যতনে ॥
কাচারি অফিস যত বানান দরকার।
করিবে উত্তমরূপে রাস্তা ঘাট তার ॥
করহ আবাদ দেশ শহর বাজার।
পুকুর পুষ্করিনী আদি কর পরিষ্কার ॥
চাকর নৌকর যত কামরাণীগণ।
উচিত মাফিক দিবে যার যে বেতন ॥
মুল্লুক রাখিবে তাজা করে আদালত।
দুষ্টেরে দিবেন সাজা বুঝিয়া তাবত ॥
বসতির ঘরে যবে করিবে প্রবেশ।
অন্ধকারে বাতি দিবে নানা উপদেশ ॥
করিবে সাজন ঘর অতি পরিষ্কার।
বাতি ও মশালে ঘর করহে গোলজার ॥
খোরপোষ বস্ত্র আদি নানা উপহার।
লইবে ভক্ষণ বন্তু নানান প্রকার ॥
খাওয়া পিয়া বস্ত্র আদি সুখের সঞ্চয়।
মাশুক ব্যতীত ঘরে কিছু সুখ নয় ॥
রহিবে মাশুক সনে কহিবে বচন।
আসেক মাশুক রস করিবে পুরণ ॥
এসব কুম্ভক জোরে খুলিবে যাহার।
চিস্তিয়া তাহার কুঞ্জি আবশ্যক তার ॥
ত্রয়োবিংশ মোরাকেবা
হইবে পীরেতে ফানা স্বরূপ অন্তরে।
জলেতে মিশিলে জল কে চিনিতে পারে ॥
দ্বিতীয় রাছুল ফানা এক মন চিত।
কেমনে করিবে জুদা জলে কোথা শীত ॥
পরে হওয়া ফানা ফিল্লা এক মনকায়।
বারুদে আগুন দিলে বারুদ কোথায় ॥
তার পরে বাকাবিল্লা এমন প্রকারে।
আগুন গরম কোথা জুদা হতে পারে।
অপরে আগুন হয়ে করে যত কাম।
জ্বালা পোড়া মোশালাদি প্রদীপ আঞ্জাম ॥
যথায় আগুন পাবে একই আগুন।
আগুনে আগুনে কিহে আছে গুণাগুণ ॥
আজ কাল মাস আদি বৎসর যাবত।
একই সময় জান সময় তাবত ॥
একই সময় নাম ভিন্ন ভিন্ন হয়।
একই শরীর অঙ্গ জুদা জুদা নয় ॥
مولانا روم
(মাওলানা রুম)
مرحباشد جملگى اميخته –
گور هادريك لكن در ريخته –
زافكه خود ممدوح جزيك بيشنست –
كيشهاى زين روى يك كيشنست –
(মার হাবা শোদ জুম্ লাগি আমেখ্তা।
গোরহাদর এক লেকেন র্দ রেখ্তা ॥
জাফাকা খুদ্ মামদোহ্ জুজা এক্ বেশ্নিস্ত।
কেশাহি জাঁইনরোবি এক কেশনিস্ত ॥)
একাযুক্ত ঘোলময় তাবৎ নিশ্চয়।
সাবাসি খাঞ্জার পরে শত খোরা হয় ॥
একই প্রভুর জাত বেশি নাহি আর।
সকলি মোজাহাব এক বেশী কোথা তার ॥
কদমিয়া তালা এই না করিবে বাদ।
নিশ্চয় জানিবা কুঞ্জি সাহে আমজাদ ॥
আছিল ললাটে লেখা মিলাইল সাঁই।
বঙ্গদেশে হেন তালা আর হয় নাই ॥
আহাম্মদী ভাবে ভাব প্রবেশে আমজাদ।
দুধ ও মাখন এক ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ ॥
নেছবত পরীক্ষা
আমেল কামেল কিবা বাতেন ফকির।
মজজুব আব্দাল কিবা আউলিয়া পীর ॥
ছালেক তালেব কিবা মহেব্বান নবী।
প্রভুর মহেব কিবা গুরু ভাবে ভাবি ॥
শরিয়ত ধার্মিক কিবা দেল কালা তার।
মৌখিক লব্বাকি কিবা ফলে দাগাদার ॥
এ সবার পরীক্ষাতে দিবে যবে মন।
এক চিত্তে হবে ফানা তাহাতে আপন ॥
নিজ রূপ ঘোল করে রূপে যেয়ে তাঁর।
নিজ ভাব দূর করে তাঁর ভাব সার ॥
যে ভাব উদয় হবে তাহার হৃদয়।
এই সে উহার ভাব জানিবে নিশ্চয় ॥
কিন্তু এই ভাব তাঁর হবে নিরূপণ।
পীরের দীক্ষিত ভাবে শিক্ষিত যে জন ॥
কোন ব্যক্তি দূরে থাকিলে
তাহার অবস্থা নির্ণয় করা
দূর স্থানে কোন খানে যদি কোন জন।
ব্যারামি কি ভাল মন্দ করা নীরিক্ষণ ॥
দোন চক্ষু বন্ধ করে মন পরিষ্কার।
কহিবে দেখাও সাঁই চিন্তা করি যার ॥
তখন হেরিবে যারে সরল অন্তরে।
নিশ্চয় জানিবে বাপু চিন্তা করে যারে ॥
কিন্তু তব মন যত হবে পরিষ্কার।
ততই সকালে তাহা হইবে নির্দ্ধার ॥
রহিলে অন্যের চিন্তা মনের ভিতরে।
কুওত কাহারি ফায়েজে দূর কর তারে ॥
পাইবে এস্কের ঘরে ইহার সন্ধান।
পরেতে ধেয়ানে তব হইবে গেয়ান ॥
বসা চাই ঘণ্টা ভর কিবা আধা তার।
দো এক মিনিটে কেহ বোঝে নিবে সার ॥
চক্ষু মুদে রবে কেহ কেহ উন্মিলীত।
কেহ জানে সহজেতে কেহ আচম্বিত ॥
কাস্ফ যার ভাল হবে দেখিবে সত্বর।
বিনা কাস্ফে জানা ইহা হইবে দুষ্কর ॥
বিমারী নির্ণয় করা
যাহার ব্যারাম তুমি করিবা নির্ণয়।
তাহার শরীর ভাব আপনি নিশ্চয় ॥
রহিবে কিয়ত কাল এমত প্রকার।
তাহার ব্যারাম পাবে শরীরে তোমার ॥
দরদ ছরদ আদি যথায় তাহার।
বদনে তথায় তব হইবে নির্দ্ধার ॥
তাতেই জানিয়া নিবে বিমার উহার।
যেই স্থানে যথা আছে বলে দিবে তার ॥
তালেবানের লতিফা ও
মোকাম নিদর্শন করা
আপন মোকাম সাথে তালেব মোকাম।
রাবেতা করিলে পরে লতিফা মোদাম ॥
মিলাবে লতিফা পীর নিজ লতিফায়।
করিবে লতিফা নিজ ফানা সমুদয় ॥
তার পরে যে তাছির পাবে নিজ মনে।
ইহাই তাছির তার জেনে নিবে মনে ॥
নামাজের ফায়েজ
নামাজ পড়িতে যদি চাহে কোন জন।
পীর হতে নূর তার চাহি যে লওন ॥
তবেই লাগিবে মন পাবে তার ফল।
কবুল করিবে সাঁই এইত আমল ॥
মমিনের মে’রাজ জান এ নামাজ।
পীরের কলবে ভেদ রহিবে না বাজ ॥
নামাজেতে ফল পাই এই মানসেতে।
লইবে নামাজ নূর পীর নিকটেতে ॥
তবেই পাইবে ফল খুলিবে নয়ান।
কোরানের ফায়েজ পাওয়া এমনি সন্ধান ॥
কোরান হাদিছ কিবা কালামাদি যত।
ফায়েজ লওয়া আবশ্যক আর তাবিজাত ॥
তাবিজের ফল পাওয়া চাহে যেইজন।
রাবেতা পীরের সাথে চাহি কতক্ষণ ॥
নহে ফজরেতে যবে খতম পড়িবে।
তখন তাবিজ মনে খেয়ালে বসিবে ॥
কিন্তু যে নিচেতে এক তাবিজ লেখা যায়।
আম খাছ এ তাবিজ দিবেক সবায় ॥
لاحول ولاقوة الا بالله –
(লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্)
গদ্য Ñ কোন ব্যক্তির জ্বর পীড়া হইলে ইহার দুইটি তাবিজ দোন হাতের কব্জায় কিছুতে ভরিয়া লেপ বা মালশির সূতা দ্বারা বান্ধিয়া তিন কি পাঁচ দিনের মেয়াদে দিবেন। যদি ঐ মেয়াদের মধ্যে জ্বর না ছুটে ডাহিন হস্তেরটি বাম হস্তে এবং বাম হস্তেরটি ডাহিন হস্তে দেওয়া আবশ্যক। যদি আল্লাহ্্র ফজলে আরোগ্য হয় তবে ঐ তাবিজ পানিতে ফেলিয়া দিবেন। কাস রুগীর গলায় বান্ধা আবশ্যক। বায়ুর জন্য মাথায় এবং পেটের ব্যারামে ও দরদের জন্য কমরে বান্ধিতে হইবে। সময় বিশেষে চীনের বর্ত্তনে বা কলার পাতায় বা পানের উপর লেখিয়া ধুইয়া এবং পানসহ খাওয়াইতে হয়। দ্বিতীয় তাবিজ প্রসব বেদনার জন্য। কিন্তু এই তাবিজটি বান্ধনের সময় কিঞ্চিৎ নজর মান্য করিয়া খালাস হইলে কোন গরীবকে দেওয়া আবশ্যক।
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
واذنت لربها وحقت واذالارض مدت
والقت مافيها وتخلت واذنت لربها وحقت –
(ওয়াআজিনাত্ লি রাব্বিহা ওয়া হুক্কাৎ ওয়া ইজাল আরদু মুদ্দাৎ।ওয়া আল্কাত্ মা ফিহা ওয়া তাখাল্লাত্ ওয়া আজিনাত্ লি রাব্বিহা ওয়া হুক্কাত।)
তৃতীয়-আছেব ছাড়াইবার কিম্বা বদ নজরের জন্য ছুরে এখলাছ লেখিয়া যার গলায় দিতে হইবে তার নাম লেখিবে। তাহাতে যদি না মানে চারকুল দিয়া তাবিজ লেখিয়া দিবেন। আর যে ব্যক্তি ফায়েজ পাওয়ার নিয়ম না জানেন তিনি হর রাতে ৩০০ বার দরুদ শরীফ পড়িবেন কিন্তু মানসিক লক্ষ্য তাবিজের দিকে রাখিবেন।
কাশ্ফ কুবুর
কবরেতে কোন জন আছয় মুরদার।
সুখ দুঃখ নেক বদ নিদর্শন তার ॥
নর নারি ছিল কিবা যুবক সন্তান।
করিলে জেকের কিছু পাইবে সন্ধান ॥
ياروح الروح
(ইয়া রূহুররূহ্)
“ইয়া রূহুররূহ্” শব্দ কলব উপর।
মারিবে টক্কর যদি পাইবে খবর ॥
ياصمد
(ইয়া ছামাদ)
কিম্বা কর ছামাদের জেকের কত বার।
সহস্র করিবে নহে শেষ তিন হাজার ॥
শত হেতু আছে তার হেতু যেই জানে।
জিজ্ঞাসিলে পাবে ভেদ তাহার সামনে ॥
দুঃসাধ্য কথার মতলব খোলা
ياهو
(ইয়াহু)
“ইয়াহু” জেকের করে আখফার উপর।
জরব্ টক্কর কত মারে দড়াদড় ॥
হাজার করিলে যদি খুলিয়া যাইবে।
নহে দুই হাজার যে জরব করিবে ॥
তাতে যদি নাহি খোলে তিন হাজার কর।
খুলিবে তাহার ভেদ খাতিরজমা ধর ॥
খবর আয়েন্দা
খবর আয়েন্দা যেই চাহে জানিবার।
করিবে জেকের কিছু রূহের উপর ॥
ياروح الروح
(ইয়ারূহুর রূহ্)
কিম্বা সে লতিফা রূহে কর এ জিকির।
“ইয়ারূহুর রূহু” কর জরবেতে স্থির ॥
জরব জেকের করা জোরেতে মারণ।
হেলিবে ঝাকিতে তার সকল বদন ॥
ঊর্ধ্বে মন জরবেতে করিবে গমন।
কেবল উপর পানে মানস আপন ॥
করিলে কিয়ত কাল হইবে এল্হাম।
পাইবে আয়েন্দা বাত বলি আচ্ছালাম ॥
চিন্তাপতীর মন হইতে চিন্তা
বাহির করিয়া দেওয়া
চিন্তাপতী হবে যদি নর-নারী বর।
পুত্র শোকে যদ্যপিও হইবে কাতর ॥
কুওত কাহারী ফায়েজ দিবে তার মনে।
শোক স্থান উৎপত্তি রাবেতার সনে ॥
ঠেলিয়া ফায়েজ জোরে করিবে বাহের।
ফায়েজ পরে ফায়েজ দিবে করিবে না দের ॥
কিম্বা জরব আল্লাহু করে এক হাজার।
তিন হাজারে সিদ্ধ হবে এক মন সার ॥
পথিকের দেও দূরাচার হইতে রক্ষা
জ্বীন ভুত কার আগে হইলে রুদাত।
কলব জেকেরে তাহা হইবে তফাত ॥
তাতে যদি নাহি ভাগে পীরে হবে ফানা।
দশ চৌক্ষা ভুতগণ হয়ে যাবে কানা ॥
ঝিল বিল নাল নদী পাহাড় পর্বত।
ফানা পীরে কোথা রহে তাহার আফত ॥
দফে বালা
যে বালা হউক দেশে ওবা গুটি যত।
রূহু কি কলবে কর জেকের এই মত ॥
চার জরবি জেকেরেতে চা’রাসন বস।
মোর্শেদে হইয়া ফানা বালাগণে কস ॥
তিন হাজার ইল্লাল্লাহ্ তাতে ভাব টুক।
লা-ইলাহা কল্মা ধর ভরিয়া কুম্ভক ॥
এক দিনে ফতে হলে পোরে মনষ্কাম।
সাপ্তাহিকে না হইলে বড় বদনাম ॥
দফে আজার
কলব আটিয়া ধর ব্যারামীর পরে।
কুওত কাহারী ফায়েজ মার কসে জোরে ॥
মার মার সার সার কর না গো ভয়।
দেখিবে কমিতে রোগ রহিবে নিশ্চয় ॥
কিন্তু যদি মরণ বেরাম হইবে তাহার।
কর না তাহার পরে কভু অত্যাচার ॥
তা হইলে তোমা পরে আসিবে আঘাত।
অতএব বুঝে তাহা রহিবে তফাত ॥
আছয় অনেক পদ ছোলব বিমার।
এহাকে ছোলব কহে তরিক মাঝার ॥
ঝড়ি ও তাহার বালা হইতে রক্ষা
দুর্জ্জন বন্যা আদি তুফান সকল।
রক্ষা কুলে এক দেলে রাবেতার ফল ॥
বন্যা রোখে হজরত উমর ভাবে স্থির।
ডাহিনে হজরত আলী বামে বড় পীর ॥
মোর্শেদ সামনে ভাবে ফায়েজ এল্কাতার।
কুদিবে কাহারী ফায়েজ বলে মার মার ॥
সে জোরে তুফান সুর হইয়া যাবে ঘোর।
কলবের ফায়েজ চাহি করা অতি জোর ॥
যখন জহুর হবে তাজল্লির ফল।
ছুটিবে বন্যার পরে করে মহাবল ॥
ফায়েজ উছিলা পীর চাহি এ লাগিয়া।
ফায়েজ দূত বন্যা ভুত ধরিবে কসিয়া ॥
দেখিবে ফায়েজ দূত থামাইবে ভুত।
কেমনে চলিবে হাতী বেগর মাহুত ॥
আছেব হাজের করা
আছেব জাদার পরে রাবেতার সনে।
ঢালিবে কাহারী ফায়েজ খোদা করে মনে ॥
কুওতের ফাঁসি এক আছেব গলায়।
দেখে কিবা জ্ঞান করে লাগাইবে তায় ॥
আছেবির পানে কস নাহি দিবে ভার।
দেখিবে হাজের হবে বড় চমৎকার ॥
আছেব ছাড়ান
কুওত কাহারী ফাঁসি গলে লাগাইবে।
জালালি ফায়েজ দ্বারা নহে জ্বালাইবে ॥
মরা পোড়া গন্ধ হেন পাইবে তখন।
উচ্চস্বরে কাঁদিবেক করিতে বারণ ॥
যদি সেই দুরাচার করয়ে প্রস্থান।
কর না তাহার পরে আর অভিমান ॥
যদি ঝুট করে টুট আপনা বচন।
করহ ফায়েজ জোরে তাহাকে বন্ধন ॥
বন্ধী লয়ে নরক হয় কিবা অন্য ঠাঁই।
রাখ তারে ধরে জোরে ছাড়াছাড়ি নাই।
কিন্তু যেন দৃষ্টি শক্তি রহিতে না পারে।
এমন আড়ালে তারে রাখ নিদ্রা ঘোরে ॥
যাবত আরোগ্য লাভ করে না প্রকাশ।
বন্ধন হইতে তায় কর না খালাশ ॥
সতত বন্ধনে আর রাখ না তাহারে।
জ্বীন হলে ত্বরিকত শিখাইতে পারে ॥
মানব মুরিদ যেন হইবে তোমার।
জ্বীনেতে বিশেষ তব হবে ওফাদার ॥
যে জন পাইছে ধন পোছহ তাহারে।
আমুরিদা কদাচিৎ বুঝিতে না পারে ॥
ছিনা কবজ ও ফায়েজ
বন্ধ হওয়ার লক্ষণ
মোর্শেদের ছায়া জান তাহাও মোর্শেদ।
ছায়াতে আছয় অতি গোপনের ভেদ ॥
কেমন মুরিদ তাতে পদ রাখে হায়।
সুজন মোর্শেদ ছায়া রাখিবে মাথায় ॥
ঝাড়ী পরে ঝাড়ে মুখ মোর্শেদ সুজন।
সে ঝাড়িতে ঝাড়ে মুখ সে জন কেমন ॥
জানিল না গুরু সেই চিনিল না মুখ।
পারো যদি খাও থুক কোথা ফেক থুক ॥
ঘোড়া জোড়া জুতা আদি খড়ম তাঁহার।
পদ স্থলে মাথা তব রাখন দরকার ॥
মুছাফেহা নাহি কর মুরব্বির সনে।
হাতে হাত সমতুল মুরব্বী চরণে ॥
পড় না নফল কভু ছামনে তাঁহার।
কোরান কিতাব কিবা কালামাদি আর ॥
বিছানাতে কভু তার নাহি রাখ পাও।
দেখিলে খড়ম জুতা আদাব জানাও ॥
নহেত হইবে বন্ধ ফায়েজ তোমার।
আর কিছু ছিনা বন্ধ কহি বারে বার ॥
হাট ঘাট গোল বন্দি কর না পছন্দ।
মুছল্লির জুলমতে ছিনা হবে বন্ধ ॥
বসনা নিকটে তার বলি যে তোমায়।
যার কাছে গেলে বুক বন্ধ হয়ে যায় ॥
জুব্বা, আবা, পাগড়ী, আর তছবি রেয়াকার।
উপরেতে বানাউট ভিতরে আন্ধার ॥
سعدى رح
(সাদী (রহঃ)
بساقامت خوش كه زير چادر باشد
چون تاز كنى مادر مادر باشد –
(বাছা কামত্ খুশ্কে জেরা চাদার বাশাদ্।
চুঁ তাজ্ কুনি মার্দা মার্দা বাশাদ্ ॥)
চাদরের নীচে হেন পরীরূপ রাণী।
সে চাদর খুলে দেখ মার মাতা নানী ॥
যার ঠাঁই গেলে জেকের খুলিবে তোমার।
পাইলে এমন জন ভক্তি কর তার ॥
কহেন আছহাবে নবী এমত কালাম।
তোমা মধ্যে নেক কেবা শুন তার নাম ॥
ثيحيح حديث
(ছহী হাদীস)
وعن اسماء بنت يز يد – انها سمعت من رصول الله صاعم يقول الا انبئكم بخيار كم قلوا بلى يارصول الله صلعم قال خيار كم الذين اذا رؤا ذكر الله راواه ابن ماجه –
(ওয়াআন্ আস্মায়ে বিন্তে ইয়াজিদ আন্নাহা ছামেয়াতু মিন্ রাসুলাল্লাহে (সাঃ) ইয়া কুলু আলা আমবা’আকুম বেখেয়ারেকুম ॥
কালু বা’লা ইয়া রাসূল আল্লাহ্্ (সাঃ) কালা খেয়ারুকুম আল্লাজিনা ইজারাআও জেকরুল্লাহা রাওয়াহু ইব্নে মাজা ॥)
খোদার জেকের হয় দেখিয়া যাহায়।
সেই জন ভাল আর নেক জান তায় ॥
নিরবধি অজু আর কথা কহ কম।
মন্দকে না জান মন্দ কেহুকে অধম ॥
অন্য মন, চক্ষু বদ করিবে না আর।
তাহাতে যেকের বন্ধ হইবে তোমার ॥
রেয়া, কেনা হাছাদ আদি যতবুরা কাম।
তাহাতে কলব ফায়েজ ঘাটে পরিণাম ॥
ছোল্ব করিলে ছিনা করিবে ছাফাই।
অন্য ভাল নিজ বুরা হতে পারে ভাই ॥
নাছুতি আবেদ হইতে রহিবে কেনার।
না জেনে নাছুতিগণ করয় এন্কার ॥
জাহেরান শরাওয়ালা হবে যত নর।
নাছুতি তাহার নাম জানহে খবর ॥
আরেফের চার দরজা শুন মনকায়।
নাছুত, মুলুকত, জবরূত, লাহুত চৌথায় ॥
در خلاصة المز هب
(দার খোলাছাতুল মাজহাব)
در جه عرفان چهار اند ناسو توملكوت –
وجبووت ولاهوت ناسوت درجه شريعت –
است ملكوت در جه طريقت جبروت درجه –
حقيقت لاهوت در جه معرافت چون صوفيان –
از در جه ناسوت بگذر ندز تعد يلش –
لحاظن دار ند هور كشف چيزها گويند وبعبور
درجهالى تقرب چيزها يعمل رند
جيسا تفسير احمدى مين هى
امال ان الكلام فى اولياء فخارج عن البحث
(দারজায়ে আরেফান চাহারান্দ নাছুত্ ওয়া মালকুত ওয়া জাবরুত্ ওয়া লাহুত্। নাছুত্ দারজায়ে শরিয়াত্ আস্ত। মালকুত দারজায়ে তারিকাত্, জাবরুত্ দারজায়ে হাকিকত্, লাহুত দারজায়ে মারফাত্। চুঁ সূফীয়াঁও আজ দারজায়ে নাসুদ বা গোজারান্দ দরতাদিলাশ॥ লেহাজ নাদারান্দ হুর কাশ্ফে চিজহা গুয়েন্দ ওয়াবাআবুর দরজাহালি তাকারুফ চিজহা ইয়ামাল আরান্দ। যেয়সা তফসির আহাম্মাদি ম্যায় হ্যাঁ আম্মাল ইন্নাল কালামু ফি আউলিয়াই ফাখারাজ আনিল বাহছে।)
আরেফ নাছুত যবে গুজারে নিশ্চয়।
শরিয়ত তা দিল তার লেহাজ না রয় ॥
মকাশেফা হয় যবে তাঁহার উপর।
নয়া নয়া অতএব কহে নিরন্তর ॥
বহুতর নিকটেতে হওনে খোদার।
বিশেষ চিকন বাক্য করেন প্রচার ॥
তাতে কিছু শরা পরে নাহি হবে দোষ।
তফছির আহাম্মদি এবে শুনরে মানুষ ॥
বাহেছেতে অলী বাক্য হয় না সামাই।
কেমনে তাঁহার সাথে করিবে লড়াই ॥
আউলিয়ার কথা জান বাহেছ খারেজ।
তেকারণে তার ঠাঁই রহিবে আজেজ ॥
এ সব কথার মর্ম্ম নাহি যার ঠাঁই।
না যাও তাহার আগে এ বড় বালাই ॥
আর যদি এতেকাদে হইবে খলল।
কভু না পাইবে ধন ঘটিবে জহল ॥
ফায়েজ আবদ্ধ হইলে
তাহা খোলার কায়দা
যখন আবদ্ধ হবে ফায়েজ কাহার।
পীর ঠাঁই মাফ আর কর আস্তাগফার ॥
রাবেতা করিবে অতি একিনের সনে।
কুওতের ফায়েজ পরে বসিবে তখনে ॥
ছাফাই মানস সদা রাখহ সবায়।
দেখিবে ছাফাই হয়ে যাইবে ত্বরায় ॥
কিন্তু যদি দেও ভুত করিবে আছর।
এমন মালুম হবে ছিনার ভিতর ॥
কুওত কাহারী জোরে ঢাল নিকালিয়া।
নহেত মস্কিল হবে পিছেতে চলিয়া ॥
কোন আউলিয়ার কবর ও মাজার
হইতে ফায়েজ পাওয়া
প্রথম ছওয়াব কিছু করিয়া রেছাই।
এক পাশে কবরের বসে যাওয়া চাই ॥
রাবেতা তাঁহার পরে করে কত কাল ॥
কলবে কলব সাথে মিলা এত্তেছাল ॥
যে প্রকারে মোরাকেবা মানস করিবে।
বুঝিতে পারিলে তাহা সকলে পাইবে ॥
তাজল্লি আফাল কিবা আন্ফোছের হয়।
বেলায়েত কোবরা কিবা উলিয়া নিশ্চয় ॥
ফায়েজে বেলায়েত কিবা ফায়েজে নবুয়ত।
কুওত কাহারী কিবা হায়বাতে আজমত ॥
দরুদের নূর কিবা নূর কোরানের।
হাদিছের নূর কিবা নূর কালামের ॥
আরশি ফরশি কিবা নূর মোকামের।
নবুওতের নূর কিবা নূর বেলায়েতের ॥
আরশি যদি ছাফ হবে মুখ পরিষ্কার।
লিবে দিবে দোন জন চক্ষু রহে তার ॥
দুধ যদি বেশী হবে শিশু বেশী খায় ॥
শিশু যদি না খাইবে খেলাবে কাহায় ॥
কিন্তু যে মোর্শেদ চাই উছিলা আপন।
নহেত রহিবে বন্ধ শুন দিয়া মন ॥
বৈঠা যদি ঠিক রবে শত হইলে দাঁড়।
নৌকা রহিবে ঠিক চলিবে বাহার ॥
মাঝি যার ঠিক নাই দাঁড়ে করলে বল।
ঘোরে ঘোরে মারা যাবে করে হিয়ব্বল ॥
অলী হতে কোন ফায়েজ পাইবে যখন।
তাহাই মোর্শেদ ফায়েজ জানহে আপন ॥
জলেতে মিশিলে জল জান এক জল।
জোয়ারের জোরে পানি করে মহা বল ॥
যে জন আসল পীর নাহি রাখে ঠিক।
পাবে না মতলব কভু খেয়াল অলীক ॥
মোর্শেদ এরশাদ বিনে জেয়ারতে যায়।
নিজ ধন হারাইবে গেলে চাটগাঁয়
মক্কা গেলে কি হইবে হবে মক্কর বাজ।
তাজ বিনা তক্ত কোথা করলে শাহী সাজ ॥
এক ঘটে দুই বস্তু রহিতে না পারে।
সুর্মাদানে লজ্জা বস্তু রহে কি প্রকারে ॥
পৃথক পৃথক নূর ও তাজল্লি চিনন
নূর ও তাজল্লি কার হইলে জহুর।
রহমানি শয়তানি তা চিনন জরুর ॥
রহমানি নূর আদি যে রঙ্গের হয়।
খাতরাহীন সরল মন লাগিবে নিশ্চয় ॥
মনে যদি কল্পনা ছিনা হবে ভার।
রস শূন্য লাগে কিবা হইবে আন্ধার ॥
দেখিলে এ সব নূর আস্তাগফার পড়।
রাবেতা করিবে খুব হয়ে খবরদার ॥
রাবেতার গুণে তাহা পালাইবে দূর।
হইবে তাজল্লি নূর করিবে জহুর ॥
জালালীর তাজল্লিতে হবে চমৎকার।
ছেফাতি তাজল্লি কিবা জাত পাক সার ॥
বামে ও পিছের পানে যত নূর পায়।
তাহার পরীক্ষা রক্ষা জান রাবেতায় ॥
জেকের করার নিয়ম
প্রথম কলব পানে করহ খেয়াল।
পীরের কলব সাথে কর এত্তেছাল ॥
কলবে কলবে যদি রাখ মিলাইয়া।
প্রদীপে প্রদীপে যেন উঠিবে জ্বলিয়া ॥
থর থর করে তায় হইবে জেকের।
আল্লা আল্লা জপে যেন করহ ফেকের ॥
তার পরে রূহু সাথে রূহু মিলাইবে।
এই মত ছেরে যদি জেকের পাইবে ॥
খফিতে জেকের পরে করিবে মোদাম।
দশ লতিফাকে হেন করিবে তামাম ॥
আখফা আর নফছ পরে হাওয়া লতিফায়।
আব আর আতশেতে খাকেতে চৌথায় ॥
এই দশ একে একে হইলে তামাম।
ছুলতান আজকারে শেষে করিবে আঞ্জাম ॥
লতিফা সকল মেলে জেকের একবার।
করিলে তাহারে কয় ছুলতান আজকার ॥
দশ লতিফাতে হয় অজুদ সামাই।
রোম রোম কোন জাগা ছাড়া ছাড়ি নাই ॥
আল্লা আল্লা করে কিবা আল্লাহু জেকের।
কিম্বা করে হু হু নাম সতত ফেকের ॥
নিরবধি ঝংকার মারে বদনেতে।
চলিতে ফিরিতে কিবা জাগিতে শুইতে ॥
রোম রোম এক সাথে প্রভুকে বোলায় ॥
এক মুখে কত তুমি বোলাইবে তায় ॥
তুমি যদি শুয়ে রবে তারা না শুইবে।
শয়নেতে নিজ নাম সকলে জপিবে ॥
প্রভুর নাম জপ তারা করিবে সদাই।
তুমি যদি নিদ্রা যাবে তারা যাবে নাই ॥
তুমি যদি কর কভু মুল্লুক ভ্রমণ।
করিবে তাহারা সবে প্রভু আরাধন ॥
সভাতে বসিয়া তুমি করিলে বচন।
প্রভু সাথে লতিফারা করিবে কথন ॥
তুমি যদি ভুলে রবে ভুলিবে না তারা।
তুমি যদি মরে যাবে জিন্দা লতিফারা ॥
এমন জেকের হয় সতত বন্দেগী ॥
না জানিলে এই ভেদ হইবে রান্দেগী ॥
এমন জেকের যার শোওনে তাহার।
অন্যের বন্দেগী হতে বেশী মরতবার ॥
আম এবাদত এবে রাখহে কেনার।
আলেম বন্দেগী নহে বরাবর তাঁর ॥
আলেমানে এক মন হওন দুস্কর।
নানাবিধ কার্য্য সহ শত কলেবর ॥
আলেমান এলেম আদি নানা মোছায়েল।
মছলাতে কভু ঠিক রহিবে না দেল ॥
কিন্তু যদি মনোভাব রহিবে তাহার।
সে ভাব জেকের খোলে বন্দেগীর দ্বার।
শুন গো দয়ার বারি হইয়া দয়াল।
পরিষ্কার করে সবে খুলে দেহ হাল ॥
উঠাও হুজ্জতি পরদা খুলুক নয়ন।
অন্ধ জনে আচম্বিত দেখে লউক চাঁন ॥
পুথি দেখে পুথি লেখে কি বুঝিবে তায়।
তাতে কি পাইবে মর্ম্ম হায় হায় হায় ॥
বিদ্যা না জানিয়া লেখে সে লেখা হারাম।
নফছানি খাহেস এই নহে মনস্কাম ॥
মোর্শেদ গায়েব কি দূরে রহিলে
ফায়েজ পাওয়া যায়
মোর্শেদ রহিলে দূরে কোন অলী জন।
তাহাতেও ফায়েজ পাওয়া আছয় কারণ
রাবেতা করিবে যদি লতিফার সনে।
পাইবে গায়েবী ফায়েজ যেমন ছামনে ॥
রাবেতা মিলান দেল ছুরত খেয়াল।
পষ্টরূপে যদি তার খুলিবে জামাল ॥
পাইবে ফায়েজ আর জেকের খুলিবে।
যথায় উরুজ তথায় ছবক পাইবে ॥
তাছাউফ কেতাবেতে করহ নজর।
লেখে সাহা অলিউল্লাহ দেখ বেরাদর ॥
واذاغاب الشيخ عنه ليتخيل صورته فتفيد صورته ماتفيد صحبته
(ওয়াইজা গাবাসাঁইখু আনহু লাইতাখইয়ালু ছুরাতিহি
ফাতাফিদু ছুরাতিহি মাতাফিদু সাহব্বাতাহু)
দূরেতে রহিলে পীর খেয়াল ছুরত।
পাইবে তাহাতে ফায়েজ নিকটে যেমত ॥
কিন্তু যদি তালেবান হইবে আল্লার।
নহেত বিফল হবে কহি বারে বার ॥
খতমে মোজাদ্দেদী
ফজর নামাজ প’ড়ে যথায় বসিবে।
কা’বা পানে এক মনে বাক্য না করিবে ॥
দরূদ করিয়া জপ এক শত বার।
পাঁচ শত জপ কর লাহাওলা আবার ॥
اللهم صل على سيدنا محمد وسيلتى اليك واله وسلم (আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা সাঁইয়্যাদিনা মোহাম্মাদি ওয়াসিলাতে ইলাইকা ওয়ালিহি ওয়াসাল্লাম।)
لاحول ولاقوة الابا الله
(লা-হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাবিল্লাহ্)
তার পরে শতবার পড়িবে দরূদ।
জেকের ফেকেরে পরে রহিবে মৌজুদ ॥
এশা বাদে দরূদ পড়া পাঁচ শত বার।
নাগা নাহি হয় কভু খুব খবরদার ॥
জেকের করিবার সময় তালেবানের যে হাল হয়
তাহার কতেক হাল ও কৈফিয়ত
তাওয়াল, লাওয়ামে, অজদ ও তাজ্রিদ।
মোহ, ছোহ, জজ্বা, গোল্বা, ছোকোর ও তাফরিদ ॥
এসব জজ্বার নাম শুন মন কায়।
চল্লিশ কেছেম হবে জজ্বা পড়ার ॥
প্রত্যেক জজ্বাতে হয় প্রত্যেক তাছির।
বদনেতে হাল তার হইবে জাহির ॥
শরীর গরম কভু বড় হবে দম।
বদন কম্পিত কভু রবে না স্মরণ॥
হুতাস হইবে কভু চক্ষে বহে জল।
চেহারা মলিন কভু করে টল টল ॥
গভীরতা সুরে কভু করিবে আওয়াজ
বেখোদ হইয়া চিখে পড়ে যেন বাজ ॥
নাচ কুদা করে কভু হইয়া বেহুঁশ।
তাতে কিছু সরা পরে না হইবে দোষ ॥
سيدى رح
(শাদী রহঃ)
مكن عيب درويش مد هوش ومست
كه غرقست ازان مى دند پاودست
(মিকোন আয়েব দরবেশ মদহুস ওয়ামাস্ত।
কে গরকাস্ত আজইমি দান্দ পাওদস্ত ॥)
আয়েব না কর কেহ মদহুশ জনের।
হাত পাও মারে হালে মস্তির খাতের ॥
মাটিতে পতন কভু কভু খাড়া রয়।
মরা হেন কভু যেন রহিবে নিশ্চয় ॥
যাহার উপরে হবে গোলবার তাছির।
মগলুব তাহাকে কয় বড়ই অস্থির ॥
নবী অলী আছহাব মহেব খোদার।
তাহারই হালে মগ্ন ছিল চমৎকার ॥
বেহুঁশ হইত নবী আছহাব জবর।
হাছানাতুল আরেফিনে করহ নজর ॥
করিলে খোদাই দাবি হালে কথা কয়।
করে যদি হাল হীনে কাফের নিশ্চয় ॥
হাল যার মাল তার হালে মাল পায়।
হালেতে আছহাব কত কেহ খুন খায় ॥
হালাত অমূল্য ধন উত্তম কারণ।
আওয়ারেফ কেতাবেতে কর দরশন ॥
যুগফল এক হালে খুলিয়া যাইবে।
ছেরাতুল মোস্তাকিমে দেখিয়া লইবে ॥
রুজি কম হইবার কারণ
ঘরে খায় বাহিরে পাও রাখে যেই জন।
উন্নাতলে ঘরকোণে করিলে ভক্ষণ ॥
তাম্বু ডুবিবার কালে যদি কেহ খায়।
খায় আর বাক্য করে হাটিয়া বেড়ায় ॥
চাল খড়ি হতে খেলাল করিলে আবার।
বাসি শয্যায় কোন জন করিলে আহার ॥
না পাকিতে খায় যদি না করিয়া কুলি।
রজনীতে ঘর হ’তে কুড়াইলে ধূলি ॥
ঘর হ’তে ছিটা পানি বাহিরে ফেলায়।
পাতিল হইতে যদি নারীগণ খায় ॥
বারে বারে মুখে দেয় চাউল কিবা খই।
খাই খাই ব’লে আর কিছু খে’য়ে লই ॥
বাসনেতে বাসি পানি মুখ ধোয়া থালে।
খাম খাম বলে খায় রাখে কিছু গালে ॥
রাত্রিকালে আরশি কাঁঙ্গি অন্ধকার ঘর।
শামকালে ঘরে যদি না দেখায় পশর ॥
মাঝ থালে হাত দিয়ে প্রথমেই খায়।
যত খায় তত চায় পায় নাহি আয় ॥
ফুঁক দিয়া গরম খানা খেও না কখন।
আকাঙ্খা না বেশী কর খে’তে কদাচন ॥
পথ মারা কাঁটা দেওয়া, আইল খোদা আর।
নিজ বুকে কপালেতে কাঁটা চোবে তার ॥
হইবে রেজেক কম ঘটিবে অসুখ।
অলীগণ দিলে দোয়া হবে চির দুঃখ ॥
দুঃখ পেয়ে শাপ দিলে মুণি মহাজন।
হইবে ভুবন দুঃখী ঘটিবে মরণ ॥
পথিকেতে পায় দুঃখ কাঁটা বসে পায়।
রক্ত বিন্দু কাটা ঘাতে পড়িবে যথায় ॥
হইবে কহর খোদা সেই জাগা পরে।
কলিকালে দুঃখী তাতে দেখিবে সবারে ॥
পরা বস্ত্র হ’তে কভু নাহি মোছ মুখ।
প্রদীপ না কর গোল আর দিয়া ফুঁক ॥
স্বামীর ছায়ার পরে যদি রাখে পদ।
হইলে শতেক পদী জানিবে আপদ ॥
মুরব্বির ছায়া পরে পদ রাখা নাই।
এ বড় বিষম কথা দারুন বালাই ॥
মুরব্বির ঘোড়া জোড়া তৃণ আদি যত।
ইস্তিমাল নাহি কর মণি হ’লে শত ॥
নিজ জুঠা মুরব্বিরে খেলাও না আর।
খাও যদি তার জুঠা ভালাই তোমার ॥
গুরুজনের হাতে হাত দিও না কখন।
পার যদি পদধুলি করিও সেবন ॥
এক আনা আয় হ’লে ব্যয় দুই আনা।
দুঃখী হইবার এই প্রবল নিশানা ॥
গুরুজন দিকে কভু থুক না ফেলিও।
না খেলায়ে তারে আর নিজে না খাইও ॥
প্রথমে ছালাম কর যদি তুমি পার।
অহংকারী কথা নিট কভু নাহি কর ॥
গিবত, চুগলী, মন্দ সদা রাষ্টহাস।
পর মন্দ গোপনীয় না কর প্রকাশ ॥
খাড়া হ’য়ে পায়জামা নাপাকিতে পরা।
কোরান কালাম যাহা নাহি যায় ধরা ॥
যাহাকে মানিবে গুরু মন্দ নাহি জান।
হইলে শতেক মন্দ নিজে মন্দ গণ ॥
পীরের উজান কিম্বা সমান সমান।
নাহি চল আজ্ঞা হ’লে রাখিও সম্মান ॥
মধু বাক্য ধীর তর কহিবে সদায়।
প্রণয়ে রাখিয়া কথা কহিবে সবায় ॥
খাইবে খোরাক কম রেজেক বাড়িবে।
খাওয়া কম রোগদম হায়াত পাইবে ॥
মুরব্বি বচন
গদ্যÑ দিসা ভুলায় পাইলে-চাদর কি কাপড় উল্টাইয়া পরন। পাও পিছলনে- যার সঙ্গে অত্যন্ত দুস্তি তার নাম স্মরণ করণ; “মোরাক্কা শরিফে” দেখ। নতুন বৌর পদ ধোয়া পানি নওশার ঘরে ছিটান; সরাঃতল ইসলামে আছে। ভুত পেরেতে ধরিলে আজান, কাপড় টুপী উল্টান, নতুন কুটম্বকে মিঠা বস্তু খাওয়ান। মেস্কাতে দেখÑ ঘরসুতের দড়ি, বেত, কাজে লাগান নিষেধ। ঢেকির পূর্ব্বরোখ মানা। চুলার উত্তর মুখ মানা। সূর্য্যমুখী বাড়ী মানা। বাড়ীর গলন দক্ষিণ রোখ মানা। গায় ঝুরিয়া পড়ন দোষ। কাপড়ের আঁচল উড়াইয়া চলন নিষেধ। দপ দপ চলা মানা। নিশ্বাস বড় দোষ। শনি মঙ্গলবারে প্রাত, সন্ধ্যা, দ্বিপ্রহর দোষণীয়। কোন দোয়ার সময় চিড়াফাড়া কাপড় এবং খালি মাথা ও জুতাহীন ভাল। পীর বোজর্গের গোরস্থানে খালি পদ চলা ভাল। গরুর ঘরে ঘোড়া বান্ধা নিষেধ। মাটিতে আঁক দেওয়া মানা। খামাখা হাত পা হিলান মানা। ছায়ার উপর কুলি ফালান নিষেধ। ভূমিকে লাথি দেওয়া দোষ। কাহারো উপর দিয়া দেওয়া নেওয়া দোষ। খামাখা লাঠিতে টোকাইয়া বাজান দোষ। এক কাপড় দুইজনে পরণ দোষ। সকালে বাড়ী ঝাড়ু না দেওয়া দোষ। থালাবাসন না মাজন দোষ। হস্তিনী নারী দোষ। বেড়ায় উল্টা বান দেওয়া দোষ। কোন জীব সঙ্গমের সময় মারণ দোষ। নিজ বাড়ীর পাখী শিকার করা দোষ। ভুতুম পেঁচা বাড়ীতে জায়গা দেওয়া বা পোষ করা দোষ। সকালে বানর বা কুলোকের নাম লওয়া দোষ। লাল মেঘ দেখিয়া কিছু না পড়ন ভাল না। ইহার দলিল মেস্কাত শরীফে দেখ। লম্ফ দিয়া খাল নালা পার হওয়া ভাল না। পিয়াজ রসুনের ছিলকা চুলাতে জ্বালান ভাল না। পানিতে নামিয়া কিম্বা পানিতে প্রস্রাব করা ভাল না। কাকের বদ আওয়াজ ভাল না। তারুয়া পাখীর কেচকেচিয়া শব্দ দোষ। পায়ের বন্ধন দাঁতে খোলন নিষেধ।
ওলা উঠা ও গুটির রোগীর সহিত মিশ্রিত হইয়া থাকা ভাল নয়। পা ধোয়া বাচা পানি দিয়া মুখ ধোয়া বা কুলি করা ভাল নয়। বন্দ ছাড়া ঘর দোষ। স্ত্রী লোকের গদ গদিয়া আওয়াজ ভাল নয়। নবী অলীর নামে নাম রাখিয়া ঐ নামকে অপরিষ্কার মতে বোলান দোষ। যথা নামকে অবহেলা করা দোষ। এমন কি শয়তানের নামকেও ঠিক করিয়া বোলান ভাল যাহাতে “মোখারেজ” ঠিক হয়। একজনের জুতা অপরজনে পরন ভাল না। উল্টা ঘোড়ায় চড়া দোষ। কলম দোয়াতের মধ্যে খাড়া রাখা নিষেধ। নাপিতের আয়না দেখা ও নাপিতের ঘরের দ্বারে বসিয়া খেউরি হওয়া গরিবির লক্ষণ। মঙ্গলবার দিবসে নখ কাটিলে শারীরিক সুস্থ্যতা নষ্ট হয় এবং তৎপরিবর্তে নানা প্রকার রোগ শরীরে প্রবেশ করে। ঐ দিবসে গোছল করিলে হায়াত কমিয়া যায়। “অকুলে অশরা” কেতাব ও “মোখজানোর রেজেক” প্রভৃতি কেতাবে দেখুন। হাট বাজারে যথা নাপিতেরা খেউরি করিয়া চুল গয়রহ ঘাস কুটার মত ফালাইয়া রাখে তথা খেউরি হওয়া ভাল না। ঘরের মধ্যে এক প্রকার সাপ থাকে, ঘনিয়া সাপ বলে তাহাকে এবং সাপনি-সাপ মারণ নিষেধ। “মেস্কাতে” লিখা
আছে। ঐ ঘরের সাপকে তিনবার যা, যা, বলিয়া কহিবে তাহাতে যদি না যায় তবে তাকে মারিবে। মাকড় মারণও নিষেধ আসিয়াছে, কারণ যখন নবী ছাহেব গুহার মধ্যে পলায়ণ করিয়াছিলেন তখন মাকড়ে আস দিয়াছিল এবং তাহার উপর কবুতর বাসা করিয়া ডিম দেওয়াতে কাফেরগণ ফিরিয়া যায়। “মোজারেবাতে দায়রবিতে” দেখুনÑ রজনীতে গরু মহিষের সিঙ্গে দড়ি লাগাইয়া বান্ধন দোষ এবং সকালে গোবর না ফালান দোষ। পায়খানাতে ছেফ কফ ফালান দোষ। দোষী গরু ঘোড়া পালন দোষ। নেড়ে গাভী মাত্রই ভাল না। বদ আওয়াজকারি কুকুর বাটীতে রাখা ভাল না। মুরগি মোরগের মত বাক দিলে তাহাকে পালন ভাল না। মোরগ অসময় বাক দেওয়া দোষ। পুস্করিণীর জলে কিম্বা তদরূপ কোন বাঁধা জলে কফ থুক ফালানো দোষ। বহুদিনের পালের গাভী জবেহ করা ভাল নয়। রজনীতে বিড়ালকে ঘর সোহাগি বলা ভাল।
ফকির এক প্রকার নহে
(ত্রিপদি)
শতরূপে শত অলী, জনে জনে এক বলি,
মানসেতে একই সকল।
এক ভাব নিরাঞ্জন, প্রভুর প্রত্যাশিগণ,
তাতে মন সদাই চঞ্চল ॥
তাতেই বৈরাগী বেশে, ফেরে কেহ দেশে দেশে,
করে কেহ কাননেতে বাস।
বিরহ হইয়া পষ্ট, নফছেরে দেয় কষ্ট,
লোক ঠাঁই হয় অবিশ্বাস ॥
দাড়ি চুল বড় রাখে, তাতে দুঃখ পায় মুখে,
ছাই ভস্ম মাখে কেহ গায়।
কুড়ালি কান্ধের পরে, জট কেহ রাখে শীরে,
কেহ অঙ্গে শিকল লাগায় ॥
জানানা পোষাক গায়, কান্দে কেহ হায় হায়,
পায়ে রশি ঝোলে ডাল পর।
কেহ রহে নিরবেতে, বাক্য নাহি কার সাথে,
কেহ থাকে বানায়ে কবর ॥
মালামতি দেখ যারে, রোজানামাজ নাহি পড়ে,
আওয়ারেফে দেখ বন্ধুগণ।
তাজকেরাতোল ফোকারেতে, লিখিয়াছে পাতে পাতে,
তাতে সন্ধে কর নিবারণ ॥
تر خمة در عوارف
(তরজমা দরআওয়ারেফ)
واين طائفه ازجحت عدم ريا باصلا متيه مشابحت دار ندوفرق ميان سان انست كه ملامتيه بجميع فصالل ونوافل تمسك جويند وليكن انرا ازنظر حالق پنها دارند اماقلند ريه ازحد فرائض در نگذ ارند ويا اظهار واخفاء اعمل ازنظر خلق مقيد نباشند –
(ওয়াই তোইফা আজজিহাত আদম রিয়া বাসালা মুতাইয়া মুসাবাহা দারান ওয়া ফরক মিয়ানে শানে আনাস্ত কে মালামাতেয়া বাজামায়্যি ফাসাল্লিল ওয়ানাফেল তামাস্সাকা জোয়েইন ওয়ালা কিন আলা আজ নজরে হালাক পানহাদারান্দ আম্মা কলন্দরিয়া আজহদ্দে ফরায়েজ দর নিগাদারান ওয়াইয়া আজহার ওয়া আখফা আমাল আজ নজর খোলক মুকাইয়েদ না বাসান্দ)।
কলন্দরি গোর যারা, রেয়া হ’তে পাক তারা,
মেছালেতে মালামতি যেন।
ফরজ নফল যত, মালামতি আছে রত,
আমল আদি করেন গোপন।
কিন্তু যারা কলন্দরী, ফরজ লইছে পড়ি,
ছুন্নতেতে রহে তারা দূর।
নফল ছুন্নত যত, করে নাহি অবিরত,
ঢোড়ে খালি হুজুরের নূর।
শত শত শত ভাবে, আছেন ফকির ভবে,
রঙ্গে রঙ্গে যেমন খোরাক।
একই পেটেতে যায়, নয়া নয়া স্বাদ পায়,
বলিষ্ঠতা একই বেবাক।
মাদারি ফকির যারা, ঝান্ঢা নিয়া নাচে তারা,
মোতাসাবা চাহে খালি হাল।
কেহত পাগল ন্যায়, চলে ফেরে নাচে গায়,
নানা মত মজনুন মিছাল।
حديث
(হাদিস)
واذكر الله حتى يقول انه المجنون
(ওয়াজকুরুল্লাহ হাত্তা ইয়াকুল্ আন্নাহুল মাজুনন)
খোদার জেকেরে তয়, লোকে যে পাগল কয়,
কর তুমি এমন প্রকার।
মজ্জুব মহবুব বলে, দেখহ নবীর কৌলে,
হাদিছেতে ফরমায় আবার।
কত চোর এই বেশে, রুজি করে দেশে দেশে,
তাতে জানে ফকির খারাব।
তাতে কত মূর্খ চয়, সবাকারে মন্দ কয়,
কভু যেই নাহি জানে ভাব।
ফকিরে ফকির চিনে, মোল্লা লোকে কিবা জানে,
জানে যাহা কেবল গিবত।
না জানিয়া লেখে পূথি, তাতে কি ফকীরের ক্ষতি,
এই মানেতে রহে ছালামত।
شهيد خنجر الفت هواهون –
سالمت هى سالمت هى سالمت
جماعت مين پرير ويونكى تجهكو –
امامت هى امامت هى امامت
مگر ناچى كوقربان تجه قدم پر –
ندامت هى ندامت هى ندانت
سارج اب عشقكى درپنكا صيقل
ملامت هى ملامت هى ملامت
مين وه نهين هون كه تجهه بت سى دلمير ايهر جا
پهرون مين تجهسى توميرا خداپهرجا
الهى وه نه پهرى جس كى غم مين مرتاهو
بلاسى حلق پر كوخنجر جفايهرجا
يهر كى زمانه يهر كى اسمان هواپهر جا
بتونسى نه پهر ون همسى كر خدا پهرجا
وه صنم حال ميرا كيا جانى
هو مين كسفكر مين خدا جانى
هم توروتى هين هنستى هين
اغيار قدربلبل كى زاغ كياجانى
نهٹه چاٹا كر وه سارى عمر
لب شرين كاجومزا جانى
سنكى احوال ميرا كهنيلگا
ايسى جهگرا ميرا بلا جانى
ايسى سفاكسى ذرةيارو
خون عاشقان جوخنا جانى
كب حق پرست زهد جنت پرست هى
حورن پرمووها هى ياشهوت پرست هى
دل صاف هوتو چاهى معنى پرست هى
أينه خان صاف هى صورت پرستهى
جززلف توسوچهتا نهين ايمر ده دل تجهى
صفا كيش نحى كه ظلمت پرست هى
(শাহিদ খঞ্জার উলফাত হুয়া হোঁ
ছালামাত্হি ছালামাত্হি ছালামত্।
জামায়তমে পরিরো কি তুঝ্কো
ইমামত্হি ইমামত্হি ইমামত্।
মাগার নাচিকো কোরবান তুঝ কদম পর
নেদামাত্হি নেদামাত্হি নেদামত্।
সেরাজ আব এস্কেকি দার পাঁকা ছিকাল
মালামাত্হি মালামাত্হি মালামাত্।
ম্যায় ওহ্ নেহিহুঁ কি তুঝ বাত্ছি দিল মেরা ফির যায়ে
ফেরো ম্যায় তুঝ্ছে তু মেরা খোদা ফেরযায়ে
এলাহিও না ফেরে জিসকি গাম্মে মারতাহু
বালাছে হালাক পর গো খাঞ্জার জাফা ফির যায়ে
ফিরে জামানা ফিরে আসমা হাওয়া ফির যায়ে
বাতু’ছে হাম না ফিরু হামছে র্গা খোদা ফির যায়ে।
ওছানাম হাল মেরা কেয়া জানে
হু ম্যায় কিছ ফিকেরমে খোদা জানে।
হামতো রোতেহি, হাছতেহি
আগিয়ার কাদার বুল বুল কি জাগ কেয়া জানে
হো নাটা চাটা করে ও ছারি উমর
লাব শিরিনকা জো মজা জানে
শুনকে আহওয়াল মেরা ক্যাহ্নে লাগা
এয়্যেসে ঝাগড়া মেরা বালা জানে
এয়্যেসে ছাফ্ফাকিছে ডরো ইয়ারো
খুন আশেকান জো খানা জানে
কাব হাক্ পারাস্ত জাহিদ জান্নাত পারাস্ত হ্যাঁয়
হুরোঁ পার মারোহা হ্যাঁয় ইয়া শাহুত পুরাস্ত হ্যায়।
দিল ছয়াবহো তু চাহে ম্যায়নি পুরাস্ত হ্যাঁয়
এহ্খানা ছয়াবহ্যাঁয় ছোরত পুরাস্ত হ্যাঁয়
জোঁজ জালফা তো ছুস্তা নেহী এ মুর্দাদিল তুজ হ্যাঁয়
ছবফা ক্যায়েস নেহী কে জুল্মাত্ পুরাস্ত হ্যায়।)
আবেদ গোলাম আশেক আজাদ
গোলামের গোলামিতে নাহিক সন্তোষ।
ঠেকিয়া গোলামী করে হবে ব’লে দোষ ॥
নহে যদি পারিতেন করিতে বাদশাই।
মারিত বাদশার ঘাড় ছাড়াছাড়ি নাই ॥
তেমনি আবেদগণ করে এবাদত।
পাপ ডরে আদা করে ফরজ ছুন্নত ॥
ক্ষমতা রহিত যদি কখন তাহার।
লইত খোদার কষ্ঠ নফ্ছ দুরাচার ॥
গুনা যদি নাহি হ’ত কিসের এবাদত।
হুকুমের তাবেদার আবেদ তাবত ॥
আশেক মাশুকে ভেদ আছে পুশিদায়।
গোলামে কছুর শুধু সেরাজ কোথায় ॥
আশেক মাশুক করে আরাম যথায়।
গোলাম নওকর রহে চৌকিদার তায় ॥
আশেক মাশুক রহে যেই স্থান পর।
গোলাম কোথায় করে তাহাতে নজর ॥
গোলামে নজর করা তাহাতে হারাম।
প্রকাশ করিলে ভেদ ভরিবে গুদাম ॥
গোলামেতে সরমগাঃ রাজাকে দেখায়।
তখন লইবে কল্লা এই মহা দায় ॥
মাশুকে দেখায় যদি বুঝিবে আলাপ।
রঙ্গ পরে ঢঙ্গ করে লাফ পরে লাফ ॥
আশেকেতে চাহে সদা মাশুকের তরে।
শতেক হাশরেতে তার নেগা নাহি করে ॥
নজর করেন সদা মাশুক উপর।
হায় কি বিষম ভাব ভরে না নজর ॥
এহেন প্রেমের ভাবে প্রভু করতার।
গাথিল প্রেমিক গলে প্রনয়েরি হার ॥
حديث قدسى
(হাদিসে কুদসী)
الانسان سرى واناسره
(আল ইনসানু র্সিরি ওয়ানা র্সিরুহু)
মানুষ আমার মর্ম্ম, মর্ম্ম আমি তার।
তাতেই খলিফা বলে আদম প্রচার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’আলা)
انى جاعل فى الارض خليفه
(ইন্নি জায়িলুন ফিল্ আরদি খলিফা)
تحقيق گرد اننى والاهون زمين مين ايك خليفه
(তাকিক র্গদে ইন্নানি ওয়াইল্লাহু জমিনমে এক খলিফা)
সিংহাসন যোগ্য হ’লে খলিফা নিশ্চয়।
বসিবে না সে আসনে সমশ্রেণী তয় ॥
তাতে সমরূপ চাই খলিফা কারণ।
মানুষে অহুঁসে কোথা হইবে মিলন ॥
حديث
(হাদিস)
خلق الله ادم على صورته
(খালাক্বাল্লাহু আদামা আলা ছুরাতিহি)
হাকিকতে একরূপ আদম খোদার ॥
ভাবুকের প্রণয়েতে সেইরূপ সার ॥
সেই ভাব মিষ্ট খাদ্য করিছে চাবণ।
চাবাইছে তবু সেই চাহিছে মিলন ॥
সে ভাবে মহেব যেই খোদার প্রেমিক।
ভাবের করঙ্গ হাতে মাগে খোদা ভিক ॥
দ্বারে দ্বারে ফিরে সেই শহর নগরে।
মুঠি মুঠি ভিক লয় করঙ্গা ভিতরে ॥
যেই যাহা দেয় লয় মুসুর মটর।
এক মুঠ চাউল চিনা মিশাল কঙ্কর ॥
ধূলা বালি চিটা মিস জোওয়ার বাজাল।
তিল তিশী মুগ মাস পারা ছোলা ডাল ॥
প্রেমের বিরহ ভিক তুম্বার ভিতর।
লইয়া ভ্রমণ করে শহর নগর ॥
অলোভা হইয়া লোভী হ’ল মহাদায়।
প্রদানিল ভিক যিনি তারে ভিক চায় ॥
খোদা লোকের সনে কেমন
করিয়া হইতে পারে
কেহ বলে খোদা যদি লোক সনে রয়।
মরণ জীবন নাকি লোক সনে হয় ॥
তাহার উত্তর এই শুন বন্ধুগণ।
বুঝিতে পারিবে র’লে বাতেন রৌশন ॥
তৌহীদ মুল্লকে যার গরম বাজার।
বুঝিতে পারিবে নহে সব অন্ধকার ॥
কিন্তু তার এক বিন্দু কহিয়া জানাই।
কোরানেতে কহিয়াছে দেখ পাক সাঁই ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তা’য়ালা)
وهو معكم اينما كنتم
(ওয়াহুয়া মাকুম আইনামা কুন্তুম্)
সকলের সনে খোদা আছেন একেলা।
কেমনে আছেন তিনি শুন এই বেলা ॥
দেখহ আগুন যত পৃথিবী মাঝার।
একই আগুন বটে সয়াল সংসার ॥
পানি যত এক পানি সকল জাহানে।
শীত কি বাতাস আদি ভিন্ন কোন স্থানে ॥
প্রকাশ্য ভাবেতে আছে যতেক আগুন।
দীপ কি মশাল আদি চুলাতে চৌগুণ ॥
গুণ ভাগ আগুনের নাহি পরিমাণ।
অল্পেতে অনেক হয় আকাশ সমান ॥
দেখা ভাবে আছে আর অদেখা জাগায়।
গোপনে সকল ঠাঁই আছে পুসিদায় ॥
কাষ্ঠে কাষ্ঠে কোন জন করিলে ঘর্ষণ।
গরম হইয়া অগ্নি নিকলে তখন ॥
জল পরে জোরে যদি আঘাত লাগিবে।
আচম্বিতে সেই ঠাঁই আগুন উঠিবে ॥
জল তলে অগ্নিময় একি চমৎকার।
মীন পেটে জীর্ণ করে আগুনে আহার ॥
দেখ যারে সৃজিয়াছে প্রভু নিরাঞ্জনে।
প্রকাশ্যে গোপনে আছে সকল জাহানে ॥
যে জন সৃজন করে আগুনের তরে।
লোক হৃদে সেই কিহে থাকিতে না পারে ॥
আব, আতস, খাক বাদে লোকের শরীর।
কেহ নাহি মরে শুন রৌসন জমির ॥
যখন মরেন লোক নিকলে পরাণ।
আব, আতস, খাক, বাদ যায় নিজ স্থান ॥
শরীরের মাটি মিশে যায় মাটি সাথে।
আব, আতস, চ’লে যায় আপনা জাগাতে ॥
কেহ না মরিল তারা এক তত পর।
পরাণ মরে না কভু সদাই অমর ॥
মরে না জীবের দেহ যবে কদাচন।
খোদায় মরিয়া যাবে একথা কেমন ॥
না জানিয়া লেখে পুথি বরসন গালি।
অন্ধজন ধুন্দে কহে মুখের পাঁচালি ॥
শবে বরাত ও কদরের নামাজের নিয়ম
গুজরিলে চৌদ্দ দিন বৈকালে নিশ্চয়।
শাবানের চান্দ মাঝে শবে বরাত হয় ॥
বৎসরের ফলাফল যত হবে যার।
পাইবেন সকলেতে সে রাত মাঝার ॥
যে জন রাখিবে হুশ পুরুষ হইয়া।
পাইবে পরম ধন রহিলে জাগিয়া ॥
হাজের রহিবে যদি থাকিয়া জাগনে।
প্রভুর নিকটে রুজু রবে না স্বপনে ॥
নিদ্রাই বিষম বালা ভুল সমুদয়।
ভুলে রয়ে ঘড়ি কালে চির দুঃখী হয় ॥
জানা ভুলে ভুল জন্ম হইবে যাহার।
নিদ্রাই বিষম ভুল ভালাই কি তার ॥
যে নর জাগনে রবে ভুল যাবে দূর।
দিশা ভুল পালাইবে পাবে নিজ পুর ॥
আপন আসন পরে রহিবে জাগিয়া।
স্মরণের হালে দিবে রাত কাটাইয়া ॥
এক রাত ওয়াদার করহ জাগন।
এক রাতে প্রভু নাকি দিবে শত ধন ॥
এক রাত জেগে রহ নিদ্রা নাহি যাও।
জেকের ফেকেরে রাত বসিয়া কাটাও ॥
জাকের খোদার নাম করিবে স্মরণ।
আবেদান এবাদতে রহিবে আপন ॥
আশেকান এস্করসে রজনী যাপন।
করিবে ভাবুক রসে প্রভুর স্মরণ ॥
নামাজ পড়িবে যেই পড়িবে নফল।
নফল নিয়ত চাই নহে গন্ডগোল ॥
দোরেকাতী হয় কিবা চার রেকাতি হয়।
যে ছুরা রহিবে মনে পড়িবে নিশ্চয় ॥
নহে পড় কুলহুআল্লাহ্্ হরেক রেকাতে।
তিন পাঁচ সাত নয় বেজোড় যাহাতে ॥
কিম্বা কোন দোয়া দরুদ তছবী তেলাওত।
যে যাহা জানুক পড়ে বসিয়া তাবত ॥
এ প্রকার কদরেতে এবাদত কর।
গরজ রাখিবে মনে কাহিলীকে ছাড় ॥
রমজানে একুশা রাতে প্রথম কদরে।
তেইশা পঁচিশা আর সাতাশেতে পড়ে ॥
উনত্রিশ তারিখেতে কদর আছয়।
সাতাইশ তারিখ পরে এজমা সবে কয় ॥
সেই দিন হ’তে পারে আসল কদর।
অতএব সেই রাতে রাখিবে খবর ॥
নফল বলিয়া খালি বান্ধিবে নিয়ত।
কদর বরাত আদি নফল তাবত ॥
চাঁদ দেখিবার নিয়ম
কিঞ্চিৎ উপরে চাঁদ দেখিলে সন্ধ্যায়।
দো-এক ঘড়ি উঁচা পরে যদি দেখা যায় ॥
তবেত জানিবে চাঁদ ঐ রাতের হবে।
যে সন্ধ্যাতে চাঁদ দেখ সেরাতে ধরিবে ॥
আর যদি দেখ চাঁদ উপরে নিশ্চয়।
চার, ছয় দন্ড কিবা পহর আদি হয় ॥
তবে সেই চাঁদ জান উদিত সে দিনে।
লোকে কিন্তু দেখে নাই ধুপের কারণে ॥
চাঁদের তাছির আর চাঁদের কারণ।
আকাশেতে কোন হেতু রবে না বারণ ॥
চাঁদের দৌড় আর হিসাব লগণ।
যার যে বুরুজ মাঝে হইবে পূরণ ॥
ইহাতে সন্ধান মর্ম্ম আছে পুসিদায়।
বক্তে যার আছে তার আপনি মিলায় ॥
ইহার প্রত্যাশী যেই উচিত তাহারে।
আগে পরে দুই দিন শবে বরাত করে ॥
কদর এমনি ধারা হিসাব সকল।
তালেব বুঝিয়া ভেদ করিবে আমল ॥
এস্তেখারা
ياخنير
(ইয়া খাবির)
“ইয়া খাবির” শতবার পড় সাবধানে।
বেশ কম নাহি হয় রাখ খুব মনে ॥
কিন্তু আস্তাগফার আগে পড় দশবার।
দশ বার দরূদ শরীফ পড়িবে আবার ॥
খোদার নিকটে অতি কাতর হইয়া।
দোয়া মাগ মনষ্কাম নিয়ত করিয়া ॥
যে কাম করিতে চাই শুন পরওয়ারে।
ভাল বুরা নেকবদ জানাও আমারে ॥
এক রাতে দুই রাতে তিন রাতে হয়।
সাত রাতে খোদা চাহে দেখিবে নিশ্চয় ॥
শোয়া মাত্র কোন জন দেখে আচম্বিতে।
ইস্তিমাল করে যেই দেখিবে ত্বরিতে ॥
প্রভুর খেলা
খেলে মগ্ন মন সদা চিন্তা কিছু নাই।
কে খেলে এমন খেলা বলিহারি যাই ॥
এই সে মাবুদ খেলা খেলনা লইয়া।
খেলিছে রঙ্গের খেলা ভাঙ্গিয়া চুরিয়া ॥
খেলনা গড়িল কত কতই চুরিল।
তবু কি রঙ্গের খেলে সাধ না পুরিল ॥
তৈয়ার খেলনা যবে চোরহ আবার।
খেলনা বিরহে কত করে হাহাকার ॥
ভাঙ্গিয়া পাঁজর অস্থি হয়ে চুরচুর।
তখন বিনয় করে চরণে প্রভুর ॥
আঁখি নিরখিয়া করে কতেক রোদনা।
দুঃখেতে কাতর হ’য়ে মাটির খেলনা ॥
মাতাপিতা শু’নে তার বিনয় বচন।
অসীম রোদন করে ভাই বন্ধুগণ ॥
রক্ষা কর রক্ষা কর সর্ব্বজনে কয়।
তবু না তোমার মনে দয়া প্রকাশয় ॥
কতই বেতাবে তারা ক’রেছে রোদন।
তবু না হইল দয়া না কর শ্রবণ ॥
শত শত মহানর এই ভূমিতলে।
পতিত হইল তারা কাঁদিয়া সকলে ॥
কাহার বিনয় যদি না করিলে শ্রবণ।
অখিল ভুবন কেনে কহে জগজ্জন ॥
যখন আমার পীর চলে নিজ দেশ।
কত না কাঁদিনু তোরে দিয়া উপদেশ ॥
কত না দুঃখেতে আমি কাঁদি জারেজার।
তবু কি করুণা তুই শুনিলি আমার ॥
কাড়িয়া লইয়া গেলি দরিদ্রের ধন।
কাড়িতে কি এত খুশি হয় তব মন ॥
শিশুকালে, ছিল যবে মাতা দয়াবান।
তখন কাড়িয়া নিলি দুঃখীর পরাণ ॥
তখন কি তোর ঠাঁই নাহিক কান্দিনু।
কাননে, পর্ব্বতে মাঠে নাহিক ভ্রমিনু ॥
পাগল হইয়া আমি ফিরি বনে বনে।
হায় প্রভু সেই দুঃখ নাহি তব মনে ॥
পিতাজন আত্মগণে করিলি বেগানা।
আত্মজন বন্ধুগণ কেহই কার না ॥
এক দুঃখে বাঁচি নহে শত দুঃখ তায়।
সেই দুঃখে পীর দুঃখ কোথা সহা যায় ॥
আছিল ভুবন লক্ষ্য এক গুরুধন।
তাহাকে হরিতে হায় র’লে না বারণ ॥
কাহার বাসরে বন্ধু করিব তালাস।
কাহার মন্দিরে যে’য়ে পাব মন আশ ॥
পাহাড় কানন আদি সাগর লহর।
ঠাঁই ঠাঁই ঢুড়ি তাহে শহর নগর ॥
জঙ্গলে জঙ্গলে ঢুড়ি তাবত কানন।
পাতায় পাতায় ঢুড়ি ছিল যত বন ॥
আকাশ পাতাল আদি সকল ঢুড়িয়া।
রজনী যাপন করি রোদন করিয়া ॥
শুনে সেই হাহাকার ফে’টে যায় বুক।
তবু প্রভু তোর মনে নাহি লাগে দুঃখ ॥
যাহার কাঁদনে করে আকাশ রোদন।
তবু কি বিনয় তার কর না শ্রবণ ॥
পৃথিবীতে জীব-জান যতেক সৃজিলী।
জম দম্ভে চূর্ণ প্রভু কারে না করিলি ॥
নিজে যদি চূর্ণ তুই করিতি আবার।
সাফল্য জনম তবে হইত আমার ॥
কহ দেখি আগেকার আদম সকলে।
কেমনে করিলি নাশ এই মহীতলে ॥
সাত ভূমে সাত জন আদম আছিল।
একে একে তারা এবে কোথায় রহিল ॥
আর ছিল এই ভূমে যতেক আদম।
কাহার আদেশে তারা খাইল গন্দম ॥
সাত ভুমে সাত আদম
ছিল নাকি এই সব আদম তোমার।
যদি ছিল তারা এবে নাহি কেন আর ॥
মজমুয়া ফতোওয়াতে ফেকার কেতাব।
তাহাতেও সাত আদম লেখা গেছে সব ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তায়ালা)
ومن الارض مثلهن – وجاء فى الحديث ان الله خلق سبع سماوات والاارضين فى كل ارض ادم كاد مكم ونوح كنو حكم وابراهيم كابرا هيمكم وموسى كمسى اكم وعيسى كعيسى
(ওয়ামান আরাদা মুসলিহুন ওয়াজাফিল হাদিসে ইন্নাল্লাহা খালাকা সাবায়া সামাওয়াতি ওয়াল আরদিনা ফি কুল্লি আরদি আদামা ক্বাদ মাকুম ওয়া নুহু কানুহুকুম ওয়া ইব্রাহিমু কা ইব্রাহিমুকুম ওয়া মুছ কা মুছাকুম ওয়া ইছা কা ইছাকুম ওয়ান্নাবিও কান্নিবিউকুম)
সাত ভূম সৃজিয়াছে প্রভু করতার।
প্রত্যেক ভূমেতে আছে আদম তোমার ॥
এই যে আদম ন্যায় প্রত্যেক ভূমেতে।
মুছা, ইছা, ইব্রাহিম, নুহু নবী তাতে ॥
তারিখ তেবরী হতে মতলাওল উলুমে।
লিখিয়াছেন শুন তাহা কেন আছ ঘুমে ॥
একদিন মূসা নবী নিকট খোদার।
জিজ্ঞাসিল জন্মকাল আলম প্রচার ॥
হুকুম হইল কোন ময়দানে যাইতে।
কূপ এক আছে তাতে কঙ্কর ঢালিতে ॥
তখন হজরত মুছা সে ময়দানে যায়।
ইটা এক ফেকে মারে ভিতর কূয়ায় ॥
আওয়াজ হইল এক কূপের ভিতর।
কঙ্কর ফেকিলে কেবা কহ কোন নর ॥
কহিলেন মুছা, আমি মুছা পয়গাম্বর।
আদম আওলাদ হ’তে বটি এক নর ॥
বাপগণ দাদা আদি আদম যাবত।
একে একে প্রকাশিয়া কহিল তাবত ॥
আবার আওয়াজ হয় কূপের ভিতর।
কালে কালে এই কূপে আসে এক নর ॥
তোমা হেন নাম ধাম তাহায় কহিল।
এক এক ঢিলা এই কূপেতে মারিল ॥
তাহাতে অর্দ্ধেক কূপ হইল পূরণ।
সাচা মিছা ভালা বুরা জানে নিরাঞ্জন ॥
সাচাও তাহার খেলা মিছাও তাহার।
কভু সাচা কভু মিছা খেলা করতার ॥
قوله تعالى
(কাওলাহু তায়ালা)
قل كل من عند الله
(কুল্ কুল্লু মিন্ ইন্দাল্লাহি)
যেমন যায়েদ নামে আছে এক নর।
কাহার এগানা সেই কাহার অপর ॥
কার সেই বাপ হয় কার হয় বেটা।
কার হয় খালু মামু কার হয় জেঠা ॥
কেহ যাকে ঘৃণা করে কেহ তাকে খায়।
কেহ তারে মান্য করে কেহ হাসে তায় ॥
সত্য কেহ জানে তারে কার কাছে ঝুট।
কার আগে সাদা সেই কার আগে ফুট ॥
কাহার বান্ধব সেই কাহার দুষমণ।
কখন সে ঠান্ডা আর কখন আগুন ॥
কাহাকে সে মারে বটে কাহাকে বাঁচায়।
কেহ দেখে কাছে আসে কেহ দেখে ধায় ॥
নাপাক কখন যেই, কখন সে পাক।
গম্ চিন্তা করে কভু খুশীতে অবাক ॥
একই সে নানা জন নানা ব্যবহার।
এক বিনা নাহি কেহ জগতের সার ॥
কহিছে ভাবের কথা বুঝিবে ভাবুক।
ভাব ভিন্ন দুঃখী যেন লাগিবে চাবুক ॥
কার কাছে ভাব এই, কার কাছে নয়।
কেহ করে বিড়ম্বনা কেহ করে হায় ॥
مولانا روم (رح)
মাওলানা রুম (রঃ)
چون توچشم دل ندارى اى عنود –
كه نمى دانى توهى رم رازعود
چون گهگنج هست در عالم مونج –
هيچ وبران خالى مدانى زگنج
(চুঁ তু চশম্যা দিল নাদারি আই উনুঁদ
কে নমিদানি তোহিরোম রাজেউদ্
চোঁকে গঞ্জেহস্ত দর আলম ম্যারাঞ্জ
হিজ অপোরানে খালি মিদানি জ্যা গঞ্জ)
যে সকল গোমরা জন মন চক্ষু নাই।
কাষ্ঠ হ’তে চন্দনেরে চিনিবে কি ছাই ॥
খালি কভু নাহি জান বিরান জঙ্গল।
ছাড়া বনে ভরা আছে গঞ্জ পূর্ণস্থল ॥
উপরেতে কালা যেই ভিতরে সুন্দর।
কালির হরফে এবে করহ নজর ॥
উপরে সুন্দর, কালা ভিতরেতে তার।
আঙ্গার দেখিয়া চিন আগুনের সার ॥
কালির হরফ ন্যায় ঢোড় অলী পীর।
পাইবে তাহাতে ধন করিলে ফিকির ॥
দেখিয়া আলোক জ্যোতি পতঙ্গ পোকায়।
আগুনে পড়িয়া শেষে নিজে মারা যায় ॥
সুন্দর দেখিবে যারে কহিছে মধুর।
বচনেতে মধু বটে মধু বহুদূর ॥
প্রত্যেক সময়ের পৃথক পৃথক গুণ
গদ্যÑ প্রত্যেক যুগ, বৎসর, মাস, হাপ্তা, দিন ঘড়ি, মিনিট ছায়াত করণের এক এক গুণ ও ক্ষেন নির্দ্ধারিত আছে, তাহার দলিল কোরান শরীফে আসিয়াছে দেখুনÑ
قوله تعالى
(কাওলাহু তায়ালা)
كل يوم هوفى شان
(কুল্লু ইয়াওমা হুয়া ফি শান)
প্রত্যেক দিন অর্থাৎ প্রত্যেক জমানার এক শান ও ক্ষেন আছে। হাদিছ শরীফে আসিয়াছে যথাÑ
حديث
(হাদিস)
خير القرون قرنى ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم
(খায়রুল কুরুনি কুরুনি ছুম্মাল্লাজিনা ইয়ালাওনাহুম ছুম্মাল্লাজিনা ইয়ালাওনাহুম)
দমে দমে এক হাল পৃথিবী অন্তর।
এক যায় এক হয় ঘোরে নিরন্তর ॥
সময়ের ফলাফলে ভাল মন্দ হয়।
অসময়ে ভাল ফল কভু হয় নয় ॥
قوله سعدى (رح)
কাওলু শাদি (রঃ)
بروز هما يون وسال سعدى بتا ريخ فرخ ميان دوعيد –
(বারুজ্ হুমাইউ ওছালে ছা’দি বা তারিখ্ ফরখ্ মিয়ান্ দুইদ্)
দিন ভাল নেক সাল মোবারক চাঁদ।
হপ্তা সাল মাস ভাল দু’ঈদ দরমিয়ান ॥
সাত দিনের এক দিন হয় জুম্মাবার।
বৎসরে কদর হয় বরাত আবার ॥
বৎসরেতে বার মাস বুরুজেতে রয়।
প্রত্যেকের তাছিরাদি ভিন্ন ভিন্ন হয় ॥
বারটি তাছির আছে বার বুরুজের।
ছায়াত নহুচ তাতে নেক বদ ঢের ॥
ভাল আর বড় ভাল নেক পরে নেক।
নেক বদ বড় ছোট এক পরে এক ॥
বুরুজেতে ছেতারার তাছির সকল।
নজ্জুমের মানি এই মঙ্গলামঙ্গল ॥
না বুঝিয়া কত লোক ঝগড়ে নিশ্চয়।
অতএব খোদাতালা কোরানেতে কয় ॥
قوله تعالى سورة كهف
(কাওলাহু তায়ালা-সূরা : কাহাফ)
ولقد صرفنا فى هذالقران للناس
من كل مثل وكان الانسان اكثر شئ جدلا
(অলাক্বাদ সোরাফ্না ফি হাজাল কো’রআনি লিন্নাছে মিনকুল্লে মিসলু ওয়াকানাল ইনছানা আকছারু সাইয়িন জাদালা)
“খোলাছা মানী”
যত ইতি এলেম আদি হাল আলামত।
কেয়াফা নজ্জুম কাস্ফ কোরানে তাবত ॥
বয়ান করিয়া দিছি লোকের কারণ।
না বুঝিয়া ঝগড়িছে বহু লোকগণ ॥
কিন্তু যে নজ্জুম হাল মন্ছুখ এখন।
এতএব চলাচল রহিল বারণ ॥
কিন্তু যত আলামত নজ্জুম কোথায়।
মারফত দপ্তর দেখ পাতায় পাতায় ॥
قول حضرت سعدى شيرازى
(কাওলু হযরত সাদী সিরাজী)
بركدر خرختان وسبز درنظر هوشيار
هرودق دفتريست ازمعرفت كرد گار
(বরকি র্দখরখতানে ওসব্জ দর নজর হুশিয়ার
র্হওয়ারকে দপ্তরিয়াজ্ আজ্মারেফাত্ র্কাদেগার)
সকল বস্তুর গুণ ও তাহার
কারণ জানা আবশ্যক
সকল বস্তুর গুণ পৃথক নিশ্চয়।
কারণ জানিবে তার দানা যেবা হয় ॥
বিশেষ বস্তুর যেই জানিল কারণ।
তাহারাই নবী অলী আর মুণি জন ॥
হাকিম বলিয়া তারা উপাধি পাইল।
আফ্লাতুন লোকমান পৃথিবীতে ছিল ॥
সাধারণ লোকে জানে সামান্য কারণ।
প্রত্যেক লোকের তাহা হয় প্রয়োজন ॥
দিবা রাত্র মেঘ বান অন্ধকারময়।
জোয়ার ভাটা আসে যায় সর্ব্ব লোকে কয় ॥
শীত গ্রীস্ম কারে কয় সকলেতে জানে।
হলাহলে প্রাণ বধে কেবা নাহি মানে ॥
মিঠা, তিতা, কটু, কষা, না চিনিলে ঝড় ॥
সমুদ্দরে মারা পড়ে এহেন বর্ব্বর ॥
অমাবশ্যা প্রতিপদ পূর্ণিমাশি যত।
তারা দেখে রাতা রাতি চিনে অবিরত ॥
চিনিয়াছে তারা যেই ফল পে’ল তারা।
আকাশেতে লক্ষ লক্ষ দেখা যায় তারা ॥
তেমনি বীজের গুণ কাল নিরূপণ।
কোন্ দিনে কোন্ বীজ করিবে রোপন ॥
তিল, তিশী, মুগ, মাস, মুসুর, অড়ল।
দিনে কালে না রোপিলে ধরিবে না ফল ॥
যদ্যপি ধরিবে ফল কম হবে দানা।
কলা,কচু অদিনেতে ছোট হবে ফানা ॥
এমনি জীবের দেহ আলামত যত।
সাধারণ লোকে জানে ভাল বুরা কত ॥
গরু ঘোড়া যুবা বুড়া পেট পিঠ রান।
রঙ্গ-ঢঙ্গ রোম, দোম, নাক, মুখ, কান ॥
গোয়ালেরা গরু দেখে কহিছে ব্যারাম।
যেই যাহা চিনে তাহা বলে খাছ আম ॥
এই মত ফল ফুল যেবা যাহা চিনে।
ক্রমাদিনে ফল পাবে রাখে যদি মনে ॥
রাখা বস্তু কাজে লাগে
حضرت سعدى رح
(হররত সাদী (রঃ)
داشته ايد بكا ركرچه باشد سرمار
(দাস্তা আইয়িদ্ বা কারে র্কাচে বাসাত্ র্সের্মা)
রাখা বস্তু কাজে লাগে যদি যত্ন করে।
সাপ মুন্ড হইলেও কামে লাগে পরে ॥
এমনি মনুষ্য দেহ চিনন নিশ্চয়।
আঙ্গট দেখিয়া তার ভাল মন্দ কয় ॥
হস্ত রেখা পদ রেখা কপাল নিশান।
ভাল মন্দ চিনা যায় যার যেই শান ॥
مقوله حضرت سعدى رحمت الله
(মাকাওলাহ হযরত সাদী রহঃ)
باالاى سرش زهوشمندى
مى تافت ستاره بلندى
(বালাইয়ে সেরাজ জাঁ হুসমন্দি)
মাতাফাত সেতারাহ বলন্দি-হাদিস শরীফ)
ছেতারা বলন্দি যার কপালেতে জ্বলে।
উচা মাথা রহে তার হুঁশ মন্দির ফলে ॥
যেইজন পৃথিবীতে হ’ল নবাকার।
মার পেটে সেই নর ছিল নাহেঞ্জার ॥
حديث شريف
(হাদিস শরীফ)
من شقى فى بطن امه
(মান সাকিউ ফি বাতনি উম্মিহি)
দজ্জালে মনহুছ দেখ মেস্কাতে প্রমাণ।
না বরকত হল সেই নবী ফরমান ॥
ছাইয়াদ বলিয়া নাম যাহার নিশ্চয়।
মসহুর দজ্জাল কিন্তু ভূমন্ডলে হয় ॥
আবার যে দন্তসহ জন্ম হয় তার।
তাতে না বরকত লেখে হাদিছ মাঝার ॥
আজরাছ বলিয়া তারে আরবেতে কয়।
মার পেট হতে যেবা দন্তসহ হয় ॥
উচা দাঁত লম্বা কদ চিক চিকে আওয়াজ।
দজ্জাল মনহুছ তাতে মেস্কাতের মাঝ ॥
আছিল তাহার মাতা অতি কুলক্ষণ।
লম্বা চৌড়া মোটা অতি ছিল যার তন ॥
পুত্র কন্যা দজ্জালের ব্যতীত আবার।
ত্রিশ বৎসর মধ্যে জন্মিল না তার ॥
তিরিশ সালের পর হইল ছাওয়াল।
কি ভেদ তাহাতে সে হইল দজ্জাল ॥
তিরিশেতে কোন ক্ষণ কোন রাশি পায়।
দানা লোকে সে সন্ধান পেয়েছে উপায় ॥
সে ভেদে করিলে জেদ পাইবে না ফল।
জেদ ছাড় পথ ধর ঘুচিবে চঞ্চল ॥
দেখ বাপ লম্বাকদ আছিল তাহার।
পাখীর ঠোটের ন্যায় নাক নাহেঞ্জার ॥
মেহিন আছিল বুক সরু অতিশয়।
এহুদি কমতারিন গোলাম নিশ্চয় ॥
মাতাপিতা নাহেঞ্জার পূত্র নাহেঞ্জার।
দিন ক্ষণ নাবকারে ফল নাবকার ॥
মদিনাতে নবী সাহেব দেখেন ছাওয়াল।
আংগট চিনিয়া কহে এই সে দজ্জাল ॥
মাতার আংগট আর পিতার আকার।
বয়ান করিয়া দিছে হাদিছ মাঝার ॥
এবে অন্য হাদিসেতে করহ লক্ষণ।
আকৃতির ব্যাখ্যা নবী করিল কেমন ॥
حديث شريف
(হাদিস শরীফ)
كل طويل احمق كل قصر فتنة
(কুল্লু তবিলুন আহমাকু কুল্লু কাসরু ফেতনাতু)
যত খাট তত নট হাদিছ বয়ান।
লম্বা যত হবে তত হেমাকত শান ॥
হস্ত রেখা পদ রেখা শরীর নিশান।
হাদিছেতে পাওয়া যায় আংগট প্রমাণ ॥
হস্ত পদ ছোট বড় নাক মুখ চুল।
চক্ষু কর্ণ শির আদি পিন্ডলী আঙ্গুল ॥
এ সবার পরিমাণ কেতাব মাঝার।
ভিন্ন ভিন্ন সারি সারি কাতারে কাতার ॥
ছোট বড় শরীরেতে কেবলি অজুদ।
নহে কিন্তু সর্ব্বাঙ্গে প্রত্যেক মৌজুদ ॥
যাহার অজুদ বড় অন্য স্থান ছোট।
খালি সে আহমক নহে কিন্তু সেই নট ॥
কোন জন নাটা কদ দীর্ঘ অন্যস্থান।
হেকামত তারি মধ্যে আছে বিদ্যমান ॥
কিন্তু যদি রাস্ত হয় কোন অঙ্গ তার।
রাস্তি তাহার মধ্যে পাইবে নির্দ্ধার ॥
এই সে কেয়াফা বিদ্যা বড় ভয়ঙ্কর।
মোল্লাগণ মানা করে শিখহ সত্বর ॥
বুধবার মনহুছ
(তফছিরে ফতেহেল আজিজিতে আছে)
১। হজরত নূহ্ (আঃ)-এর জামানায় তুফান হইয়াছিল বুধবার
২। পয়গম্বর আলায়হেচ্ছালামের দান্দান মোবারক শহীদ ঐ
৩। হজরত ইউসুফ (আঃ) কূপেতে পড়েন ঐ
৪। হজরত ইউনুস (আঃ) মৎস্যের পেটে যান ঐ
৫। হজরত ইব্রাহিম (আঃ) আগুনে পড়েন ঐ
৬। হজরত আলী (রাঃ) এর পায় তীর বিদ্ধ হয় ঐ
৭। হজরত আমির হামজা (রাঃ) শহীদ হন ঐ
৮। হজরত দাউদ (আঃ) বালায় পতিত হন ঐ
৯। হজরত হোসেন (রাঃ) কারবালায় রওয়ানা হন ঐ
১০। হজরত মুছা (আঃ) ও ফেরাউনের লড়াই ঐ
১১। হজরত ওছমান (রাঃ) শহীদ হন ঐ
১২। হজরত ছোলেমান আলায়হেচ্ছালাম ছাখরা দেওয়ের হাতে
আজিজ হন ঐ
বাংলা ১২৮৩ সনে নোয়াখালী ও বরিশাল জেলার দক্ষিণাংশে ভয়ানক তূফান ও বন্যা হয় বুধবার।
সময়ের ফল
সময়ের ফলে ফল ভূবন মাঝার।
ডাল পাল ঘাস পাত হয় বারে বার ॥
ধান, পান, মুগ, মাস, পারা, ছোলা ডাল।
আম, জাম, নারিকেল, খেজুর, কাঁঠাল ॥
কোন সনে হয় জন্ম কোন সনে নয়।
পোক জোক কোন সনে ভূমন্ডলে হয় ॥
কোন সনে বেঙ্গ জন্মে কোন সনে সাপ।
কোন সনে বর্ষা হয় কোন সনে তাপ ॥
যেই সনে যার জন্ম ভূমন্ডলে হয়।
তার গুণে ঐ সন পৃথিবীতে রয় ॥
তাহার আজমাস যেবা রাখিবে স্মরণ।
কালে কালে সেই নর হয় মুণি জন ॥
মেঘ বান আবরেতে ঝড়ীর সঞ্চার।
মেঘ দেখে ধাওয়া ধাই বলে সার সার ॥
মেঘেতে হইবে ঝড়ী কেবা কোথা জানে।
আলামত দেখে তায় সর্ব্বলোকে মানে ॥
চক্ষু, মুখ আলামতে খুনী চিনা যায়।
লাঠি হাতে একারণে ডরিছে সবায় ॥
আলামত দেখে যেই নাহি চিনে খুনী।
খালি সে বাচনি নর নহে সেই মুণি ॥
সাপ দে’খে লাফ দেয় বলে এই সাপ।
বাঘ দেখে ধেয়ে যায় বলে বাপ বাপ ॥
বাদলের আলামত
পূর্ব কি দক্ষিণে বায়ু শীতকালে হয়।
উত্তর পশ্চিম কোণে পবন নিশ্চয় ॥
চাতক পাখীর ডাক ঘন ঘন কয়।
জল তীরে মাছি মক্ষি উড়ে সদাচয় ॥
কীট পোকা রাত্রি ভাগে ঝিঝিট বচন।
উচ্চঃস্বরে জল ডাক ডাকে ঘন ঘন ॥
ফলং উড়িতে দেয় নিশির আওয়াজ।
পিপীলিকা গাড়া হ’তে ধরে যদি সাজ ॥
উলানি কি পোকা আদি মক্ষি ভয়ঙ্কর।
ভেড়ি দুম্বা নাচে দে’খে মেঘের সঞ্চার ॥
মরিচ ফসল হবে সেই সন অতি।
পাখীগণ ডাকিবার নিশা কালে গতি ॥
আকাশেতে ধনু উঠে গ্রীষ্ম অতিশয়।
হুদ হুদ ডাকিলে রাতে মেঘের সঞ্চয় ॥
ধুম ধুম বয়রা কান কফাশ্রিত বাই।
একাবধি পাখীগণ করে নাওয়া নাওই ॥
আবাবিল জলতীরে ঘুরিয়া বেড়ায়।
গাও পর ঝাড়ে পাখী ঘন ঘন নায় ॥
শৃগাল কানন হতে আবাদে আসিয়া।
দিবা ভাগে শিবা ডাকে গলা উঠাইয়া ॥
শেষ রাতে গাধা ডাকে ছাড়িয়া হুতাস।
রাত্রকালে ডাকে কিবা না খাইয়া ঘাস ॥
পানি চাক চন্দ্র ডিম্বে হবে পষ্টময়।
প্রদীপের আলো কম যেই রাতে হয় ॥
দাদ যদি চুলকাইবে মেঘের লক্ষণ।
কিম্বা দেহ ভার লাগে পাগল উচাটন ॥
জো-লক্ষণে মেঘ লাল খোলা সদা রয়।
শরীরের মেঘ রাণী পৃথিবীতে হয় ॥
মেঘ গুণে শরীরের বায়ু অনুরাগ।
বেঙ পেটে মৌজ মারে ডাকে বাগ বাগ ॥
নিজামদ্দিন আউলীয়ার নিজ মলফুজাতে।
এসব লক্ষণ ঢের লেখে পাতে পাতে ॥
সনের আলামত প্রথমেই পাওয়া যায়
(সরে মেস্কাতে লিখিয়াছে আজমাসি আলামত)
যে সনে বালকগণ আনন্দ হৃদয়।
খেলিবারে ইচ্ছা মন সদা সুখচয় ॥
ঐ সন ধান্য আদি নানান ফসল।
দেশে দেশে নানাস্থানে ফলিবে সকল ॥
ব্যারাম হইবে কম আরাম বাড়িবে।
সুদিনের আলামত আলমে পাইবে ॥
লাঠি সোটা বানান আর রণের পোষাক।
আলমেতে হুর ডাঙ্গা হবে অনুরাগ ॥
পালাইয়া ফিরে বনে কিবা ছেপে রয়।
ঐ সনে সেই দেশে হবে চোর ভয় ॥
ডাকিলে কুটুম্ব পাখী কুটুম্ব আসিবে।
খবর পাইবে নহে জ্ঞানী বুঝিবে ॥
নবীবর আগমনে শুনে সুবচন।
আনন্দে দিতেন ফাল পুলকিত মন ॥
মোবারক নাম আদি কবিতা আসার।
মধুস্বর পাখীরব নেক ফাল সার ॥
সুবচনে শুভ ফাল লইতেন আলী।
মেস্কাত সরাতে লেখে তাই যাই বলি ॥
কহিছে এমাম সাফি এমত খবর।
শুনে যদি ভাল সের ভাল পাবে নর ॥
ভাল দেখে ভাল হবে ভালতে সংসার।
ভাল ভাল সর্ব্বকাল জগতের সার ॥
যেই সন সাপ, মৎস্য, ইঁদুর সেওয়ায়।
অন্য জন্তু ধরে ধরে নিজ জাত খায় ॥
মনুষ্য বিহনে যদি জীবন ভূবনে।
সঙ্গম করয় যদি অন্য জাত সনে ॥
ভানুর উদয় কালে কুকুর কান্দন।
আকাশে প্রদীপ শশী দক্ষিণে ধারণ ॥
যেই সন বড় বেঙ হবে অগণন।
ওলাউঠা ভয় কিন্তু হরিদ্রা বরণ ॥
পাইবে সনের ফল প্রথম সনেতে।
পাইবে কাজের ফল কাজ আরম্ভেতে ॥
পাইবে শরীর ভেদ শরীর মাঝার।
রোগ শোক বাচন মরণ জান আর ॥
পাইবে দমের ঘরে মরণ বাচন।
দুই দম এগার ঘাট বার নিরূপন ॥
গরকী ও তুফানের আলামত
হুমহুম ধুমধুম কুরকুর ডাক।
মৃত্তিকা কম্পিত আর ডাকে যেন বাঘ ॥
আশ্বিন কার্ত্তিকে গরকী পূর্ব্ব রোকে ভয়।
কুরকুর ডাক ডাকে ঝিলি মিলি হয় ॥
নানা দিকে নানা রঙ্গ বিজলি দেখায়।
ডাইয়া জুইয়া পোকা জোকা রাশি ধায় ॥
ঝাকে ঝাকে চিল পাখী যায় তাড়াতাড়ি।
পশু পক্ষী রব করে ধায় সারি সারি ॥
পতঙ্গ পোকার হবে আলো অনুরাগ।
ধে’য়ে পড়ে ঝাকে ঝাকে দেখিয়া চেরাগ ॥
সাগর দেখিবে যদি করিতেছে রঙ্গ।
এক পরে এক আসে তিনের তরঙ্গ ॥
আলামতে বুঝা যায় হইবে তুফান।
ঘোরতর বন্যা আদি কিবা ছুটে বান ॥
এসব আজমাশি কথা জিনিষের গুণ।
হারাম শেরেক কহা বড়ই জবুন ॥
হাকিম হেকমতে হাওয়া করে নিরূপণ।
কোন সমে কত বায়ু হবে কত গুণ ॥
হঠাৎ বলিয়া দেয় দেখিয়া আরক।
জাহাজ আদি রেখে দেয় না হয় গরক ॥
তবে কি কাফের হৈল জাহাজি সকল।
নাহক মরিল মাল্লা না বুঝিয়া কল ॥
হলাহলে প্রাণ বধে চোত্রা পাতে ধক।
আলামত হারাম কহে কাফের মতলক ॥
এসব আজমাশি কথা হাল আলামত।
হবে কি না হবে সব খোদার কুদরত ॥
সর্ব্বস্থানে এক বারে না হয় তুফান।
কোথায় তুফান হয় কোথায় আমান ॥
যে কাম বেদ’আত নহে কিম্বা সে হারাম।
নাহক নিষেধ করা নহে ভাল কাম ॥
বেদ’আত বলিয়া কেহ করিছে ওয়াজ।
হুলুস্থুলু ঢেলে দিছে আওয়ামের মাঝ ॥
শত শত নেক কামে রেখে দিছে বাজ।
বাধিক করিয়া দিল গরীব সমাজ ॥
মৌলুদ, কেয়াম আদি সামাদান ফুল।
বেদ’আত বলিয়া কত লাগাইল গোল ॥
সাজিতে ঘরের সাজ পালকিতে ছাওয়ার।
রেওয়াজি ফাতেহা কিন্তু নেক বেশুমার ॥
মুরদা মরিলে রোজ ধার্য্য চাহারাম।
খেলান দেলান তাতে আছিল খতম ॥
যে তারিখ মকরর প্রত্যেক জায়গায়।
ছ’মাসী বৎসরি দশে কিবা চাল্লিশায় ॥
সে তারিখে এসে রূহু হইয়া হাজির।
ভিক দোয়া মাগে সে ফরমান নবীর ॥
দোয়া পেলে দোয়া দিয়া হইয়া বিদায়।
কেন্দে কেন্দে রূহুগণ নিকলিয়া যায় ॥
কে আছে আমার হায় কে আছে আমার।
একা চলে এনু আমি নাহি ইয়াদগার ॥
একা গিয়াছিনু আমি একা চলে যাই।
কোথা মাতা-পিতা রল কোথা রল ভাই ॥
পড়েছে আমার পরে বিশাল তুফান।
তারিখে তারিখে মম হও আগুয়ান ॥
সময় স্মরণ রাখ পড়িবে স্মরণ ॥
স্মরণে স্মরণ হবে আপনা মরণ ॥
মরণ স্মরণ যদি রহিবে তোমার।
শমন ভবন তবে স্মরিবে আমার ॥
প্রত্যহ করিতে হয় মকররি কাম।
হারাম বলিছে যারা নাহি লয় নাম ॥
হারাম বলিয়া তারা পাইল আরাম।
একেবারে ভু’লে গেছে আখেরের কাম ॥
দুই চারি রেছালা দেখিছে নজরে।
তাই সে হারাম বলে বাতায় সবারে।
কোথায় হারাম আর কিসের হারাম ॥
বেদ’আত কাহাকে কহে নাহি জানে নাম ॥
আউলিয়ার গোরস্থানে শহীদ লোকের।
দেওয়ারে চেরাগ দেওয়া জাগা হায়বতের ॥
সরাতে ছওয়াব কিন্তু নাহি অনুরাগ।
আনওয়ার ছাতেয়া নামে দেখহ কেতাব ॥
মক্কা মদিনার মুফ্তি আলেম বিস্তর।
আনওয়ারে ছাতেয়া সত্য লেখিছে সুন্দর ॥
হাজার তারিফ হয় মোছান্নেফ তরে।
করিলেন মরাদ্বীন জিন্দা একেবারে ॥
শত শত নামি নামি দলিল কেতাব।
ছাতেয়াতে লেখা সত্য দেখহ কেতাব ॥
হারাম বেদ’আত বলে লেখেছিল যারা।
ওহাবি খেতাব কিন্তু পাইলেন তারা ॥
আনওয়ারে আহ্মদী এবে দেখহ সকলে।
দোভাষী বাঙ্গালী ভাষে আহ্মদী বলে ॥
বহু যত্নে তায় রত্ন গাথা গেল হার।
রত্মকর পেলে যত্ন করিবে তাহার ॥
সাদি মধ্যে ঘর সাজ যে বলে হারাম।
কা’বা আবা, বোটে কেন বঙ্গের বারাম ॥
দুই চাল আট চালা বন্ধ ছন্দ মিল।
কোন হাদিছেতে নাহি তাহার তমসিল ॥
বেদ’আত এরূপ ঘর বানান নিশ্চয়।
মাদ্রাসা বেদ’আত সত্য হাদিছেতে নয় ॥
তরতিব কোরান ছুরা এরাব সকল ॥
জবানে নিয়ত পড়া নামাজে কেবল ॥
বেদ’আত জুম্মাতে দেওয়া প্রথম আযান।
জেল বন্দি সোনা চান্দি কোরানে লাগান ॥
তছবিতে দানা আর ঈদগাতে মিম্বর।
ফেকার কেতাব আদি যত পরস্পর ॥
বেদ’আত বলিতে হয় মুজহাব সত্বর।
বহুকাল পরে ধার্য্য হয় পয়গাম্বর ॥
নাক ছিদ্র কাণ ছেদ নানা জেওয়ারাত।
শাড়ী ধুতি আওরতের পরণ বেদ’আত ॥
রেল আর হাওয়া গাড়ী নানা বস্ত্র কল।
রেওয়াজ জানিয়া মন্দ হল অমঙ্গল ॥
বেদ’আত রেলের গাড়ী চড়নাক তায়।
হারাম হইয়া পরে কি হবে উপায় ॥
রেওয়াজে না কর ঘিন রেওয়াজে মাকুল।
ফেকা বলে কহ যারে রেওয়াজ তার মূল ॥
মৎস্য বলে কহ যারে রেওয়াজ ভিতরে।
ফেকাতে হালাল লেখে সেই মৎস্য তরে ॥
যে দেশে দস্তুর আছে জ্যাফত যেমত।
সেইত রেওয়াজ বটে তাহাই ছুন্নত ॥
নবী বাদে যে আমল জারি ক্রমাদিন।
তাহাকে বেদ’আত কহে না করিবে ঘিন ॥
সরার খেলাপ যদি হয় কোন কাম।
তবে সে বেদ’আত জান বেদ’আত হারাম ॥
নহে মোবাহ পরে সেই হামেসা রহিবে।
ভাল হলে হাছনা সওয়াব পাইবে ॥
আট রকমের আছে বেদ’আত তামাম।
একই বেদ’আত তাতে কেবল হারাম ॥
মক্কা মদিনাতে যারা জেয়ারতে যায়।
দালান কবর পরে দেখে কিনা তায় ॥
চক্ষু মুদে তারা নাকি ফিরে আসে ভাই।
কবরে চেরাগ তাতে কভু দেখে নাই ॥
মক্কা মদিনাতে কিবা রুম আর সাম।
কবরে রৌশন করা নাহিক হারাম ॥
কেবল কতেক লোক ঢাকা বাঙ্গালার।
হারাম জানিয়া নিছে হালাল খোদার ॥
যত নবী পয়গাম্বর ভেজিয়াছে বারি।
তাঁহাদের ছুন্নত আছে সংসারেতে জারি ॥
পুরানা ছুন্নত আছে অনেক প্রচার।
আওয়ামে আকিদা তাই বেদ’আত তাহার ॥
আনওয়ারে আহ্মদী রেছালা ভিতর।
এসব বেদ’আত রদে দলিল সুন্দর ॥
হকেরে নাহক বলা নহে সমুচিত।
অতএব খোদা শীঘ্র করাও মুদ্রিত ॥
যোগার পাখীর বিরহ
একদা নিশির কালে করিতে ভ্রমণ।
শাখা পরে কাঁদে শুনি পাখীর নন্দন ॥
টেরে টেরে শব্দে পাখী কাঁদে সারা রাত।
অসীম রোদনে করে রজনী প্রভাত ॥
প্রত্যহ বিরলে বসি দুঃখাকুল মন।
ডাক পরে ডাক ছাড়ে করে না ভোজন ॥
সামান্য বৃক্ষের এক ডালির উপর।
প্রভু নাম জপ নাকি করে নিরন্তর ॥
আহা কি প্রভুর নামে লাগিয়াছে মন।
অতএব করে নাকি এতেক রোদন ॥
কে জানে মনেতে তার কি হইল তাপ।
কি দুঃখ পাইয়া জানি এতেক বিলাপ ॥
একই দমের পরে জপে কার নাম।
কি শোকে কাহার দুঃখে এত পরিণাম ॥
সে দুঃখে অন্যের দুঃখ ফেটে যায় বুক।
আহা কি যোগার পাখি ত্যাগিয়াছে সুখ ॥
কি সাধ মনেতে তার ভবের বাসনা।
ত্যাজিয়া কাহার নাম করহ ঘোষণা ॥
সে নামের সাধ বুঝি হ’ল না সাধন।
কি হেতু করিতে আছ এতেক তাপন ॥
কে জানে কাহার নাম জপে তার মনে।
আহার ত্যাগিল পাখি কোন নাম গুণে ॥
রসনা জলেতে বুঝি করিল না তর।
তবু কি সাধের নাম ডাকে নিরন্তর ॥
মাতা পিতা পুত্র জন ছাড়িলে সংসার।
তবু নাহি করে কেহ এত হাহাকার ॥
যে হেতু তোমার মন করিছে বিরাজ।
তুসিয়া কি তার দেখা পাইয়াছ আজ ॥
ডালে ডালে পাখীগণ শুয়ে নিদ্রা যায়।
প্রভু নাম জপে যোগী রজনী পোহায় ॥
আনন্দে ডালির পরে খেলে পাখীগণ।
প্রভু নাম জপে যোগী বিরস বদন ॥
উদাসী
উদাসী কি সহ্য করে তুতি সুবচন।
মহানন্দে কাঁন্দে শুনে পরের কাঁদন ॥
আসিয়া না পরে পাখী গায় জবে গীত।
ভাবুকের মন ভাব ভাবেতে কল্পিত ॥
সুরসী মধুর সুরে মধু গান করে।
ভাবুকের মন ভাব নব ভাব ধরে ॥
নব পত্র সারি সারি হেরিলে নয়নে।
শত নব চিন্তা হয় প্রেমিকের মনে ॥
বসন্ত রসের কাল ধাইল পবন।
রসিকের মন রস হয় উৎপাদন ॥
কুহু কাহা রবে যদি পাখী রব করে।
আহা আহা উচ্চঃস্বরে সুধা ভাব ধরে ॥
নিরাশ্রয় পথিকেরে হেরিয়া নয়নে।
আশেকেতে সদা রহে দুঃখাকুল মনে ॥
দেখিয়া পরের দুঃখ নিজে দুঃখী হয়।
থামিয়া নিজের বুক মনে চিন্তে রয় ॥
জবালয়ে করে যদি জবেহ দরশন।
শতেক রোদনে দেহ করে জ্বালাতন ॥
শুনিয়া গভীর সুর উর্ধ্বমনে ধায়।
ছট ফট করে তনু পাগল পরায় ॥
বিচ্ছেদে বিরস সদা বালক হেন গতি।
নিঘোরে ত্বরাশ হয়ে বৃদ্ধি হেন মতি ॥
বৃক্ষমূলে করে কভু যামিনী যাপন ॥
উর্ধ্ব মনে করে কভু মাটিতে শয়ন ॥
বাঁশী সুরে উঞ্চলীতে পবনে গমন।
বেহাল বেপর হয় বেহালেতে মন ॥
তিনটি লক্ষণ আছে আশেকে প্রধান।
চক্ষু লাল জল বহে দম ছাড়ে টান ॥
ভাব
কমলের অলিগণ মধু পান তরে।
মধু রবে গুণ গুণ কাননেতে করে ॥
মহানন্দে অলিদল মধু গান গায়।
কুঞ্জবনে গুঞ্জ রবে পাতায় পাতায় ॥
সুগন্ধেতে বিমোহিত কুসুম কানন।
ফুলের মক্ষিকা তাতে ক’রেছে তারণ ॥
পবনে হেলায় যবে কুসুম বাঁগান।
ভ্রমর সকলে গায় গুণ গুণ গান ॥
মধু মক্ষী মধু স্বরে উড়িয়া বেড়ায়।
পাখে পাখে উড়ে পাখী পবনেতে ধায় ॥
মধু কাল বিনা কোথা সুখের সঞ্চার।
সে কাল অতীতে অলি আসিবে না আর ॥
মধু গেলে মধু মক্ষী রহিবে কোথায়।
ফুল বিনা মাছি কভু আসিবে না হায় ॥
বিলাপ
পৃথিবীতে যে সুন্দর, যথা যে হেরিছে নর,
অঙ্গ যেন সুরূপ কমল।
নাক মুখ কর্ণ বাটী, সারি সারি পরিপাটি,
তারা চক্ষু করে টলমল।
বচন কহিছে সুরে, লাটিমের মত ঘুরে,
কতক্ষণ রহে উর্ধ্বমান।
কিছুকাল পরে তায়, ঘুমতী বল সোদ পায়,
হটায়তে উড়িল পরাণ।
পরাণ ত্যাগিবে যবে, কেবা তব এই ভবে,
সে কালেতে কেহ নহে কার।
কিবা পুত্র কিবা জায়া, সকলে ত্যাজিবে মায়া,
মিছা মায়া জান এ সংসার।
পিঞ্জিরা হইতে পাখী, পালাইলে দিয়া ফাঁকি,
খালি ঘর রহিবে বিরান।
খসিয়া যাইবে ছানি, পচিয়া পড়িবে পানি,
তাই ভাবি হও সাবধান।
কীট পোকা খাবে ঘর, অস্থি মাংস এ পাঞ্জর,
চক্ষু তারা খাইবে পোকায়।
মাটিতে পতন হবে, কেবা তোকে উঁঠাইবে,
কোথা বন্ধু আছে হায় হায়।
সে কালেতে বন্ধুগণ সাথে না যাইবে ধন ,
উচ্চঃস্বরে যতই ডাকিবে।
মস্তক ধুনিবে তায়, কেহ না ফিরিয়া চায়,
বাটি ছেড়ে মাটিতে কাঁদিবে।
বিপদে কাঁদিলে হায় কেহ কি ফিরিয়া চায়,
মৎস্য পরে করহ নজর।
জল হতে স্থল পরে, মৎস্যকে লইলে ধরে,
কত সেই করে ধড়ফড়।
তাতে কি শিকারীগণ, মীন দুঃখে দেয় মন,
বধিবারে রহে কি বারণ।
সে রোদন শুনিলে হায়, কার না বুক ফেটে যায়,
তবু নর করে না শ্রবণ।
জমদূত এ প্রকারে, যখন ধরিবে জোরে,
দয়া শূন্য নিষ্ঠুর বিরস।
ঘাটে ঘাটে নানা ঠাঁই, কবর হাশর ভাই,
উখচিবে খাবে যেন রস।
যাহারে কুমীরে খায়, মুখ পানে নাহি চায়,
জল তলে লইবে ধরিয়া।
বন্ধুগণ আত্মজন, সকলে ফিরাবে মন,
ভাই বন্ধু রহিবে চাহিয়া।
কুটুম্ব এগানা যারা, সুখে সুখী হবে তারা,
দুঃখে দুঃখী নাহি কোন জন।
নিজ দুঃখে দুঃখী হবে, দুঃখে দুঃখী কেবা এবে,
সুখে সুখী হবে বন্ধুগণ।
প্রভু যার হবে গতি, পীর তার হবে মতি,
দুঃখ হতে করিতে নিস্তার।
দুঃখে দুঃখী পীর হবে, সাথে সাথে তারে পাবে,
সঙ্গে সঙ্গে সাথের ইয়ার।
বন্ধুর নাম স্মরণ করিলে পাপ মোচন হয়
নবীগণ ছাহেবান অলী বন্ধুগণ।
স্মরণেতে পীর পাই সূরুয রৌশন ॥
পশর হইয়া শাম আসে যদি তায়।
তারা ও শশীতে রাত রহে জ্যোতির্ম্ময় ॥
শশী হেন মাতা মম পীর আম্মাজান
বেলায়েত নূর যেন পূর্ণিমার চাঁন ॥
পৃথিবী ত্যাজিয়া মাতা ফকির হইয়া।
পরকালে গঞ্জেপুরী নিছেন ভরিয়া ॥
করিবে আকাশ ব্যাখ্যা কেমনে বাউন।
জগত মাতা যেন তিনি ফাতেমা খাতুন ॥
বাক্য সিদ্ধি পৃথিবীতে দেখ যদি ভাই।
সুবচনি আম্মা হেন আর বুঝি নাই ॥
ওয়ালফাজরে অ-লায়ালিন কোরান মাঝার।
পীর আম্মা দুই তন পাইয়াছি সার ॥
সকাল বৈকাল মধ্যে যতেক সময়।
পীর ভাই কত তাহা কে করে নির্ণয় ॥
চন্দ্র সূর্য্য বিনে যেন ছেতারা প্রধান।
স্থানে স্থানে আকাশের তাহারা সম্মান ॥
কামেলান আরেফান কত সাহাবাজ।
বলন্দি মুল্লুকে সদা করেন পরওয়াজ ॥
তাহাতে কোতোব এক বহিন আমার।
হলেন রাবিয়া ছানি জগত মাঝার ॥
আউলিয়ার ব্যাখ্যা করা নহে থোড়া কাম।
লুদুনী এলেম যার ছিনাতে তামাম ॥
কাশ্ফের ডানাতে করে জাহান পরওয়াজ।
নেগাদারী পৃথিবীর বটে যার কাজ ॥
তৌহীদের নেগা রাখা বসে এক ঠাঁই।
সর্ব্বস্থান এক স্থান ভিন্ন ভিন্ন নাই ॥
অবিরত চক্ষু যার রৌশন উজ্জ্বল।
কভু না ঢাকিছে মেঘে মাশুক জামাল ॥
তৌহীদের নদী সনে বাদলের ফোট।
মিলিছে সকলে যেয়ে করে এক জোট ॥
যখন বরষে মেঘ সাগর মাঝার।
করিবারে জুদা সাধ্য কভু নাহি তার ॥
সে মেঘ সাগর পেটে অমূল্য রতন।
মণি মুক্তা সাগরেতে আছে বহু ধন ॥
সাগরের মণি এক না করিবে বাদ।
ঢাকার বাসেন্দা পীর সাহে আমজাদ ॥
কলিকাতা শহরেতে মণি এক তার।
জোনাব সাহা বাকাউল্লাহ চব্বিশ পরগণার ॥
আর এক রত্ন যিনি হুগলী ভূমে ধনী।
জোনাব মৌলভী সাহা গোলাম ছোলেমানি ॥
কলিকাতা শহরেতে আলিয়া মাদ্রাসায়।
ফিল হাল জোনাবের মোদারেছি তায় ॥
ফুরফুরা নামেতে দেশ হুগলীর অন্তর।
আছেন তাহাতে ধনী আলেম জবর ॥
জোনাব ছুফি আবুবকর আলেম ফাজেল।
শরীয়াত নেগাবান আরেফ কামেল ॥
আর সাহা দিদার বক্স মহেব খোদার।
হাবড়া জেলার অন্তর্গত মোকাম তাঁহার ॥
চট্টগ্রামে সাহাবাজ হাফেজ ইব্রাহিম।
কামেল আরেফ ধনী ছেফাতে করিম ॥
আছেন মুর্শিদাবাদে এলাহির নূর।
একরামূল হক পীর আলমে মসহুর ॥
আর সাহা ওয়াজেদ আলী তৌহীদের নূর।
ছৈয়দ কুলেতে জন্ম ঘর ফরিদপুর ॥
ফিল হাল কলিকাতা তাঁহার বারাম।
পিতা তাঁর জজ উকিল বড় গুণধাম ॥
জোনাব মুনসী ছলেমান মম পীর ভাই।
কোরবান নামেতে তাই কলিকাতা ঠাঁই ॥
হিন্দুস্থান আসামেতে নানাদেশে আর।
কত ঠাঁই কত নূর কে করে সুমার ॥
মখদুম মকাররম পেশওয়ায়ে দ্বীন।
রাহবরে আশেকান আহলে একিন ॥
ছৈয়েদোল ওলামা রফিকে ফকির।
তালেবের মদদগার আর দাস্তগির ॥
আশরাফ কুলেতে জন্ম দোস্ত দেল বর।
নোয়াখালি শহরেতে ফকিরটোলা ঘর ॥
তাঁহার কৃপায় হয় পুস্তক তৈয়ার।
ছহি করিলেন কত সাধ্য যাহা তাঁর ॥
পড়ুক আর্শের ছায়া তাঁহার উপর।
খোদার মেহের আর পীরের নজর ॥
জোনাবের নাম এবে শুন গুণধাম।
মুন্সি আবদুল জব্বার তায় সহস্র সালাম ॥
আজিজুল আকাবের তাতে স্থান পায়।
নেওয়াজিবে মাফ দিবে আপনি খোদায় ॥
খাক ছার হই আমি সবার গোলাম।
আদাব আরজ আর সবাকে ছালাম ॥
আগেতে বন্দিনু পীর পরে চাচা পীর।
আগে পরে দুই নামে আরেফান স্থির ॥
আছেন পিতার কূলে যেই নামদার।
এ দোন ভুবন বিন্দু নিকটে তাহার ॥
সয়াল সংসার মাঝে যতেক সৃজন।
কমলেতে গন্ধ আর ভানুতে কিরণ ॥
হাকিকতে আহ্মদী যাতে সিদ্ধ পায়।
তাহার মগজ সার জানিবে চাচায় ॥
চাচা নহে কাঁচা সোনা চির ফল ধন।
শারদা গমনে যার ডাহিনে রতন ॥
তিনিই কোতাব এক সুধারাম দেশ।
যার যে মিলন ভাগ্য তান উপদেশ ॥
খলিল পুর সাকিনেতে আনাছেরি বাস।
লাহুত মূল্লুক তান দাপটে হুতাস ॥
আবদুুচ্ছামাদ সাহা এছেম কেবলার।
মুন্সি নামে নবরেখা ভুবন গোলজার ॥
কেবলার এরশাদ আমি ছাড়াইতে নারি।
দু’চার হরফ তায় লেখি তাড়াতাড়ি ॥
তাঁহার এরশাদে মোর জানিবে সকল।
সমাধা হইল লেখা আল্লা আল্লা বল ॥
-তামাম শোধ-
No comments:
Post a Comment